নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

রোকসানা লেইস

প্রকৃতি আমার হৃদয়

রোকসানা লেইস › বিস্তারিত পোস্টঃ

টেস্ট আর ভ্যাকসিন নেয়া দেশ বিদেশ অভিজ্ঞতা

০৯ ই মে, ২০২১ রাত ২:০০

এ পর্যন্ত চারবার করোনা টেষ্ট করেছি। প্রথমবার করতে গেলাম বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য গত বছর। বিশাল লাইন হাসপাতালের বাইরে প্রায় দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হলো রোদের মাঝে। এক সময় ভিতরে যেতে পারলাম। নার্সদের সতর্কতা এবং যত্ন করে নিজেদের সুরক্ষায় রেখে, কাজ করার নিয়মটা চাক্ষুষ তখন দেখা হলো।
দরজার বাইরে রেখেই একজন নাম ঠিকানা কেন টেষ্ট করতে এসেছি সব জানলেন। তারপর ভিতরে ঢুকতে দিলেন। ভিতরে ঢুকেতেই হাত সেনেটাইজ করতে হলো। তারপর যে মাস্কটা পরে ছিলাম সেটা ফেলে দিতে হলো এবং নতুন একটি পরে নিতে হলো বক্স থেকে নিয়ে।
হেলথ কার্ড একটা জিপলগ ব্যাগের ভিতর ছেড়ে দিতে হলো। গ্লাবস পরা হাত কাউন্টারে যিনি রেজিস্ট্রেশন করছেন তার কাছে প্লাস্টিক ব্যাগটা পেঁছে দিলেন। ব্যাগের ভিতরে রেখেই কার্ডের নাম্বার মিলিয়ে নিলেন তারপর ফেরত দেয়া হলো প্লাষ্টিকের ভিতরে রেখেই। আমি প্লাষ্টিক ব্যাগের ভিতর থেকে হেলথ কার্ড তুলে নিলাম। দূরত্বে রাখা চেয়ারে মাত্র তিনজনকে ঘরের ভিতর বসতে দেয়া হচেছ। এক জনকে টেস্ট করার পর পুরো পিপিই থেকে গ্লাবস, মাস্ক চেঞ্জ করে আরেকজন কে ডেকে নিচ্ছে চেক করার জন্য।
নাকের ভিতর টেষ্ট কিটের সরু লম্বা কাঠি ঢুকিয়ে চেক করার পদ্ধতিটা দেখে অস্বস্থি লাগত। কিন্তু আর তো কোন ভাবে পরীক্ষার নিয়ম নেই। তাই অপেক্ষার সময় প্রস্তুতি নিতে থাকলাম যেন সহজ হয় ব্যাপারটা।
এক সময় ভিতরে ডেকে নিলেন নার্স আলাদা কাউণ্টারে। আগের পেসেন্ট চলে যাওয়ার পর চেয়ার থেকে সব কিছু ডিজইনফেক্টেড করা হয়েছে। একজন মানুষ একটা চেয়ার থেকে উঠে যাওয়ার পর সেটা পরিচ্ছন্ন করে আরেকজনকে ডাকা হচ্ছে বসার জন্য। নার্স অনেক যত্ন করে নাম ধাম জিজ্ঞেস করে কেন টেস্ট করাতে এসেছি, সব শুনে পরীক্ষার যন্ত্র নাকের ভিতর দিলেন। কিছুই বুঝতে পারলাম না শুধু হাচি আসার আগের অনুভুতির মতন একটা অনুভুতি হলো, নাকের গোড়ায়। বাস পরীক্ষা শেষ। অনলাইনে রেজাল্ট পাওয়া যাবে তিন দিনে জানা গেল। সব কাগজপত্র নিয়ে চলে আসার সময় আরো একটা কাগজ দিয়ে দিলেন পার্কিং এর ফ্রি রিসিপ্ট। দু ঘন্টা ধরে পাকিং করে রাখা হয়েছে বেশ ভালো পেমেন্ট আসবে কিন্তু জানলাম সেটা দিতে হবে না। পাকিং থেকে বেরিয়ে আসার সময় মেশিনে সেই টিকেটটা ছোাঁয়াতেই বার উঠে বেরিয়ে আসার সুযোগ দিল। কোন খরচপাতি করা লাগল না।
