নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মিসেস চ্যাটার্জী ভার্সেস নরওয়ে ছবিটা দেখার ইচ্ছা হলো প্রথম এর প্রকাশের খবর পাওয়ার পরই। এখানে মুভি থিয়েটারে যখন ছবিটা আসল তখন আমি চলে গেলাম দেশের বাইরে ঘুরতে। তারপর বেশ কিছুদিন মনেও ছির না আর ছবিটার কথা। ক'দিন আগে হঠাৎ করেই সামনে চলে আসল ছবিটা অনলাইনে। সময়ও ছিল তাই দেখে ফেললাম। একটু রাত জেগে। যদিও প্রচণ্ড ঘুম পাচ্ছিল। কারণ জেটলগ তখনও কাটেনি। সময়ের ব্যবধানে তখন প্রায় ভোর যদিও ঘড়ির হিসাবে বর্তমান মাত্র নটা। ঘুম চোখে দেখতে বসে ছবির শেষতক দেখার জন্য কাটাতে হলো দুই ঘন্টার বেশি সময়।
সত্য ঘটনার উপর নির্মিত ছবিগুলো বরাবর আমার পছন্দের। নরওয়েতে ঘটে যাওয়া একটি ইণ্ডিয়ান পরিবারের সাথে ঘটা ঘটনা নিয়ে তৈরি এই ছবিটা ।
নিজের বাচ্চাকে আর কেউ ভালোর জন্য নিয়ে যেতে পারে এই ঘটনা আমাদের দেশীয় ভাবনায় কখনোই মাথায় আসবে না। এমন কাযর্ক্রম কখনো সমর্থন যোগ্যও না। তবে উন্নত অনেক দেশে বাচ্চা রাস্ট্রের সম্পদ তাদের জন্য অনেক সুযোগ সুবিধা রাস্ট্রিয় ভাবে দেওয়া হয় পিতামাতাকে।
বাচ্চা অন্য পরিবারে বড় হয়ে উঠার ঘটনা নিয়ে অনেক গল্প সিনেমা হয়েছে, আমাদের দেশীয় গল্প কাহিনী সিনেমায় দেখেছি।
আমাদের দেশে অনেক গরিব পরিবার তাদের বাচ্চা বিক্রি করে দেয় ধনীর কাছে অর্থের বিনিময়ে। অনেক নিঃসন্তান দম্পতি অন্যের বাচ্চাকে পালক নেন। এমন ঘটনা অপরিচিত নয়। কিন্তু ছোট বাচ্চাকে অভিভাবক ঠিক মতন লালন পালন করছেন না এই অভিযোগে বাচ্চা নিয়ে যাওয়ার মতন ঘটনা উন্নত দেশ গুলোতে ঘটে।
তবে যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ প্রয়োজন হয় বাচ্চা ঠিক মতন লালন না করার। বাচ্চার গায়ে কোন রকম মারের দাগ ইত্যাদি থাকলে স্কুলের শিক্ষক অনেক সময় পুলিশে অভিযোগ করেন। এমন ঘটনা এখানে বাঙালী পরিবারে ঘটতে দেখেছি।
অভিভাবক মনে করেন বাচ্চা আমার, আমি শাসন করতেই পারি, নিজেরা শসনে বড় হয়ে উঠা মা বাবা অনেকের মজ্জাগত ভাবনা শাসন করেই বাচ্চাদের বড় করতে হবে। যা এখন বদল হয়েছে অনেকটা। তারপরও অনেকে ধারন করে থাকেন এই ভাবনা। এবং শাসন মানে বেধরক মারপিট করা এক ধরনের অভ্যাস অনেকের বাচ্চা ঠিক রাখার।
উন্নত দেশে থাকলে দেশীয় রীতিতে বাচ্চা শাসন করা চলে না। অনেক অভিভাবক সেটা জানেন না, মানেনও না। এবং ধরা পরেন অন্যদেশের নিয়ম না জেনে বাচ্চা শাসন করে।
আগে বাচ্চা তুলে নিয়ে যাওয়ার নিয়ম আরো কড়াকড়ি ছিল বর্তমানে অনেকটাই শীথিল।
