নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাদা মানুষরা যখন সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে আফ্রিকা নামের মহাদেশে পৌঁছে যায়। সেখানের অদ্ভুত কালো রঙের মানুষ গুলোকে দেখে তাদের, মানুষ ভাবতে পারে না। নিজেদের সাদা রঙের সাথে মূল্যায়ন করে নিকৃষ্ট একটি প্রাণী হিসাবেই গন্য করে তারা কালো মানুষদের। অথচ কালো মানুষগুলো নিজের দেশে, নিজের সংস্কৃতি পছন্দ অপছন্দ, নিয়ম শৃঙ্খলার জীবন যাপনে অভ্যস্থ স্বাধীন মানুষ ছিল।
সাদারা, সেই মানুষগুলোকে জোড় করে ধরে তুলে নিয়ে আসে, নিজেদের ভৃত্য বানানোর জন্য। পরিশ্রমের যত কাজ এই কালো মানুষগুলোকে দিয়ে করানো যাবে। শুরু হয় স্বাধীন মানুষের উপর অকথ্য অত্যাচার । নির্যাতন করে কাজ করানো শুধু নয় মানুষকে নিলামে তুলে বিক্রি করে দেওয়ার মতন নিকৃষ্ট কাজ গুলোও তারা করে। যথেচ্ছা ভাবে ব্যবহার করে নারীদের শরীরও। পৃথিবীতে আরেক প্রজাতির সন্তান জন্ম গ্রহণ করে সাদা কালোর মিশ্রনে। এই প্রজাতি; না সাদা, না কালো কারো মতন দেখতে নয় । সাদা কালো দুই দলের মানুষের কাছেই বেমানান ভিন্ন ওরা। কেউ সহজে যেমন ওদের নিতে পারে না ওরাও অন্যদের সাথে মানাতে পারে না। অন্যদের কাছে, নিকৃষ্ট অন্য গোত্রের মানুষ এরা। এদের হেও চোখে দেখে কালো এবং সাদা উভয়ই। যে জন্মের জন্য তারা নিজেরা কোন ভাবেই দায়ি নয়।
সেই সময়ে রাস্তায় একজন সাদা মানুষ যখন যাচ্ছে, তখন কালো মানুষকে সরে যেয়ে সাদা মানুষদের তাদের আগে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হতো। কেউ অসুস্থ মরে যাচ্ছে এমন হলেও হেলে দুলে হেসে খেলে পেরিয়ে যাওয়া সাদাদের পরই তাদের হাঁটতে হতো।
স্কুল, অফিস, আদালতে কালোদের জন্য দ্বিতীয় শ্রেণীর অধিকার ছিল। কোন সুযোগ সুবিধাই তারা পেত না। অথচ নিজের ইচ্ছায় নয় ধরে তুলে আনা হয়েছে তাদের অন্য দেশে । নিগার পরিচয়ের এই কালো মানুষদের আসল নামে না ডেকে হেলাফেরার একটি নাম দেয়া হতো ।
নিগার হিসাবে মানুষের অবমননার সব ঘটনা, এসব বিষয়গুলোই আমাদের জানা, এত বছর পরে। এবং এক সময় অনেক অত্যাচার সহ্য করে কালো মানুষদের স্বাধীন এবং মানুষ হিসাবে গন্য করার নিয়ম চালু হলেও। এখনও ভিতরে ভিতরে অনেক মানুষের মনে কালো মানুষদের নিকৃষ্ট মানুষ ভাবার প্রবণতা রয়ে গেছে। তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ তো গত বছরও দেখলাম, জর্জ ফ্লয়েডের ঘটনার মাধ্যমে।
স্বাধীন আফ্রিকার কালো মানুষদের একটি গোত্র তৈরি হয় অংশ ভাগ হয়ে যায় আফ্রিকান- আমেরিকান হিসাবে। আফ্রিকার মূল ভুমি থেকে তুলে আনা কালো মানুষরাই আফ্রিকান- আমেরিকান নামে পরিচিত।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি পুরো মাস জুড়ে "ব্ল্যাক হিস্ট্রি মান্থ" হিসাবে পালিত হয়। আফ্রিকান-আমেরিকার কালোদের ইতিহাস জানানো হয় নতুন প্রজন্মকে। অ্যালেক্স হ্যালির 'রুটস দেখার আগে, কালোদের এই অত্যাচারিত হওয়ার ইতিহাস আমারও জানা ছিল না, বিস্তারিত ভাবে ।
