নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উত্তর আটলান্টিক মহাসাগর এবং ক্যারিবিয়ান সাগরের মাঝে মাত্র চারশ ত্রিশ বর্গ কিলোমিটার কোরাল গঠিত ভূমি বারবেডোস। লম্বালম্বি ভাবে একুশ মাইল পাশে চৌদ্দ মাইল। এই টুকু হলো দ্বীপের সীমা। পুরো দ্বীপ ড্রাইভ করে পার হতে খুব বেশী হলে চার ঘণ্টা সময় লাগবে আস্তে ধীরে গেলে।
যুক্তরাজ্য থেকে সার্বভৌমত্ব অর্জন করে ১৯৬৬ সনে। ছোট এই দ্বীপের জন সংখ্যা ২০১২ সনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২৮৭৭৩৩ এবং দেশটির প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৬৬৯ জন লোকের বাস ।
। বারবেডোসে বর্তমান শাসন ব্যবস্থা স্থিতিশীল এবং গনতান্ত্রিক পদ্ধতি প্রচলিত।
আরটি ফাউন্ডেল স্টুয়ার্ট বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
পর্যটন বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস। কৃষি, তেল অর্থ আয় কারি খাত।
বার্বেডোর মানুষ নিজেদের, "বেসিয়ান" বলে। বেসিয়ান হিসাবে পরিচিত মানুষদের গায়ের রঙ কালো ক্রান্তীয় অঞ্চলের প্রখর সূর্যের আলোর প্রভাব। ব্রিটিশ শাসনের সময় আফ্রিকা এবং ই-িয়া থেকে মানুষ তুলে নেয়া হয়েছে চাষবাসের জন্য। তারাই এখন স্থানীয় হয়ে গেছে বংশ পর্যায়ক্রমে। মূদ্রাও বেসিয়ান মূদ্রা নামে প্রচলিত।
ধর্ম পালিত হয় ক্যাথলিক, ক্রিশ্চিয়ান, বৌদ্ধ এবং মুসলিম, হিন্দু।
ইংরেজী, বার্বাডোসের ভাষা, এবং যোগাযোগর মাধ্যম, প্রশাসনে ব্যবহৃত হয়। ইংরেজী শব্দভান্ডার, উচ্চারণ, বানান, মিল থাকলেও, ব্রিটিশ ইংরেজীর মত নয়। কিছুটা নিজেদের মতন হয়ে গেছে। স্ট্যান্ডার্ড ইংলিশ থেকে স্পষ্টভাবে আলাদা। বেসিয়ানরা অন্যান্য ক্যারিবিয়ান ইংরেজি উপভাষায় প্রভাবিত। ভাষা ইংলিশ হলেও, মানুষের কথায় বেশ একটা টান পেলাম, ইংলিশে বললেও বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিল প্রথম অবস্থায়।
বেসিয়ান কথা শুনলে অন্য দেশের একজন ইংরেজ স্পিকারের কাছে সম্পূণরূপে অন্য ভাষা মনে হতে পারে। যেমনটি আমার হয়েছে, অনেক সময় তাদের টান এবং উচ্চারণের জন্য মনে হয়েছে ইংরেজি নয় অন্য ভাষায় যেন কথা বলছে। অনেকের আদিবাস জ্যামাইকা বা কাজের জন্য বার্বাডোসের আছে। মানুষের আচার ব্যবহার যথেষ্ট মার্জিত।
এগারোটি বিভাগ আছে দেশটায়। খ্রাষ্ট চার্চ. সেন্ট অ্যান্ড্রু সেন্ট জর্জ সেন্ট জেমস, সেন্ট জন, সেন্ট জোসেফ, সেন্ট লুসি, সেন্ট মাইকেল। আমাদের অবস্থান হলো সেন্ট মাইকেল প্রভিন্সের ব্রীজটাউনে। সবচে বড় শহর হলো ব্রীজটাউন এবং রাজধানী।
