নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের উৎসবমুখর সময় শেষ হয়ে গেল। নানা রঙের নানা বর্ণের ভাবনার মানুষগুলো জড়ো হয়েছিলেন হারবার ফ্রন্ট সেন্টারে। এই মানুষগুলো হেলাফেলার না। এরা এদেশের সম্মানিত লেখক। এই দেশের লেখক ছাড়াও দূর দেশ থেকে এসেছিলেন অনেক লেখক। যাদের সম্মানের সাথে প্রত্যেকের জন্য সময় নির্ধারন করা ছিল কথা বলার। নিজের লেখা নিয়ে বলার, কবিতা-গল্প পাঠ এবং আলোচনা, প্রশ্ন-উত্তর পর্ব ছাড়াও ছিল শিশুদের জন্যও আয়োজন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং লেখক বিষয়ে আলোচনা। সাথে বিভিন্ন দিন নানা রকম পার্টি তো ছিলই।
এগারো দিন ধরে লেখকের সম্মেলনে মেতেছিল লেইক অন্টারিয়র পাড়ে হারবারফ্রন্ট সেন্টার। অনেকদিন ধরেই এগারো দিনের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছিল আমার মনে। অন্য সব উৎসব থেকে সম্পূর্ণ আলাদা – ভালোলাগার মেধা মননের সম্মলনে যোগ দেয়ার আগ্রহ ছিল অধীর। চব্বিশে সেপ্টেম্বর অর্থাৎ চতুর্থ দিনটি শুরু থেকেই ছিল আমার জন্য প্রধান আকর্ষণের দিন। এই দিন আমি মঞ্চে থাকব। নিজের লেখা নিয়ে কথা বলার সুযোগ পাবো। এটা অন্য রকম ভালোলাগা অবশ্যই।
এছাড়া বাঙালি লেখক যারা অনুষ্ঠানে সেদিন যোগ দিবেন – দলে বলে সবাই মিলে আমরা নিজেদের সংস্কৃতি অন্য ভাষাভাষীদের মাঝে তুলে ধরার সুযোগ পাবো।। ইংরেজি আর ফ্রান্স ভাষার সাথে এবার নতুন করে যোগ হয়েছে আরবি ,তামিল আর বাংলা ভাষার লেখকদের অংশ গ্রহণ। বাংলা ভাষার লেখক অংশ গ্রহণ করবেন আর্ন্তজাতিক লেখক উৎসব টরন্টোর আয়োজনে! তবে কথা বলবেন ইংলিশে, কারণ আয়োজক এবং সকল শ্রোতার সুবিধার্থে।
কানাডার আদিবাসী লেখক ছাড়া সব ক্যানেডিয়ান লেখক ভিন্ন দেশের সংস্কৃতির ধারায় সম্পৃক্ত তারা। অন্য ভাষাভাষী হলেও মোটামুটি সবাই লেখালেখি করেন ইংরেজিতে। বা তার অনুবাদ হয়েছে ফরাসি বা ইংরেজিতে। সেজন্য অনেকে পাঠকের কাছে তারা সহজে পৌঁছে গেছেন।
আমি অনেক সময় একটা বিষয় লক্ষ করেছি। যখনই বিভিন্ন জাতীর ক্যানেডিয়ানদের সাথে আমার লেখার বিষয়ে কথা হয়েছে। তারা জেনেছেন আমি লিখি। আমার প্রকাশিত বই আছে। তখনই তারা বই পড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অনেক বেশি। কিন্তু বাংলায় লেখার জন্য অন্য ভাষী বন্ধুদের কাছে আমি পৌঁছাতে পারিনি আমার প্রকাশিত বই নিয়ে। অন্য ভাষীদের কাছে পৌঁছানোর জন্য একটি মাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে যা তারা বুঝেন। যদি তারা বাংলা ভাষা না শিখেন তবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে তাদের ভাষায় নিজেদের ভাবনা তাদের কাছে তুলে ধরার জন্য। আমরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার নিয়ে গর্ব করি। রবীন্দ্রনাথও অনুবাদ করেছিলেন বাংলায় লেখা অন্যদের বোঝার সুবিধার্থে।
চব্বিশ সেপ্টেম্বর রবিবার মোট এগারোজন বাংলাদেশীর অংশগ্রহণ ছিল সারাদিনের তিনটি অধিবেশনে। সব কটি অধিবেশন পরিচালনা করেন অত্যন্ত সাবলীলতার সাথে সুব্রত কুমার দাস।
