নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অক্টোবরের ঝলোমলো দিনগুলো পথে টানছিল খুব বেশি, ইচ্ছে করছিল বেরিয়ে পড়ি এখনই কিন্তু বাস্তবতা ধরে রাখল ঘরে। কিন্তু মনটা উচাটন হয়েছিল। মন উচাটন থামেনা যাবই দেখতে কোথাও অজানায়, পরিবারের সদস্য মিলে ঠিক করল নভেম্বরে বের হব । তারিখ ঠিক হলো ছুটি নেয়া হলো কিন্তু কোন ভ্যাকেশন এর জায়গা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নভেম্বরটা একদম ডাল মাস সব জায়গায় বৃষ্টি, সাইক্লোন, হারিকেন, ঠান্ডা পড়ে গেছে বৃষ্টির মধ্যে ভ্যাকেশনে গিয়ে ঘরে বসে থাকার কি মানে হয় । আমার ইচ্ছে হয় পথে পথে ঘুরে বেড়ানো ফুলের গন্ধ নেয়া, পাখির গান শোনা যে কোনো ঐতিহাসিক জায়গায় পুরানো দিনের গান খুঁজে বেড়ানো কিন্তু নভেম্বরটা তেমন করার কোন সুযোগ নেই।
আজকাল আরেকটা সমস্যা বিমানে ছোট ছোট রাইটগুলোতে কোন চেক ইন সুটকেস নেওয়া যায় না নিতে হলে আরো অনেকগুলো পয়সা ঢালতে হয়। ঠান্ডার মধ্যে কোথাও যেতে হলে ভালো মতন প্যাকেজ করতেই হবে সোয়েটার, হাত মোজা, পা মোজা, লেয়ারের পরে আরো কাপড় পরতে হবে। আর ভারি সুটকেস টেনে টেনে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরে বেড়ানো একটা মুশকিল ব্যাপার তাই শীতকালের বেড়ানোটা আরামদায়ক না কোথায়, এক জায়গায় বসে থাকা ছাড়া। সমুদ্রপাড়ের দ্বীপগুলো দেখছিলাম। সেখানে দারুণ বৃষ্টি গিয়ে শুধু বৃষ্টি দেখার চেয়ে ঘরে বসে থাকাই ভালো।
এখানে ক’দিন বৃষ্টি হচ্ছে, বরফ পড়ছে, ফ্রোজেন হয়ে আছে। বরফের পরিমাণ তখনো খুব হালকা লাল হলুদ পাতাগুলো ঝরে পড়ছে, বাতাসে প্রতিদিন। গাছগুলো ন্যাড়া হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। একটা বিষয় খেয়াল করলাম গাছে এত হাজার হাজার পাতা কিন্তু সবগুলো পাতা একসাথে ঝরে পড়ে না। অনেকগুলো পাতা একসাথে উড়ে যাচ্ছে এই সুন্দর দৃশ্যটি ভিডিও করার জন্য অপেক্ষা করলাম কিন্তু একটা পাতা উড়ে যায়, দল বেঁধে অনেকগুলো পাতা একসাথে ঝরে পরেনা কখনো। ঠান্ডায় আর বাতাসে দাঁড়িয়ে থাকলাম বেশ কয়েকটা দিন, পাতা ঝরার ভিডিও করার জন্য সফল হলাম না, এই অদ্ভুত বিষয়টা আবিষ্কার করলাম ,গাছের পাতাগুলো যেমন একসাথে গজায়, ঝরে যাওয়ার সময় সবাই একসাথে ঝরে পড়ে না। খুব জোড়ে বাতাস এলে কিছু পাতা একসাথে উড়ে তবে সেই মূহুর্ত ধরা খুব দূলর্ভ ব্যাপার।