পাহাড় আর সমতলের বৈচিত্র আর সাগর সে তো তার অপরূপ রূপ নিয়ে ঘিরেই আছে। মেঘ রোদের সাথে নানা রঙে যার রূপ বৈচিত্র মুগ্ধ করে। সবুজের কোলাহল যেন চারপাশে। নানা রকমের গাছ। অনেক গাছ দেখে দেশের কথা মনে হলো। এতো আমার গাছ। কি জানি হয়তো এখান থেকে আমার দেশে অভিবাসন নিয়েছে সে সব গাছ। যেমন কৃষ্ণচূড়া নিয়ে আমরা কত অস্থির হই। সে কৃষ্ণচূড়া বার্বাডোসের অহংকার কেসলিপিনিয়া পুলিচেরমিয়। তাদের প্রচলিত নাম ময়ূরফুল। এখানকার জাতিয় গাছ। লাল হলুদ ফুলের সোমারহ। বহু বছর পরে সারি বাঁধা স্বর্নালী ফুলের গাছ দেখে মন ভরে গেল। আছে নীমগাছ। নীম ফুল আমার খুব প্রিয়। অনেকে হয় তো যানে না। নিমফুলের ঘ্রাণ কেমন। কিন্তু পথে যেতে নীম ফুলের ঘ্রাণে থেমে গেলাম আমি।
রাশি রাশি জবা, কলাবতি, নয়নতারা। ইচ্ছে হলে কিছু নীম পাতা নিয়ে আসি। কিন্তু বার্বেডোসে গাছে হাত দেয়া ফুল ফল পারা নিষিদ্ভ। কেউ বেরাতে গেলে সাবধান থাককেন।
এ যেন প্রতিটি আমার ঘরের বৃক্ষ লতা। নারিকেল তো আছেই সাথে আছে ডুমুর। ডুমুর গাছে দুই রঙের ফুল। সতেজটা হলুদ একটু পুরানোটা ম্যাজেন্টা হয়ে গেছে। তারপর ফল ধরছে। ডুমুর গাছের পাতা খুব সুন্দর। ঘন ভারী পাতাগুলো বটপাতার মতন আকৃতি কিন্তু যেন তেল চকচক করছে। ডুমুরের ফুল নাকি দেখা যায় না। অথচ সে ফুলও দেখলাম অনেক গাছে ধরে আছে।
আর আমার প্রিয় কনকচাপা ঘ্রাণে মাতাল করে রাখছে চারপাশ। আছে হাসনাহেনাও।গন্ধ বিভুর আমি ইচ্ছে করে গাছের পাশে বসেই বেলা কাটিয়ে দেই।। এত ফুল ফল চার পাশে।
এক গাছে নতুন পাতা ফুল এবং ফল ধরে আছে। বারো মাস ধরেই ফুল, ফলের চক্র চলে এখানে। শীতকালে আমগাছে নতুন পাতা গজালে বলা হতো এবার এ গাছে আর আম হবে না। এবং সত্যিই নতুনপাতা গজানো গাছে আম হতো না। বার্বেডোসের আম গাছে নতুনপাতার একপাশে, আমের মুকুল এক পাশে আর সাথে আমও ঝুলে আছে। এখানে ঋতুর তেমন ভাগ নেই শুকনো আর ভেজা বর্ষাকাল। আর উত্তাপ অনেক। তাই সারা বছর গাছে ফুল ফল ধরে ঘুরে ঘুরে। ব্রীজটাউনের কুইন্সপার্কে বিশাল গুড়ির একটা বাওয়াব গাছ।
বাওয়ব নামের বিশাল বড় গুড়ির গাছের সাথে দেখা হলো যার বয়স কয়েকশ বছর, তাকে দেখা হলো। এ গাছের মোটা সোটা গুড়িটা শাসাল পানি ভর্তি থাকে শূন্যে লম্বা হয়ে উঠে যায় ঝাঁকড়া গাছ। রাতের বেলা সুগন্ধী ফুল ধরে। ফুলগুলি রাতেই চোখ বুজে ফেলে আবার; অনেকটা নাইট কুইনের মতন। তবে সে ফুল থেকে বড় বড় ফল হয়। শুকনো খোলের ভিতর অনেক বিচি। বিচি ঘিরে আছে পাউডারের মতন শাস। কেমন লাগে খেতে জানি না। তবে শুনলাম অনেক পুষ্টিগুন। বার্বেডোসের সপ্তম আশ্চর্যের একটি বাওয়াব গাছ।