কিছুকাল আগে আমেরিকার, প্রেসিডেন্ট হন বরাক ওবামা। তার স্ত্রী মিশেল ওবামাকে আমরা সবাই চিনি। তিনি ল পাশ করেছেন। একজন আমেরিকান আইনজীবি। কর্ম ক্ষেত্রে উনার নিজস্ব অনেক বিশাল পরিচয় রয়েছে ফাস্টলেডি হওয়া ছাড়াও।
অথচ ১৯৬৪ সনের ১৭ জানুয়ারি যে মেয়েটির জন্ম হয় মিশেল লভান রবিনসন, একজন আফ্রিকান-আমেরিকান হয়ে। আরো ষোল সতের বছর পর পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে গিয়ে, এই সেদিন তাকেও অনেক যুদ্ধ করে জয়ী হতে হয়েছে, পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য। একটি কালো মেয়ে হিসাবে পড়ালেখা করতে হয়েছে অচ্ছুত অবস্থায়। ছোট বেলা থেকে বাবার আগ্রহে বিখ্যাত প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় ও হার্ভার্ড ল স্কুলে পড়ার ইচ্ছা গড়ে উঠে মনে মিশেলের। কিন্তু ভর্তি হতে গিয়ে বাঁধা প্রাপ্ত হন, কারণ একটাই তার কালো গায়ের বরণ। স্কুল কাউন্সিলর বারেবারে বুঝাতে চেষ্টা করে,ঐসব বিশ্ববিদ্যালয়ে তোমার যাওয়া ঠিক হবে না। তোমার জন্য একটু বেশি বড় মাপের হয়ে যায়, এই সব স্কুল । তুমি এই স্কুলের পড়া লেখা সামলাতেই পারবে না। তুমি বরং হালকা কিছু বিষয়ে অন্য স্কুলে পড়ে ফেলো।
অন্য ভাবে যা বোঝান হয় তুমি কালো, তুমি এমন আভিজাত্য থেকে দূরে থাকো। এসব শুধু সাদাদের জন্য। কিন্তু তিনি ছেড়ে দিননি তার স্বপ্ন। যার ফলে তিনি পৌঁছাতে পারেন তার লক্ষে শেষ পর্যন্ত।
আমার গল্প মিশেল কে নিয়ে নয়, মিশেলের সময়ের দুই শত বৎসর আগে অবস্থা, যখন আরো করুণ ছিল তখন কালো পুরুষরাই কোন সুযোগ পায় না। তাদের অবস্থান চাকরবাকরের মতনই সাদাদের মনে। যতই তারা নিজের মতন স্বাধীন এবং বুদ্ধিসম্পন্ন হোক না কেন। একজন সাদার কাছে, সে যেন কীট পতঙ্গ, মানুষ না এভাবেই দেখা হয়। কালো একজন নিগার।
ব্ল্যাক হিস্ট্রি মান্থ ফেব্রুয়ারিতে জানি শুনি অনেক নিষ্ঠুরতার বাস্তব গল্প। অনেক মানুষের জীবন কাহিনী তাদের জীবনের কঠিন সংগ্রামের কথা জানা যায়। উত্তরসুরীদের কঠিন বাস্তবতা সম্মানের সাথে অনেকেই জানাতে পছন্দ করেন । একটা কঠিন অবস্থা থেকে উঠে আসা এই সব মানুষদের মর্যাদার আসনে রাখেন গর্ব করেন, আফ্রিকান -আমেরিকান কালোরা।
সেই সময় আঠার শতকে ২৩ ডিসেম্বর ১৮৬৭ সনে জন্ম হয় সারাহ ব্রিডলভ নামের একটি মেয়ে। সেই মেয়েটি অচ্ছুত অবস্থার সেই শংকটময় সময়ে, সাত বছর বয়সে অনাথ হয়ে যায়, মা এবং এক বছরের মধ্যে বাবাও মারা যাওয়ার পরে।
উপায়হীন সারা তখন মিসিসিপির ভিকসবার্গে বড় বোন লুভেনিয়া এবং তার স্বামী জেসি পাওলের সাথে থাকতে শুরু করে। বোন নয় যেন গৃহকর্মী হিসাবে, বোনের বাড়িতে কাজ শুরু বাচ্চা বয়সে। অল্প বয়সে লোলুপ দৃষ্টি ছিল বোনের স্বামীর তার উপর।