তবে নিজেস্ব সংস্কৃতি শিখানো, হাত দিয়ে ভাত খাওয়ানোর জন্য বা বাচ্চা পড়ালেখায় পিছিয়ে যাওয়ার জন্য বাচ্চা তুলে নিয়ে যাওয়া। ঘরে বসে প্রতিদিন বাচ্চা পালন অবজার্ভ করা এমন নিয়ম কখনো শুনি নাই।
কতটা সঠিক ভাবে সিনেমায় দেখানো হয়েছে ঠিক জানিনা। এটা অতিরিক্তি মনে হয়েছে। তাছাড়া ঘরে মানুষ কিভাবে জীবন যাপন করছে। স্বামী, স্ত্রীর ঝগড়া ইত্যাদি যতক্ষণ দুজনের কেউ নিজে গিয়ে কমপ্লেইন না করছে অন্যের বিরুদ্ধে তার জন্য কোন এ্যাকশন নেয়াটা কোন সভ্য দেশ করে বলে আমার মনে হয় না।
এছাড়া বাচ্চা মায়ের অনুপস্থিতিতে যেভাবে তুলে নিয়ে চলে গেলো চাইল্ড সোসাইটির লোকজন এটা এক ধরনের চুরির মতন ঘটনা। অভিযোগ থাকলে। অভিযোগ দেখিয়ে নিয়ে যাওয়াই সমীচীন। কিন্তু ছবিতে তেমনটা না দেখিয়ে হঠাৎ মা অন্য ঘরে থাকার সুযোগে বাচ্চা তুলে নিয়ে পালাচ্ছিল সংস্থার লোকজন।
তবে বাঙালি মায়ের ছুটে গিয়ে বাচ্চার জন্য গাড়ির সামনে পরা। এবং পরে মায়ের প্রতিটি ভুমিকা বাচ্চার জন্য আকুলতায় একজন স্নেহমীর মায়ের ভুমিকা ঠিক ভাবে দেখানো হয়েছে। রানী মুখার্জিকে একটু মোটাসোটা চেহারায় দেখলাম অনেকদিন পরে। দু বাচ্চার মা হিসাবে বেশ মানিয়েছে। বাচ্চা অন্ত প্রাণ মায়ের ভূমিকায় ভালো অভিনয় হয়েছে।
একটা দুধের বাচ্চাকে মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য মায়ের ডিপ্রেশনের জায়গা থেকে কোন রকম আইন মায়ের পক্ষে না দেখিয়ে বারেবারে মাকে ভিক্টিম বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। উন্নত বিশ্বে এমন ঘটনা ঘটা সহজ মনে হয় না। ঘটনা বাড়াবাড়ি কিছুটা ছবির জন্য তৈরি করা হয়তো অনুমান করছি। অথবা হতেও পারে যেখানে চাইল্ড সংস্থাটার লোকজনের উদ্দেশ্য ব্যবসা করা একটা বাচ্চা রাখার বিনিময়ে সরকারের টাকা পাওয়া। এবং তাদের সৎ নিরপক্ষতার উপর ছিল অভিযোগ। এছাড়া বড় বাচ্চাটা অটিস্টিক সেটা তো স্কুলে কর্তৃপক্ষের জানার কথা । হেলথ ডিপার্টমেন্টের জানার কথা একদম ছোট বয়সে। এমন বিশেষ অবস্থার একটা বাচ্চাকে মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন করা এবং তার লেখাপড়ার অগ্রগতি নর্মাল হচ্ছেনা বলে অভিযোগ করাটাও অসামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হয়েছে। বিদেশে দেখেছি এমন বাচ্চাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা কত ছোট থেকে নেয়া হয়।