বিশ বছরের আগে কোন বাওয়াব গাছে ফল ধরে না তবে বাঁচে হাজার বছর।
আসলে ওরা বেশ মজায় আছে ফলফুল মাছ অফূরন্ত। ওখানে যে মাছটা খুব বিখ্যাত তার নাম ফ্লাইং ফিস। আমরা আবার মাহি মাহি ফিসের নানা রকম আইটেম খেলাম। মন্দ লাগেনি।
মাহি মাহিকে ওরা ডলফিন ডাকে। অনেকটা দেখতে ছোটখাট ডলফিনের মতন। অথবা চিতলের মতন হবে।
পরদিন সাগরের কোলাহলের সাথে সারাদিন কাটালাম। সন্ধ্যায় হোটেল থেকে শহরের ফ্লি মার্কেটে নিয়ে যাবে। সেখানে হস্তশিল্পের দোকান। গানবাজনা আর অবশ্যই বিভিন্ন রকমের খাবারের দোকান আছে। কয়েকটি গাড়ি এক সাথে রওনা দিল হোটেল থেকে। গাড়ি ভর্তি লোকজনকে নামিয়ে দিল বাজার মতন জায়গায়। যে যার মতন ঘুরতে চলে গেল। আমরাও নিজের মতন চারপাশ দেখে গান শুনে টুকটাক কেনাকাটা সেরে খেতে বসলাম একটা দোকানে।
পাশেই শহরের বিখ্যাত মাছের বাজার প্রতি ভোরে সাগর থেকে ধরা পরা তাজা মাছের বাজার বসে সেখানে। মাছের নানা রকম খাবার বেশী প্রচলিত। এছাড়া গরু, শুকর ভেড়া মোরগ, হাঁস সবই আছে।
সাগরের মাছ আর নানা রকম ফল সবজী খাওয়া হলো এখানকার খাওয়ার প্রধান আকর্ষণ।তাজা মাছের ডিসই বেছে নিলাম খাওয়ার জন্য। সাথে একটা নতুন সব্জী খেলাম। অনেক দিন কানাডার বাজারেও দেখেছি। কিন্তু কখনো কেনা হয়নি ঠিক মতন এর রান্না পদ্ধিতি বা খাওয়ার নিয়ম জানি না বলে। অনেক ফল সবজী আছে যা আগে কখনো দেখিনি নামও শুনিনি। কিন্তু তা খাবোনা এমন কোন ইচ্ছা আমার নেই। বরং নতুনের সাথে পরিচিত হতে চেখে দেখতে চাই।
কাঠালের ছোট আকারের মতন দেখতে ফলটি গাছে প্রচুর ধরে আছে দেখেছি। গাছের পাতাগুলো বড় বড় গোলপাতার মতন। সবজী বা ফল যাই বলা হোক । নাম হলো ব্রেড ফ্রুট। কখনো খাইনি কাটাও দেখিনি। সেদিন পেলাম একদম প্লেটে তৈরি খাবার জন্য। পাউরুটির স্লাইসের মতন কয়ে টুকরো দিয়ে গেল। অন্য সব খাবারের সাথে। আসলে নামের সার্থকতা নিয়ে সবজীটি পাউরুপির মতন স্বাদের। খেয়ে তেমন মজা পেলাম না। তবে ভাতের বদলে আলু যেমন অনেক জাতি খায় ব্রেড ফ্রুটও তেমন প্রধান একটি উপাদান ক্রান্তীয় অঞ্চলের খাবারে।
খেয়ে দেয়ে আরো খানিক ঘুরে। জমজমাট গানের তালে শরীর দুলিয়ে দোকানে কিছু কেনাকাটার সাথে দুঘন্টা সময় পেরিয়ে গেল দ্রুত। বাস ড্রাইভার চলে এসেছে। অতঃপর বাড়ি ফেরা হলো।
পরদিন আকাশটা মেঘলা। বাতাসও বেশ সমুদ্র পাড়ে বসে থাকা বা জলে নেমে সাঁতার কাটার জন্য তেমন যুতসই না দিনটা। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে।
