নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

রোকসানা লেইস

প্রকৃতি আমার হৃদয়

রোকসানা লেইস › বিস্তারিত পোস্টঃ

মায়ামি এক আনন্দময় শহর

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:৩০

বেশ রাতে ফিরলাম আমরা হোটেলে তখনও চলা লাইভ মিউজিক অনুষ্ঠান কিছু দেখলাম। শনিবার রাত খুব জমজমাট। সুন্দর সাজানো লবিতে বসলাম। লাইব্রেরি রুমে যেয়ে কিছুটা সময় চুপচাপ নিরিবিলিতে কাটালাম। বেশ রাতে ঘুমাতে গেলাম।
পরদিন সকালে উঠে চা কফি খেয়ে আমরা চলে গেলাম পুলে সুইমিং করতে।
সাজগুজ করে দশটার দিকে বেরুলাম বাইরে। আমরা কয়েকটা ব্লগ দূরে আমাদের ব্রাঞ্চের জায়গা ভার্সা ম্যানসনে হেঁটেই যাবো ঠিক করলাম। পার্কিং থেকে গাড়ি বের করলে কোথায় আবার রাখার জায়গা পাবো সেটা একটা মুসকিল।
তাছাড়া সময় আছে অনেক আমরা ধীরে সুস্থে হেঁটে দেখেই যেতে পারব আমাদের রির্জাভ করা সময়ের আগে।
প্রতিটা রেস্টুরেন্টের সামনে কত ধরনের খাবার মানুষ খাচ্ছে। রাস্তার এক পাশে নারিকেল গাছ অনেকটা জায়গা জুড়ে তারপর সমুদ্রের বেলাভুমি। তারপর যে সাগর দিগন্ত ব্যাপী সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্যপাশে সারিসারি পাশাপাশি দালান। যার ভিতরে হোটেল, এবং রেস্তুরাই বেশি। কিছু নানা সম্ভারের দোকানপাট। পোষাক, জুতা হ্যাট সানগ্লাস সুভিনিয়র। কিছু দোকানের পোষাক দেখে মনে হলো এমন পাথর সোনা রূপার কারুকাজ করা পোষাক কারা পরে।
নিশ্চয়ই এইসব দামী পোষাকের ক্রেতা আছে। গোল্ডেন কালার ঝকমক চকচকে বিষয়টা যেন ওদের খুব পছন্দ মনে হলো। আমি আর কোথাও এত বেশি এমন ঝলমলে দোকান দেখিনি।
ওখানে এমন সব ধনীলোকের বাস যাদের বাড়ির গ্যারাজে থাকে তাদের নিজস্ব প্লেন। বর্তমানে অ্যামাজনের নাম কেউ শুনেনি। বা অ্যামাজন থেকে কিছু কিনেনি এটা ভাবা যায় না ।
অ্যামাজনের জেফ বেজোস যিনি বিশ্বের তৃতীয় ধনীর তালিকায় আছেন এখন, মিয়ামি দ্বীপে সদ্য যে বাড়িটি কিনেছেন সেটাকে মেগা ম্যানশন বলা হয়। আটসট্টি মিলিয়ন দিয়ে তিনি এই বাড়ি কিনেছেন।
কোভিডের সময় থেকে মায়ামীতে প্রায় ত্রিশ পারসেন্ট বিলিয়নিয়ার মুভ করেছে। মায়ামির এক একটা ছোট দ্বীপ এরা নিজেদের বাড়ি করেছে। আর সমুদ্রটা নিজেদের বাড়ির আঙ্গিনার শেষে নিজেরাই দখল করে রেখেছে।
ফ্লরিডার চারপশে সমুদ্র। কিন্তু সমুদ্র সৈকত পাওয়ার জন্য তেমন একটা হোটেলে থাকতে হবে। বা এয়ার বি এনবির বাড়ি ভাড়া করতে হবে যারা নিজেস্ব সমুদ্র সৈকত দখলে রেখেছে। নয়তো আপনাকে খুঁজতে হবে পাবলিক সৈকত। যেখানে যাওয়ার জন্য হয় তো হোটেল থেকে বেরিয়ে অনেকটা হাঁটতে হবে।