মাঝে মাঝে আমি রাতের আকাশ দেখি । আকাশের তারা গুলো দেখি, ছায়া পথ লম্বা হয়ে অজস্র তারার কণা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে তাই দেখি। সপ্তর্ষি, কালপুরুষ, সন্ধ্যা তারা, ধ্রুবতারা সময়ের সাথে সাথে জায়গা বদলায়, মাঝ রাতে এক জায়গায় তো ভোরবেলা অন্য জায়গায়, সন্ধ্যাবেলা অন্যদিকে। আকাশের তারার দিক পরিবর্তন দেখতে ভালই লাগে আমার তার মাঝে চাঁদটা বাড়ে কমে, পূর্ণিমার আলো দেয় একেক সময় একেক রকম। অন্ধকার রাতের তারা জোনাকির মতন জ্বলে থাকা অসম্ভব ভালোলাগা একটা বিষয় আমার দেখার জন্য। সেই সাথে আরো একটা জিনিস আকাশে খুঁজি, অরোরার আলো, নর্দান লাইট। কিছু দিন আগে খুব হালকা ভাবে দেখেছিলাম। মাঝরাতে বাড়ি ফিরে পথের উপর দাঁড়িয়ে থাকলাম তারা দেখছিলাম। তারাদের ছবি তুলছিলাম তখনই ক্যামেরায় সবুজ আলোর ঝলকানিটা ধরা পরল তারপর খানিক তাকিয়ে দেখলাম খুব দ্রুতই মিলিয়ে গেল আকাশে নাচতে থাকা সবুজ আলোটা আরো ভালো করে দেখার ইচ্ছাটা পূরণ হলো না। ইদানিং অরোরা দেখার আবহাওয়া বার্তা থাকে জানি, জিওমেট্রিক্যাল ঝড় খুব হচ্ছে সৌরজগতে কিন্তু ভালো করে জ্বলে উঠে না এতটা নিচে, যেখানে আমি আছি। অপেক্ষায় আছি কোন একদিন তার সাথে সারারাত ধরে কাটাবো বলে। প্রিয়তম, সে জড়িয়ে ধরবে আমাকে তার আলোয় রাঙিয়ে দিবে, উদ্ভাসিত হব আমি নতুন দিগন্ত পেয়ে ।
কাজের ব্যস্ততা প্রতিদিন নতুন করে প্রকৃতি দেখা তারপর ভিতরে সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা পথে নামার। খুঁজতে থাকি কোথায় যাওয়া যায় উষ্ণতায়।
অনলাইনে বিশ্ব ঘুরে বেড়াবার বিশাল সুযোগ। আমি কিছু ভেকেশনের প্যাকেজ খুঁজতে শুরু করলাম। হুহু করে আমার ল্যাপটপ ভরে গেল নানান রকম বিজ্ঞাপনে, যেখানে যেতে চাই সেখানের, যেখানে যেতে চাই না সেসব জায়গারও। সব এসে জড়ো হয়ে গেল একটার পর একটা চকমকে রং ঢঙে তাদের বিজ্ঞাপন দেখে আকৃষ্ট হই এবং সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করে অল্প দামের প্যাকেজ গুলো। আমার ক্ষমতা তো বিশাল নয় তাই সীমার মধ্যে অসীমকে দেখতে চাই।
কিন্তু মজার বিষয় হলো খুব অল্প দামের প্যাকেজে প্লেনের টিকিট কেনা যাচ্ছে কিন্তু থাকার জায়গা ঘোরাফেরার খরচে তার তিন ডাবল উঠে যাচ্ছে।
অবশেষে এ সমস্ত কিছু দূরে সরিয়ে শুধু নিজের মতন গুগল ম্যাপ থেকে একটা জায়গা খুঁজে নিলাম।
এবং কতদূর যাব কি কি করব কোথায় থাকবো সবকিছু নিজের মতনই সাজিয়ে নিলাম। ওইসব চকমকে বিজ্ঞাপনের আহবান দূরে ঠেলে।
আমি তো আজকের নতুন ভ্রমণ বিলাসী না যখন অনলাইনে এরকম বিলাসী চকমকে আহ্বান ছিল না,আমি তো তখন থেকে ভ্রমণ করি। নিজের মতো নিজের পছন্দে জায়গা খুঁজে নিই তারপর সেখানে যাই, দেখি মন প্রাণ ভরে। ভ্রমণের বৃত্তান্ত দিয়ে টাকা কামাচ্ছে এখন অনেকে। আমি তার বহু আগে থেকেই এ বিষয়ে পারদর্শী। নিজের মতন করে নিজের গন্তব্য বহু আগে থেকেই আমি সাজাই যাই এবং ঘুরে আসি।
