নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

রোকসানা লেইস

প্রকৃতি আমার হৃদয়

রোকসানা লেইস › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনুরূপ

০৫ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:০৭

কাজের মেয়ের নাম জিজ্ঞেস করছেন মা। নতুন এসেছে বয়স দশ এগারো বছর হবে। গ্রাম থেকে আসা মেয়েটার হাতে একটা পুটলি কাপড়ের। মেয়েটি নিঃশব্দে মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছে জড়োসর ভঙ্গিতে। গেটের দারোয়ান মেয়েটিকে ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে চলে গেছে। ওর দূর সম্পর্কের ভাগনি মেয়েটি। মামা চলে যেতে অপরিচিত কিছু মানুষের সামনে, মেয়েটি যেন একটি মহা সমুদ্রে পরেছে, এমন মনে হলো আমার। অনেকক্ষণ জিজ্ঞেস করার পর, মেয়েটি আস্তে আস্তে এক সময় বলল, ওর নাম সারা।
মা সাথে সাথেই বললেন, তোকে তো সারা নামে ডাকতে পারব না। আমার মেয়ের নামও সারা। তোকে একটা নতুন নাম দিতে হবে। মা দুই মিনিট সময়ও নিলেন না মেয়েটাকে একটা নাম দিয়ে দিলেন। যেন মা আগে থেকেই জানতেন, একটা নতুন নাম কাজের মেয়েটাকে দিতে হবে। তোর নাম টুনি। আজ থেকে টুনি ডাকলে বুঝবি, এটা তোর নাম। মনে থাকবে? মেয়েটি নাম বলা ছাড়া আর একটি কথাও বলেনি। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে তখন থেকে।
ঘরের ভিতর আমরা অনেক অপরিচিত নতুন মানুষ মেয়েটির সামনে। বাবা, মা ভাইয়া, আপা, আমি, ড্রাইভার এতগুলো মানুষের সামনে সে নতুন পরিচয় পেয়ে, সেটা মেনে নিল কিনা জানার চেষ্টা কেউ করল না।
মায়ের দেয়া নতুন নামটা তার মনে থাকবে কিনা মা, বারে বারে জানতে চাইলেন মা, মাথাটা ডানপাশে কাত করে জানাল, তার মনে থাকবে কিন্তু মুখে কিছু বলল না। চুপ চাপ একই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকল নিরবে।
মা ওকে সাথে নিয়ে রান্না ঘরের দিকে চলে গেলেন। সারা, নামের মেয়েটি আমাদের বাড়িতে টুনি হয়ে জীবনের বেশ অনেকটা বছর কাটিয়ে দিয়েছে। প্রথমে মা তাকে দেখতে পারতেন না। চুরি করে খায় কিনা, কোন কিছু চুরি করে নিজের পুটলিতে ঢুকিয়ে রেখেছে কিনা এজন্য সব সময় চোখে চোখে রাখতেন। প্রায় সময় পুটলি খুলে চেক করে দেখতেন। দেখিয়ে দেওয়া কাজের এদিক সেদিক করলে দুএকটা চড় থাপ্পরও লাগিয়ে দিতেন। আর সব সময় ভয়ে থাকতেন, কখন যেন টুনি পালিয়ে যায়। চুরি করে,পালিয়ে যাবে, যার সম্পর্কে এমন ধারনা, তাকে কাজের প্রয়োজনে বাড়িতে রাখা, আবার পালিয়ে যাবে বলে আতংকে থাকা। এমন দ্বিধান্বিত অবস্থায় বেশ কিছু কাল কাটার পর, মা নিশ্চিন্ত হলেন মেয়েটি চুরি করে না। পালিয়েও যাবে না। বরং বিশ্বস্ততা বাড়ল তার উপর। মা চোখ বন্ধ করে টুনির উপর সংসার ছেড়ে দিয়ে বেশ আরামে সময় কাটিয়েছেন, সারা নামে টুনি হয়ে যাওয়া মেয়েটি আমাদের বাসায় আসার পর। এক সময় টুনি বেশ বড় হয়ে গেলে, টুনির বিয়েও নিজে দেখে শুনে মা দিয়েছেন। এখন টুনি মাঝে মধ্যে মায়ের কাছে বেড়াতে আসে, স্বামী বাচ্চা নিয়ে। টুনি আসলে টুনি নিজেই রান্না করে খায় এবং খাওয়ায় ওর পরিবারকে। নিজের বাবার বাড়িতেই যেন টুনি আসে।