পাম বিচ হলো সব চেয়ে ধনীদের বসবাসের জায়গা। যদিও সব জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ধনীদের বাড়ি।
অ্যাভেনচুরা মল হলো ধনীদের কেনাকাটার জায়গা হার্বাটফ্রন্ট লাগুয়া। এছাড়া আরো মল তো আছেই।
ওসেন ড্রাইভ রোড মিয়ামির সবচেয়ে জনপ্রিয় এলাকাগুলির মধ্যে একটি। আমাদের হোটেলটি এই রাস্তার মাঝামাঝি ছিল। পুরো রাস্তাটি চক্কর দিয়ে এর চাপাশের আনন্দময় সময়টা উপভোগ করেছি। দক্ষিণ সৈকতের এই অংশে প্রাণ চাঞ্চলে ভরপুর। এখানে মিয়ামির সমস্ত নিজস্ব বৈশিষ্ট্য, জীবন যাপনের চিত্রগুলি এক সাথে পাওয়া যায়। সমুদ্রের তীরে ব্রোঞ্জড বডি, রোলারস্কেটিং, সাদা বালির সৈকত, গ্রীষ্মমন্ডলীয় ককটেল, ল্যাটিন সঙ্গীত এবং আর্ট ডেকো ভবন, বার, রেস্তঁরা।
গান যে কোন ভাষায় শুনলেই ভালোলাগে যদি সুর সুন্দর হয় তবে স্প্যানিস গানের মধ্যে একধরনের রিদিম আছে যা আনন্দ দেয়। শরীরে দোলা লাগে, গানের ভাষা না বোঝেও। কিউবাতে গিয়েও আমার এই অনুভুতি হয়েছিল। সবাই আনন্দ করছে গান গাইছে। নাচছে। এখানেও সেই একই রকম মনে হলো।
রাস্তায় যত গাড়ি চলছে মানুষ তার চেয়ে বেশি হাঁটছে। কিছু গাড়ি আছে অদ্ভুত চেহারার। পুরানো মডেল ঐতিহ্যবাহী এগাড়ি গুলো ভাড়ার গাড়ি। শৌখিন অনেকেই চড়ে একটা চক্কর দিয়ে আসছেন। তুমুল বাজনা বাজে গাড়িতে। আর রাতের বেলা নানা রকম আলোয় সাজানো থাকে।
আর আছে রিকসা। হাঁটতে না চাইলে রিকসা চড়ে ঘুরতে পারবেন। তবে ট্যাক্সির চেয়ে বেশি পয়সা গুনতে হবে।
হাঁটতে হাঁটতে আমরা এমন একটা জায়গায় আসলাম সেখানে প্রচুর ভীড়। আর এত তুমুল বাজনা বাজছে যে কান ঝালাপালা অবস্থা। তার মাঝে দেখলাম মাইকে কেউ ঘোষনা দিচ্ছে কিছু। ফুটপাত ধরেই হাঁটছিলাম আমরা একজন আমাদের ফুটপাত ছেড়ে একটু নিচে রাস্তা দিয়ে যেতে বললেন। তখন দেখলাম ভিতরে নাচ হচ্ছে । এই ফ্রি নাচ যে কেউ দেখতে পারবেন । রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানুষ এই আকর্ষণীয় নাচ দেখছে । নাচের শিল্পীরা ক্যাবারে ডেন্সারের ড্রেস পরা। নাচতে নাচতে টেবিলের উপর চড়ে ঘুরে ঘুরে নেমে আসছে নিচে। হৈ হৈ করে তাদের উপর ছূড়ে দেয়া হচ্ছে ডলার। বুকের ভিতর পাছার ভিতর ডলার সাজিয়ে তারা চলে যাচ্ছে ঘুরতে ঘুরতে। ফের আসছে অন্যজন। দোকানের সামনে পোষ্টারে ছবি দেয়া আছে প্রায় পনের বিশজনের ছবি। এরা সবাই নাচে। এদের পোষাক নারীর মতন, দেখতেও নারীর মতন মনে হলেও আদতে এরা ট্রেন্সজেন্ডার।