বাচ্চাকে সুরক্ষতি রাখার জন্য বেশ কিছু সুবিধা দেওয়া হয় অনেক উন্নত দেশে। যখন বাচ্চার দেখাশোনার লালন পালনের জন্য কেউ থাকে না। অথবা সত্যিকার অর্থে বাচ্চা মা বাবার কাছে নিযার্তিত হয়। সে সব বাচ্চাকে লালন পালনের উদ্দেশে এইসব সংস্থা প্রচুর আছে। এবং অনেক সময় ফস্টার পেরেন্টস যারা একটা বাচ্চাকে রাখার বিনিময়ে টাকা পায়। এবং বাচ্চাকে যথাযথ ভাবে দেখভাল করে যত্ন নিয়ে। নিজের বাচ্চার মতনই লালনপালন করে এইসব ফস্টার পেরেন্টস অন্যের বাচ্চাদের। এদের কার্যক্রম সংস্থার লোকজন পর্যবেক্ষণ করে। অন্য ভাবে সরকারের টাকা হাতিয়ে নিয়ে বাচ্চদের যেন তেন ভাবে দেখাশোনা করার মতনও ফস্টার পেরন্টেস এবং সংস্থাও প্রচুর আছে। খারাপের হাতে পরে অনেক বাচ্চার জীবন অতিষ্ট হয়।
অনেক ক্ষেত্রে বাচ্চা পালনটা ব্যবসায়িক হয়ে উঠে অনেক ফস্টার পেরেন্টসের কাছেও। বাচ্চাদের জন্য যে অর্থ পাওয়া যায় সে অর্থ বাচ্চার জন্য ব্যয় না করে নিজেরা হাতিয়ে নেয়। বাচ্চারা অসহায় অনেক কিছু সঠিক ভাবে বোঝে না এবং তাদের যাওয়ার কোন জায়গা নেই। অভিযোগ করার কেউ নেই। তারা নির্যাতিত হয় ফস্টার পেরেন্টেসের কাছে। একই ভাবে সংস্থা যেখানে অভিভাবকহীন বাচ্চাদের হোস্টেলের মতন এতিমখানায় রাখা হয়।
অসংখ্য গল্প আছে এসব সত্যিকাহিনীর ভিত্তিতে। আমার জানাশোনা হয়েছে কিছু মানুষের সাথে, যারা বড় হয়েছে ফস্টার পেরেন্টস বা এতিমখানায়। এদের গল্প দুরকম কেউ খুব ভালো জীবন পেয়েছে ফস্টার অভিভাবক বা এতিমখানায় বিপরীতে অনেকে পেয়েছে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার জীবন। যাদের ছোটবেলাটা ছিল কষ্ট আর ভয়ের।
মিসেস চ্যাটার্জির কাছ থেকে তুলে নিয়ে ওর বাচ্চাকে যেসব জায়গায় রাখা হয়েছে সেখানে ওরা খুব যত্নে ছিল না। ভালো ছিল না । অথচ বাচ্চারা মায়ের কাছে ভালো নাই সে জন্যই তাদের মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন করে আনা হয়েছে।
যে সংস্থা মিসেস চ্যার্টজির বাচ্চা নিয়ে গেলো তাদের বিরুদ্ধেও বাচ্চাদের ভালো ভাবে দেখভাল না করে অর্থের জন্য ইমিগ্রেন্টদের বাচ্চাদের অহেতুক তুলে আনার অভিযোগ ছিল। ব্যবসাটাই তাদের মূল লক্ষ ছিল। কিন্তু অসহায় মা সেটা কোন ভাবে প্রমাণ করতে পারছিল না।