সকাল সাড়ে এগারোটায় দিলীপ চক্রবর্তী, সুধীর সাহা এবং আমি, রোকসানা লেইস। এই তিন লেখককে নানা প্রশ্নে তাদের লেখার বিষয় তাদের লেখা শুরুর গল্প, লেখক জীবনের অভিজ্ঞতা বইয়ের প্রকাশ, সংখ্যা, চরিত্র, লেখার বিষয় অবস্থান ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্ন করেন মডারেটর সুব্রত কুমার দাস। মজাদার হাস্যরসে ভরপুর জ্ঞানতাপস ছিয়াসি বছরের যুবক দিলীপ চক্রবর্তী সাবলীলভাবে গল্পে বলে যান ওর বই প্রকাশ এবং লেখার বিষয়ে। কিছু মানুষ অনুপ্রেরণা দিয়ে অন্যের ভিতর থেকে কথা বের করে আনেন। তেমনি লেখাও লিখিয়ে নিতে পারেন। সুব্রত কুমার দাস তেমনি একজন মানুষ যিনি ছিয়াসি বছর বয়সের দিলীপ চক্রবর্তীকে বসে থাকতে দেন নাই। বই লিখিয়েই ছেড়েছেন। গল্পে গল্পে আমরা জানলাম সেই খবর।
সুধীর সাহা একজন ব্যস্ত মানুষ। ব্যারিস্টর কিন্তু ওর ভিতরও যে লেখার ভাবনায় অস্থির হয়ে থাকে সেটা জানলাম ওর লেখা এবং প্রকাশিত বইয়ের কথা শুনে। সুধীর সাহার প্রথম বইটি বাংলা একাডেমি প্রকাশ করেছিল এবং ওরও একজন সুব্রত ছিলেন যিনি ওকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়ে লেখার ভিতর ছেড়ে দিয়েছেন। যার চক্কর থেকে তিনি আজও বের হতে পারেননি। লিখেই চলেছেন কয়েক দশক ধরে। ওর অনুপ্রেরণাদায়ী মানুষটার নাম মায়নু।
এরপর প্রশ্ন করা হলো আমাকেও। বহুদিন মঞ্চে উঠি না। কথা বলি না। কথা বলতে হবে আবার ইংলিশে। শুধু বাংলাদেশি শ্রোতা থাকলে না হয় বাংলা বলে চালিয়ে দেয়া যেত। কিন্তু অনুষ্ঠানটি আর্ন্তজাতিক ফেস্টিবেল অফ অথারস। চারপাশে ঘুরঘুর করছে ইংরেজি বলা মানুষ। অডিয়েন্সে বসে আছেন ভীনদেশি। কোর্ডিনেটর এবং অন্যান্য সবাই ইংলিশ বলেন। রেকর্ড হচ্ছে সব কথা। বাংলা বলে তো পার পাওয়ার উপায় নাই। মাঝে মধ্যে কথা বলার চর্চা করতে হয়। কিন্তু কিছু অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার অনুরোধ থাকলেও আমার অনেক দিন কোন অনুষ্ঠানে যাওয়া হয় না কথা বলার জন্য। দু বছর আগে লুৎফুর রহমান জয় ওর পডকাস্টের জন্য কথা বলেছিলেন আমার সাথে এমনি এক ইন্টারভিউ নিয়ে। সেটা তিনি অনেক জায়গায় প্রচার করে ছিলেন। পার পেয়ে গিয়েছিলাম বাংলায় কথা বলে, কবিতা পড়ে।
ভেবেছিলাম কাগজ থেকে কয়েকটা পদ্য বা গল্প পড়ে পার পেয়ে যাবো। কিন্তু সুব্রত কথা বলতে চান, জানতে চান ভিতরের খবর । লেখা শুরুর গল্প। লেখার উত্থান সময়। অন্যদের কথা শুনি – নিজে যে কি বলব ভাবার আগেই দেখি আমাকে প্রশ্ন করছে। কিন্তু কেন যেন বেশ আনন্দ হচ্ছিল। স্বাভাবিক কথা বলায় সময়টা আনন্দপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। স্বচ্ছন্দ সাবলীলতায় কথা বলতে বলতে কখন যেন মনে হলো আমরা বেশ আড্ডা দিচ্ছি সবাই মিলে ।
