নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ব্রুকলীনের তিরিশতলা এ্যাপর্টমেন্টের একটা ফ্লাটে একজন বাংলাদেশি থাকেন। এই বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়েছেন সম্প্রতি, দেশ থেকে স্ত্রী পুত্র আসবে তাদের নিয়ে সুখে দিন কাটবে এই অপেক্ষায় অধীর হয়ে আছেন। সব প্রস্তুত অথচ কাগজপত্রের কাজ চলছে কিন্তু আগাচ্ছে না। পরিবার নিয়ে থাকার জন্য যে বাসায়টা ঠিক করেছেন, নিজের একার জন্য তা বিশাল। আর কাগজপত্রের কাজ ফুরাচ্ছে না মাস খানেকের ভাবনা বছরে ঠেকেছে। সময় চলে যাচ্ছে সময়ের মতন। বাচ্চাটা প্রতিদিন বড় হয়ে যাচ্ছে। সুন্দর সময়গুলো একসাথে যাপন করা হচ্ছে না। আরও সময় লাগবে। এ সময় এক সন্ধ্যায়, একটি ছেলের সাথে দেখা উনার বাড়ির নীচে। ছেলেটি অসহায়ের মতন ঠাণ্ডায় জরো সর অবস্থায় কি করবে বুঝতে পারছে না। হাতে কিছু মালসামালসহ ছেলেটি এদিক সেদিক তাকাচ্ছে।
উৎসুক হয়ে জানতে চাইলেন, কিছু খুঁজচ্ছেন? ভেবেছিলেন. ম্যক্সিকান কিন্তু কথা বলে জানলেন ছেলেটি বাঙালি।
ডিভি ভিসা পেয়ে সদ্য দেশ থেকে এসেছে। একটা ঠিকানা ছিল ব্রুকলিনের পরিচিত একজনের। হারিয়ে গেছে ঠিকানাটা। অনভ্যস্ত অনেক কাগজপত্রের ব্যবহারে এয়ারপোর্টে কখন কোথায় পরে গেছে । এখন এত বড় নিউ ইয়র্ক শহরে চেনা লোকটাকে কী ভাবে খুঁজে পাবে সে ভাবনায় অস্থির হয়ে যাচ্ছে। ট্যাক্সি নিয়ে ব্রুকলিন এসেছে কিন্তু পরিচিত মানুষটিকে কোথায় খুঁজে পাবে জানে না। অসহায় একটা অবস্থায় ঠান্ডায় কাঁপছে ছেলেটা। যদিও শীত এখনও পরেনি তবে অক্টোবরের শীতেই সে অস্থির হয়ে উঠছে।
অসম্ভব নার্ভাস ছেলেটাকে ভদ্রলোক তার বাড়িতে নিয়ে আসলেন। পুরোই অন্যরকম একটি পরিবেশের মানুষ নতুন দেশে জীবনযাপন করতে এসে কত পদে পদে কত কিছুতে ঠেকে যায়। চেনা জানা বা সুহৃদ একজন মানুষ না হলে সহজ কাজটা সহজে কিছুতেই করে উঠতে পারে না। যারা এ সবের ভুক্তভূগি তারই শুধু উপলব্ধি করতে পারবে সেই অসহায় মূহুর্তগুলো।
সবচেয়ে বড় অসুবিধা হয়, দুটি দেশের নিয়ম কানুন একদম আলাদা। যে দেশ থেকে আসা হয়েছে সেখানে, সব কাজই হয় মামা চাচার জোড়ে, পরিচিত বা টাকা না থাকলে কোন কাজ হতে পারে এমন বিষয় ভাবাই কষ্টকর সে দেশের মানুষের। আর যে দেশে এসেছে সেখানে সব কিছু একজন মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ি সে নিজেই আবেদন করে পেতে পারে নিয়ম মাফিক সব কিছু। শুধু জানতে হবে কি করতে হবে, কোথায় যেতে হবে। অথচ না জানার জন্য সব কিছুই মনে হয় বিশাল পাহাড় সমান। ভাষাও এক বিশাল সমস্যা। তাই সব কিছুতেই কাছের পরিচিত একজনকে ভরষা করতে ভালোবাসে নতুন বিদেশে আসা মানুষ।