এই গল্পে মা একা বাচ্চাদের ফিরে পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করে গেছে যতটুকু তার বুদ্ধিতে তার সামর্থে কুলিয়েছে। হয়তো অরো একটু বেশি সহজ হতো যদি সাথে স্বামীর মিস্টার চ্যাটার্জীর সমর্থন পাওয়া যেত। কিন্তু প্রেম করে বিয়ে করাটাই একটা বড় ব্যাপার অনেক পুরুষের কাছে। কিন্তু বিয়ের পর স্ত্রী এবং সন্তানের প্রতিটি সময়ের সাথে নিজেকে যুক্ত করার যে ইচ্ছা থাকা উচিৎ তা যেমন দেশীও অনেক স্বামীর মধ্যে নাই, মিস্টার চ্যাটার্জী সেই একই দোষে দুষ্ট শুধু না তার ভিতরে নিজের জীবন প্রতিষ্ঠা করার জন্য স্ত্রী, সন্তানকে অবহেলা করে এবং তাদের ব্যাবহার করার মতন বড় একটা ট্রেজেডিও জড়িত।
বেচারা মিসেস চ্যাটার্জী সরল বিশ্বাসে যতবার স্বামীর কথা বিশ্বাস করেছে ততবার ঠকেছে। নিজের সন্তান তুলে নিয়ে যাওয়ার পর মা যতটা অস্থির, বাবার মধ্যে তেমন কোন হেলদোল ছিল না বরং নিজের ক্যারিয়ারে, সিটিজেনশিপের প্রক্রিয়ায় এই ঘটনা কি প্রভাব পরবে তা নিয়েই বেশি চিন্তিত। বিদেশে থেকে বিতাড়িত না হয়ে বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য বাচ্চারা কাছে না থাকলেও সেই দেশের নিয়ম মেনে নেয়ার মতন মানসিকতা ছিল বাবার। নিয়ম পালন করে বাচ্চা কিছুদিন দূরে রেখে নিয়ম টিয়ম শেখার পর কদিন পরে বাচ্চা পেয়ে যাবে, এই বিশ্বাসে স্বাভাবিক বাবা। মায়ের অস্থিরতা ওর ক্যারিয়ারে প্রভাব পরবে বলে সব দোষ স্ত্রীর উপর দিয়ে নিজেকে সাধু করে রাখার মানসিকতা কতটা নিচুতার পরিচয় সেটা হয়তো এ নিজের ব্যাপারে ব্যাস্ত থাকা এমন ধরনের মানসিকতার মানুষ কখনো বোঝে না।
যেখানে মায়ের জীবনে, খাওয়া ঘুম হারাম হয়ে গেছে বাচ্চা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে। এবং মায়ের অনেক চেষ্টার পর বাচ্চাদের তাদের কাকার কাছে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয় সেখানে গোপন অর্থ লেনদেনে একটা মাকে বোকা বানিয়ে সামিল হয়ে যায় বাবা।
সন্তানের বিনিময়ে অর্থ নেয়া এবং নিজের স্ত্রী এবং সন্তানের কষ্টটা অনুভব না করা যে কত বড় একটা ক্রিমিন্যাল মিসেস চ্যাটার্জীর স্বামী তা দেখে সত্যি বড় কষ্ট পেয়েছি।
এমন অভিজ্ঞতা অনেক নারীর জীবনে ঘটে। হয়তো অনেকে প্রকাশ করেন না। নিরবে সয়ে যায়। অনেকের কোন সুযোগ থাকে না প্রকাশ করার।
মা মিসেস চ্যাটার্জী একটা সময় বাচ্চাদের নিয়ে নরওয়ে থেকে সুইডেনে পালিয়েও যায় পরিণতী কি হবে কিছু বিবেচনা না করে। বাচ্চাদের কাছে পাওয়াই তার চিন্তা।
এতদূর গিয়েও বাচ্চাদের নিজের কাছে রাখতে পারে না। আইনের হাত অনেক লম্বা ঠিক ধরে ফেলে। বাচ্চা নিয়ে যায় মায়ের থেকে।
