নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আগে যেখানে বড় বড় দোকান ছিল, কমার্ট, বাইওয়ে, জ্যালার্স, ওয়ালমার্ট সে জায়গা গুলোয় ব্যায়ামাগার গড়ে উঠেছে। বেঙেরছাতার মতন অসংখ্য ব্যায়ামাগার পাড়াগুলোতে । সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে মানুষের নানারকম শারীরিক কসরত চলতে দেখি। মানুষ অনেক বেশী স্বাস্থ সচেতন এখন। তারা সকালে ফরমুলা খায়। পাউডার পানিতে গুলে খায় যা নাকি শুধুই প্রাকৃতিক এবং স্বাস্থ রক্ষার মূল মন্ত্র। দুপুরে ঘাসপাতা সালাদ খেয়ে থাকে। রাতে একটু ভালো ডিনার করে। মাংস বা মাছ যা বাটারে রান্না হয়। প্রচুর চিজ এবং ক্রিম দেয়া । কার্বহাইড্রেড একদমই খাওয়া হয়না। তবে একটু খানি ম্যাস পোটেটো বা বাটার ক্রীমে রান্না রাইস দু চামুচ পরিমান। ফুল পাতা দিয়ে সাজানো দেখলেই লোভ হয় ভীষণ। তাই ওগুলো পেটে নেয়া ছাড়া উপায় থাকে না। অনেক সময় চোখের ভুখ শরীরের চেয়ে বেশী থাকে। সালাদগুলো এমন হয় অনেক রকম সীডের সম্মন্নয়ে বা মাঝ মাংসের হাড়ছাড়া পিস দেয়া ও খেয়েই পেটের ক্ষুদা মিটে যায় আসলে।
আর শেষে ডেজার্ট সুগার, ক্রীম সমৃদ্ধি। শরীরে চর্বি বেড়ে গেলে ব্যায়ামাগারে যাওয়ার জন্য সময় বরাদ্দ করা আছে। মাসে তার জন্য কিছু খরচ হয়। ঘরে বসে ডন বৈঠক করে মেদ ঝরে বলে মনে হয় না। তাই কিছু টাকা না হয় নিজের স্বাস্থ সুরক্ষায় ব্যয় হলো।
অনেক সময় রাতদিন ধরে যখন কাজ করি আর সমৃদ্ধ খাবার দেয়া হয় কাজের জায়গায়। স্বাস্থ সচেতন মানুষদের বড় বড় মোরগির রোষ্ট, গরু বা শুকরের স্টেক, মাছের ফিলে থেকে পাস্তা রাইস, আলু কোনটাই কম নিতে দেখিনা। অথচ সারা সকাল জুড়ে না খেয়ে থেকেছে মোটা হয়ে যাবার ভয়ে।ফরমুলা গিলেছে পানিতে গুলে আর পান করেছে ব্লাক কফি একটু পরে পরে। সাথে কান খুলে মন দিয়ে শুনেছি তাদের খাদ্যাভাস এবং ব্যায়াম করার গল্পগুলো।
কেক বা ব্রাউনি বা আর আটদশ পদের যত মিষ্টান্ন সবই পাতে নিয়েছে তুলে দেখি। তখনই খেতে না পারলে পরে খাবে বলে যত্ন করে রেখে দিয়েছে। কয়েক ঘন্টা পরে আবার বার্গার বা হটডগ তড়িৎ গতিতে সাবার হয়ে যায়। উসখুস করে কেউ খুঁজেন দেখি ক্রাফ্ট টেবিলে কিছু চিপস, বিস্কুট বা স্যুপের বাটি পাওয়া যায় কিনা।
এমন স্বাস্থ্যসম্মত লোকদের দেখি আর মনে মনে হাসি।
মনে পরে, ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।" খিদার তাড়নায় পানি খেয়ে ঘুমায় অসংখ্য মানুষ। আর শুধু খাবারের অভাবে কংকালসার দেহ পৃথিবীর এক অংশ জুড়ে। একটি আলু ভাগ করে খায় পরিবারের সবাই মিলে সারাদিনের শেষে। তাদের পাশেই অবশ্য সেদেশের অনেক মানুষ থাকে যাদের শরীর জুড়ে সোনাদানা হীরের ছড়াছড়ি। হাত উঠানো যায় না গহনার ভাড়ে তাই অন্য কেউ পাশ থেকে এইসব মানি মানুষদের হাত ধরে, তুলতে সাহায্য করেন, যখন কারো সাথে হাত মিলাতে হয়।
অথচ বিশাল বুভূক্ষ মানুষের শরীরে বাড়েনা মাংস। চর্বি সে তো দূরের কথা।