এত কাগজের হিসাবে চলতে হয় এই দেশে অথচ দেশে এ সবের কোন বালাই নাই। প্রথমেই একটা নাম্বারের জন্য আবেদন করতে হবে। যে নাম্বারটি নামের চেয়েও বেশী জরুরী। পরদিন সকালে ছেলেটাকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন অফিসে গিয়ে সব কাগজপত্র দাখিল এবং আবেদন শেষ করে। রাস্তায়, বাসে এবং সাবওয়েতে করে কি ভাবে চলা ফেরা করতে হয় এবং সাবওয়ের একখানা ফ্রি-ম্যাপ কাউন্টারে চেয়ে নিয়ে ছেলেটির হাতে ধরিয়ে দিয়ে আরো আনুসাঙ্গিক কিছু বিষয়ে শিক্ষা দিলেন। সেদিন উনার কাজের ছুটির দিন ছিল এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন না হওয়ায় তিনি ছেলেটিকে নিয়ে সব কাজ করে দিতে পারলেন। তবে এর জন্য নিজের ছুটির দিনের কাজগুলো পরের সপ্তাহের জন্য জমা রাখতে হলো। সব কাজের শেষে বাঙালি একটি দোকানে ঢুকে খাওয়া দাওয়া সারলেন। এবং পরিচিত একজন দোকানদারের সাথে কথা বলে ছেলেটিকে পরদিন থেকে কাজে লেগে যাওয়ার একটা ব্যবস্থ্যা করে দিলেন।
ছেলেটি উনার সাথে উনার বাসায় ফিরে এলো এবং সেখানেই থাকার জন্য স্থায়ী হলো। কথা হলো উনাকে কিছু ভাড়া দিতে হবে। আমেরিকায় পৌঁছার পর সব কাগজ পত্রের জন্য আবেদন করা হয়েছে, সেগুলো আসতে মাসখানেক সময় লাগবে। তারপর কাজ করতে পারবে। কিন্তু বাঙালি দোকানে। ক্যাশে কাজ করার সুবিধা আছে। বসে না থেকে কাগজ আসা পর্যন্ত কিছু কামাই হলো। যদিও পরিমাণ কম থাকবে। অপরিচিত একজন মানুষ আপন হয়ে উঠল। আর শুরু হলো নতুন একটা দেশে নতুন জীবন।
এই সাহায্যকারী মানুষটিও যদি সঠিক না হয়, তা হলে আরেক ভূগান্তিতে পরতে হয়।অনেক মানুষের জীবনে সেও এক বিভিষিকা । সে কথা পরে কখনও বলব।
কিছুদিন পর সে ছেলেটির পরিচিত একটি ছেলে আসল এবং ওর কাছেই উঠল। এ ভাবে এক সময় পরিচিতর সূত্র ধরে ডিবি ভিসা পাওয়া প্রায় দশ বারোজন মানুষ ঐ এ্যাপার্টম্যান্টে থাকা শুরু করল। বিভিন্ন জেলার মানুষ একটি ঘরে যেন একটি বাংলাদেশ।
যারা সবাই একা। কারো বউ বাচ্চা আছে দেশে কেউ এখনও বিয়ে করেনি। একরুমের বাড়িটির কোন সৌন্দর্য আর নাই। একট বসার ঘর ও একটি শোয়ার ঘরে দশ বারোটি খাটপাতা। বিভিন্ন এ্যাঙ্গেলে। কেউ সারাদিন কাজ করে। কেউ সারা রাত কাজ করে। কেউ সকাল থেকে রাত দুপুর পর্যন্ত ওভার টাইম কাজ করে বাড়ি ফিরে। বাড়ি ফিরে কোন রকমে খাওয়া আর গা এলিয়ে বিছানায় গভীর ঘুমে অচেতন এক একটি দেহ। যারা দেশে মোটামুটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। গায়ে খাটা কাজ তেমন কিছু করে নাই। তারা এখানে গায়ে খাটা বিভিন্ন রকম কাজ জুটিয়ে নিয়েছে। শুধু সে কাজ না। সপ্তাহে একদিন কাজে ছুটি থাকে সেদিন ঘর পরিস্কার , কাপড় পরিস্কার, রান্না করছে বাই রোটেশন এক একজন। ফ্রিজের ডালায় কার কবে ছুটি এবং সে ঘরের কাজগুলো করবে তার তালিকা তারা লিখে রেখেছে। সপ্তাহের সাতদিনই তারা ব্যস্ত থাকে কাজে।