সুব্রতর প্রশ্নের তীব্র তীক্ষ্ণ ধার, হারিয়ে যাওয়া অন্ধকার ঘরে পাথর ঘষে আলো জ্বালিয়ে দিতে লাগলো স্ফূলিঙ্গ ঝিলিক দিচ্ছে কত স্মৃতি মনে পরে যাচ্ছে। প্রায় ভুলে যাওয়া স্মৃতি,ঘুমিয়ে থাকা শুককিট প্রজাপতির রঙ্গিন ডানায় উড়তে লাগলো কথার শব্দে। নস্টালজিক স্মৃতিময় ইতিহাস গভীরে কখন যে ঢুকে গেলাম। আনমনে বলতে লাগলাম লেখার প্যাশনের কথা। রাইটিং এজ এ প্যাশন – অনুভুতিগুলো এত প্রবল হয় – সারা দিনের কর্ম ক্লান্ত হয়েও লিখতে বসি। না লিখলে কী হয়! কিছু না। কিন্তু আমার ভাবনা আমাকে থামতে দেয় না – লিখিয়ে নেয় গল্প, কবিতা, উপন্যাস ,ভ্রমণ, যাপিত জীবনের গল্প। গভীর রাতে আরামে না ঘুমিয়ে জেগে থাকি লেখার সাথে। কাজের ভিড়ে মাথা থেকে দূর হয় না ভাবনা, শব্দগুলো খাতার পাতায় লিখতে পারলে কত যে স্ক্রিপ্ট তৈরি হতো। আক্ষেপ থেকে গেলেও টের পেলাম লেখার প্যাশন আমাকে লিখিয়ে যাচ্ছে – লিখি ক্রমাগত নিজের ভালোলাগায়। যত বই প্রকাশ করেছি তারচেয়ে বেশি অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি ঘরে রয়ে গেছে আমার।
শ্রোতারা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে দেখছিলেন এক ঝাঁক শব্দ প্রজাপতির উড়াউড়ি। দর্শক সারীতে বসেছিলেন অনেক বাংলাদেশি। যাদের একটা স্যালুট দিতেই হয়। নিজেদের সময় নিয়ে তারা গিয়েছিলেন আমাদের অনুষ্ঠান দেখতে এবং প্রত্যেকটি অনুষ্ঠান তারা উপভোগ করেছিলেন । নিশ্চয় তারা উপভোগ করছিলেন – নয় তো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সারাদিন ব্যাপী বসে থাকা যায় না। দর্শকরা অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পুরোটা সময় অনুষ্ঠান দেখেছেন, শুনেছেন। এটা খুব ভালো লেগেছে ।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে সুব্রত দর্শকদের কাছে ছেড়ে দিলেন তিনজন লেখককে। শ্রোতারা যে আসলেই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছিলেন তা টের পাওয়া গেল যখন সুব্রত আমাদের শ্রোতাদের কাছে ছেড়ে দিলেন। দর্শকরা প্রশ্ন করবেন আমাদের বলা কথার উপর। দর্শক সারি থেকে প্রথমেই একজন দাঁড়িয়ে আমাকে প্রশ্ন করলেন। মম কাজী যখন আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম এবং কবিতার বিষয় উত্থাপন করে প্রশ্ন করলেন, মনোযোগী দর্শকের সামনে সতর্ক হয়ে কথা বলার বিষয়টাও আমার আবার শেখা হলো। দর্শকরা শুধু বসে থাকেননি প্রতিটা শব্দ তারা আগ্রহ নিয়ে শুনেছেন, মনে রেখেছেন এবং লেখককের কাছে জানতে চেয়েছেন।
প্রশ্ন করলেন সুজিত কুসুম পাল। প্রশ্ন করলেন জান্নাতুল নাইম। প্রশ্ন উত্তর পর্ব আরো চলত হয়তো, কিন্তু পাশ থেকে কোর্ডিনেটর ইশারা করছিলেন সময় শেষ হয়ে যাওয়ার। আরেকটি অনুষ্ঠান শুরু হবে এই মঞ্চে। নিময়ানুবর্তীতা অসাধারণ এই দেশে। এক মিনিট এদিক ওদিক হয় না কিছুতে। কোন অজুহাত চলে না দেরী করার। মাপা এক ঘন্টার অনুষ্ঠান এক ঘন্টায়ই শেষ হলো স্মৃতির পাতার কথায় গল্পে প্রকাশিত এবং অপ্রকাশিত বইয়ের বিষয়ে কথা বলে।
রাইটিং এ্যাজ এ প্যাশন দিনের প্রথম ভাগের এই পর্বটিতে, সুব্রত কুমার দাস নিজের দক্ষতায় অত্যন্ত সুন্দরভাবে তিনজন লেখককে দর্শকের সাথে তাদের কাজসহ পরিচয় করিয়ে দিলেন। ভিন্ন ধরনের ভাবনা, প্রত্যেক লেখকের মননে। এক ঘন্টা সময় যখন শেষ হয়ে গেলো মনে হচ্ছিল আরও কিছু বলার ছিল আরও সময় পাওয়া গেলে ভালো হতো। এভাবেই আমাদের অনুষ্ঠানটি বেশ সুন্দর ভাবে শেষ হলো।