১৪ বছর বয়সে, জেসি পাওয়েলের অপব্যবহার থেকে বাঁচতে, মুসা ম্যাকউইলিয়ামস নামের এক যুবককে বিয়ে করে সারা।
সারা ও মুসার এক কন্যা 'লেলিয়ার জন্ম হয়েছিল ১৮ জুন, ১৮৮৫ সালে। কিন্তু সম্পর্ক টিকে না মুসা ম্যাকউইলিয়ামসের সাথে।
এরপর সারা ১৮৯৪ সালে বিয়ে করেছিল, তবে দ্বিতীয় স্বামী জন ডেভিসের সাথেও তার সম্পর্ক স্থায়ী হয় না। গল্পটা সারার বিয়ে পারিবারিক বিষয়েও নয়। সারার জেগে উঠা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার যুদ্ধটা নিয়ে। যখন সময়টা ভীষণ রকম বৈরি।
যে নারীর মধ্যে আছে সচেতনতা, সে অবদমন এবং পুরুষের কঠিন কথা এবং শাসনের মধ্যে কিছুতেই থাকতে পারে না। স্বাধীন সত্তার অধিকারী সারা, নিজের মতন একটি চুলের সেলুনে কাজ করে, জীবন যাপন করছিল মেয়েকে নিয়ে। সেলুনের কাজকরা শিখেছিল তার ভাইদের কাছে।
হেয়ার সেলুনে, কাজ করার সময় চুলের জন্য কিছু প্রোডাক্ট তৈরির বিষয় ঘুরপাক খেতে থাকে তার মনে। বিষয়টাকে উসকে দিয়েছিল কিছু অবস্থা।
তার যুগের কৃষ্ণাঙ্গ মহিলাদের মধ্যে প্রচলিত ছিল, ত্বকের ব্যাধি । চুল পরিষ্কার করার জন্য এবং কাপড় ধোয়ার জন্য কাঠের পণ্য প্রয়োগের কারণে সারা, নিজেও চুল পরা এবং টাক হয়ে যাওয়া ও চুলকানিসহ ত্বক ও মাথার ত্বকের বিভিন্ন রোগে ভুগছিল।
তার চুল পড়া, ক্ষতিগ্রস্থ করার অন্যান্য কারণগুলি, দরিদ্রতা খাবারের অভাব, অসুস্থতা। এছাড়া স্নান এবং চুল ধোয়ার পানির অভাব।
নিজের অসুবিধা সারানোর চেষ্টা করতে গিয়ে, কৃষ্ণাঙ্গ মহিলাদের জন্য কসমেটিকস এবং চুলের যত্নের পণ্যগুলির একটি লাইন তৈরি করে ফেলে সারা, নিজের উদ্ভাবনি থেকে। বিক্রি করতে থাকে নিজের আবিস্কৃত পণ্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে । এক ডলারের বিপণনের মাধ্যমে তার ভাগ্য ফিরতে শুরু করে। বাজারে জোড় করেই মহিলাদের গছাতে থাকে তার পণ্য ব্যবহার করে দেখার জন্য। বাড়ি বাড়ি দরজায় নক করে ধনী মহিলাদের কাছেও বিক্রি করে চুলে ব্যবহারের প্রোডাক্ট।
যারা তার পণ্য ব্যবহার করে উপকার পায় তারা ফিরে আসে তার কাছে নতুন করে কেনার জন্য। যখন সে একটু প্রতিষ্ঠা পেতে শুরু করেছে। পরিচিতি পেতে শুরু করেছে তার পণ্য মানুষের কাছে।
সেলুনের মালিক অভিযোগ করে সেলুনের পণ্যের ফরমূলা সে চুরি করেছে।
কালো মানুষের অনেক জায়গায় ঢুকা বারণ সে সময় অনেক পুরুষ এবং ধনাঢ্য মানুষের ভীড়ে একজন কালো মহিলা একা বসে আছে, বিভিন্ন ব্যবসায়িক মিটিংগুলোতে। সবাই তার দিকে আড়ে আড়ে চায়, অবজ্ঞার চোখে দেখে। হয়ে উঠে উপহাস এবং হাসির পাত্রী। যেখানে সব সাদাদের উপস্থিতি সেখানে একজন কালো নারীর উপস্থিতি অনেকের কাছে অস্বস্থিকর অবস্থাও হয়ে যায়।