যারা একসময় রাস্তায় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিত। চায়ের দোকানে বসে রঙবাজি করত। বাড়ি ফিরে, মা’র বা বোনের হাতের বাড়া ভাত খেত। প্লেট না ধুয়ে উঠে যেতো অনায়াসে। আমেরিকার সোনার হরিণ, তাদের জীবনটা কাজের ঘূর্ণি স্রোতে ঘুরাতে লাগল। তাদের চোখ তুলে তাকাবার ফুরসত নাই। কাজে ফাঁকি দিলে যদি কাজ চলে যায় তাই তারা যতটা সম্ভব মনোযোগী হয়ে কাজ করে। যে টাকা ধার করে সব খরচ মেটানো হয়েছে বিদেশ আসার সে টাকা ফেরত দিতে হবে। এছাড়া কারো পরিবারই সচ্ছল নয় তেমন। ইচ্ছে করে বাবা, মা ভাই, বোনের জন্য কত কিছু করতে। কিন্তু মাস শেষে বাড়তি তেমন টাকা হাতে থাকে না। নিজের প্রয়োজন এবং ইচ্ছেগুলো অরো অনেক পরে পূরণ করার আশায় তোলা থাকে মনের গোপন ভ্রমরা বাক্সে। আগে তো ধারদেনা আর পরিবারের লোকদের একটু স্বচ্ছলতা দেয়া হোক। কখনও কাজ চলে যায়। জমানো টাকার হিসাব করতে করতে আরো নিকৃষ্ট কাজে যোগ দেয়া হয়। যা কখন করবে বলে জীবনে ভাবেনি। কিন্তু খাওয়া পড়া বাড়ি ভাড়া চালাতে হবে তো।
ভাগের বাড়িতে নিজের কোন প্রাইভেসি নাই। ডর্মের মতন অনেকে এক সাথে থাকে এক সাথে খায়। একটাই বাথরুম ব্যবহার করে। শুধু সুযোগ কম ভাড়ায় থাকা যায় আর বেশি অংশ আয়ের দেশের বাড়িতে পাঠানো যায়।
মন ছুটে যায় দেশে ফেলে আশা মানুষগুলোর কাছে, কেমন আছে সবাই। মা বাবা ভাই বোন। বড় বেশী মনে পরে সবার কথা সব স্মৃতি। ভাইবোনের খুনশুটি। ফোনের বীলেও ডলার চলে যায়। সময় পেলেই ফোন নিয়ে বসে বড় আগ্রহ করে। দেশে সবাই কি করছে এখন? সবার সাথে কথা বলার ইচ্ছা অথচ দেখা যায় সবাই দৌড়ে এসে ফোন ঘিরে দাঁড়িয়ে নেই এক একজনকে ডেকে পেতে দু চার মিনিট করে সময় পার হয়ে যায়। ডলারের হিসাবে মন কাঁপে। ফোন কার্ড শেষ হয়ে যায়। মন ভরে কথা বলা হয় না। পরের বার ফোন করলে অভিযোগ শোনতে হয় কি ফোন করো কথা বলা হলো না ঠিক মতন। অমুকের বাড়ির তমুক দেখেছি কত সময় ধরে কথা বলে।
যে প্রচণ্ড আগ্রহ নিয়ে তারা ফোন করে কেমন আছে সবাই জানার, অপরপক্ষে তেমন আগ্রহ দেখা যায় না,সে কেমন আছে জানার। বরঞ্চ অনেক কিছু চাওয়ার থাকে তাদের। চাহিদার শেষ নাই। আরো টাকার প্রয়োজন, আরো ডলার পাঠাতে হবে। আগে যে ডলার পাঠানো হয়েছে, তাতে সব কাজ শেষ হয় নাই। আগের কাজের লেজের সাথে নতুন চাহিদার মাথা জুড়ে যায়।
ফোন রেখে মনের ভিতর ভাবনা চলতে থাকে কী ভাবে সে টাকা ম্যানেজ করা যাবে। আর কতটুকু ওভারটাইম করলে ডলার গুলো ঠিকঠাক ভাবে পাঠানো যাবে। নাকি কোথাও ধার পাওয়া যাবে। এ দেশে একটা সুবিধা আছে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার। সেখান থেকে টাকা তুলে পাঠিয়ে দেয়া যায়। যদিও ইন্টারেস্টসহ ফিরত দিতে হবে। সে ইন্টারেস্টের দড়িও গলায় পেঁচিয়ে যায়। ক্রমাগত মাসের পর মাস বছরের পর বছর ইন্টারেস্ট চলতে থাকে, যে টাকা নেয়া হয়েছে তার অনেক বেশি গুণ শোধ করা হয়। কখনও যক্ষের ধন, সে ক্রেডিট কার্ডও বাতিল হয়ে যায়।