হোটেল গুলো সরাসরি বুক করা যায় না এখন সবকিছু অনলাইনের মাধ্যমে। ওয়েব লিংক এর মাধ্যমে তাদের সাথে লিঙ্কআপ করলে তারা আবার একটা পয়েন্ট দিবে কিছু ফিডব্যাক দিবে যা এখন ব্যবহার করা যাবে না কিন্তু জমাতে থাকলে ভবিষ্যতে ভালো একটা অংক সংখ্যা পাওয়া যাবে। পরে কিছু ডিসকাউন্ট পাওয়া যাবে। বিভিন্ন জায়গায় হোটেলগুলো ওই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বুক করলাম ।
অতঃপর সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে নিজের মতন কাজে ব্যস্ত থাকলাম আরও দশ পনেরো দিন বাকি আছে যাওয়ার। ছুটি শুরু হবে পরিবারের সদস্যদের সেই সময়ে। আমার ছুটিটা আমার নিজের মতনই নিতে পারি ইচ্ছে হলে অনেক দিন।
ব্যস্ততা প্রতিদিন নানারকম বাইরে যাওয়ার আয়োজন । এবারে আর সুটকেস ভর্তি করে গরম কাপড় নিয়ে যাব না। কারণ যাচ্ছি দক্ষিণে খুব হালকা-পাতলা কিছু আরামদায়ক কাপড় নিয়ে যাব। সুটকেসটাও হবে হালকা যেটা ক্যারিওন হিসেবে ব্যবহার করা যাবে লাগেজের জন্য আলাদা চেকিং ব্যাগে দিয়ে পয়সা দিতে হবে না। খরচ নিজের সীমার মধ্যেই রাখতে হবে । তারপরও ঘুরতে গেলে একটা রাজকীয় ব্যাপার স্যাপার থেকেই যায় । খাবো,নানা রকম ভিন্ন স্বাদের খাবার। আরাম করবো আর আয়েশি বিলাসী খাওয়া দাওয়া এবং কিছু জিনিস দেখার জন্য আলাদা কিছু টিকিট কেনা, এ সমস্ত বাজেট আলাদা। সবচেয়ে মজা লাগে আমার হোটেলে থাকা। সকালে ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে গেলে, ফিরে ঘরে এসে দেখি কি সুন্দর পরিপাটি সাজানো সব কিছু । ফেরি টেল যা আসলে নিজের পয়সাই কেনা কিন্তু মনে হয় রূপকথার রাজকন্যা এসে সাজিয়ে দিয়েছে, পরিপাটি ঘর, এইটা খুব উপভোগ করি। এবং থাকাটাও হতে হবে মানসম্পন্ন।
এবছর বরফ পড়া শুরু হয়ে গেছে অক্টোবরের শেষ থেকে। এর মাঝে দু-তিন দিন গাছগুলোকে জড়িয়ে ধরেছে শক্ত হওয়া বরফের জামা এত ভারী গাছের শুকনো ডালপালা গুলো ঝুলে পড়ে যাচ্ছে । বাইরে দাঁড়িয়ে দেখি বাতাসের অদ্ভুত এক মিউজিক হচ্ছে। বরফের জামা জড়ানো ডালগুলো একটার গায়ে আরেকটা লেগে সুন্দর শব্দ হচ্ছে। শীতের শুরুতে এমনটা সাধারণত হয় না। কিন্তু এ বছর হঠাৎ করে এক এক দিন খুব ঠান্ডা পড়ছে আবার পরদিন উত্তাপ বেড়ে যাচ্ছে । জমে যাওয়া বরফগুলো গলছে অদ্ভুত একটা আচরণ যেন প্রকৃতির।
ভ্যাকেশনের চিন্তার শুরুতেই অবাক করা সব প্যাকেজের আয়োজন দেখে খুব অল্প দামে একটা টিকিট কিনে ফেলেছিলাম বাহামা যাওয়ার জন্য । কিন্তু তারপর থাকা খাওয়া এবং ফিরে আসার খরচ দেখে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার অবস্থা হলো। এটা আমার পক্ষে খরচ করা সম্ভব হবে না এই সময়ে। বাহামা যাওয়া মানে শুধু সাগর পাড়ে বসে থাকা আর ডুবুরি হয়ে ডুব দেওয়া, মাছের সাথে সাঁতার কাটা ডলফিন এর সাথে সাঁতার কাটা ।