এই ছবির একটা অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্য ছিল যখন দুজন মানুষ নিরব বসে আছে গাড়িতে। গাড়ি চলছে ফিরছে বাড়ি দুজন মানুষ।
স্বামী ভাবছে আবার একটা ঝামেলা করল স্ত্রী যে বাচ্চাদের নিয়ে পালিয়ে গিয়ে এবনর্ম্যালের মতন। আর খানিক সময় কাছে পাওয়া বাচ্চাদের হারিয়ে নির্বিকার মা। আকাশে মেরুজ্যাতি অপূর্ব সুন্দর ভঙ্গীমায় নৃত্য করছে। অথচ কারো প্রকৃতির এই সৌন্দর্য দেখার প্রতি কোন আগ্রহ নাই।
হয়তো অরোরার প্রতি আমার নিজের আগ্রহের জন্য দৃশ্যটা অপূর্ব লেগেছে আমার কাছে। দৃশ্য ধারন করার সময় তারা অরোরা পেয়ে গেছে মূল গল্পের সাথে এর কোন যোগ নেই।
শেষে দেশে বিচার হওয়ায় হয়তো মা বাচ্চাদের ফিরে পেল। নয়তো আঠার বছর হওয়ার আগে মায়ের সাথে বাচ্চাদের দেখা হওয়ার কোন সম্বাবনা ছিল না।
১৫ ই জুন, ২০২৩ রাত ১১:২১
রোকসানা লেইস বলেছেন: সত্য ঘটনাটাকে অসত্য ভাবে প্রচার করাটা ঠিক না। কেবল কাল্পনিক গল্প হলে মেনে নিতে সমস্যা ছিল না।
বিভিন্ন দেশের নিয়ম জেনে নেয়াটা জরুরী কাজ করার আগে।
অনেক আলোচনা হয়ে গেছে ব্লগে, দেখার সুযোগ হয়নি আমার তাহলে হয় তো এই পোষ্ট দিতাম না আমি।
কিছু দিন নিয়ম করে আসতে পারছি না ব্লগে।
ভালো থাকবেন।
২| ১৪ ই জুন, ২০২৩ সকাল ৮:২৪
রানার ব্লগ বলেছেন: বাংগালী সেন্টিমেন্ট আর ইউরোপিয়ান সেন্টিমেন্টে ব্যাপক পার্থক্য আছে। যেখানে বাংগালী মায়েরা পুর্ন বয়স্ক সন্তানের ব্যাগে হাতানোটা তার অধিকার মনে করে বা পুর্ন বয়স্ক সন্তানের রুমে কোনরকম পুর্ব সতর্কতা না দিয়ে ঢুকে পরাটাকে উচিত কাজ মনে করে সেখানে ওই ধরনের সিচুয়েশানে মিসেস চ্যাটার্জি যা করেছেন তা খুবি স্বাভাবিক। আর সিনেমা ওয়ালারা এই সেন্টিমেন্টটা পুজি করে ব্যাবসা করেছে।
১৫ ই জুন, ২০২৩ রাত ১১:২৮
রোকসানা লেইস বলেছেন: ঠিক বলেছেন রানার ব্লগ। বিস্তর পার্থক্য অবশ্যই কালচারাল ডিস্টেন্স, পূবে পশ্চিমে অনেক। আবেগ অনুভূতি অনেক কিছুর পার্থক্য।
তারপরও আমি এমন ভাবে বাচ্চা নেয়ার ঘটনা আর কোন মুভিতে দেখিনি।
ইমোশনটাকে বেশি ব্যবহার করেছে পরিচালক যা অনেক কিছুর সাথে মিলেনি।
৩| ১৪ ই জুন, ২০২৩ সকাল ৮:৫০
শেরজা তপন বলেছেন: মুলত মিঃ ব্যানার্জীর বন্ধু ও প্রতিবেশী তাঁর হাতে মিসেস ব্যানার্জীর আবিউজড হওয়ার বিষয় নিয়ে পুলিশের কাছে নালিশ করে। তাঁর পর থেকেই তাদের নজরদারীতে রাখা হয়।
নরওয়েতে এমন সহস্রাধিক ঘটনা ঘটেছে! আপনি অনলাইনে সার্চ দিলেই দেখতে পাবেন। ভারতীয় সিনেমাতে দর্শক টানার জন্য সবকিছু একটু বাড়িয়ে দেখানো হবে সেটাই স্বাভাবিক।