সাথে যারা ছিল সমর্থনে, তারাও অসহায় এবং সমর্থন হারিয়ে ফেলতে থাকে বৈষম্যপূর্ণ অবস্থায়। কিন্তু সারা ছেড়ে দেয়ার পাত্রী নয়। তার ক্রমাগত প্রচেষ্টা চলতে থাকে। সব উপেক্ষা করে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করে তোলে। যাদের থেকে কিছু সাহায্য পাওয়া যেতে পারে ডেসপারের্ট ভাবে তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করে। নিজের মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে।
তাঁর মাত্র তিন মাসের প্রথাগত পড়াশোনা ছিল, এছাড়া রবিবার চার্চে যাওয়া টুকুই তার শিক্ষা। এইটুকু পড়ালেখা করেও জীবন সম্পর্কে তার ধারনা ছিল দূরদর্শী। সারা মেয়েকে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত অর্থোপার্জনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়।
অল্প বয়স থেকে জীবনের সাথে পাঞ্জা লড়তে গিয়ে হয়ে উঠেছিল অভিজ্ঞ। সমস্ত প্রতিকুলতার সাথে যুদ্ধ করে, নিজেকে চূড়ান্ত রূপে প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রতিনিয়ত পণ্যের মান বাড়ানোর চেষ্টা চলতে থাকে। সাজসজ্জার পদ্ধতিটি চুলের বৃদ্ধির জন্য এবং তার পণ্যগুলির ব্যবহারের মাধ্যমে মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। একটি শ্যাম্পু অন্তর্ভুক্ত ছিল, চুলের বৃদ্ধি। চুল আঁচড়ানো সহজ করার জন্য পোমড বা ভেসেলিন ব্যবহার যা ভঙ্গুর চুলকে রক্ষা করবে এবং চুল নরম সুন্দর হবে। বিলাসবহুল নারী যারা সাজতে পছন্দ করে তাদের কাছে জনপ্রিয় হয় পণ্য।
১৯০৬ সালে, মিসৌরির সেন্ট লুইসে পরিচিত একজন সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপন বিক্রয়কারী, চার্লস জোসেফ ওয়াকারকে বিয়ে করেন সারা আবার। এই বিয়ের মাধ্যমে তিনি ম্যাডাম সি জে ওয়াকার নামে পরিচিতি লাভ করেন।
সারার মেয়ে লেলিয়া ম্যাকউইলিয়ামস তার সৎ বাবা নাম ব্যবহার করে এবং লেলিয়া ওয়াকার নামে পরিচিতি পায়।
ওয়াকার তার মেয়েকে ডেনভারে মেল-অর্ডার অপারেশনের দায়িত্বে দিয়ে, স্বামীসহ ব্যবসার সম্প্রসারণের জন্য দক্ষিণ এবং পূর্ব আমেরিকা ভ্রমণ শুরু করেন।
১৯০৮ সালে ওয়াকার এবং তার স্বামী পেনসিলভেনিয়ার পিটসবার্গে চলে আসেন, সেখানে তারা একটি বিউটি পার্লার খোলেন এবং চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ, কেশ বিন্যাশের জন্য লেলিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
কৃষ্ণাঙ্গ মহিলাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেন। স্বাস্থ্যসম্মত কমিশন অর্জনকারী লাইসেন্সধারী বিক্রয় এজেন্টদের স্বনির্ভর হয়ে উঠার জন্য, জাতীয় নেটওয়ার্কের "ওয়াকার সিস্টেম" এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করেন। ম্যাডাম সি জে ওয়াকার তার বিক্রয় এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য একটি কারখানা, হেয়ার সেলুন এবং বিউটি স্কুল তৈরি করেন এবং গবেষণায় সহায়তা করার জন্য একটি পরীক্ষাগারও সংযুক্ত করেন।
তিনি ক্রমবর্ধমান সংস্থার পরিচালনায় সহায়তার জন্য অনেক মহিলা নিযুক্ত করেন। প্রায় বিশ হাজার মহিলাকে তিনি প্রশিক্ষন দিয়েছিলেন ।