রিসোর্টে ম্যাসেজ নেয়া, অ্যালকোহল খাওয়া সমুদ্রের পাশে চেয়ারে শুয়ে থাকা। সব অন্তর্ভুক্ত হলেও শেষমেষ সবকিছুর জন্যই বাড়তি পয়সা দিতে হয় তাছাড়া আছে টিপস এসব হিসাব নিকাশ কষে মনে হল বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখাটাই আমার ভালোলাগার বিষয় বেশি,দেখা হলো চেনা হলো ভিন্ন প্রকৃতি এবং ভিন্ন অবস্থার বিষয়বস্তু সেটাই আমি চাই। বাহামার এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে যাওয়া থাকাও বেশ ব্যায়বহুল।
প্লেন কোম্পানি একটা অফার দিয়েছিল চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে রিফান্ড দিয়ে দিবে পুরোটাই তাই কেনা টিকিটটা ক্যানসেল করলাম তাড়াতাড়ি। আর খুঁজতে লাগলাম আর অন্য কোথায় যাওয়া যায়। ভাগ্যিস রিফান্ড দেওয়ার সুযোগটা দিয়েছিল না হলে আমাকে পথে বসিয়ে দিত।
পয়সা খরচ করে এই সমস্ত আয়োজন কিনে তা ব্যবহার না করা একটা অপচয়। আমার ম্যাসেজ নেওয়া হবে না শুধু চেয়ারে শুয়ে থাকা হবে না আর অ্যালকোহল তো খাওয়াই হবে না। একটু পর পর যে অনেক ধরনের খাবার সার্ভ করবে তাও আমার পছন্দ হবে কিনা জানিনা। তাই আমি কখনোই অল ইনক্লুসিভ ভ্যাকেশন প্যাকেজে খাওয়া নেই না । খাওয়াটা আমার নিজের পছন্দ হতে হবে। দরকার হলে একটি ভালো রেস্টুরেন্টে যাব অন্য ধরনের খাবার খাব কালচারাল অভিজ্ঞতা হবে বাইরে বের হলে আমি বাঙালি থাকিনা। আমি বিভিন্ন ধরনের খাওয়ার স্বাদ নিতে চাই, খেতে চাই, স্থানীয় খাবার উপভোগ করতে চাই।
খুব ইচ্ছে হয়েছিল চলে যাই গাড়ি চালিয়ে, লাসভেগাস এবং এবং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন দেখে আসি। বহু বছর আগে একবার যাওয়া হয়েছিল কতটা বদল হলো সেটা দেখার ইচ্ছা হল।
কিন্তু যেতে আসতে যতটা সময় লাগে আমি সেটা নিতে পারি কিন্তু পরিবারের সদস্যরা আমার সঙ্গী হতে চায় তাদের আবার ততটা সময় নেই। যেতে যেতেই ফিরে আসতে হবে । দেখার সময় হবে না তাই প্লেনে উড়ে রেন্ট এ কারের গাড়ি করে লাস ভেগাস থেকে অ্যারিজোনা ঘুরে ফিরে আসার প্ল্যান করেছিলাম । তখন ফেস্টিভ সময় ভেগাসের। যার জন্য বিশেষ আকর্ষণীয় জায়গা গুলোই রেনোভেশন করছে। যে হোটেলটা থাকার ইচ্ছে ছিল যেখানে পানিতে আগুন জ্বলে আর বেশ ক্যাসিনোতে খেলা যাবে সেই এরিয়াটা পুরোটাই বন্ধ করে রেখেছে । বেলাজিও হোটেল রিসোর্ট টাই পছন্দ ছিল।
প্রাকৃতিক দৃশ্য তেমন দেখার কিছু নেই। ওখানে যাওয়ায় মানে মানুষের তৈরি অট্টালিকা দেখা আর ক্যাসিনোতে খেলা।