যেখানে এর সাথে নরওয়েজিয়ান সরকার, তাদের আইন আদালত, চাইল্ড কেয়ার হোম এমনকি ভারতের সুষমা স্বরাজ এর নাম পর্যন্ত জড়িয়ে আছে সেখানে একেবারে বানিয়ে এ গল্প চালাতে পারবে না। তাঁর উপরে নেটফ্লিক্সের মত আন্তর্জাতিক প্লার্টফর্মে এমন সিনেমা চালানো সম্ভব ই নয়। অলরেডি আইন আদালতের ঝামেলায় জড়িয়ে যেত।
ইউরোপিয়ান লোক হলেই যে তারা ফুলের মত নিস্পাপ চরিত্রের হবে না সেটা আপনিও ভাল করে জানেন। সময় বিশেষ ওরা আমাদের থেকে অনেকগুন নিঃশ্বংস বা অমানবিক হতে পারে।
তবে রিভিউ ভাল হয়েছে।
১৫ ই জুন, ২০২৩ রাত ১১:৪২
রোকসানা লেইস বলেছেন: হ্যাঁ ঠিক বলেছেন, মিস্টার চ্যাটার্জি বেশ ক্ষ্যাপাটে টাইপের এজন্য সে পরিবেশী বা সহ কর্মিকেও মারতে উদ্যাতো হয়েছিল কিন্তু এসবের জন্য তার বিরুদ্ধে কোন এ্যাকশন দেখা গেলো না।
আর স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সমস্যা সমাধান করতে এসে তাদের আলাদা থাকার ব্যবস্থা না করে বাচ্চা নিয়ে যাওয়াটা অদ্ভুত ঠেকেছে আমার কাছে।
স্বামী স্ত্রীর সমস্যা হলে তাদের আলাদা করে দেয়। বাচ্চাদের দুজনের মধ্যে ভাগাভাগী করে থাকতে হয় এমনটা দেখেছি বর্তমান সময়ে।
শুধু নরওয়ে নয় অনেক দেশেই এমন ঘটনার প্রচুর নজীর আছে। তবে মূল ছবিটার বিষয়ে এই ঘটনাটাই আলোচ্য।
সত্য ঘটনায় বাড়িয়ে দেখালেও সামঞ্জস্য রাখা দরকার ছিল। বাড়াবাড়ি অনেক বেশি হয়েছে। পরিচালক হয়তো শুধু ভরতীয় সেন্টিমেন্ট মনে রেখেছেন। তবে ভারতীয়রাও এখন ভিনদেশে থাকেন এবং নিয়মগুলো ভালো জানেন সেদেশের সেটা মনে রাখেননি। মনে রাখলে আরো ভালো হতো ছবিটা।
ভারতে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত, ছবিটির সমালোচনা করেছেন। চ্যাটার্জি বনাম নরওয়ে' পারিবারিক জীবন এবং সাংস্কৃতিক পার্থক্য সম্পর্কে নরওয়ের অবস্থানের বাস্তবিক ভুল এবং ভুল উপস্থাপনের জন্য। এমন একটা খবর আমি দেখেছি।
ভালো করতে গিয়ে খারাপ করার অনেক উদাহরণ আছে। এবিষযটা আমি লেখায় উলেক্ষ করেছি।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য
৪| ১৪ ই জুন, ২০২৩ সকাল ৯:০৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার লেখায় আপনি নিরপেক্ষভাবে ছবির দুর্বল দিক এবং চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সার্ভিসের ভালো দিক এবং বাড়াবাড়ির দিকটা সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। এই কারণে আপনার লেখাটা ভালো লেগেছে। অনেকে একতরফাভাবে চিন্তা করে।