রেজাল্ট পেয়ে গেলাম তিনদিন পর। যাত্রার আরো দুদিন বাকি তখন জানলাম তিনদিনের বেশি আগের পরীক্ষা হয়তো এয়ারপোর্টে নিবে না। ঝামেলা হবে । তাই আবার পরীক্ষা করতে যেতে হলো। তবে এবার অন্য একটা জায়গায় গেলাম যেখানে ড্রাইভ করে গিয়ে গাড়ির ভিতরে বসে থাকলেই চলে। নার্স গাড়ির ভিতরে বসে থাকা অবস্থায় নাকের ভিতর কিট দিয়ে টেস্ট করে ফেলেন। এখানে সময় খুব কম লাগল। মাত্র দশ মিনিট পরীক্ষা হয়ে গেল। সময় খুব কম ছিল রেজাল্ট পাওয়ার জন্য। প্লেনে উঠার আগে রেজাল্ট না পেলে প্লেনে উঠা যাবে না।যাক রাত দশটায় প্লেন তার আগেই সন্ধ্যায় রেজাল্ট চলে এলো মোবাইলে।
কি যে এক ভালো জিনিস এই স্মার্টফোন। টিকেট থেকে বুকিং কনর্ফামেশন, কোভিড ১৯ রেজাল্ট সব এই ফোনের মধ্যে থাকে। কাগজপত্র নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে হয় না। ভালোয় ভালোয় চলে গেলাম বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে কোভিট টেস্ট:
ফিরে আসার আগে আবার টেষ্ট করতে হলো, প্লেনে উঠার জন্য। এবার বাসায় লোক এসে টেস্ট করে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশে এই সুবিধা পাওয়া গেল। এর জন্য তারা একটু বেশি চার্জ করবে।
সন্ধ্যাবেলা নার্স বাসায় আসলেন। বাসায় এসে তিনি পিপি পরলেন। সেনেটাইজ করলেন। নিজের সুরক্ষা করে আমার কাছে আসলেন। সেকেন্ডেরও কম সময়ে টেস্ট করা হয়ে গেল। তিনি নিজে আমার নাম, তথ্য ফরমে লিখে নিয়ে চলে গেলেন। একদিন পর সকালেই ফোন দিয়ে রেজাল্ট জানালেন নেগেটিভ। যাক ভালো রির্টান টিকেট বদল করতে হবে না ।
উনাকে বললাম আপনি তাহলে রেজাল্টটা দিয়ে যাবেন। কিন্তু তিনি জানালেন তিনি আসতে পারবেন না। আমাকে গিয়ে রেজাল্ট নিয়ে আসতে হবে। উনাকে বললাম কথা ছিল উনি রেজাল্ট পৌঁছে দিবেন কিন্তু উনি খুব খারাপ ভাবে কথা বললেন আসতে পারবেন না। এবং আমার দরকার থাকলে নিজে গিয়ে যেন রেজাল্ট নিয়ে আসি এসব বললেন।
তখন উনার বস যিনি উনাকে পাঠিয়েছেন তার সাথে কথা বলা হলে তিনি বললেন সমস্যা নাই সে দিয়ে আসবে।
বসের সাথে কথা বলার একটু পরেই নার্স আবার ফোন দিয়ে বললেন সন্ধ্রায় তিনি রেজাল্ট নিয়ে আসবেন। সন্ধ্যায় নার্স জানালেন তিনি রেজাল্ট নিয়ে আসছেন। আমি বললাম গেইটে সিকিউরিটির কাছে দিয়ে গেলেই হবে। একটু পরে রেজাল্ট পেলাম। নেগেটিভ রেজাল্ট সব ঠিক আছে কিন্তু উনি আমার নাম নিজ হাতে লিখে নিয়ে গেলেন সে নামটা ভুল বানানে।
সাথে সাথে আবার উনাকে ফোন করলাম, এবং সমস্যা জানালাম। তিনি তখন বাড়ির পথে। জানালেন কাল সকালে অফিসে গিয়ে তিনি দেখবেন কি করতে পারেন। তবে ভুলটা উনার নয় অন্য যারা নাম কম্পিউটারে তুলে তারা করেছে। এবং এই ভুলটা শুধরানো বেশ সমস্যা হবে।
আমি বললাম, পাসপোর্টের সাথে নাম না মিললে আমাকে প্লেনে উঠতে দিবে না। এই পরীক্ষা করে কি লাভ হলো তা হলে। আপনি প্রিণ্ট দিয়ে নিয়ে আসার আগে মিলিয়ে দেখলেন না কেন সব ঠিক আছে কিনা। উনি জানালেন দেখি কাল সকালে অফিসে গিয়ে ঠিক করে জানাব।
তাই করবেন যারা ভুল করেছে তাদের তো এটা ঠিক করে দিতে হবে।
পরদিন খুব ভোরে ফোন দিয়ে তিনি বললেন ম্যাডাম এত অনেক বড় ভুল । আমি দেখছি ঠিক করার ব্যবস্থা করছি। এবং সন্ধ্যা বেলা অবশেষে সঠিক রেজাল্টের কাগজটা তিনি আবার বাসায় পৌঁছে দিয়ে গেলেন। তিনি সবই করলেন তিনবার আসলেনও অথচ শুধু শুধু বাজে একটা ব্যবহার করলেন।