অথচ কারো শরীরের চর্বি খসাতে ব্যায়ামে হয়না লাইপোস্যাকসনে টেনে বের করতে হয় মেদ।
কংকালসার এসব মানুষের জীবন যাপন এবং শরীর দেখিয়ে পৃথিবীর মানুষের কাছ থেকে চাঁদা তোলে নানা সংস্থা। এদের করুণ চেহারা দেখে মন কেঁদে উঠে অনেক মানুষের তারা সাহায্য করতে চান। এবং করেন ঐসব সংস্থার মাধ্যমে।মানুষ যে অর্থ দান করে ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য, সে অর্থ প্রথমে ব্যয় হয় সংস্থার সব কর্মচারীর বেতন ভাতা। দালান কোঠা এবং ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে যাতায়াত বাবদ। তারা পান পেইড ভ্যাকেসন। তারপর দেখানো হয় টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন চিত্র। আরো অর্থের আহ্বান দিয়ে। যখন ত্রিশ সেকেন্ডের খরচ $344,827. টিভির একটি বিজ্ঞাপনের তখন এই সব সংস্থার বিজ্ঞাপন চলে ঘন্টা ব্যাপী। সেটা কি টিভি ডোনেট করে মনে হয় কারো কাছে।
চ্যারেটির অর্থ কত সংগৃহিত হয় আর কত সঠিক মানুষটির কাছে পৌঁছায় কে জানে। তবে কিছুটা অনুমান করতে পারবেন সচেতন মানুষ।
তবু খরচ হয় চক্রাকারে খাওয়া থেকে প্রচার এবং সংগ্রহ থেকে দানে।
বিদেশে বিশাল দেহী কিছু মানুষ দেখি। যাদের দেখে দৈত্য দানব মনে করেছিলাম প্রথমে, ভয় পেয়েছিলা। কিন্তু অনেকে দেখি এই বিশাল শরীর নিয়ে বেশ দৌড় ছাপ দিয়ে কাজ করছেন। প্রাণচাঞ্চলে ভরপুর। এদের শরীরটাই বড়সর আলাদা থলথলে মেদ নয়।
বাংলাদেশে এমন বড় দেহের মানুষরা উত্পীড়নের সম্মুখিন হয়। সহপাটি থেকে যে কোন মানুষ এদের মোটা নামে ডাকে।এবং বিশ্রী ভাবে এদেরকে আক্রমণ করে মজা পায়।
পরিচিত এক নারীকে শিল্প সাহিত্যের অঙ্গনে তার মোটা শারীরের জন্য নানা ভাবে নির্যাতিত হতে দেখেছি। খুব ছোট বেলায় ডাক্তার বাবা ম্যাটাবলিজমের ইনজেকসন দিয়ে খাদ্যাভাস পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন অথবা শরীর বৃদ্ধি পাওয়ার অবস্থা তৈরি করে দিয়েছিলেন। যার ভুক্তভূগী হতে হয় তার সারাজীবন। দেশের মানসিক চেতনা গেঁথে আছে একটু মোটাসোটা স্বাস্থবান না হলে শিশু থেকে বউ কাউকেই ভালোলাগে না। তার ভয়াবহ পরিণীতি অনেকে ভোগেন।
এখন বাংলাদেশে এমন বড় বপুর মানুষ প্রচুর দেখা যায়। আমার ছোট বেলায় একজন মহিলাকে চিনতাম আমাদের শহরে। যার বাইরে যাওয়া হতোনা কখনও। রিকসাওলারা ওনাকে রিকসায় উঠাতে চাইত না। উনার শরীরের এই বিশাল হওয়া এক ধরনের রোগ। পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ আছে যারা বিছানা ছেড়ে নড়াচড়া পর্যন্ত করতে পারে না।
বিদেশের মানুষের মোটা হয়ে যাওয়ার পিছনে অনেকটা হরমোন সমৃদ্ধ প্রাণীর মাংস, দুধ ডিম খাওয়া দায়ী। অতিরিক্ত বৃদ্ধির জন্য ইনজেকসন দেয়া প্রাণীর মাংষভক্ষণে, মানব দেহ বিস্তার লাভ করে। ফার্মের মোরগ, গরু, ছাগল, শুকর, ভেড়া ফার্মের মাছ। অনেক খাবার কিনতে গেলে দেখা যায় অতিরিক্ত নানা কিছু যোগ করা আছে। যেমন চালের মধ্যে আয়রন। ভিটামিন। যা প্রাকৃতিক না। ফলমূল সব কিছুতেই তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠার নানা রকম পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। দোকানে ফল সবজীর অতিরিক্ত আকারের স্বাস্থ্য দেখে ভয় পাই। কৃত্রিম রাসায়নিক, আগাছানাশক, কীটনাশক, সার, ব্যবহারে সমৃদ্ধ।