এরপর লাঞ্চ টাইম । গ্রীন রুমে লাঞ্চ নিতে যাওয়ার মুখে দেখা হলো আয়োজক টিমের হ্যারিসের সাথে, ব্যস্তভাবে বেড়িয়ে যাচ্ছে সাথে কয়েকজন লোক। এর মাঝে সেকেন্ডের মধ্যে আমার দিকে চেয়ে নাম ধরে জিজ্ঞেস করল কেমন আছো। অনুষ্ঠান কেমন হলো। আজ কত গুলো মঞ্চে কত লেখকের অনুষ্ঠান চলছে। সবাইকে সে টেক কেয়ার করছে। এত লেখকের প্রত্যেককে নাম ধরে চেনার মতন স্মরণ শক্তি থাকা একটা দূর্লভ বিষয়। ওর সাথে আমার উদ্বোধনী সন্ধ্যায় কিছু সময়ের জন্য কথা হয়েছিল মাত্র।
এই যে আমাকে চিনল এত লেখকের মাঝে আলাদা করে এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। আমাকে অবহেলা করল না আমাকে মূল্যায়ন করল – বিষয়টা ভালোলাগা দিল। লাঞ্চ নিয়ে আমরা খোলা আকাশের নিচে পাতা টেবিলে বসে পিকনিক আয়োজনে খাবার খেলাম। পাশে তখন বাচ্চাদের খেলা গান বাজনা চলছে।
দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান শুরু হলো। তিনজন ইংরেজি ভাষী বাঙালি লেখককে নিয়ে। এদের দুজনের আবার জন্মও কানাডায়। কিন্তু বাংলা ঐতিহ্য কালচার তাদের সাথে আছে। তাদের কবিতায় পৌরাণিক মীথ যেমন পাওয়া গেলো তেমনি ইংরেজি লেখায় বাংলা শব্দ বর্ণ,পারিবারিক ঐতিহ্যের গল্প যে ভাবে ব্যবহার করেছে অসাধারণ নতুন একটি ধারণা পাওয়া গেলো। লেখক আরিফ আনোয়ার, ওর উপন্যাসে – যা ইংরেজিতে লেখা হয়েছে – সেখানে বাংলা বর্ণ সংযুক্ত করা হয়েছে। ভীনদেশী ভাষাভাষীর মানুষের কাছে বাংলা ভাষা কিছুটা পরিচয় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। লাবনী ইসলাম, আরিফ আনোয়ার আর কে গান্ধার চক্রবর্তী – এই তিন জনকে নিয়ে দ্যা অয়ার্ল্ড ইন আদার ওয়ার্ড।
ব্রিগান্টিন পেটিও তিনবেলা মেতে থাকল বাঙালিদের কথাবলায় পদচারণায়। এর মাঝে একই মঞ্চে অনুষ্ঠিত হলো ক্রিয়েটিং এ জায়েন্ট অব পিকচার এবং রাইটার্স দ্যা নেইভার ভিন্ন ভাষার লেখকের অনুষ্ঠান। কিছুটা শুনলাম কিছুটা অন্য অনুষ্ঠানে ঢুকে গেলাম।
এক সময় আমাদের বাংলা অনুষ্ঠানের শেষ পর্ব রিডিং বাংলা পোয়েম শুরু হওয়ার সময় এসে গেলো। কিছু লেখক তাৎক্ষণিক এসে উপস্থিত হলেন। কয়েকজন সকাল থেকেই ছিলেন এবং সবগুলো অনুষ্ঠানে দর্শক সারিতে ছিলেন এবং আমরা কয়েকজন মিলে অন্যদের অনুষ্ঠানও উপভোগ করছিলাম।
বিষয়টা উপভোগ্য – লেখকের ভাবনার বৈচিত্র্য কল্পনায় যে কোথায় হারায়। সাধারণের চিন্তার বাইরে অনেক কিছু তারা হাজির করেন পাঠকের জন্য। নতুন নতুন ভাবনার দ্বার খুলে দেন লেখক। মনে হয় এত মানুষ লিখছে – কী আর বাকি রইল। কিন্তু সব সময় নতুন কিছু নিয়ে লেখক পাঠকদের মাতিয়ে রাখছেন।
বাঙালি কবিরা নিজেদের কবিতা আবৃত্তি করলেন বাংলায়। তারপর অনুবাদ করা ইংলিশে পাঠ করলেন। নাহ যে সমস্ত বিদেশি দশর্ক বসেছিলেন তারা কিন্তু বাংলা শুনে উঠে চলে যাননি। বরং তারা মুগ্ধ হয়ে বাংলা শব্দও শুনছিলেন, বুঝতে না পারলেও। এ পর্বে অংশ গ্রহণ করলেন আঞ্জুমান রোজী, কাজী হেলাল, শিউলী জাহান, শেখর গোমেজ। উপস্থাপনায় সুব্রত কুমার দাস – যিনি এই বাঙালিদের আর্ন্তজাতিক সাহিত্য অঙ্গনে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেকদিন ধরেই কাজ করে যাচ্ছিলেন সংযোগকারী হিসাবে।