সকালে নাস্তা খাওয়ার জায়গাটা খোলা, উপরে বিশাল একটা তাবুর ছাওনি। দুপা হাঁটলেই সমুদ্র। প্রতি সকালে অনেক ট্রপিকাল ফলসহ নাস্তা সারি, দৃষ্টির সামনে সমুদ্রের ঢেউ দেখে। আর কত রকমের পাখি র্নিভয়ে ঘুরতে থাকে পায়ের কাছে। পাখি গুলোর মানুষ স্বভাব হযে গেছে। উচ্ছিষ্ট খাবার খেয়েই জীবন যাপন করে। খাবারের খোঁজে ওরা অন্য কোথাও যায় না। নানা রঙের ঘুঘু নাস্তা সেরে ডুমুরের ডালে বসে ডাকে।
নাস্তা সেরে, পাশ দিয়ে ডুমুর নারিকেলের গাছ পেরিয়ে সমুদ্রপারে চলে যাই। অনেকে ততক্ষণে শুয়ে পরেছে পেতে রাখা ইজি চেয়ারে। সমুদ্রপাড়ে বড় বড় পাথর দিয়ে কিছু জায়গা বাঁধানো। কিছু জায়গা খালি। সাদা সোনার মতন বালু। সে বালু বেযে নেমে গেলেই নীল জল। ওখানে দাঁড়িয়ে থাকলেই ছুটে আসছে পা ধুয়ে দিতে যেন।
পাথরের খাঁজে ভাজে ছুটে যাচ্ছে জলের প্রবল স্রোত। অনেকবার মনে হয়েছে পাথরের উপরে উঠে বসে থাকি। আমার আবার সাজানো জিনিসের চেয়ে প্রকৃতি বেশী ভালোলাগে। কিন্তু আমাদের দেশে যেমন মশৃণ পাথর দিয়ে নদীর তীর বাঁধাই করা হয় এ পাথর গুলো তেমন না। অথবা মশৃন ছিল। কিন্তু কালক্রমে ক্ষয়ে গর্ত খাজ কাটা হয়ে গেছে। সারা দিন রাত লবনজলের ঝাপটা খেতে খেতে । পা রাখলে মনে হয় পা কেটে যাবে। আর রিদিমিক তালে যেমন ঢেউ ছুটে আসে বারেবারে। ঢেউয়ের ছাপটায় পানি উঠে যায় মাথার উপরে। পাথর থেকে পরে গেলে ভালো একটা র্দূঘটনা ঘটে যাবে।
পাথর গুলোর ভিতরে অনেক ছোট কাঁকড়ার বাস। চিংড়ির বাস। মাঝে মাঝে বের হয়। আবার অনেক মরে ফসিল হয়ে আটকে আছে পাথরের গায়ে। সময়ের হিসাবরটা আর্কলজিস্ট হলে বলতে পারতাম।
সমুদ্রপাড়ে তখন ভোরবেলা বেলকুনীতে দাঁড়িয়ে সূর্য জাগা দেখতে দেখতে নিচে দেখি সন্ধ্যায়, তুলে রাখা চেয়ার গুলো পেতে সাজাতে ব্যস্ত হয়ে গেছে হোটেল বয়। সবাই এসেছে, আরাম আনন্দ করার জন্য তাদের সেবা দেয়ার জন্য কিছু লোক কাজ করে যাচ্ছে হাসি মুখে। এই তাদের জীবিকা । তারা সূর্য উঠা দেখে না। তারা সূর্য ডোবাও দেখে না।
তারা কি সমুদ্র স্নান করতে যায়। জানার খুব ইচ্ছা কিন্তু জিজ্ঞেস করা হলো না।
ব্রেকফাস্ট এরিয়ায় বসে দেখলাম একদিকে তুমুল বৃষ্টি পরছে অন্য দিকে শুকনো। অনেকদিন পর কক্সবাজারে দেখা হওয়া এমন বৃষ্টির সাথে আবার দেখা হলো। আজ তেমন কিছু করা হলো না। দুপুর নাগাদ অলস কাটিয়ে, বেরিয়ে গেলাম হাঁটতে আশে পাশের জায়গা দেখতে। রবিবার হওয়ায় দোকান পাঠ সব বন্ধ। এখানেন সবাই চার্চে যায়। রবিবার দিনটি ধর্মের জন্য ব্যয় করা হয়।