পথে ঘুরে বেড়ানো, আড্ডা দেয়া ছেলেগুলো যারা বাড়ির বকাঝকা খাওয়ার পরও তেমন গা করত না তারা বাড়ির মানুষগুলোর প্রতি মমতায় আদ্র হয়ে রাতে বালিশ ভিজায় চোখের জলে। ওদের মনটা বড় বদলে যায়। সাথে বিপরিত ভাবে বাড়ির মানুষের কাছে ওরা টাকা চাওয়ার মেশিন হয়ে যায়। যখন তখন ঝাঁকি দিলেই যেখান থেকে ডলার পরবে। মাঝেমাঝে ওরা দেশ থেকে ফোন পায়। ফোন কলটা খুশির চেয়ে আতংকই বেশী ছড়ায় শরীর ও মন জুড়ে। পরিবারে বিশেষ কোন অসুস্থতা বা অঘটন কিছু ঘটেছে। সবার উপরে সব শোকের পরে অনেক টাকার জরুরী আবেদন জুড়ে যায়।
যে ভদ্রোলেকের বাড়িতে এত্তগুলো ছেলে একসাথে থাকছে। আর তিনি নিজের স্ত্রী পুত্র আসার আশায় পথ চেয়ে আছেন। কাগজপত্রগুলো হয়েও হয়না। তার সাথে আমার দেখা হলে, তিনি আমাকে বললেন আপা, আপনাকে একটা গল্প বলি। গতবছর আমি দেশে গেছি, অনেক বছর পর। কতদিন দেশের ছোটমাছ, শাক পাতা দেশি খাবার খাই না। মা’র হাতে রান্না ঐসব খাওয়ার জন্য আমার অন্তরটা অস্খির হয়ে আছে। পরের দিনই বাজারে গেলাম। সাথে আমার ছোট ভাই। আমি যাই ছোট মাছ শাক পাতা কিনতে, আমার ছোট ভাই বড় রুই মাছ, চিতল মাছ, পাঙ্গাশ দাম করে। আমাকে টেনে নিয়ে যায় বড় মাছের কাছে। আর ফিসফিস করে কয় আপনার কি মাথা খারাপ হইছে, আমেরিকা থেকে এসে পরের দিন আপনি বাজারের বড় মাছটা না কিনে ছোট মাছের দিকে হাঁটেন। প্রেস্টিজ তো পাংচার করে দিচ্ছেন।
হায়রে প্রেস্টিজ। আমার টাকায় আমি যা খাইতে মন চায় তাও খেতে পারব না। আমার কাম না করা ফুটানিওলা ভাইয়ের প্রেস্টিজ পাংচার হয়ে যায়।
রাস্তায় আড্ডাবাজি দেয়া, ঘুরে ফিরে সময় কাটানো, পরিবারে গালি বকা খাওয়া আকামের ছেলেগুলো কত কষ্টে ভাগাভাগি করে জীবন যাপন করে বড় বড় শহরে। নিজেদের কোনই সাধ আহলাদ, আড্ডাবাজীর জীবন আর তাদের নাই। অথচ সাধ আর প্রেস্টিজ বেড়ে যায় পরিবারের লোকদের। যারা মাসের শেষে ডলার, পাউণ্ড, রিয়েল, ইয়েন এবং আরো অনেক রকম মুদ্রা ভাঙ্গিয়ে পেয়ে যায় অনেকগুলো বাংলাদেশি টাকা। সে টাকা আনন্দে ফূর্তিতে উড়াতে তাদের কোন কষ্ট হয় না।
বাংলাদেশের বাড়িগুলো যেখানে ঘর ছিল না সেখানে ঘর হয়। আসবাবপত্র, নতুন হয়। টিভি, ফ্রিজ যাদের অকল্পনীয় ছিল সে সব হয়ে যায় ঘরের মামুলি বস্তু।
দিন শেষে তাদের সুখে থাকার ব্যবস্থা করা মানুষটির কথা কারো মনে পরে না। কিন্তু নিজেদের সুবিধার ব্যাপারে তাদের কাছে হাত পাতার জন্য নানা অছিলা থাকে।
আমি ক’দিন ছিলাম ওদের বাড়িতে। এক একটা ছেলের চোখ লাল, ঘুমে ঢুলু ঢুলু তারা ঘুমাবার সময় পায় না। তারা প্রচুর পয়সা কামাচ্ছে কিন্তু তাদের কণ্ঠার হাড় বেড়িয়ে পরছে। কোমরে, পায়ে, ঘাড়ে ব্যাথা জমছে। তাদের সুখের সময়গুলো ব্যস্ততা আর দ্বায়িত্বের ভাড়ে নুয়ে পরছে। গভীর রাতে বাড়ি ফিরার পথে তারা মাস্তানদের মারধরের শিকার হয়। তারপরও তারা সবার উপরে বাড়ির মানুষের চাহিদার কথা মনে রাখে।