কিন্তু চারজন কবির কবিতা পাঠের শেষে সমাপ্তিটুকু না দেখেই আমি উঠে চলে যাই অন্য রুমে। চব্বিশ তারিখ বিকালে আরও একটা বিষয় দেখার আকর্ষণ আমার ছিল – সেজন্যই সব বন্ধুদের সাথে কথা না বলে আর গ্রুপ ছবিতে না থেকে আমি অন্য প্রোগ্রামটা দেখতে চলে গিয়েছিলাম।
সেই আকর্ষণীয় গল্পের বিষয়টা না হয় আরেকদিন হবে।
০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১:৫৪
রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
সবার জন্যই তাই নিজের মাতৃভাষায় কথা বলার আনন্দ এবং উপলব্ধী অনেক বেশি আনন্দের।
কিন্তু অন্যদের সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য অন্য ভাষাও দরকারী।
আপনি যেতে পারলে উপভোগ করতেন অনকে অনুষ্ঠান।
শুভেচ্ছা থাকল
২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৮:৪৯
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
আপনি কয়টি বই লিখেছেন?
০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১:৫৭
রোকসানা লেইস বলেছেন: প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা সাত
ধন্যবাদ শূন্য সারমর্ম
৩| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১০:২৩
শেরজা তপন বলেছেন: মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়লাম। অসাধারণ সে অনুষ্ঠানের মতই অসাধারণ আপনার ব্লগে উপস্থাপনা।
০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ২:০০
রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ শেরজা তপন।
আপনার উপলব্ধি আমাকে অনুপ্রানিত করল।
অসাধারন একটা সময় স্মৃতি সংযোজন হলো আমার, আপনাদের সাথে ভাগ করে নিলাম ভালোলাগা।
শুভেচ্ছা রইল
৪| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৫:৪৫
বাকপ্রবাস বলেছেন: আমাদের এতো এতো লেখক, তারচেয়ে অনুবাদ শিল্পটা গড়ে উঠলে মানটা আরো বাড়তো
০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ২:১১
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ বাকপ্রবাস সুন্দর একটা বিষয় বলেছেন।
আমরা আমাদের লেখকদের তেমন মর্যাদা দেই না।
অনুবাদ জরুরী বিশ্বের পাঠকের কাছে পৌঁছানোর জন্য।
অন্য ভাষার লেখা যত অনুবাদ হয় বাংলা ভাষায় লেখা তত অনুবাদ হয় না অন্য ভাষায়।
আমরা ভাষা নিয়ে গর্বিত কিন্তু আমাদের ভাবনা বিশ্বের পাঠকের কাছে পৌঁছানোর জন্য অনুবাদ দরকার।
নতুন প্রজন্ম ইংলিশে লিখছেন।
আমি কিছু কাজ করছি নিজের মতন । বিভিন্ন ইংলশি ম্যাগাজিনে আমার কিছু লেখা যাচ্ছে।
শুভেচ্ছা রইল
৫| ০৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৩:৩২
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
টিফা লেখক উৎসব এর গুরুত্ব ও তার প্রভাব অনেক সুদুর প্রসারী ।
সেখানে একটি আন্তর্জাতিক লেখক সমাবেসে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক
বাংলাভাষী কবির পদচারনা সত্যিই একটি গুরুত্বপুর্ণ অধ্যায়
বাংলাভাষী সহি্ত্যিকদের জন্য । সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত
হতে আগত কবি সাহিত্যিকদের সাধে আমাদের একজন