আমি যখন ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম। আমার একজন টিচারকে খুব পছন্দ হলো। অল্প বয়স্ক অনেক স্মার্ট একজন মহিলা। উনাকে প্রথম দেখায় আমার খুব ভালো লেগে গেল। উনার সাথেই আমি এসাইনমেন্ট করব ঠিক করলাম। উনার নাম আমার নামে, সারা। আমি সারা সামিয়া । টিচার সারা হাবীব। আর আমাদের কাজের মেয়ে টুনির নামও সারা ছিল কিন্তু ওর কোন লাস্ট নেম ছিল না।
সারা হাবীবের সাথে আমাদের সাত জনের গ্রুপের এসাইনমেন্ট। সেদিন আমি একাই গিয়েছিলাম উনার রুমে। এসাইনমেন্ট বিষয়ে জানতে। যা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।
উনি খুব সুন্দর করে হেসে আমাকে অর্ভথনা করলেন। খুব ভালো করে এসাইনমেন্টের বিষয়ে কি করতে হবে বুঝিয়ে দিলেন। খাতা কলম গুছিয়ে আমি যখন উঠতে যাচ্ছি তখন উনি আমাকে বললেন, তোমার সারা নামটা অফ করে দিবে ভার্সিটিতে। তুমি সামিয়া নামে পরিচিত হবে। সবাইকে বলবে তোমার নাম সামিয়া। সারা নামটা বলবে না একদম। আমার ভয়ানক রাগ হলো। আমার বন্ধুরা অলরেডি আমাকে সারা নামে ডাকে অনেকে। তারা এখন সামিয়া বলে ডাকবে আমাকে! এটা হয় নাকি। আমার সারা নাম কেন লুকিয়ে ফেলতে হবে।
আমি মুখ গম্ভীর করে উঠে চলে এলাম। অনেক দিন আগে সারা নামের মেয়েকে টুনি করা হয়েছিল আমাদের বাসায়, সেই দৃশ্যটা মনে ভাসতে লাগল। খুব জানতে ইচ্ছা করল এতদিন পরে, টুনির তখন কেমন লেগেছিল নাম বদলে দেওয়ায়।
আমার বলার অপেক্ষায় না থেকে সারা হাবীব ম্যাডাম, পরের ক্লাসে সবাইকে বলে দিলেন তারা যেন আমাকে সামিয়া ডাকে এখন থেকে। এবং তিনি বারবার আমাকে সামিয়া, সামিয়া বলে ডাকতে লাগলেন। যদিও সামিয়া নামটা আমার নামের অংশ তবু আমার ভীষণ রকম অপরিচিত মনে হতে লাগল নিজেকে। সামিয়া হয়ে উঠতে আমার খুব অসুবিধা হচ্ছিল। সারা নামটা আমার খুব প্রিয়। সারা, নামে আমি খুব হালকা অনুভব করি। হাসিখুশি আনন্দময়ী থাকি। কিন্তু সামিয়া আমাকে কেমন একটা ভাড়ি প্রলেপে জড়িয়ে ফেলতে থাকল। গুরু গম্ভীর একটা ভাব যেন সামিয়া হয়ে যাওয়ার সাথে।
ভার্সিটির প্রথম দুমাস বাদে, বাকি সময় আমি সবার কাছে সামিয়া হয়ে উঠলাম। নিজের কাছে অপরিচিত এক মানুষ। আমার অনেক কিছুতে আগ্রহ কমে গেল। কোন রকমে ক্লাস করেই বাসায় চলে আসা। ভার্সিটি থাকার সময়টা আমার কেমন ভয় ভয় করত। আমার খুব সারা হয়ে কিশোরী মেয়ের মতন দৌড় ঝাঁপ দিতে ইচ্ছা করত কিন্তু সামিয়ার প্রভাবে আমি কিছুতেই হালকা চলনের সারা হতে পারতাম না ।
অনেক ইচ্ছা ছিল, এটা সেটা করব। কিন্তু আমার সব আগ্রহ মরে গেল। ক্লাসের পরে বাইরে, থাকতেই আমার ভালোলাগত না। ঘরে এসে হাফ ছেড়ে বাঁচতাম। যেখানে বাবা, মা আমাকে সারা ডাকেন। আমি সহজ নিঃশ্বাস ফেলি।
এম এ টা কোন রকমে পাশ হয়ে গেল। বন্ধুরা চাকরির জন্য আবেদন করছে। অনেকে আগে থেকেও পার্ট টাইম চাকরি করছিল। জীবনটাকে অন্য রকম চিনছিল। আমারও খুব ইচ্ছা ছিল চাকরি করার। কিন্তু সব ইচ্ছারা কেমন হারিয়ে গেল।