১৯১০ সালে, ওয়াকার তার ব্যবসা ইন্ডিয়ানাপলিসে স্থানান্তরিত করেন, যেখানে তিনি ম্যাডাম সি জে। ওয়াকার ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির সদর দফতর প্রতিষ্ঠা করেন।
একটি বাড়ি কিনে যখন অভিজাত এলাকার সাদাদের মধ্যে এই নতুন শহরে বাস করতে আসেন। তখনও তাকে দেখা হতো হেয় করে।
কিন্তু ম্যাডাম সি জে ওয়াকার কারখানা কিনেছিলেন। এবং ব্যবসা করে সেই সময়ে মিলিয়নারও হয়েছিলেন নিজের অদম্য প্রচেষ্টায়।
একজন আফ্রিকান- আমেরিকান উদ্যোক্তা, সমাজসেবী এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মী ও ছিলেন ম্যাডাম সি জে ওয়াকার। গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে, আমেরিকাতে প্রথম মহিলা সেলফ মেইড কোটিপতি হিসাবে নিজের প্রতিষ্ঠা করে গেছেন, সারা নামের সেই অল্প বয়সে এতিম হয়ে যাওয়া ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার হওয়া মেয়েটি।
সমাজসেবী এবং সক্রিয়তার জন্যও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি অসংখ্য সংস্থাকে আর্থিক অনুদান দিয়েছেন। চারুকলার পৃষ্ঠপোষক হন। নিউইয়র্কের ইরভিংটনে ওয়াকারের দুর্দান্ত সম্পদ ভিলা লেওয়ারো আফ্রিকান-আমেরিকান সম্প্রদায়ের জন্য সামাজিক জমায়েতের জায়গা হিসাবে দিয়েছিলেন। তার মৃত্যুর সময়, তিনি আমেরিকার সবচেয়ে ধনী আফ্রিকান-আমেরিকান ব্যবসায়ী এবং সবচেয়ে ধনী সেলফ মেইড কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা হিসাবে বিবেচিত হয়েছিলেন। ম্যাডাম সিজে ওয়াকার হিসাবেই তিনি পরিচিত হয়ে আছেন।
ইন্ডিয়ানাপলিসের চিলড্রেনস মিউজিয়ামে স্থায়ী সংগ্রহে ম্যাডাম সি জে ওয়ালকারের ওয়ান্ডারফুল হেয়ার উৎত্পাদন পণ্য সংরক্ষণ আছে। ইন্ডিয়ানাপলিসের ওয়াকার ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির সদর দফতর, ম্যাডাম ওয়াকার থিয়েটার সেন্টারটির নামকরণ করা হয়েছিল ১৯২৭ সালের ডিসেম্বরে। এটি সংস্থার অফিস এবং কারখানার পাশাপাশি একটি থিয়েটার, বিউটি স্কুল, হেয়ার সেলুন এবং নাপিত দোকান, রেস্তোঁরা, ওষুধের দোকান এবং একটি বলরুমের জন্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। ঐতিহাসিক স্থানের জাতীয় নিবন্ধে ভবনটি তালিকাভুক্ত করা আছে।
ম্যাডাম সিজে ওয়াকারকে নিয়ে ডকুমেন্টারি হয়েছে, টু ডলার এণ্ড এ ড্রিম ১৯৮৪ সালে। ২০২০ সালে রিলিজ হয়, ওয়াকারের গ্রেট গ্রেট গ্রাণ্ড ডটার অর্থাৎ নাতীর ঘরের পুতি 'লেলিয়া বান্ডেলসের লেখা, সি জে ওয়াকারের জীবনী অবলম্বনে একটি টিভি সিরিজ । তৈরি করেন অভিনেত্রী অক্টাভিয়া স্পেন্সার। সিরিজটির নাম সেলফ মেড: ম্যাডাম সি জে ওয়াকার । অভিনেত্রী অক্টাভিয়া স্পেন্সার পরিচালনা এবং নাম ভুমিকায় অভিনয় করেন ।