জনপ্রিয় ব্লগারের উপন্থিতি ও বাংলা সাহি্ত্য কর্মের সাথে লেখক
পরিচিতি বিশ্ব সাহিত্য পরিমন্ডলে উঠে আসায় আমরা গর্বিত ।
Roksana Lais is an author, poet and visual artist who
primarily writes in Bangla, but many times has her writings
translated into English. Roksana’s different works explore
various themes including international politics, history,
family dynamics, discrimination and several other societal
issues. She has published seven books — five novels,
one book of short stories and a poetry book:
In the Stream of the Unknown (2008), Connection (2009),
A Journey of Light (2011), Golden Light in a Rainy Moment (2011),
Blue Water in The Moonlight (2007) and In Search of Dream City (1987),
Letter to Sky (2019).
শুধু লেখক পরিচিতিই নয় সেখানে আপনার উপস্থিতির সুন্দর ছবিউ ধরা আছে
মোর কাছে , চাইলে তুলে দিতে পারি তাও । তবে সামু বলে কথা , অনুমতি
নেই বিধায় রেখে দিলাম সংগোপনেই ।
একটি মুল্যবান লেখা সমৃদ্ধ পোষ্ট পরিবেশনের জন্য ধন্যবাদ ।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল
০৭ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:০৯
রোকসানা লেইস বলেছেন: আর্ন্তজাতিক লেখক সম্মলন এবং সেখানে অন্যান্য লেখকের মাঝে অংশ নিতে পারাটা গুরুত্বপূর্ণ তো বটেই। অনেকটা সময় ধরে কাজ করেই এই সংযোগ ঘটানো গেছে।
হঠাৎ করে জায়গা পাওয়া যায় না। তবে জায়গা করে নেয়া গেছে এটাই একটা শুরু।
ডঃ এম এ আলী আপনি বরাবর ভালো রির্সাসার এই তথ্য খুঁজে পাওয়া তো নস্যি আপনার কাছে। ভালোলাগল দেখে ।
ব্লগের কারো ইচ্ছা হলে ঠিক খুঁজে পেয়ে যাবেন আপনার মতন।
ধন্যবাদ আপনার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যের জন্য।
আরো একটি কি দুটি লেখা পোষ্ট করব এই সময়ের ।
শুভেচ্ছা
৬| ০৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১১:২৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: রোকসানা লেইস,
আপনার এ লেখাটি পোস্ট দেয়ার দিনটিতেই পড়েছিলুম কিন্তু লগ-ইন না থাকায় মন্তব্য করা হযনি।
যেখানে কল্পনারা হাওয়ায় ওড়ে সেখানে লেখালিখি নিয়ে আপনার কল্পনাকেও উড়তে দেখে ভালো লাগলো। সাহিত্যের আন্তর্জাতিক আকাশে আমাদের একজন ব্লগারও যে ডানা মেলে উড়তে পেরেছেন , সে গর্ব আমাদেরই। অভিনন্দন।
এটা ঠিক, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে জায়গা করে নিতে ইংরেজী ভাষার বিকল্প নেই। যে ভাষাতেই কেউ লিখুক না কেন, বিশ্ব দরবারে নিজের মুখখানি দেখাতে হয় ইংরেজী রং মাখিয়ে। আশা করি নিজের লেখাগুলো বাংলার পাশাপাশি ইংরেজীতে অনুবাদ করার কাজটিও চালিয়ে যাবেন। কষ্টসাধ্য বটে তবে লাভটি হলো এই যে, নিজের লেখার স্বরূপ/ভাবটি অন্য কেউ ঠিকঠাক ফুঁটিয়ে তুলতে পারবেনা যা পারবেন আপনি নিজে।
০৭ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:২৯
রোকসানা লেইস বলেছেন: মন্তব্যের জন্য লগ-ইন করার জন্য বাড়তি ধন্যবাদ আহমেদ জী এস
অভিনন্দন গৃৃহীত হলো আনন্দের সঙ্গে ।