সামিয়া নামের মেয়ের সাথে কেউ প্রেম করারও আগ্রহ দেখাল না যেন তার গম্ভীর চেহারা দেখে।
পারিবারিক ভাবে আমার একটা বিয়ে ঠিক করা হলো। ছেলে বিদেশে থাকে। পি এইচ ডি শেষ করে চাকরি করছে, একটি বড় কোম্পানিতে। ছেলের সাথে এক বিকালে আলাপ হলো আমাদের বাসার ছাদে। সে আমার সারা নামটি খুব পছন্দ করল। এবং অনেকবার আমাকে সারা নামে, ডেকে অনেক কথা বলল। বিদেশের জীবন, একা সব কিছু করার কষ্ট। আবার মাঝে মধ্যে ঘুরতে বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ। জীবনটা পুরাই অন্য রকম সেখানে।
আবির কে আমার খারাপ লাগল না। নিস্তরঙ্গ আমার জীবনে আবির একটা ঢেউ হয়ে এলো। অন্য রকম কিছু জীবনের চিন্তা ছড়াল মনে। নতুন করে বর্হিবিশ্বে আবার সারা হয়ে ছড়িয়ে পরার ভাবনাটা বেশ ভালো লাগল। অন্তত আশে পাশে, সারা ম্যাডামের মতন কেউ নিজেকে সারা পরিচয়ে রেখে, আমাকে সামিয়া হিসাবে দূরে ঠেলে দিতে পারবে না। আমি আবার সারা হয়ে বাঁচব। নিজের মতন।
বেশ অনেকদিন হলো আমি সারা আবির চৌধুরি হয়ে, আমেরিকার ডালাসে জীবন যাপন করছি। সামিয়া নামের সাথে পুরো সম্পর্ক ঘুচিয়ে ফেলেছি।
স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির সব সার্টিফিকেট থেকে বার্থ সার্টিফিকেটে, সামিয়া নাম তুলে দিয়ে আমি বাবার নামের শেষ অংশ কুরাইশি করেছি। আবির বলেছিল, মিডিল নেম সামিয়া রাখার জন্য আমি বললাম, এই নামটাকে আমি হেইট করি। ও আর কিছু বলেনি। বিয়ের পরের নাম আবার সারা আবির চৌধুরি হয়েছি। এই নামটা আমার অনেক পছন্দ হয়েছে। এই নামেই পাসপোর্ট করে ইমিগ্রেশন পার হয়ে আমেরিকায় এসেছি।
সামিয়া মুখ থুবরে বাংলাদেশে পরে রেয়েছে। ওকে সাথে করে আমেরিকায় আনিনি। না কোন কাগজ পত্রের নামেও। এজন্য বেশ কিছু সময় ধৈর্য নিয়ে অনেক জায়গায় ছুটাছুটি করতে হয়েছে আমাকে। সহজ কাগুজে নাম পরিবর্তনের কাজটা করতে গিয়ে কেউ সহজে সে কাজটা হতে দেয়নি। কাউকে টাকা দিতে হয়েছে। কাউকে দিনের পর দিন চেয়ারে পাইনি। কেউ অনেক প্রশ্ন তুলেছেন, কেন নাম পরিবর্তন করব, ইত্যাদি ব্যাক্তিগত বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। আমি কখনো কিছু বলিনি। কখনো ইচ্ছে মতন বানিয়ে বাজে গল্প বলেছি। যাতে সামিয়া নামটা যে আমার ঘাড় থেকে ছেটে ফেলতে চাই, তারা এ ব্যাপারে আর আপত্তি করতে পারেননি। সব চেয়ে ভালো কাজ করে যখন কোন দুঃখের গল্প বলা হয়। যেমন সামিয়া নামের আমার বন্ধু আত্মহত্যা করেছে বা বিয়ের পর খুব অসুখি জীবন যাপন। বড় ধরনের অসুখে পরেছে। এসব কারনে সামিয়া নামটা আমার নিজের সাথে রাখা পছন্দ নয় বললে কেউ আর কোন প্রশ্ন না করে, কাজটা করে দিয়েছেন। অনেক অফিস, অনেক মানুষের কাছে যেতে হয়েছে এই নাম পরিবর্তনের জন্য। তার মাঝে শুধু একজন মানুষ পেয়েছি, বয়স্ক ভদ্রলোক কোন প্রশ্ন কোন সময় ব্যয়, কোন টাকা না নিয়ে, চট পট কাজটা করে দিয়েছেন নিয়ম মত।