খানিক তাদের নাচ উপভোগ করে আমরা ফের চললাম আমাদের গন্তব্যে।
প্রচন্ড ব্যাস্ত রেস্টুরেন্ট। অনেক মানুষ খাওয়া দাওয়া করছে। অনেকে অপেক্ষায় আছে। আমাদের নাম বলার পর সাথে সাথেই আমাদের টেবিলে নিয়ে বসাল। ভিতরে বেশ কয়েকটা ঘর তবে আমরা বসতে পারলাম খোলা জায়গায়। মাথার উপর আচ্ছাদন দেয়া আছে মনে হয় ঘরেরই একটা অংশ। চারপাশে ঘোরান বারান্দা দেয়া, পুরানো জমিদার বাড়ির মতন একটা বাড়ি। কোনায় কোনায় গোল ঘর। সব জায়গায় টেবিল চেয়ার পেতে খাবার ব্যাবস্থা করা। এত্ত কাজ করা। নানা রকম ভাষ্কর্য। ফুল আর সতেজ গাছে যেন একটা বাগানের ভিতর বসে আছি। আমাদের সামনে একটা পুল। এত কারুকাজ করা পুল আমি আগে কখনো দেখিনি। নীল জলের নিচের সিমেন্টর উপর মোজাইকের আল্পনা আঁকা। ভাস্কর্যর গা বেয়ে ঝর্ণার মতন ঝরছে জল। খুব বড় নয় কিন্তু পুরানো ঐতিহ্য ধরে রেখে এত সুন্দর করে সাজানো দেখে খুব ভালোলাগল।
খাবার আসল একটার পর একটা অনেক গুলো। তবে যত বেশি দাম পরবে ভেবেছিলাম তেমন নয়। খাবারের দাম এবং মান দুটোই ভালো। সাথে সুন্দর পরিবেশনা যেন বাড়তি আর্ট।
খাওয়া আসার আগেই আমরা চারপাশে ঘুরে ছবি তুললাম কিছু। খাওয়ার পরে ছবি তোলার জন্য আর দেরি না করে চলে যাব জন্য। কিন্তু আমাদেরও খাওয়া শেষ হলো আর তুমুল বৃষ্টি শুরু হলো। খাওয়া শেষ হওয়ার পরও অনেকটা সময় বসে রইলাম টেবিল দখল করে। কিন্তু বাইরে প্রচুর মানুষের ভীড় হয়তো আমরা উঠে গেলে এই টেবিলে আর কেউ বসবে। আমরা তাই টেবিল ছেড়ে উঠে পরলাম। কিন্তু বাইরে যাওয়ার উপায় নেই। আমরা চারপাশে হাঁটা হাঁটি করছি। যে কয়টা সোফা চেয়ার দেয়া আছে সবই দখল করে মানুষ বসে আছে। যারা খাওয়ার পরও বেরুতে পারছে না, বৃষ্টির জন্য।
এক সময় একদল উঠে গেলে আমরা বসার সুযোগ পেলাম। বৃষ্টি থামার নাম নেই। অথচ আমরা যখন হেঁটে আসলাম মেঘ দেখিনি আকাশে। এখন এত বৃষ্টি আসল কই থেকে।
হালকা বৃষ্টির মধ্যেই আমরা পথে নামলাম। এবং হেঁটে ফিরে এলাম হোটেলে। বৃষ্টি থেমে গেছে ততক্ষণ। আমরা গাড়ি নিয়ে তারপর মায়ামি শহর প্রদিক্ষণে চললাম। প্রোগ্রাম একটু চেঞ্জ করে ফেলেছি । ভেবেছিলাম আজকের দিনটা মায়াবীতে থাকবো কিন্তু বৃষ্টি হবে পরের দুদিন। মায়ামি মোটামুটি দেখাও হয়ে গেছে। এখন যাব নর্থের দিকে। বিকালে রওনা দিয়ে দিলে সেখানে পৌঁছে যাব সন্ধ্যার দিকে। যদিও বাড়ি বসে দেখেছিলাম সময় লাগে তিন ঘন্টা কিন্তু এখন দেখছি সময় বেশি লাগবে। অনলাইনে ঢুকে আমরা যে গন্তব্যে যাব সেখানে একটা হোটেল বুকিং দিলাম। তারপর রওনা হয়ে গেলাম। যাওয়ার আগে মায়ামি শহরের ব্যাস্ত এবং জনপ্রিয় রাস্তা ওসেন রোড ধরে চলবো । শহরের চারপাশটা ঘুরে ফিরে দেখে নিব।