এই বিষয়টা বর্তমানে শুরু হয়েছে বাংলাদেশে তবে যার কোন মাত্রা নেই এবং কে কি ভাবে কতটুকু ব্যবহার করছেন তারও কোন হিসাব নেই। কারো কোন দায় নেই মানুষকে জানানোর। কতটা বিষ শরীরে নেয়া হচ্ছে তা জানার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। বিদেশে পার্থ্ক্য হলো কত পরিমাণ কি দেয়া আছে সে সব লেখা থাকে। এসব শরীরে না নিতে চাইলে একদম প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি জিনিস কেনার সুযোগ আছে যার দাম অবশ্যই আকাশ ছোঁয়া।
এখন আবার অনেক শংকর প্রজাতির সবজী দেখি দোকানে। যেমন হলুদ রঙের ফুলকপি বা বেগুনি রঙেন টমেটো। এমন অনেক কিছু কেনো যেন আমার এদেরেদেখতে একদমই ভালো লাগে না।খাওয়ার ইচ্ছা আরো হয় না। কবে যে গরু ছাগলের ব্রিডিং সাপের সাথে মাছের সংযোগে বা অন্য কিছু বাজার দখল করতে আসে কে জানে। কত যে নতুন আবিস্কার আর পরীক্ষা চলছে সারাক্ষন।
তবে বিদেশে অনেক আগে থেকে ব্যবহারে এবং ফলাফল না জানার জন্য অনেকে ভোগছেন নানারকম রোগে। যা খাদ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট।
মানুষ স্বাস্থ সম্মত জীবন যাপন করতে চাইছে কিন্তু জীবনের প্রয়োজনে যে খাদ্য ভক্ষণ করতে হয় তা পরিচ্ছন্ন এবং সঠিক ভাবে কতটা দাম দিয়েও কিনতে পারছে তা ভাবার বিষয়।
তেল খারাপ এজন্য অনেক তেল খাওয়া কমিয়ে দিচ্ছেন কিন্তু তেলের চেয়েও বেশী ক্ষতি করে মিষ্টি। নানা প্রকার রোগের উৎপত্তি হতে থাকে মিষ্টির প্রভাবে। আসলে মানুষ কাঁচা খাবারে অভ্যস্থ ছিল। প্রক্রিয়াজাত খাবার খেতে শুরু করার পর মানুষের শারীরিক নানা পরিবর্তন হতে শুরু। বাসা বাঁধে নানা রোগ। আদিকাল থেকে পরিবর্তন হয়ে এখন নাগরিক ব্যাস্ত জীবনে অনেকে কেনা তৈরী খাবার খেয়ে জীবন যাপন করেন। কৌটায় ভরা এসব খাবার বছরের পর বছর ধরে ভালো থাকে কি ভাবে। তাতে ব্যবহার করা হয় নষ্ট হয়ে না যাওয়ার সংরক্ষনের কেমিকাল।
কিছু দিন আগে একজনের সাথে কথা হচ্ছিল তিনি ব্যবসা করেন। তেল সাপ্লাই দেয়ার বিভিন্ন ম্যাকডনালসে। এই তেলটি আসে গাড়ীর ফেলে দেয়া তেলের বিশোধিত অবশিষ্ট থেকে। এটা অল্প পরিমান তেলের সাথে মিশিয়ে দিলে অনেক বেশী ব্যবহার করা যায় ভাজার জন্য। মানুষের আবিষ্কারের শেষ নাই। এইসব ফাষ্টফুডের দোকানের খাওয়ার কোন দিন আমাকে আকৃষ্ট করেনি। মাঝে মধ্যে ওদের আলু ফ্রাইটা খেতাম এই গল্প শোনার পর সেটাও বাদ দিয়েছি।