ওশেন ট্যু থেকে ওশেন ওয়ানে পৌঁছালাম। হোটেল রির্সোটের বাইরের রাস্তা ঘাট লোকজন খুব সাধারন। ওখানে বোগেনভেলিয়া নামে বেশ সুন্দর একটা হোটেলে ঢুকলাম। সারি সারি বোগেনভিলা ফুলের নানা রঙে সুন্দর করে সাজানো মাঝে মাঝে সুইমিং পুল। আর সমুদ্র সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
ঘুরে ফিরে ওখানে একটা রেস্টুরেন্টে ডিনার সেরে নিলাম। দুপুর থেকে ঘুরে ঘুরে আমাদের অনেক ক্ষিদা লেগেছে। কিন্তু কোন খাবার রেস্টুরেন্টও খোলা দেখলাম না। এই এলাকায়। হয়তো শহরের ভিতর আছে কিন্তু সেদিকে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা হলো না। খাওয়ার সময় তুমুল বৃষ্টি নামল। খোলা ডাইনিং প্লেসের সামনে বৃষ্টির জল গড়িয়ে যাচ্ছে। আসে পাশে ঘুরতে থাকা মানুষ দৌড়ে এসে মাথা বাঁচাল।
বৃষ্টি শেষে ভেজা সমুদ্রে মেঘের কোলে রঙধনু উঠল।
মেঘকালো আকাশের ছায়ায় বদলে গেছে সাগরের নীল রঙ। সমুদ্রের পাড়ে সাজানো দাবার ছক পেয়ে খেলতে শুরু করলাম। অতপর যতদূর হাঁটতে হাঁটতে গিয়েছিলাম সেটুকু ফিরার জন্য ট্যাক্সি নিতে হলো কারণ আবার বৃষ্টি নামল।
এবার আমরা খুব ঘেরাফেরা না করে কেবলই সমুদ্রে পাড়ে কাটাবার সিদ্ধান্ত নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু কেবল সমুদ্র দেখা আর একটা জায়গায় গিয়ে তার আসপাশ না দেখে কি হয়। যেতে হলে এগারটা বিভাগে গেলে প্রকৃতির লীলা বৈচিত্র সব দেখা হয়। কিন্তু অতটা তো সম্ভব নয়।
ব্রীজটাউন দেখার জন্য তাও বেরিয়ে গেলাম পরদিন। একটা বিষয় হলো যেখানে যাওয়া হোক যা কিছু দেখা হোক। বিশেষ দর্শনিয় স্থানে যেতে সব সময় খরচটা হয়ে যায় বেশী। যাওয়া আসা ট্যাক্সি এবং যেখানে যাওয়া হবে সে জায়গার টিকেট কিনতে হবে। শহরের কেন্দ্রে পৌঁছে ঘুরলাম দোকান পাট। তারপর বাসে চড়ে চলে গেলাম অনেক দূরের পথ স্পাইসটাউন। আরেকদিন গেলাম চেরি হীল টাউন। শহর ছাড়িয়ে যেতে চোখে পরল গাছগাছালি ক্ষেত আখের মাঠ চিনিকল। কারখানা কৃষি জমি আর গোয়াল ।
একটা বিষয় দেখে ভালোলাগল। কোথাও কোন ভাঙ্গা জীর্ণ কুড়ে ঘর দেখলাম না। মানুষের জীবন যাপন খুব সমৃদ্ধ না হলেও একটা সীমার মধ্যে মানুষের বসবাস বোঝা গেল। লোকাল বাসে চেপে যেতে আরো একটা বিষয় অবিস্কার করলাম। মানুষের ভাবনা চিন্তা বেশ সমৃদ্ধ। ইউরোপ আমেরিকার যে কোন দেশের নিয়ম কানুনের সাথে মিল খায় তাদের চলা ফেরা পোষাক । ওদের কোন রকম পরিবর্তন করতে হয় না বিদেশে ইউরোপ আমেরিকায় গেলে কথা বলা বা পোষাকে।