ধনীদের মলে কিছুটা সময় কাটাবো পামবিচে সূর্যাস্ত দেখে কোকা বিচ এলাকায় চলে যাবো। পরদিন আমরা ঘুরতে যাব নাসাতে। কোকাবিচ থেকে কেপ ক্যানাভ্যারেল পনের বিশ মিনিট যেতে লাগে।
ঘন্টা তিন বিভিন্ন পথ ধরে এলোমেলো ঘুরলাম। প্রথমটা সাগারের পাড় দিয়ে চলা শুরু হলো। থামলাম অ্যাভেনচুড়া মলে। সেখানে আকাশচুম্বি দামের পোষাক আশাকের চেহারা দেখলাম। সাথে যারা সেখানে কেনা কাটা করে তেমন মানুষদেরও দেখলাম। এখানে যারা এসেছে এরা যেন পার্টিতে এসেছে। তেমনই সাজ পোষাক। হতে পারে সময়টা ক্রিসমাসের সেজন্যও মানুষ পার্টি করছে। পুরোটা ঘুরার জন্য অনেক সময় ব্যয় না করে, একটু চোখের দেখা দেখেই বেড়িয়ে এলাম। অ্যামাজনের জেফ বেজোসের বাড়ির পাশ কাটিয়ে ।
পোর্টে বিশাল বিশাল জাহাজ যে জাহাজ গুলোর বিজ্ঞাপন দেখি তাতে চড়ে ক্রজে যাওয়ার আহ্বান থাকে। সারি সারি সেই জাহাজ গুলো বন্দরে দাঁড়িয়ে আছে তখন। ভয়েজার, ক্যারেবিয়ান, নৌরজিয়ান। শহরের মূল অংশে ঢুকলাম। ডাউনটাউন বেশ ব্যাস্ত। রাতের মতন ফাঁকা নয়।
শহর পেরিয়ে আসতে বেশ সময় লাগল।
হোলিউড বিচ, ফোর্ট লোটারডেল, পোমপানো বিচ, পেরিয়ে পামবিচে আমরা থামব, সেখানে সূর্যডোবার পালা দেখার ইচ্ছা। যদি ওদিকেও বৃষ্টি না হয় তবেই মনের আশা পূরণ হবে।
তাপমাত্র ছিল ছাব্বিস থেকে ত্রিশ এরকম। ডিসেম্বর মাসে কোন শীতের দেখা নাই। বৃষ্টির সময়ও শীত লাগেনি। তাপমাত্র বড্ড সহনীয়। এমন আবহাওয়ায় থাকতে কার না ইচ্ছা করে। তবে এখানে ভয়াবহ গরম হয় জুলাই, আগস্ট মাসে। তাই সব বাড়িতে এয়ারকন্ডিশন এবং পুল থাকা জরুরী। এছাড়া ঝড় হয় অনেক। এখন গ্লোবাল ওার্মিং এর কারণে বন্যার কবলেও পরেছে । পানির নিচে অনেকটা তলিয়ে যেতে পারে। সাগর দিয়ে ঘেরা ফ্লোরিডার তিন ভাগ। কিন্তু ফ্লরিডায় যে এত নদী আছে সেটা আগে জানা ছিল না আমার। এখানের নদী গুলোর উৎপত্তিও অন্য রকম। লেইক এবং ভূপৃষ্ঠের ভিতর থেকে নদী উৎপত্তি হয়েছে। এদিকটায় পাহাড় একদমই দেখলাম না।
ফ্লোরিডাকে মনে হলো বাংলাদেশের উন্নত রূপ। আম, লিচু, কাঠাল, নারিকেল, বট পাকুড়, কলা, সুপারি, তাল, কৃষ্ণচুড়া থেকে দেশের কোন গাাছ যে এখানে নেই, বুঝতে পারলাম না। সব গাছের দেখা পেলাম সাথে অনেক নতুন রকমের গাছ। মোনগ্রোভ গাছ বড় বড় গোল গোল ভাড়ি পাতার এই গাছগুলোর অদ্ভুত সৌন্দর্য।