সেদিন ভোর রাতে আবার রওনা হলাম সেই জরুরী কাগজটা নিয়ে প্লেনে চড়তে । লাগেজ চেক করে ভিতরে ঢুকেই কোভিড টেষ্টের কাগজ চেক করে সব ঠিকঠাক আছে জানার পর ভিতরে ঢুকতে পারলাম বাকি চেকিংয়ের জন্য।
দীর্ঘ যাত্রা শেষে বিদেশের এয়ারপোর্টে পৌঁছাতেই একদল লোক এয়ারপোর্টে ডাকাডাকি করছিল টেষ্ট করে যাও। এখন আর টেস্ট করার দরকার নাই। বাসায় গিয়ে চৌদ্দ দিনের কোয়ারেন্টাইন করি । একটা ফরম ফিলাপ করতে হলো কোভিটের জন্য নাম ঠিকানা সব দিয়ে। প্রথম সপ্তাহে প্রতি দুই দিনে গর্ভনমেন্ট থেকে ফোন করে কেমন ফিল করছি জানতে চাইত। কি করব না করব তার নির্দেশনাও দিত। দশদিন পরেও যখন আমি ভালো আছি বললাম তারপর আর ফোন করেনি তারা। কিন্তু প্রথম দুদিন ফোন মিস করে ফেলার পর বারবার ফোন করে ছিল । আমার শরীরের অবস্থা জানা জরুরী ছিল তাদের কাছে। এবং আমি বাসায় আছি না ঘুরে বেড়াচ্ছি আমার গতি বিধী জানাও তাদের প্রয়োজন।
আরেক দিন টেষ্ট করতে গেলাম কাজে যাওয়ার জন্য। গতবছর প্রতিবার কাজে যাওয়ার আগে টেস্ট করে নেগেটিভ হলেই কাজে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হতো।
এই পর্যন্ত যতবার টেষ্ট করেছি সবটাই ফ্রি ছিল। এখনও ফ্রি টেস্ট আছে কাজ বা অসুস্থ হলে, যথাযথ প্রয়োজনে। এখন উপসর্গ ছাড়া কাউকে আর ফ্রি টেষ্ট করছে না। গত বছর যেমন যে কেউ সন্দেহ হলে বা নানা প্রয়োজনে টেষ্ট করতে পারত ফ্রি, এখন সেটা আর করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে যদি ভ্রমণ করতে হয় তবে কোভিট টেষ্ট করতে হবে আর কোভিট টেষ্ট করতে হবে নিজ খরচে। তবে বিদেশের সিস্টেমে কোন সমস্যা নেই। নাম বা তথ্য বদল হয়ে যায় না।
সেদিন টিকা নিলাম এখন টিকা নেয়ার কাগজটা সারাক্ষণ সাথে নিয়ে চলতে হবে। আমি সুরক্ষিত হয়েছি এটা অনেক জায়গায় জানানো দরকার । কাজের জায়গায়ও ভ্যাকসিন না নিলে কাজ পাওয়া মুশকিল হয়ে যাবে।
ভ্যাকসিন নেয়াটা এখন অত্যাবশ্যকীয় মানুষের জীবনে।
ভ্যাকসিন নিতে গিয়েও অনেক সাবধানতা সেনেটাইজ নিয়ম শিখলাম। যে মাস্ক পরেছিলাম সেটা ফেলে দিয়ে তাদের বক্সে রাখা মাস্ক মাঝখানে ধরে আলগোছে উঠিয়ে নিয়ে পরতে হলো যিনি তদারকি করছিলেন তার দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে।
হাত পরিচ্ছন্ন করতে হলো কয়েকবার। এরোগের উপসর্গ্ হাঁচি কাশি, জ্বর ইত্যাদি আছে কিনা চৌদ্দ দিনের মধ্যে বাইরে ঘুরতে যাওয়া হয়েছে কিনা এই সব বিষয়গুলো কনর্ফাম করেই তাদের এলাকায় ঢুকতে দেয়া হয়।
দূরত্ব রেখে চেয়ার রাখা হয়েছে বসার। এবং অপেক্ষার জায়গায় দাগ কাটা আছে কাউকে নির্দেশ দিতে হচ্ছে না। সবাই মেনে চলছেন। ঠেলা ধাক্কা না করে দূরত্ব বজায়ের নিয়ম মেনে অপেক্ষা করছেন। সময়ও খুব লাগছে না নিদৃষ্ট যে সময় দেয়া হয় আধ ঘন্টার কম সময়ে ভ্যাকসিন দেয়ার সব কাজ সারা হয়ে যায়।



মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই মে, ২০২১ রাত ২:৩৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



এটা কানাডায়?

১১ ই মে, ২০২১ ভোর ৬:৪৫

রোকসানা লেইস বলেছেন: প্রশ্ন বোঝা গেল না

২| ০৯ ই মে, ২০২১ রাত ৩:৫২

কামাল১৮ বলেছেন: কোবিরের মধ্যে যত কম ধুরাঘুরি করা যায় ততই ভালো।

১১ ই মে, ২০২১ ভোর ৬:৫৭

রোকসানা লেইস বলেছেন: জানি সেটা। আর সেজন্য ২০ সালের ফেব্রুয়রিতে বই প্রকাশ উপলক্ষে যাওয়ার জন্য টিকেট কেটেও যাইনি। কিন্তু সামারে যখন বেশ ভালো অবস্থা হলো তখন যেতে হলো খুব জরুরী একটা প্রয়োজনে। এবং যত দূর সাবধানতা অবলম্বন করেই চলেছি।
লেখায় উল্লেখ করেছি ফিরে আসার পর এয়ারপোর্টে সব তথ্য দিয়ে আসতে হয়েছে এবং প্রত্যেক যাত্রীকে ট্রেক করেছে তারা সুস্থ না অসুস্থ্। অথচ দেশে যাওয়ার পর সে রকম কোন ট্রেকিং পাইনি, এয়ারপোর্টেও ছিল না কোন নির্দেশনা। বরং গিয়েছি জেনে অনেকেই বাড়িতে আমন্ত্রণ করেছেন আনন্দে। নিজের দায়িত্বে সব যাওয়া বেড়ানো থেকে দূরে থেকেছি।

৩| ০৯ ই মে, ২০২১ দুপুর ২:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: করোনা টেস্ট এখনও করি নাই। টীকা দেওয়ার কোনো অপশন পাই নি।

১১ ই মে, ২০২১ দুপুর ১২:১৬

রোকসানা লেইস বলেছেন: প্রয়োজন না হলে টেষ্ট করার দরকার নাই। টিকা নিয়ে সংশয়। কখন আসবে। আমেরিকা নিজেরা নিয়ে সব আটকে বসে আছে। এমন কি উৎপাদন মালামাল।
যে সব দেশ ভ্যাকসিন পাচ্ছে সেখানে সংখ্যা কমছে আক্রান্ত হওয়ার।
সাবধানে থেকো

৪| ১১ ই মে, ২০২১ সকাল ১০:৪৯

নির্জন অঙ্কন বলেছেন: ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন

১৪ ই মে, ২০২১ সকাল ৯:২৩

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ সাবধানে আছি। আপনিও থাকুন

৫| ১৪ ই মে, ২০২১ রাত ১:৪৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


ভেকসিন নিয়ে দেশ বিদেশের অভিজ্ঞতা ভাল লাগল।

১৪ ই মে, ২০২১ সকাল ৯:২৩

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ শুভেচ্ছা রইল ডঃ এম এ আলী আনন্দে ঈদ কাটুক

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.