তারা নিজেদের এই দ্বীপটিকে লিটিল ইংল্যাণ্ড বলে। সেরকমই তাদের আচার আচরণ। অনেক বছর ইংল্যান্ডের উপনিবেশ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পরও রীতি নীতিতে রয়েছে সব নিয়ম।
চলবে-----------
২| ২৪ শে জুন, ২০১৭ রাত ১০:০৮
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ পুলহ । এক সময় দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল ক্রিকেট দুনিয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। ওদের এয়ারপোর্টে অনেক ক্রিকেট স্টার দের ছবি দেয় আছে। কিন্তু ছবি তুলা নিষেধ তাই তাদের দেয়াল চিত্রের সথে ছবি তোলা হয়নি।
শুভেচ্ছা
৩| ২৫ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:২১
আহমেদ জী এস বলেছেন: রোকসানা লেইস ,
আজ সাগরপাড়ের গল্প থাক । শুধু আনন্দের ঢেউ লাগুক আপনার জীবনে ..............
২৬ শে জুন, ২০১৭ রাত ১১:০৩
রোকসানা লেইস বলেছেন: সাগরের ঢেউয়ের সাথে জীবনান্দের ঢেউ সেই সাথে আপনার দেয়া আনন্দের ঢেউয়ে ভরপুর হয়ে গেলাম।
ভালোলাগল আপনাকে দেখে ।
আনন্দে আপনিও থাকুন। আর তুলে রাখা সাগরের ঢেউয়ের দোলাটা উপলব্ধি করবেন আশা করি
৪| ২৬ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৬:৫৬
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: অসাধারণ লেখা , বিবরণী ও ছবি , মনে হল যেন সাথে থেকে বার্বাডোজ ঘুরে এলাম ।
নিশ্চয়ই খুব্ই ব্যস্ত সময় কাটছে ঈদে ।
কামনা করি ঈদ হোক আনন্দময় সকলের তরে ।
২৬ শে জুন, ২০১৭ রাত ১১:১১
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ লেখাটার সাথে বার্বোডেসে ঘুরিয়ে আনতে পারলাম বলে ভালোলাগছে। শুধু যে পথে আমি গিয়েছি ততটুকু।
উপলব্ধির জন্য ধন্যবাদ।
ঈদ এখন শুধুই আরো একটা দিন ।
সেই ছোটবেলার আনন্দ হয় না আর অনেক কিছু করতে নিজের মনে বাঁধা পাই। কাল ঈদ উপলক্ষে ছোট একটা লেখা দিয়েছিলাম ফেইসবুকে। সেটা আপনার জন্য দিচ্ছি।
"
বিশ্বাস ভালোবাসা নিয়ম মানুষের চিন্তা চেতনা, জীবন যাপন পরিবেশের সাথে প্রভাবে বদলে যায়। জানা নিয়ম আরো বেশী করে আকড়ে ধরা হয় বা নিজের মতন পরিবর্তন করে পালন করা হয় অথবা সব ছেড়ে অন্য রকম নিয়মেও মানুষ অভ্যস্থ হয়ে উঠে।
খুব ছোটবেলা ঈদের দিনে কিছু মানুষকে বাসায় আসতে দেখতাম ভিক্ষা করতে। ঈদের দিনে তারা নতুন কাপড় পরে না। আমরা নতুন কাপড় পরে খুশিতে তাদের সামনে দিয়ে চলাফেরা করতাম। তাদের বাড়ানো হতে কিছু ধরিয়ে দিয়ে খুব আনন্দপেতাম পূন্য করার আনন্দে মন নেচে উঠত।