আমেরিকার জীবনে বেশ কিছুদিন কেটে গেছে। আত্মিয় পরিজন ছাড়া একা থাকা, ঘরের কাজ করা এসব বেশ সয়ে গেছে এখন বরং সময় খুব বেশি হাতে কি করব বুঝতে পারি না। আবির কাজের পর, যথেষ্ট সময় দেয়। উইকএ্যাণ্ডে ঘুরতেও যাই। তারপরও প্রচুর সময় অবকাশ যেন আমার। আবির বলল, তুমি ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে যাও। একটা ডিগ্রি এখানে হলে ভালো কাজ পেয়ে যাবে। কাজ না করলেও তোমার ভালো লাগবে এখানকার পড়ালেখা করতে অনেক কিছু জানতে পারবে।
ভার্সিটি যাওয়ার কথায়, প্রথমেই সারা ম্যাডামের ট্রমা আমাকে আক্রান্ত করল। কিন্তু নতুন জায়গায় তেমন কিছু হবে না এই ভেবে রাজী হয়ে গেলাম। তবে শর্ত দিলাম, আমার ভালো না লাগলে আমি পড়ব না।
আবির হাসতে হাসতে বলল, কোন প্রেশার নাই, তোমার ভালোলাগলেই এগিয়ে যেও নয় তো ইস্তফা দিও।
এ্যাপ্লাই করা হলো যথা সময়ে ভার্সিটি ডাকল। ভর্তিও হয়ে গেলাম। প্রথম দিনের ক্লাসে সুন্দরী মহিলা এলেন ক্লাসে বেশ বয়স্ক মহিলা, সাদা চুল, নীল চোখ, টানটান লম্বা স্লিম শরীর আর অসম্ভব ধবধবে সাদা। কিন্তু রিনিরিনি মিষ্টি ভয়েস। দারুণ স্মার্ট বেশবাস। বয়স্ক হলেও অসম্ভব সুন্দর লাগছে।
জানালেন তিনি রোমান এবং গ্রীক বংশের কম্বিনেশনে গড়া মানুষ। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর উনার গ্রাণ্ড পেরেন্টসরা ইউরোপ ছেড়ে আমেরিকায় এসেছেন। উনার জন্ম নিউ জার্সিতে। তবে বড় হয়ে পড়ালেখার প্রয়োজনে আর বিয়ে হওয়ার পর স্বামীর সাথে অনেক জায়গায় ঘুরে ডালাসে থিতু হয়েছেন। দু বছর হলো, স্বামী ক্যানসারে মারা গেছেন। দুই ছেলে একজন থাকে অস্ট্রেলিয়ায়, বিয়ে করেছে সিডনির মেয়ে। আরেক জন বর্তমানে থাকে জার্মানির মিউনিখে। সে বিয়ে করেনি করতেও চায় না, ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে।
তিনি একা বিশাল এক বাড়িতে থাকেন। তবে একদম একা না কুকুর জেরি, থাকে উনার সাথে। পরিবারের হাফ সদস্য, বর্তমানে এই দুজনের সংসার উনার।
টিচার তার নিজের পরিচয় দিতে এমন পারিবারিক সবার ইতিহাস বললেন, এটা আমার জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা। আমি দেশে কোন টিচারকে এভাবে পরিচয় দিতে শুনিনি।
সবার শেষে বললেন, উনার নাম সারা এন্ডারসন। আমার বুক ডিপডিপ করতে শুরু করল। আবারও সারা। আবারও সামিয়ার মাঝে আমাকে ঠেলে দেওয়ার জন্য কেউ আসল। কেন উনার নাম আর কিছু হতে পারল না। আমার দুচোখ ভিজে উঠতে লাগল। কষ্টে, রাগে, বিরক্তিতে । আরো নানা রকম অনুভব মন জুড়ে। আমি ঠিক করে ফেললাম পড়ালেখার ইতি এখানেই। আজই শেষ, ভার্সিটি মুখো আর হবো না। আমার ভাবনায় এতই ডুবে গিয়েছিলাম, শুনতে পাইনি কখন টিচার আমাকে ডাকছেন।
ইয়াং লেডি, তোমার নাম কি? একে একে অনেকের নাম পরিচয় ইতমধ্যে শুনে আমার কাছে এসেছেন। এবার আমার পালা নাম বলার। আমি থতমত খেয়ে উঠে দাঁড়াতে গেলাম।
সারা এন্ডারসন বললেন, দাঁড়াতে হবে না বসেই বলো। এতক্ষণ সবাই বসে কথা বলেছে সেটাও আমি খেয়াল করিনি। আমরা তো টিচারের সাথে কথা বলার জন্য দাঁড়িয়ে যাই।
তিনি আবার বললেন, এ্যানি প্রবলেন? তোমার কি আমার কথা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে? সাথে যোগ করলেন, এত দিন হয়ে গেল অথচ আমি আমার অনেক উচ্চারণ ঠিক করতে পারিনি, ছোট বেলায় যাদের সাথে বড় হয়েছি তাদের প্রভাবটা এখনো রয়ে গেছে। তাছাড়া আমার বাড়িতে তো নানা রকমের ভাষায় কথা বলা হয়। যার জন্য আমার ভাষাটা বিশুদ্ধ না তোমাদের বুঝতে অসুবিধা হলে প্লিজ আমাকে বলতে দ্বিধা করবে না।