আলোর ঝঞ্ঝানানি শহরের ঝলমলে অবস্থার সাথে ঘোরাফেরা করা। ইচ্ছা ছিল বাকি সময়টা অ্যারিজোনার পাহাড়ি সৌন্দর্য দেখে গিরিখাদে ঘুরে কাটানোর। বাঁধা পরায় পুরো প্রোগ্রামটাই বাতিল করে দিলাম ওদিকে যাওয়ার ।
ঘরে বসে অনলাইনে পৃথিবীর নানা জায়গায় ঘুরে ফিরে এলাম। তারপর বাহামার নুসা যাওয়ার টিকেট কেটে ফেললাম ওয়ান ওয়ে তিন চার দিন বাহমায় সমুদ্র বিলাস করে, ফেরিতে করে মায়ামি পৌঁছাব আর ঘুরে ফিরে সেখান থেকে ফিরে আসব।
কিন্তু পরে দেখা গেল ফেরার টিকেট, ফেরির টিকেট আর থাকার হোটেল রিসোর্ট আমার সাধ্যে কুলাবেনা ।
যাওয়া যে যাবে না তা নয় কিন্তু আগে থেকে প্ল্যান করতে হবে এবং সব কিছু একসাথে কিনতে হবে যাতে বাজেটের মধ্যে থাকে। অনেকদিন আগে থেকেই প্ল্যান করলে সমস্যা হবে না, বরং বাহামার সবকটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঘুরে দেখা যাবে। বাহামা অদ্ভুত একটা দ্বীপ দেশ। বিচ্ছিন্ন কতগুলো আইল্যান্ডের সমষ্টি একটি দেশ কিভাবে যোগাযোগ রাখে কিভাবে সব মানুষ পরিচালিত হয় সেই দেশে ভাবতে অবাক লাগে। ছোট ছোট সমুদ্রের ভিতর কেমন তাদের জীবন যাপন। মাত্র কয়েক মাইলের আইল্যান্ড গুলো ঘুরে ফেরা যায় কয়েক ঘণ্টায়। অথচ সেখানে তারা সাজিয়ে নিয়েছে কত রকমের আকর্ষণীয় পর্যটনের নানা রকম ব্যবস্থা,পণ্য । পর্যটন তাদের আয়ের উৎস।
এদিকে আবার বাহামা যেতে চায় কিন্তু নূসা নয় বিমিনি। বিমিনি যাওয়ার কোন প্লেন পাচ্ছিনা না আবার মায়ামি থেকে বিমিনি যাওয়ার কোন ফেরিও পাওয়া যাচ্ছে না। প্লেন পাওয়া যায় তো ফেরি পাওয়া যায় না ফ্লরিডা যাওয়ার সেখান থেকে।
পরিবারের সব সদস্যের মতামত এক হওয়া একটা সমস্যা যখন সবাই অ্যাডাল্ট প্রত্যেকের পছন্দ আলাদা রকম, যাহোক শেষমেষ আমি বললাম, আমারই ভ্যাকেশন এটা আমার পছন্দেই আমি যাব প্রায়োরিটি আমার ।
অতঃপর শুধু ফ্লোরিডা যাওয়ার পরিকল্পনাই করলাম ।
শুরুতে যাব মায়ামি সেখান থেকে উত্তরের দিকে আসবো পূর্ব থেকে পশ্চিমে যাব আবার একদম দক্ষিণে গিয়ে ফিরে আসবো। প্রতিটা জায়গায় চার ভাগে ঘোরাফেরার জন্য তিনদিন করে সময় করে নিলাম। ওয়ান ওয়ে টিকেট কিনতে গেলে সব সময় অনেক বেশি খরচ ।
অতঃপর চব্বিশে নভেম্বর রোজ শুক্রবার সন্ধ্যায় আমাদের প্লেন উড়বে তাই দুপুর থেকে প্রস্তুতি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হতে হল বিকালের মধ্যে তিন ঘন্টা আগে আমাদের এয়ারপোর্টে পৌঁছাতে হবে । সবকিছু সুন্দরভাবেই হলো বাড়ি থেকে বের হওয়া । আবহাওয়া বেশ ভালো । চেকিং, সিকিউরিটি, পার হওয়া যা এ সময় একটা বিরক্তিকর