আমার একটু সুযোগ হয়ে ছিল টিভি সিরিজের সি জে ওয়াকারের টিমের সাথে কাজ করার। কাছ থেকে কালো মানুষগুলোর অনুভব উপলব্ধি করা, দেখার এবং জানার। যখন এক সাথে ছিলাম বেশ কিছুদিন কাজ করার প্রয়োজনে।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:১৪
রোকসানা লেইস বলেছেন: কালোরা কালোর দেশে থাকলে ওদের টেনে না আনলে হয় তো ভাবনা চিন্তা অন্য রকম হতো। কিন্তু সব কিছুই গুবলেট হয়ে গেছে মিলেমিশে।
শুভেচ্ছা ইমতিয়াজ ১৩
২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৫৩
রবিন.হুড বলেছেন: দুনিয়ার সব মানুষ সুখী হোক। ধন্যবাদ সুন্দর গল্প লেখার জন্য। নাতির ঘরের পুতির নাম কি এবংএখন কি করে?
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:১৬
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ রবিন.হুড
নাতির ঘরের পুতি লেখা যেখানে পেয়েছেন তারের পরের শব্দটাই তো নাম, দেখে নেন।
এখন কি করে তা জানি না।
৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: ব্ল্যাক হিস্ট্র মান্থ সম্পর্কে কিছু তথ্য দিন।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:১৭
রোকসানা লেইস বলেছেন: এই তো একটা তথ্য দিলাম। তথ্যটা কেমন লাগল বলো
৪| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:২৭
স্প্যানকড বলেছেন: আমগো দেশেও আছে এই ফারাক ! বর পক্ষের সব সময় দাবি " মেয়ে চাই লাল লংকার মতো " তারপরে আছে বাজারে অগনিত ফর্সা হওয়ার ক্রীম ! কালা, সাদা দ্বন্দ্ব আরও বাড়বে বৈ কমবে না। পড়লাম ভালো লাগলো। ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:২০
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ spanked
আমাদের দেশের মেয়ে চাই লাল লংকার মতন মেয়ে চাওয়া বরগুলোর জন্য আফ্রিকার মেয়ে নিয়ে আসা দরকার।
আমাদের দেশের ভাবনার এই বৈসম্য তো আরো বিচ্ছিরি মানসিকতা। নিজেরাই নিজেদের হেইট করছে।
৫| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৩১
রক্ত দান বলেছেন: ম্যাডাম সি জে ওয়াকার অবহেলিতদের অনুপ্রেরণা।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:২৪
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ রক্ত দান
অসসম্ভব অনুপ্রেরণা। কঠিন সময়ের স্রোতের উজানে চলে নিজেকে কালজয়ি করে যাওয়া একজন মানুষ।
৬| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:৩৬
ফয়সাল রকি বলেছেন: তথ্যমূলক পোষ্ট।
ধন্যবাদ।
৭| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:২৫
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ ফয়সাল রকি।
৮| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: এই তো একটা তথ্য দিলাম। তথ্যটা কেমন লাগল বলো
আমার আরো বেশী জানার দরকার ছিলো। নেটে তো খুঁজে তেমন কিছু পেলাম না।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৭:২৭
রোকসানা লেইস বলেছেন: রাজীব নুর বুঝতে পারলে না। সারা মাস জুড়ে। সেই দুঃসহ অবস্থার কথা বলা হয়। নতুন প্রজন্মকে জানানো হয় ইতিহাস।সম্মানিত এবং বীরদের কথা বলা হয়।