উনার ভাষার কোন ত্রুটি আমি পাইনি। বরং খুব ভালো উচ্চারণ এবং পরিস্কার কথা। আমি ডুবে ছিলাম আমার ভাবনায় তাই শুনতে পাইনি। অথচ তিনি এই মেয়ে কোথায় ছিলে, ক্লাসে মন না বসলে, বাইরে চলে যাও ইত্যাদি না বলে আমার ভুল না দেখে নিজের কোথাও ভুল হয়েছে, যার জন্য শিক্ষার্থি বুঝতে পারছে না ভেবে লজ্জিত হচ্ছেন। এত সুন্দর ব্যবহারের একজন টিচারকে বিব্রত করাটা আমার ঠিক না। এবার আমি সহজ হওয়ার চেষ্টা করে, একটু হেসে বললাম, তোমার উচ্চারণ এবং কথা বলা খুব সুন্দর সারা এণ্ডাররসন, আমি খুব উপভোগ করছিলাম তোমার কথা। আর সেজন্যই একটু অন্যমনস্ক হয়ে পরেছিলাম, এ জন্য আমি খুব দুঃখিত । আরেকটা বিষয় হলো আমার নাম।
এই বলে আমি একটু থামলাম। সারা বললেন, ওহ থ্যাংকুউ থ্যাংকুউ সো গ্ল্যাড টু হিয়ার। স্টিল আই নো, আই এ্যাম নট পারফেক্ট। বাট হোয়াট এবাউট ইউর নেম? উনি আমাকে প্রশ্ন করলেন কথার শেষে।
আমার নাম আর তোমার নাম একই, আমার নামও সারা। কোন রকমে বলে তার প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। নাম বলে, আমার চোখ বন্ধ করে রেখেছি। কি জানি কি বোমা তিনি ফাটান নাম শুনে, ভয়ে আছি।
ওয়াও সো সুইট! ইউ হ্যাভ সেইম নেম এ্যাজ মাইন, ভেরি নাইস।
আমি বড় বড় চোখে, সারা এণ্ডাররসনকে দেখছিলাম। কি বলে মহিলা সো সুইট, হাও নাইস এক নাম পেয়ে সে যেন আমাকে মিতা পেয়েছে। যেমন দুজন এক নামের মানুষ মিতা, সই হয় আমাদের দেশে। কিন্তু সেই এক নাম আবার এক সমাজের মানুষের হতে হয়, নয়তো বিড়ম্বনার কারণ হয় শ্রেণী বৈষম্যে। অথচ টিচার ভিনদেশি, অনেক বেশি শিক্ষিত এবং বয়স্ক হয়েও এই সারা, আমাকে আপন করে কাছে টেনে নিচ্ছে, ভালোবেসে বন্ধুর মতন। এটা কেমন ব্যবহার। ওর একটুও মন খারাপ হচ্ছে না, ক্লাসের ব্রাউন একটা মেয়ের নাম তার নামে। বরং তার খুশি উপচে পরছে, নিজের নামের একটা মেয়ে পেয়ে। ভেরি হ্যাপি টু মিট ইউ সারা বলে ও কাছে এসে আমার সাথে হাত মিলাল। ইজ দেয়ার এ্যানি আদার সারা ইন দ্যা ক্লাস?
সবাই চারপাশে মুখ ঘুরিয়ে তাকাল অন্য সারার খুঁজে। তবে আর কোন সারা, সাড়া শব্দ করল না। তা হলে ক্লাসে আমরা দুজন সারা হলাম। সারা টিচার আর সারা স্টুডেন্ট। সারা এন্ডাসন আর সারা চৌধুরি। সারা ফ্রম গ্রীস সারা ফ্রম বংলাদেশ। মিসেস সারা মিস সারা।
সারার প্রতি আমার পক্ষপাত থাকবে স্টুডেন্টস, তোমরা কিন্তু জেলাস হতে পারবে না। আফ্টার অল আমাদের এক নাম। বলে মিষ্টি করে হাসল সারা এন্ডারসন আর সারা ক্লাসের সবাই হেসে দিল। নাহ আমরা জেলাস হবো না অনেকে বলে উঠল। কেউ বলল, লাইক টুইন নেম সারা, ইন ক্লাস।
ক্লাসের পর মনটা এত ফুরফুরে হয়ে গেল। খুব আনন্দ হচ্ছে আমার। নাম নিয়ে বেশ খানিক কথা হওয়ার কারণে সবাই আমাকে চিনে ফেলেছে। অনেকেই পাশ দিয়ে যেতে হাই, সারা বলছে। কেউ বলছে সারা ফ্রম বাংলাদেশ দেখা হবে আবার।
সারা নামে এই ক্যাম্পাসে পরিচিত হতে পেরে খুব ভালোলাগছে। ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়া বা আবার ক্লাসে ফিরে না আসার কোন ভাবনা মাথায় রইল না।
ডিনারে আবিরের সাথে প্রথম দিনের ক্লাসের গল্প করতে বেশ সুন্দর হয়ে উঠল সান্ধ্যকালীন সময় আমাদের যৌথ জীবনের।






মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: কাজের মেয়ে গুলো সব গ্রাম থেকেই আসে ক্যান? গ্রামের মানুষ মানেই কি হত দরিদ্র?
কুরাইশ বংশ তো অতি উচ্চ বংশ।

০৫ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:০৪

রোকসানা লেইস বলেছেন: আগে কাজের লোক শহরে কাজ করতে আসত কাজ ছিল না, দরিদ্রতার জন্য। এখন কাজের লোক হয়ে কেউ কাজ করতে চায় না কিন্তু শহরের লোক জোড় করে তাদের নিয়ে আসে কাজ করাতে চায় নিজে কাজ করতে চায় না বলে।
উচ্চ বংশ কেমনে?

২| ০৬ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৫৪

নীল আকাশ বলেছেন: গল্পের থীম বেশ ভালো লেগেছে।

০৭ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ৭:২১

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ নীল আকাশ ।

৩| ০৭ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:৩৯

জুল ভার্ন বলেছেন: খুব সুন্দর গল্প। লেখনী আরও সুন্দর!

শুভ কামনা।

৪| ০৭ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:৪৪

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ জুল ভার্ন

৫| ২৩ শে মার্চ, ২০২১ ভোর ৪:৪৪

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



বাহ! অনুরূপ নামের গল্পের কাঠামোটি বেশ অপরূপ সাজে সাজিয়েছেন ।
গল্পের গাথুনী ও প্রকাশভঙ্গি , ভাষা এবং শব্দের প্রয়োগ খুবই হৃদয়গ্রাহী ও প্রাঞ্জল হয়েছে ।
পাঠে মুগ্ধ । মনে হল অনেকদিন পর পড়ার মত একটি ভাল গল্প পেয়েছি ।
অনুরূপ নাম নিয়ে মেয়েটির বিরম্বনার শেষ নেই ।
আশা করি এ অভিজ্ঞত্গুলি অনুরূপ নামের সুবিধা অসুবিধার চর্চা নিয়ে পরীক্ষা করতে
আপনাকে সাহায্য করবে। অনুরূপ নামের সুবিধা অসুবিধা বিষয়ে অনেক
গবেষণা হয়েছে এবং সুবিধা অসুবিধার কাহিনী ও প্রমাণও কিছুটা মিলেছে ।

মজার বিষয় হল সারা নামের যে মেয়েটি জীবনের প্রথম ভাগেই তথা
শৈশবেই তার বিনয়ী স্বভাব ও আচরনে অন্যকে অবাক করে দেয়ার কথা

সেই কিনা সে বয়সেই গ্রাম থেকে আসা একটি মেয়ের অনুরুপ নামের কারনে বিরম্বনার
মধ্যে পড়ে যয়। শুধু কি তাই, কৈশোরে পা দিতেই মহাবিদ্যাপিঠে নীজের শিক্ষকের
কাছেই তার অনুরুপ নামের কারণে একান্তে কিভাবে উদ্বেগ ও মানসিক
যাতনার শিকাড় হয় সে চিত্রটিও সুন্দর ভাবে গল্পে উঠে এসেছে ।

যাহোক, জীবনের বাক পরিবর্তনের একটি ক্ষনে এসে অনুরুপ নাম নিয়ে মেয়েটি
তার সখের নামের পরম প্রাপ্তিতে শিতল প্রশান্তির ছায়া ও আনন্দ অনুভব করেছে
দেখে ভাল লাগল ।


অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল

২৪ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:২৭

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ। সুন্দর মন্তব্য। অবশ্য আপনি সব সময়ই লেখনির সাথে দারুণ সখ্যতা করেই তার উপর মন্তব্য লিখেন।
পুঙ্খানুপুঙ্খ রস আস্বাদন করেন সম্পূর্ণ লেখার। এমন মন্তব্য লেখকের অনেক বড় পাওনা।
পাঠক হিসাবে এবং উৎসাহ দাতা হিসাবে আপনার এই গুণটা ব্লগের সবার অনুকরণ করা উচিত। অনেকে আছেন আসল লেখা না পড়ে মন্তব্য পড়ে মন্তব্য করেন।