দেশে আগে শুধু চাইনিজ খাবার পাওয়া যেত। এখন নানাদেশের খাবার দাবারে ভরপুর। কিন্তু খুদ চায়নায় দেখলাম খাবার পুরাই ভিন্ন রকম স্বাদ এবং তৈরিতে, যা অনেক স্বাস্থ্য সম্পন্য আমরা দেশে যে চাইনিজ খাই তার চেয়ে। আর নানান দেশের নানারকম খাবার গুনগত মানে অন্যদের কাছে কেমন জানি না। আমার পেটে কিছু সহ্য হলো না। এবং শরীর সব খাদ্য প্রবল বেগে বের করে দিল অপছন্দ করে।
প্রক্রিয়াজাত খাবার ভালো রাখার জন্য যা ব্যবহার হয় সবই স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। সব খাবারেই নানা রকম ভেজাল। তার প্রভাব মানুষের শরীরে আর নানা রকম রোগে ডাক্তার খানায় ভিড় বাড়ছে। তবু বাঁচার জন্য খাবার খেতে হবে। বাছাবাছির সময় কই।
ব্যবসায়ি তো ব্যবসা বোঝে। নিজেও যে খেয়ে দেয়ে অসুস্থতাকে ডেকে আনছে এবং ছড়িয়ে দিচ্ছে পরিবার থেকে সব মানুষের মধ্যে, সেটা মনে হয় ভুলে যায় অর্থের পরিমাপে। ম্যাডকাও, ছড়িয়ে পরেছিল এভাবেই অর্থের লোভে গরুকে গরুর নাড়ীভুড়ি খাইয়ে মোটাতাজা করার মাধ্যম্যে।
একটা চুটকি মনে পরে গেলো, দোকানদার বাইরে থেকে এসে দেখে আলগা করে রাখা কিছু খারাপ, চাল ময়দা ডাল মসলা, তেল যা কমদামে বিক্রির জন্য রাখা হয়েছিল সেগুলো নাই। কর্মচারীকে জিজ্ঞেস করল। এখানে যে জিনিসগুলো ছিল সব গেল কই? বিক্রি হয়ে গেছে।
কে কিনল। সব মফিজসাব নিয়া গেছেন।
তখন দোকানদার ভাবছে আজ তো মফিজসাবের বাসায় দাওয়াত খেতে যেতে হবে। এভাবে বুমেরাং হয়ে ফিরে আসেছে নিজের কাছেই ইচ্ছা অনিচ্ছায়।
১৮ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১:২০
রোকসানা লেইস বলেছেন: একদম। এখন জানা এবং গবেষনার সুযোগ থাকার পরও উন্নত দেশ ভুক্তভূগি হয়ে যা বন্ধ করে দিয়েছে বা দিচ্ছে তা উন্নয়নশীল দেশগুলো চালু করছে।
ভালো বিষয়ে আগ্রহ খুব কমে গেছে মনে হয়।
শুভেচ্ছা
২| ১৮ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:১৮
রিফাত হোসেন বলেছেন: ++
১৯ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:০২
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ রিফাত হোসেন
৩| ২৪ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ৭:৪০
চাঁদগাজী বলেছেন:
সেদিন কে একজন পোস্ট দিল, মানুষ হাজার বছর বাঁচবেন! এভাবে খাবার বানালে, বেশীর ভাগ মানুষ রোগ নিয়েই কস্টকর জীবন যাপন করবে!
৪| ২৫ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৩২
রোকসানা লেইস বলেছেন: হয়ত এ্যালিয়েন হয়ে বাঁচবে। তবে খাদ্য এবং উন্নত পরিবেশের প্রভাবে বাড়ছে নানারকম রোগ।
বাংলাদেশে যে হারে ক্যনসার হচ্ছে এখন ঘরে ঘরে আগে এমনটা দেখা যেত না। খুব অল্প বয়সে মারা যাচ্ছে অনেকে ইদানিং।
ভালো থাকুন
৫| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:৪১
রানা সাহেব বলেছেন: + +
৬| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৪২
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ রানা সাহেব
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৫৪
হাসান মাহবুব বলেছেন: পৃথিবী যত সুস্বাদু হচ্ছে, তত বিপদ বাড়ছে! ভালো লাগলো লেখাটা।