ব্যাপার, জুতা খোলা থেকে ব্যাগ তার ভিতরে কয়েন থাকলে সেগুলো বের করে দেওয়া, মোবাইল হাতঘড়ি, ব্যাল্ট, ল্যাপটপ ট্যাবলেট এমন কি গহনাও সবকিছু দেখাতে হবে। এইসব খোলাখুলি দেখে ইদানিং যা খুলতে হবে না সেরকম কিছুই পরি যাতে ঝামেলা কম হয় । হাতের ব্যাগও এমন কিছু রাখি না যাতে তারা ফেলে দিতে পারে অথবা রেখে দেয়। সবকিছুই লাগেজ এ ভরে দিই। যা হোক ঝামেলাবিহীন ভিতরে ঢুকে যাওয়ার পরে জানলাম, প্লেন এখনো আসেনি যেটা আমাদের নিয়ে যাবে ঘন্টাখানেক দেরি হবে। ঘন্টাখানেক দেরি হওয়া মানে সবকিছুতেই দেরি হওয়া।
গোধূলির আলো নিভে গেল অন্ধকারেই আমাদের উড়তে হল। চেনা শহর তখন আলোয় ঝলমল করছে নিচে একটু একটু করে প্লেন মেঘের ভিতর ঢুকে অন্য একটা দেশে যেন চলে আসলো মেঘের উপরেই তারার আলো আধখানা চাঁদের হাসি। নিচে দলবাঁধা মেঘের নাচন। রঙের খেলা। ধীরে ধীরে তাও অন্ধকারে মিলিয়ে গেল। বেড়াতে যাই যাই মায়মি ফ্লোরিডা।
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:০৬
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ সেলিম আনোয়ার।
শীত আগে আসে নাই এবার পুরো বছর জুড়েই শীত ছিল বলা চলে। খুব অল্প কদিন ভালো গরম পরেছিল।
শীত বরফ পরলেও অদ্ভুত আচরণ প্রকৃতির। গত সপ্তাহ জুড়ে ছিল প্লাস গতকাল ছিল বারো ডিগ্রী যত বরফ ছিল গলে জল মনে হলো যেন বসন্ত এসে যাচ্ছে। আজ আবার তুমুল তুষারপাত আর বাতাস চলছে। মায়নাস দশ।
পৌষের কাছাকাছি রোদ মাখা মিষ্টি দিন। আর মজার পিঠা খাওয়া সময়।
আমাদের মতন শীত না পরলেও আপনাদের অল্প শীতটা অনেকের জন্য খুব কষ্টকর।
শুভেচ্ছা রইল
২| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:৫৪
অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:
সকাল সকাল এত দারূণ একটা লেখা পড়ব ভাবিনি। কি নিদারুণ অভিব্যক্তি। আপনার যাত্রা শুভ হোক।
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:০৮
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ অপু দ্যা গ্রেট
পাঠকের ভালোলাগা লেখকের আনন্দ।
শুভেচ্ছা রইল
৩| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৪৮
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: গাছের পাতাগুলো যেমন একসাথে গজায়, ঝরে যাওয়ার সময় সবাই একসাথে ঝরে পড়ে না।
এই বিষয়টির সাথে আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীতে আসা, থাকা, এবং এখান থেকে চলে যাবার ব্যাপারটার সাথে কিছুটা মিল খুঁজে পাওয়া যায়! আমি মাঝে মাঝে খুব অবাক হয়ে ভাবি আমাদের এই পৃথিবীতে আগমনের মোটামোটি একটা সিরিয়াল আছে কিন্তু চলে যাবার কোন সিরিয়াল নেই কেন?