আমাদের সমাজে খুব সহজ ভাবে বিচরণ করে অনেক রকম বৈষম্য। এত বেশি জীবনযাপনের সাথে মিশে আছে , আমরা ভাবতেও পারিনা, আলাদা করতে পারিনা এই বৈষম্য। কিছু ব্যবহার করা অনুচিত।
বাচ্চাদের মনের স্বাভাবিক সহজ বিকাশও আমরা ভুল ভাবনায় বইয়ে দেই।
উন্নত বিশ্বে এখন আচরণ অনেক বেশি সহজ সুন্দর যদিও কিছু ব্যাতিক্রম এখনও আছে।
গল্পের মাধ্যমে সেই বৈষম্যগুলোই দেখানোর চেষ্টা করলাম।
এই লেখাটা অনেক মানুষ পছন্দ করেছেন অন্য পোষ্টগুলোতে।
তবে ব্লগে খুব কম পাঠক পড়েছেন বা অনুধাবন করেছেন গল্পের বিষয়।

অনেক শুভকামনা রইল

৬| ২৫ শে মার্চ, ২০২১ ভোর ৫:৩৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
সুন্দর প্রতিমন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ।

২৬ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:১৯

রোকসানা লেইস বলেছেন: শুভেচ্ছা ডঃ এম এ আলী
ধন্যবাদ আবারো ফিরে আসার জন্য।

৭| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ ভোর ৪:০৫

মলাসইলমুইনা বলেছেন: রোকসানা লেইস,
হ্যা --নাম নিয়ে অনেক ঘটনাই ঘটে সে'রকম শুনেছি । খুব কাছ থেকে অবশ্য সে রকম কিছু দেখিনি । আমার এক কাজিনের ওয়াইফ আর আমার মামীর নাম এক হয়ে যাওয়াতে আমার কাজিনের ওয়াইফকে কি নাম ডাকা হবে সেটা নিয়ে খানিকটা সমস্যা দেখা দিয়েছিলো অনেক বছর আগে তাদের বিয়ের সময়।তবে ঠিক কিভাবে সে সমস্যার সমাধান হয়েছিল মানে দুজনকেই নিজেদের নামে (একই নামে) ডাকবার ডিসিশনটা বহাল হয়েছিল সেটা আর এখন মনে নেই । ক্লাস সেভেনে ঢাকায় এসে নতুন স্কুলে ভর্তি হয়েছি । স্কাউটিংয়ের প্রথম দিন স্যার নাম জিজ্ঞেস করলেন । নিক নেইম বললাম ।আর সেটা শুনেই স্যার আঁতকে উঠলেন । আমার নামেই নাকি একজন সিনিয়র আছেন স্কুলে উনি আবার স্কাউটিংও করেন ! তার যন্ত্রনায় নাকি স্যার অতিষ্ঠ তাই আর একই নামের আরেক জনকে স্কাউটিংয়ে নিয়ে ঝামেলা দ্বিগুন করতে চাননা । তাই আমার ভারতীয় সালতানাতের অধিকারী এক সুলতানের নামে রাখা নাম বদলে সার্টিফিকেট নেইমের একাংশ থেকেই নতুন নাম তৈরী হলো । কিন্তু সেই নাম চেন্জ করার কোনো কষ্ট খুব বেশি অবশ্য অনুভব করতে পারিনি তেমন করে আমাদের কড়া স্কাউট টিচারের ভয়ে । সয়েই গেলো একসময় সেই নাম ।আজ এতদিন পরেও আমি এখনো সেই নাম সাথে নিয়ে চলি ।আমার মিডিল,হাইস্কুল, কলেজ আর ইউনিভার্সিটির বন্ধুরা এখনো আমাকে সেই নামেই ডাকে । ক্লাস সেভেনের আগে পর্যন্ত যে স্কুলগুলোতে পড়েছি সেখানকার বন্ধুরা, সে সব জায়গার পড়শিরা (তাদের অনেকেই আমার আবার কলিগ তাই এখনো যোগাযোগ আছে), বাসার মানুষ আর আত্মীয়রা আমাকে আমার হাইস্কুলে ছেটে ফেলা নামে এখনো ডাকে । মাঝে মাঝেই এখনো এমন হয় হয়তো কোনো অনুষ্ঠানে আমার কোনো আত্মীয় হয়তো আমাকে বাসার থেকে দেয়া ডাক নামে ডাকছে আর আর ইউনিভার্সিটির বন্ধুরা অন্য নামে ডাকছে !