আমি এমন একজনের কথা বললাম।
একজন নারী কি ভাবে উঠে আসল অন্ধকারের ভিতর থেকে তাঁর সেই চেষ্টার বিষয়ে তো কিছুই বললে না?
৯| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:২৫
কালো যাদুকর বলেছেন: @রাজীব নুর এখানে দেখেন...https://www.africanamericanhistorymonth.gov/
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৭:২৮
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ কালো যাদুকর।
১০| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:৩৭
কালো যাদুকর বলেছেন: অনেক যত্ন করে লিখেছেন। বাংলাদেশীদের এ বিষয়টির উপর তেমন ধারনা নেই।
#BLM
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৭:৩৩
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ চেষ্টা করলাম। এ বিষয়ে লেখা নেই মনে হয় ব্লগে।
বাংলাদেশীদের নিজের ব্যপারেই ধারনা নাই আমার মনে হয়।
অনেক বাংলাদেশি আবার দেশে থেকে, কালোদের একদম দেখতে পারে না।
ব্ল্যাক লাইফ মেটার।
১১| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:০৭
মলাসইলমুইনা বলেছেন: হ্যা একজন ইন্ডিয়ান আফ্রিকান আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস হতে কালো মেয়েদের অনেক চরাই উৎরাই পেরুতে হয়েছে । আর সেই পথগুলো আজকের আফ্রিকান আমেরিকান মেয়েদের জন্য গড়ে দিয়েছে সারাহ ব্রিডলভদের মতো হার না মানা কিছু কালো মেয়ের ঐকান্তিক চেষ্টা।আমি ম্যাডাম সিজে ওয়াকারের সারাহ ব্রিডলভ) সম্পর্কে বেশি কিছু জানতাম না।আপনার লেখা পড়ে জানা হলো। চমৎকার হয়েছে লেখা । ধন্যবাদ ।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৪০
রোকসানা লেইস বলেছেন: সারাহ ব্রিডলভ ম্যাডাম সি জে ওয়াকার একজন নিগার হয়ে ইতিহাস তৈরি করে গেছেন। মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার স্বাধীন ভাবে বাঁচার পথ দেখিয়ে গেছেন। উনার হাত ধরে অনেক নারী সাবলম্বী জীবন পেয়েছেন।
যখন কালোদের অফিস আদালতের অনেক পদ পাওয়া কঠিন তখন তারা নিজেদের মতন জায়গা করে নিয়েছে ব্যবসা এবং মিডিয়া পারর্ফম, খেলাধূলায় অনেক এগিয়ে গেছে তারা।
আমিও জানতাম না আগে বিদেশে থাকার কারণে এবং আগ্রহ থাকার কারণে অনেকের গল্প শোনার সুযোগ হয় জানতে পারি।
ধন্যবাদ মলাসইলমুইনা
১২| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:২৩
তারেক ফাহিম বলেছেন: সাদা-কালো লম্টা বেঠে দেহের রক্ত রসবার লাল,
দমের মেশিন বন্ধ হলে সবার হয় একই হাল।
বিস্তারিত জানতাম না।
আপনার ব্লগ পড়ে জানা হলো।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:২৮
রোকসানা লেইস বলেছেন: "কালো আর ধলো বাহিরে কেবল,
ভিতরে সবার সমান রাঙ্গা" সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, মানুষ জাতি নামে একটা অসাধারন কবিতা লিখেছিলেন বহু আগে।