১৫ ই জুন, ২০২৩ রাত ১১:৪৪
রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর।
জেনেছি অনেক লেখা এসেছিল ব্লগে এই ছবির বিষয়ে। আমার দেখা হয়নি লেখাগুলো। তবে আমি নিজের উপলব্ধ মতনই লিখেছি। এবং জানা বিষয়গুলো দিয়ে তুলনা করেছি।
৫| ১৪ ই জুন, ২০২৩ দুপুর ১:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটা দেখি নি।
একমাস ধরেই দেখছি নেটফ্লিক্সে এসেছে।
দেখব দেখব করে দেখা হয় না।
ইচ্ছা আছে দেখব।
১৫ ই জুন, ২০২৩ রাত ১১:৪৬
রোকসানা লেইস বলেছেন: দেখে ফেলো খারাপ লাগবে না দেখতে। হিন্দি বাংলা ইংলিশ মিলিয়ে রানী মুখার্জির ডায়লগ গুলো শুনতে মজা লেগেছে।
৬| ১৪ ই জুন, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৫
ঢাবিয়ান বলেছেন: নেটফ্লিক্সে দেখেছি ছবিটা। সত্য ঘটনা অবলম্বনে যেহেতু এই ঘটনা তাই মিথ্যাচারের সুযোগ নাই বলেই মনে হয়। আমার যেটা মনে হয় কোণ বাচ্চা যদি নিজ পিতা মাতার কাছেই নিরাপদ না হয়, তবে অন্য কোণ জায়গাতেও সে নিরাপদ নয়।
১৬ ই জুন, ২০২৩ রাত ১২:১৫
রোকসানা লেইস বলেছেন: সেটাই বাড়াবাড়ির সুযোগ নাই সত্য ঘটনার ভিত্তিতে নির্মিত ছবির বেলায়।
কোণ বাচ্চা যদি নিজ পিতা মাতার কাছেই নিরাপদ না হয়, তবে অন্য কোণ জায়গাতেও সে নিরাপদ নয়।
কথাটা একদম ঠিক। আবার অনেক বাচ্চা নিজ বাবা মায়ের কাছেও অনেক নির্যাতিত হয়। এই লিখাটা লিখতে অনেক গুলো ঘটনা মনে পরছিল।
ধন্যবাদ ঢাবিয়ান।
৭| ১৫ ই জুন, ২০২৩ রাত ৩:৩০
কাছের-মানুষ বলেছেন: আমার ছবিটি দেখা হয়নি, তবে রিভিও পড়েছি এবং ছবির কাহিনী কিছুটা জেনে অবগত হয়েছি কি ধরনের গল্প থাকতে পারে! আপনার রিভিও ভাল হয়েছে!
তবে চাইল্ড কেয়ারের লোকেরা খুব সুন্দর ভাবে চকলেট খাইয়ে পা টিপে টিপে বাচাকে নিয়ে যাবে এটা আমিও বিশ্বাস করতাম, কিছুদিন আগে একটি ভিডিওতে দেখলাম বাচ্চা নেয়ার দৃশ্য। একটি বাচ্চাকে নিয়ে যাচ্ছে বয়স ৫-৬ হবে, বাচ্চাটি চিৎকার করছে বাবা মা ছেড়ে যাবে না, তার আত্ম চিৎকারে দর্শক হিসেবে আমার মনও আদ্র হয়ে উঠেছিল, টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, এই দৃশ্য সহয় করার মত না ! আমার মনে হয় না কোন সন্ত্রান নিজের ইচ্ছেয় সেখানে যেতে চাবে!
৮| ১৬ ই জুন, ২০২৩ রাত ১২:২২
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ কাছের মানুষ।
ছবিটা দেখতে ভালোই লাগবে। সুযোগ পেলে দেখে ফেলুন।
কী মর্মান্তিক ঘটনা, কোথায় হয়েছে এমন ঘটনা?