আমি ক’দিন থেকে শহরের সব নামি দামি জায়গাগুলি ঘুরছি। আর ওরা ঐ শহরে থেকে অপেক্ষায় আছে কোন একদিন সাধ মিটিয়ে শহর চষে বেড়াবে। তাদের অপেক্ষা কবে শেষ হবে কে জানে। ঘর উঠানো, ভাইয়ের বিয়ে, বোনের বিয়ে, জমি কেনা। মা এর অসুস্থতা সব কিছুর জন্য টাকা তাদেরই দিতে হবে। যারা বিয়ে করেছে তাদের বউ নিয়ে আসার কথা কেউ বলে না। বউ বাচ্চা আনার জন্য যে টাকার প্রয়োজন তা তাদের হয়ে উঠে না।
যারা অকমণ্য নামে পরিচিত ছিল এতদিন। সোনার হরিণ ডি ভি ভিসা বা কোনরকমে কোন বিদেশে পারি জমাতে পারা, তাদের ফুরফুরে বকা খাওয়া জীবনকে দ্বায়িত্বের দায়ে ডুবিয়ে দিয়েছে।
একটি ঘরের উপমা কিন্তু পৃথিবী ব্যাপী ছড়িয়ে পরা অনেক মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত পরিবারের বিদেশে থাকা ছেলে বা দেশের পরিবারের মোটামুটি এক চিত্র।
বিদেশে থাকা মানুষটির নিজস্ব একটা জীবন আছে এটা আমার খুব কম ভাবি।একজন মানুষের উপর এই চাপ অনেকটা আমাদের পরিবার এবং সামাজিক ব্যবস্থার প্রতিফলন। একটা মানুষের জীবন উপভোগের সুযোগ কেড়ে নেয়া হয়। কেউ যদি না করে তা হলে সে ইমোসনালি ব্ল্যাক মেল হয়। সামাজিক ব্যবস্থা কিছুটা পরিবর্তন হওয়া দরকার। প্রতিটি মানুষের সাবলম্বী হওয়া দরকার একটা বয়সের পর। অন্যের উপর নির্ভর না করে। অনেক পরিবার আছে। সেখানে কেউ কিছু করে না। বিদেশের টাকায় তাদের পরিবার চলে।
এই খণ্ডচিত্র কারো জীবনে বোঝ কারো জীবন আনন্দের করে দিচ্ছে। কিন্তু যারা আনন্দ করে তাদের দ্বায়িত্বশীল হওয়া উচিৎ অপচয় না করে যে টাকা পাওয়া যায় তা কাজে লাগিয়ে নিজের এবং পরিবারের উন্নতির কথা ভেবে।
০২ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ৩:৫২
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ সাসুম।
আমাদের বন্ধন যে শুধু অর্থনৈতিক এটা অনেক মানুষ তাদের জীবন দিয়ে প্রমাণ করছেন।
অথচ আমরা ভীষণ ভাবে গর্বিত মায়ার বন্ধন নিয়ে।
সত্যিকারের বন্ধন গড়ে তোলা হয়না পরিবারে । নানা ভাবেই অনেক আলগা আমাদের পারিবারিক বন্ধন গুলো।
জীবন শিখা হয় অনেকের কাছে বিদেশে বেরিয়ে এবং অনেক কিছু হারিয়ে।
শুভেচ্ছা থাকল
২| ০১ লা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:২১
রাজীব নুর বলেছেন: একদম বাস্তব লিখেছেন।
০২ রা আগস্ট, ২০২১ ভোর ৪:০৪
রোকসানা লেইস বলেছেন: বিদেশের রেমিটনসের অর্থ যেমন ভালোবাসার সরকারের কাছে তেমন ভালোবাসার বিদেশি শ্রমিকের অর্থ তার পরিবারের কাছে।
কিন্তু সেই মানুষগুলো খুব বেশি মূল্যহীন।
শুভেচ্ছা রাজীব নুর
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:৩৮
সাসুম বলেছেন: বিদেশে আসার পর দেখেছি- বুঝেছি জীবন কি! আত্মীয়ের বন্ধন কি।
আপনার লিখা সুন্দর।