আমার নামের প্রথম অংশটা মুটামুটি ভয়ংকর কঠিন বিদেশিদের জন্য । যখন পিএইচডি শুধু করেছি তখন আফগানিস্তানে আমেরিকার মহা যুদ্ধ চালাতে হচ্ছে । ক্লাস্টার বোমা পড়ছে এদিক সেদিক। কান্দাহারে ক্লাস্টার বোমা হামলার খবরে নিউজ মিডিয়া সয়লাব । সেরকম এক দিনে প্রথম পলিসি ক্লাস । ইন্সট্রাক্টর প্রফেসর ভিসার আমাকে নির্বিকার চিত্তে ডাকলেন কান্দাহার ইসলাম (খন্দকার ইসলামকে )। সারা দিন রোজা রেখে ক্লান্ত আমিও আর কথা না বাড়িয়ে তাতেই সায় দিলাম। দেশের বাইরে এসে স্কুলেও তাই আমার হয়ে গেলো অনেকগুলো নাম। কেউ ডাকে নামের প্রথম অংশ ধরে (শুদ্ধ আর ভুল দু'ভাবে)।কেউ ডাকে শেষের অংশ ধরে,আগে অবশ্য মিস্টার লাগায়। এভাবেই এখনো চলছে । আপনার নাম নিয়ে গল্পটা পড়তে পড়তে পেছনের অনেক কিছু মনে হলো। যাক গল্পের শেষে এসে টিচার সারা হাবিবের নাম চেঞ্জ করে দেবার জন্য খারাপ লাগাটা যে সারা চৌধুরীর কাটলো সেটাই ভালো । চমৎকার করে নামের গল্প বলেছেন । নিজেকে কানেক্ট করতে পারলাম অনেকটাই গল্পের সাথে ।ভালো থাকুন ।

৮| ২৯ শে মার্চ, ২০২১ ভোর ৫:১৭

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ মলাসইলমুইনা ।
গল্পের কারণে বেশ জানা হলো আপনার নিজের অভিজ্ঞতা। অনেক আগে কিছু বাড়িতে কাজের লোকের নাম বদলে দিতে দেখেছি। চেহারা নতুন কিন্তু নাম একই দেখার পর জানা গেল। নতুন নতুন নামে মানুষকে ডাকার কষ্ট তারা করতে চান না বলে সব চাকরদের নামই এক থাকে সব সময়।আর কিছু মানুষের কখনো নামই থাকে না তারা পরিচিত অমুকেম মা / বাবা এমন শব্দে।
আমার ছেলে নাকি খুব দুষ্টামি করত টিচারের অভিমত। তবে আমি মনে করি এটা স্বাভাবিক বাচ্চদের আচরণ। ক্লাস ওয়ানের বাচ্চা কি দুষ্টামি করবে। দুষ্টামি করে তাই ওর নাম বদলে দিতে আমাকে সাজেশন দিয়ে ছিলেন স্কুলের এসিস্টেন্ট হেড মিস্ট্রেস। অথচ ওর নামটা এমন রাখা হয়েছিল যা হয়ত বাংলাদেশে তখন একটিও ছিল না। আমি অবশ্য পাত্তা দেইনি উনার কথা।
আবার বিদেশে আসার পর ফোবানা নামের এক অনুষ্ঠানে, অং:শ গ্রহণ করতে গেলে। এক মহিলা আমাকে বললেন, আপনার আর কোন নাম নেই? ওনার নামটাও আমার নামে তাই। ওনার স্বামী আয়োজকের একজন ছিলেন তাই উনি ভেবেছিলেন উনার অনেক পাওয়ার। আর আমি তখন সদ্য আগত বিদেশের গুটি কয় বাঙালীর মধ্যে পরিচয় নাই, নতুন। কিন্তু আমার নামে তখন দেশে আমি অনেক পরিচিত। :) :) :)
আর কোন নাম আমাকে দিতে না পারায়, উনি বেশ মনোক্ষুন্ন হয়ে ছিলেন।
গল্পটা লেখার সময় অবশ্য এই ঘটনাগুলো মাথায় ছিল না। এখন মনে পড়ল।
আমাদের সমাজে কিছু নিচু ধারনা বড় হয়ে শুয়ে আছে। এই বিষয়গুলো ঝেঁটিয়ে বিদেয় করা দরকার।
গল্পের "সারা" নামটা কিন্তু বিশ্ব বিখ্যাত নাম । আমার নামটাও দেখি সারা বিশ্বের মানুষের কাছে বেশ পরিচিত । অনেক বিখ্যাত মানুষের নাম। আর বাংলা থেকে বহু ভাষায় আমার নামে গান শুনেছি। :) :) :)
কান্দাহার নামটি বেশ মজার :) ভাগ্য আপনাকে কান্দাহারে ফিরত পাঠিয়ে দেয়নি।
শুভেচ্ছা থাকল ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.