বাচ্চারা অভিভাবকের কাছে নির্যাতিত হলেও অভিভাবকের কাছেই নিজেকে নিরাপদ মনে করে। বাচ্চাদের এভাবে তুলে নেওয়ার বিষয়টি বন্ধ হওয়া উচিত যদি এখনও এমনটা ঘটে।
যারা নিজে পালতে পারে না বলে বাচ্চা সেচ্ছাসেবীদের কাছে তুলে দেয় সেই বাচ্চাদেরই লালন পালন করা উচিত সংস্থাগুলোর।
তবে এদের কার্যক্রম মনিটর হওয়া খুব জরুরী।
৯| ১০ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:০৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমি কোন দেশে মাইগ্রান্ট হই নি, তবে কয়েকটা উন্নত দেশের সোশ্যাল ও চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সিস্টেম নিয়ে কিছুটা অবগত আছি, যদিও তা অনেকটা পাখির দৃষ্টিতে দেখা। ভালো-মন্দ দুটোই রয়েছে, তবে উন্নত দেশগুলোতে মদ্যপ ও সাইকোপ্যাথ মাতাপিতার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন থেকে নিষ্পাপ শিশুদেরকে সুরক্ষার জন্য এ সিস্টেমের বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে।
"বাড়াবাড়ি অনেক বেশি হয়েছে" - ছবিটা আমি দেখিনি, (এ কথাটা স্তবীকার করেই বলছি যে) কয়েকটা রিভিউ পড়ার পর আমার কাছে আপনার এ কথাটা একদম ঠিক বলে মনে হয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে যে আপনার এ পোস্টটা নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকেই লেখা হয়েছে। পোস্টে এবং কয়েকটা প্রতিমন্তব্যে ব্যক্ত আপনার নিজস্ব ভাবনাগুলোকে যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে।
পোস্টে ষষ্ঠ প্লাস। + +
১১ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:৫৩
রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ খায়রুল আহসান আপনার মন্তব্য সমৃদ্ধ করল লেখাটা।
উন্নত দেশে শিশুদের রাষ্ট্রিয় সম্পদ মনে করে অনেক সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়। সেটা কখনো ভালো আবার কিছু ক্ষেত্রে খারাপও হয়।
অবশ্যই মূদ্রার এপিঠ ওপিঠ সব জায়গায় আছে।
আমাদের দেশের এতিম খানার মতন ওর্ফেনাজ এবং গীর্জায় শিশুদের রাখা হতো।
অনেক এতিম বা অবহেলিত শিশু যেমন সুযোগ পেয়েছে তেমননি অনেক কষ্টকর ঘটনাও আছে।
কানাডায় আদিবাসিদের শিশুদের শিক্ষা দেয়ার নামে তুলে নিয়ে যেত এবং তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলত।
বছর তিন / চার আগে এ নিয়ে অনেক হৈ চৈ হলো বর্তমান সরকার ক্ষমা চাইল প্রায় একশ বছর আগে করা অনৈতিক সরকারের কাজের জন্য।
এ্যানা অফ গ্রিন গ্যাবলস নামে কানাডার বিখ্যাত একটা উপন্যাস আছে লেখক লুসি মড মন্টগোমেরি । অর্ফেন মেয়েটি দত্তক নেয়া পারিবারের উত্তরাধিকারি হয়ে উঠে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই জুন, ২০২৩ সকাল ৭:৩৬
কামাল১৮ বলেছেন: ছবিটা বানিয়েছে ভারতিয় কোন লোক।বিষয়টা তার কাছে নতুন।উন্নত কোন দেশের লোক বানালে উপস্থাপনাটা অন্য রকম হতো।
কয়েক দিন আগে এটা নিয়ে ব্লগে বিস্তর আলোচনা হয়েছে।আবার নতুন করে আলোচনায় আসলো।