"বিশ্ব দরবারে নিজের মুখখানি দেখাতে হয় ইংরেজী রং মাখিয়ে"
ঠিক বলেছেন ।
তবু তো একটা সার্বজনীন ভাষা চালু আছে যার মাধ্যমে আমরা পৌঁছাতে পারি আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে। আর এটাও সুখের বিষয় যে ওদের বেশ আগ্রহও আছে আমাদের বিষয়ে জানার।
অন্যদিকে দুঃখ লাগে আমরা নিজেরাই নিজেদের ভুলে যাচ্ছি। সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে।
অনুবাদ নিজেই করার চেষ্টা করছি। অথবা সরাসরি লেখা সেটা সব চেয়ে সুবিধার দুটো ভাষার মাধুর্য কখনো এক নয়।
৭| ০৭ ই অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ১:০০
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি সহ বাংলাদেশের কয়জন লেখক এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেছিল? ছবিতে কি আপনাকে দেখা যাচ্ছে?
১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৩:৪২
রোকসানা লেইস বলেছেন: লেখাটি পড়লে আপনার প্রশ্নের উত্তর সব পেয়ে যাবেন।
ওখানে লেখা আছে,
"চব্বিশ সেপ্টেম্বর রবিবার মোট এগারোজন বাংলাদেশীর অংশগ্রহণ ছিল সারাদিনের তিনটি অধিবেশনে। সব কটি অধিবেশন পরিচালনা করেন অত্যন্ত সাবলীলতার সাথে সুব্রত কুমার দাস।
সকাল সাড়ে এগারোটায় দিলীপ চক্রবর্তী, সুধীর সাহা এবং আমি, রোকসানা লেইস। "
ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর
৮| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১১:৪১
মিরোরডডল বলেছেন:
এই যে আমাকে চিনল এত লেখকের মাঝে আলাদা করে এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। আমাকে অবহেলা করল না আমাকে মূল্যায়ন করল – বিষয়টা ভালোলাগা দিল।
I feel proud of you.
very well done লেইস আপু।
তোমাকে দেখতেও অনেক সুইট লাগছিলো।
২১ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:০২
রোকসানা লেইস বলেছেন: থ্যাংকিউ মাই ডিয়ার মিরোরডডল।
অনেক ভালোবাসা
৯| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৫০
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনাকে অভিনন্দন, এমন একটা মহতি অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত থেকে বর্তমান বিশ্বের বরেণ্য লেখকদের সাথে আপনি নিজের লেখা নিয়ে আলোচনা ও মত বিনিময় করার সৌভাগ্য অর্জন করার জন্য।
পোস্ট ভালো লেগেছে। + +
১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৯
রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ খায়রুল আহসান
আপনার পাঠ এবং মন্তব্য সমৃদ্ধ করল লেখাটি।
টিফা কানাডার একটি বড় লেখক সম্মেলন। এখানে যুক্ত হতে পেরে আমার নিজেরও অনেক আনন্দ হয়েছে। সাথে অবশ্যই অনেক সমৃদ্ধ হয়েছি সনামধন্য লেখকদের সঙ্গ এবং কথা বলার সুযোগ পেয়ে।
শুভেচ্ছ রইল
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৩ ভোর ৬:৩৩
কামাল১৮ বলেছেন: আপনি আমাদের ব্লগারদের গৌরব।আসলে সাহিত্য মাতৃভাষায় না হলে সঠিক উপলব্ধিটা আসে না।বাংগালীদের ইভেন্টগুলিতে থাকতে চেষ্টা করি।আপনি অবশ্য বলেছিলেন কিন্তু ঘর পান্টানো নিয়ে ঝামেলায় আছি।