পুরো লিখাটি পড়েছি, বেশ ভাল লাগলো। ভ্রমণের প্রস্তুতি টা বেশ সুন্দর বর্ণনাময়, কিন্তু ভ্রমণের আরো বর্ণনা পেলে আরো বেশি ভালো লাগতো। পরের পর্বে থাকবে কি?
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:১৮
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ গেঁয়ো ভূত
পাতা ঝরা দেখার মধ্যেও এক ধরনের আনন্দ আছে। আর ঝরার আগে যে রঙিন হয়ে উঠে পাতাগুলো চারপাশটা ঝলমল করতে থাকে খুব সুন্দর এই পরিবর্তন।
আপনার মিল খুঁজে পাওয়াটাও অনেক বেশি ভাবাচ্ছে , আমিও মানুষের চলে যাওয়ার সাথে মিল পেলাম। হঠাৎ দূর্যোগে বা যুদ্ধে যেমন অনেক মানুষ চলে যায় এক সাথে ঝড়ো বাতাসে তেমন এক সাথে কিছুপাতা উড়ে যায়।
এটুকু প্রস্তুতি পর্ব। নয়পাতা লেখা হয়েছে সেটা কেউ পড়ত না এক সাথে। তাই শুরুটুকু দিলাম।
শেষ করতে আরো অনেক লেখা বাকি আছে। কয়েকটা পর্ব হয়ে যাবে। ইচ্ছা করেই চলবে দেইনি।
শুভেচ্ছা রইল
৪| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৩১
বাকপ্রবাস বলেছেন: শীতের ভ্রমণ উষ্ণতায় কাটুক
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৫
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ বাকপ্রবাস
উষ্ণতার জন্য ছুটে গিয়েছিলাম। বেশ লেগেছে উষ্ণতা।
৫| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর লেখা। পড়তে পড়তে দূরে কোথাও হারিয়ে গিয়েছিলাম।
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৬
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর
দূরে কোথায় দূরে দূরে আমার মন বেড়ায় ঘুরে ঘুরে
৬| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৪৭
সামরিন হক বলেছেন: শুভেচ্ছা রইল।
২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১:৫৬
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ সামরিন হক
৭| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:১৭
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: বরাবরই আপনি অপূর্ব ভঙ্গিমায় লিখে যান। সুন্দর ভ্রমন প্রস্তুতিতে গল্পটি ভালো লেগেছে। প্রকৃতির এই রূপ সত্যি মন ভুলিয়ে দেয়। বিস্তারিত ভ্রমন সম্পর্কে আরো বড় কোন পোষ্ট দেখবো সে আশায় থাকতে পারি?
২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ২:০০
রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মাহমুদুর রহমান সুজন
প্রকৃতির রূপ অপরূপ এক এক জায়গায় এক এক রকম। আমার কাছে সবটাই ভালোলাগে ভীন্নতা দেখতে ছুটে ছুটে যাই।
প্রস্তুতি পর্বের ভুমিকার পর আসল ভ্রমণ বৃতান্ত আসবে। অনেক বড়ও হবে। পড়বেন আশা করি।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ ভোর ৬:৫২
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর। এবার তবে শীত আগে চলে এসছে। অক্টোবরের শেষে এখানে আসে না । আপনাদের ওখানে বরফ পড়ে । আপনার বরফ কাহিনী শীত জমিয়ে দেবে এখানে। কয়েকদিন এখানে দিনের বেলা সুন্দর মিষ্টি রৌদ ওঠে ।