অথচ আমরা মানুষ জাতি বুঝতে না পেরে শুধুই ভাগ করি।
ধন্যবাদ তারেক ফাহিম
১৩| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৫০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: সাদাদের প্রভুত্ববাদ আর কর্তৃত্ববাদ গেলনা কোন দিন।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৩১
রোকসানা লেইস বলেছেন: সাদারা তো একটা নিয়ম করেছে তবু মানুষকে সমান ভভাবার।
কিছু মানুষ ভিতরে লুকিয়ে রাখে বর্ণবাদ।
কিন্তু আমরা বাঙালিরাই কত ভাগে ভাগ করে ফেলেছি নিজেদের কোন বর্ণবাদ ছাড়াই।
শুভেচ্ছা মোঃ মাইদুল সরকার
১৪| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য।
ভালো থাকুন।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৩৫
রোকসানা লেইস বলেছেন: মন্তব্যেের উত্তর তো আমি দেই। রাজীব নুর
সময়ের কারণে কখনো দেরি হয়ে যায়। আমারও ইচেছ করে তোমার মতন সকাল বিকাল কয়েকটা পোষ্ট করি কিন্তু সময় খুব অল্প পাওয়া যায় লেখার জন্যই।
অনেক ভালো লেখাও পড়তে পারি না।
শুভেচ্ছা জেনাে
১৫| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৪৭
এল গ্যাস্ত্রিকো ডি প্রবলেমো বলেছেন: চমৎকার পোস্ট।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৩৩
রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ এল গ্যাস্ত্রিকো ডি প্রবলেমো
১৬| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:১৯
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: সুন্দর এবং তথ্যমূলক পোস্ট । সাদা এবং কালোর ব্যবধান আগে খু-উ-ব তীব্র হতে তীব্রতরও ছিল প্রকাশ্যে--, এখনো আছে তবে আছে মনের গহীনে--প্রকাশ করে না তবে আভাসে আর আবডালে বুঝিয়ে দেয়া হয় তুমি কালো ---। খুবই বেদনার বিষয় --। আমেরিকাতে পুলিশ মাুনুষ মেরে ফেললো-অপরাধ ছিল সে কালো--কত বিক্ষভ হলো--কিন্তু তাতেও কি বেশির ভাগ মানুষের টনক নড়েছে !! তবে হ্যা এই বিক্ষোভে অনেক সাদা অংশগ্রহণ করেছিল--। যাইহোক অনেক মানুষের বিবেককে এখন নাড়া দিচ্ছে-তারা এখন এই বিভেদ হতে মুক্তি চায়-----
শুভকামনা রইল
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৪১
রোকসানা লেইস বলেছেন: সুন্দর মন্তব্য করেছেন ধন্যবাদ লাইলী আরজুমান খানম লায়লা
ভিতরে ভিতরে কিছু মানুষের মধ্যে বৈষম্য বিরাজ করলেও নতুন প্রজন্ম অনেকটা সহজ হয়ে গিয়েছিল মানুষকে সমান ভাবায়।
কিন্তু ভিতরে থাকা মানুষের বৈষম্য প্রকাশ পেল শাসকের আসকারা পেয়ে।
কত কষ্ট করে একটা সময় মানুষ, মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে চেষ্টা করেছে।
সিজে ওয়াকার সে সময়ের এক জন মানুষ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৪৬
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: সাদা ও কালোর এ ব্যবধান গুছবার নয়। আমাদের প্রয়োজনেই এটা থাকবে অনন্তকাল