পামবিচে ঠিক সূর্যাস্তের সময়ই যেতে পারলাম। খুব বেশি ভীড় নেই এখানে। বালুকণাগুলো মায়ামী বিচের চেয়ে মশৃণ। মায়ামি বিচে বালু বেশ মোটা ধরনের ছিল।
আকাশ রঙিন হয়ে সূর্য যখন পানির নিচে তলিয়ে গেল। জলের রঙ সোনা রঙ হয়ে গেলো আমরা আবার পথে নেমে পরলাম আকাশে তখনও কমলা গোলাপী আভা।
সময় লাগবে কোকা বিচ পৌঁছতে সূর্যাস্ত দেখার পর আর দেরি করলাম না কোথাও একটানা চলতে থাকলাম। এদিকটায় ভিড়ভাট্টা কম যত উত্তরের দিকে এগোতে থাকলাম বাংলাদেশের সাথে মিল যেন তত বেশি বাড়তে লাগলো। ভাবছিলাম দেশটা যদি এরকম সুন্দর করে সাজিয়ে নেয়া যেত ।
রাস্তার দুই পাশে ওয়াইল্ড লাইফ অর্থাৎ বন্য প্রাণী সংরক্ষণ এলাকা, একটু পরপর কয়েকটা। বন্য প্রাণীগুলোকে তাদের মত থাকার জায়গা করে দেওয়া হয়েছে। আবার তারা যেন মানুষের ক্ষতি না করতে পারে রাস্তার উপর চলে না আসে সেজন্য রাস্তার পাশে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া আছে। এখানে অনেক বেশি যত্নশীল দেখলাম। মিশিগান থেকে শিকাগো যাওয়ার সময় রাস্তার দুই পাশে অসংখ্য বন্যপ্রাণী মরে ছিল দেখেছিলাম। পাশাপাশি মানুষ প্রাণীর সুন্দর বসবাস। পিটিয়ে প্রাণী মেরে ফেলা নয় বরং প্রাণী যেন নিজেদের মতন থাকতে পারে সে ব্যবস্থা করা আছে।
আটটা নাগাদ আমরা কোকা বিচ পৌঁছে গেলাম। আমাদের হোটেলটা একদম সাগরের লাগুয়া। হোটেলে পৌঁছে বিশাল রুম পেলাম ।পেছনে ব্যালকুনি সেখান থেকে সাগরের জলের ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। আকাশের চাঁদ আর মেঘের খেলা । একটুখানি খোলা জায়গা তারপরে বড় বড় ম্যানগ্রোভ গাছের সারি মাঝে ছোট চিকন রাস্তা, সাগর পাড়ে যাওয়ার।
এখানে মানুষের ভীড় নেই হৈ চৈ নেই তেমন। শান্ত নিরিবিলি শহর। ততধিক শান্ত সাগর পাড়।
ব্যালকুনি থেকে খানিক উপভোগ করে। রাতের খাবার জন্য চলে গেলাম শহরের মধ্যে। সেখানে বেশ কয়েকটা রেস্তুরা । গ্রীক, ইটালিয়ান, চাইনিজ এবং স্থানীয় । আমরা স্থানীয় রেস্তুরাতেই ঢুকলাম খাবার জন্য।
তখনও কিছু মানুষ ছিল। আরো কিছু এলেন খাওয়া ভালোই ছিল। খাওয়ার পর ফিরে সাগরপাড়ে হাঁটতে গেলাম।
গাছে ঘেরা রাস্তা পেরুতে একটু ভয় ভয় করছিল। যদি সাপ টাপ থাকে। তারপরও দেখার আগ্রহ থামিয়ে রাখল না। সাগরপাড়ে কেউ নেই । একদম একা নিরিবিলি সাগর সৈকত উপভোগ করতে ভালো লাগছিল । কিন্তু একা থাকলাম না। আলো জ্বালিয়ে দুজন কিছু খুঁজে খুঁজে তুলছিলেন সাগর পার থেকে। তারা আমাদের কাছে এলেন এবং আবার ফিরে গেলেন।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২৪