ধীরে ধীরে এ ধারনা বদলে গেল। তাদের সামনে ঈদের দিন, নতুন কাপড় পরে চলতে মনে কষ্ট হয়। অনেক কাপড় থাকার পরেও ঈদ উপলক্ষে নতুন কাপড় কেনার চিন্তাটা মাথা থেকে চলে গেল।
ঈদ এলেই অনেক খাবার রান্না করার চিন্তাও। প্রতি বাড়িতে সবাই যাবে একই ধরনের খাবার বারবার খাবে। মিষ্টি নয় তো পোলাউ কোরমা, হালিম নয় তো চটপটি। আর বাড়ানো কিছু হাতে কিছু পয়সা দিয়ে আনন্দময় হওয়ার ভাবনাটা অনেক বদলে গেছে এখন।"
অনেক আনন্দে থাকুন শুভকামনা
৫| ২৬ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৭:১৩
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: পোষ্টটি আবার পাঠে প্রিয়তে নিয়ে গেলাম ।
দিয়ে গেলাম তানজানিয়ায় অবস্থিত বৃহত্তম
বাওয়াব ট্রি , এর কান্ডের বের ১৫৪ ফুট,
এর কান্ডটি ১২০,০০০ লিটার পানি
ধারণ করে রাখতে পারে ।
৬| ২৭ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:০১
রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ভালোলাগল পোষ্ট আপনার প্রিয়তে জেনে।
আপনার কাণ্ড দেখেও অস্থির হচ্ছি কাণ্ড জলাধারের জলের হিসাব বের করেছেন। বাওয়াবের কাণ্ড আসলেই বিশাল। ওর আদি ভূমি হয় তো বার্বাডোসে না। কিন্তু অনেক ঝাকড়া গাছ ছোট ছোট ফল নিয়ে দঁড়িয়ে আছে দেখলাম। ফল বড় হতে আরো সময় লাগবে। অথবা বড় ফল ওরা পেরে ফেলেছে। ওখানে চক্রাকারে একগাছে ফলের ফলন চলতে থাকে বছর জুড়ে।
শুভেচ্ছা জানবেন এবং ভালো থাকবেন।
৭| ০৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:২৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
মনে হচ্ছে, মানুষজন শান্তিতে আছেন, ভালো খবর।
০৮ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:০৯
রোকসানা লেইস বলেছেন: তাই মনে হলো যতটুকু দেখতে পেলাম।
শুভেচ্ছা জানবেন
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:০৩
পুলহ বলেছেন: আগে সম্ভবত কিউবা নিয়ে আপনার লেখা পড়েছিলাম। ওটাও ভালো লেগেছিলো, এটাও লাগলো।
ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ আমার কাছে পরিচিত ক্রিকেটের কারণে। আপনার এ লেখা থেকে আরো অনেক কিছু জানতে পারলাম।
বার্বাডোসে গাছে হাত দেওয়া নিষিদ্ধ জেনে আনন্দ পেলাম। আসলেই বাওবাব গাছ হাজার বছর বাঁচে??!!
লেখাটায় সাহিত্যিক উপাদান ছিলো। "সবাই এসেছে, আরাম আনন্দ করার জন্য তাদের সেবা দেয়ার জন্য কিছু লোক কাজ করে যাচ্ছে হাসি মুখে। এই তাদের জীবিকা । তারা সূর্য উঠা দেখে না। তারা সূর্য ডোবাও দেখে না। "-- কথাগুলো গভীর !
শুভকামনা জানবেন আপু !