শেরজা তপন বলেছেন: খুব বেশী শর্টকার্টে সেরেছেন - লেখা পড়ে মন ভরল না!

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:০৭

রোকসানা লেইস বলেছেন: হা হা হা কি যে সমস্যা । বড় করে লিখলে সবাই এত্ত বড় কেন বলে আবার না পড়ে চলে যায়। আবার ছোট করে দিলেও সমস্যা। কোন দিকে যাই।
লেখাটা এক সাথে দিলে দীর্ঘ হতো কিন্তু কেউ পড়ত না।
আর আমি একটাও ছবি না দিয়ে সবাইকে কল্পনায় দেখতে বলছি । সেটাও বড় সমস্যা লেখার।
মনের এই আগ্রহটুকু থাক

২| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২৬

কথামৃত বলেছেন: আমি আনন্দ সহ্য করতে পারি না

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:০৯

রোকসানা লেইস বলেছেন: আপনি দুঃখ ভালোবাসেন। বেদনায় ডুবে থাকেন।
জেনে আনন্দিত হলাম। নতুন ধরনের ভাবনা আপনার।

৩| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মাঝে মাঝে আনন্দের জায়গায় গেলে মন চাঙ্গা হয়।

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:১০

রোকসানা লেইস বলেছেন: ঘুরতে যাওয়া মানেই বোস্টার নিয়ে আসি আমি।
মন চাঙ্গা করার জন্য চেষ্টা করা জরুরী।

৪| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৩৪

লেখার খাতা বলেছেন: রিফ্রেশমেন্ট এর দরকার আছে।

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:১২

রোকসানা লেইস বলেছেন: খুব দরকার আছে।
সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পরতে হবে। দূরে না হলেও একটি ধানের শিষের উপরে একটি শিশিরবিন্দু দেখতে হলেও।

৫| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:১৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কত রকম জীবন! কত রকম জীবনবোধ! সংস্কৃতি! বিশ্বাস! যাপিত জীবন!

সৃষ্টির মতোই বিস্ময়কর।

তপন ভায়ার সাথে সহমত। যেন আমরাও দৌড়ের উপর ছিলাম ;)

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:২০

রোকসানা লেইস বলেছেন: আপনাকে অনেকদিন পর দেখলাম। ভালো লাগল খুব।

ভায়েরা ভায়েরা মিলে এক মত, কি যে করি। :P

আসলে দৌড়ের উপরই চলে গেলাম যে অন্য জায়গায় তাই আপনাদের দৌড়াতে হলো।
পথে না বেরুলে রহস্যময় জীবন এক রকমই থাকে।
আবার খুব অবাক হই দেখে, অনেক মানুষ দেশ ছেড়ে বিদেশে আসার পরও নিজেদের গন্ডি ছেড়ে বেরোয় না। বরঞ্চ বাচ্চাদের উপর খড়গহস্ত হয়ে থাকে নিয়ম রক্ষা করতে। কত যে বৈচিত্র।


৬| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: জীবনটা বেশ উপভোগ করে নিলেন। ভেরি গুড।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১:৩৬

রোকসানা লেইস বলেছেন: জীবন উপভোগ্য আর আমি সব সময়ই তা উপভোগ করি। জীবনের প্রতিটি মূহুর্ত পার হয়ে যাচ্ছি যা আর ফিরে পাব না। হারানো সময় সঞ্চয়ে আনন্দ নিয়ে থাকুক আমার কাছে।
ভালো থেকো রাজীব

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.