নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই মনে হলো আজ একটি বিশেষ দিন। কিন্তু অনেকক্ষণ মনে করতে পারলাম না। টুকটাক কাজের ফাঁকে একটা বিরক্ত ভাব মনে জমাট বেঁধে ছিল। কেনো মনে করতে পারছি না, এই যন্ত্রনায় দগ্ধ হচ্ছিলাম। ধূঁমায়িত চায়ের কাপ হাতে বাইরে সুন্দর সকালের রোদের দিকে অলস তাকিয়ে ছিলাম। উজ্জ্বলতা! ভীষণ উজ্জ্বল একটি দিন আজ। আর মাথার ভিতর এক সাথে কত চিন্তা যে খেলে, হাঁটে, গড়াগড়ি করে। হুট করে একটা সুন্দর পয়ার মনে হলো। তার থেকে পায়রাবন্দ, তার থেকে বেগম রোকেয়া। সূর্যের রশ্মির মতন তীব্র আলোক ছটা অন্ধাকার অলিগলি আলোকিত করে দিল। বিরক্তিকর মনে না পরার ভাব উবে গিয়ে ভীষণ রকম ভালোলাগায় ভরে উঠল মন। সাথে চিন্তা যত বেশী স্রোতে চলতে লাগল তত আজকে আমার এই অবস্থানের পিছনে। আজকের দিনে নয় ডিসেম্বর, রংপুরের পায়রাবন্ধে জন্ম নেয়া এক শিশুর, মহিয়সী হয়ে উঠা, উনার কাজ, উনার দূর্ভোগ, তাঁর আকাংখা চিন্তা চেতনার বিস্তৃতি কতটা প্রভাব ফেলেছে। যত ভাবি ততই আশ্চর্য হই, ততই শ্রদ্ধায় নত হই, ভালোবাসি বেগম রোকেয়াকে।
তুমি না থাকলে কি হতো আমার। আঠার শতাব্দিতে যখন নারী শিক্ষার কোন নাম গন্ধ ছিল না মুসলিম পরিবারে। শিক্ষা তো দূরের কথা ঘরের বাইরে যাওয়া অনেক ঝক্কি,এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যাওয়ার জন্য নিয়ম কানুন ছিল। আবৃত নারী, আকাশ দেখা দূরের বিষয়, খিড়কিতে চোখ রাখাও ছিল তাদের জন্য নিষিদ্ধ। যত সমৃদ্ধ মুসলিম পরিবারে জন্ম তত অসূর্যস্পর্শা তারা।
ভাবলেই দম বন্ধ হয়ে আসে আমার। এ ভাবে কেউ জীবন যাপন করতে পারে! অথচ এভাবেই কেটে গেছে কত নারীর জীবন। সব কিছুর আড়ালে থেকে পৃথিবীর সাথে চলা জীবন অবসান হয়েছে, লোক চক্ষুর অন্তরালে।
অন্তপুরে নারীরা অবরোধবাসিনী হয়ে থেকেছেন দিনের পর দিন বছরের পর বছর। আকাংখা বলে কিছু তাদের জীবনে ছিল না। সেই অন্ধকারের ঘেরাটোপের অধিবাসী হয়ে ছোট্ট মেয়ে রোকেয়ার মনে বই পড়ার শখ হলো। ভাইয়ের পড়ার বই, উল্টে পাল্টে ছবি দেখার সাথে অক্ষর জানার ইচ্ছে হলো। ভাগ্যবতি রোকেয়। ভাই বিরোধীতা না করে সহযোগিতা করে ছিলেন। সব চোখের আড়ালে, রাতের নির্জনতায় মোমের আলোয় ভগ্নিকে জ্ঞান দান করে শিক্ষা দিয়ে ছিলেন। এত অসুবিধার মধ্যে রোকেয়া পড়ালেখা শিখেছিলেন একান্ত নিজের আগ্রহে। নিয়ম মাফিক, নিয়ম মাফিক বিয়ে হয়ে গেলো অল্প বয়সে। সাখাওয়াত হোসেনের সাথে। এই ভদ্রলোকও একজন সুন্দর মনের মানুষ ছিলেন, যিনি নিজে স্ত্রীকে পড়ালেখা শিখিয়েছেন। উৎসাহ দিয়েছেন স্কুল প্রতিষ্ঠায়, লেখায় এবং বই প্রকাশ করায়।
পায়রাবন্দের মেয়েটি ভাগলপুরে স্বামীর নামে প্রথম মেয়েদের স্কুল গড়লেন। অথচ স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য কোন ছাত্রী নেই্ বাড়ি বাড়ি পায়ে হেঁটে গিয়েছেন ছাত্রী যোগার করার জন্য। সেই সময় যখন কেউ মেয়েদের বাইরে বেরুতে দিত না।
ভয়াবহ অবস্থায় অসম্ভব সাহসী পদক্ষেপ, সমাজ, ধর্ম, চিন্তার বিপরীত স্রোতে একা একজন নারী পথ চলছেন উজানে। যতবার ভাবি শিউরে উঠি আবেগে। রোমকূপ দাঁড়িয়ে যায় শরীর জুড়ে। ভালোর জন্য মেয়েদের পথ চলা সুগম করা জন্য অসম্ভবকে অসাধ্যকে সাধন করার একাকী লাড়াকু বেগম রোকেয়া।
পরিবার থেকে শুরু হলো বাধা। সমাজে নানা রকম অসোন্তস। অকথা, কু কথার জ্বালা তোয়াক্কা না করে; ধৈর্য্য নিয়ে অসীম সাহসে নিজের লক্ষে এগিয়ে গিয়েছেন। সফল হয়েছেন। নারী জাগরণ তৈরী করেছেন সমাজে। আগ্রহী হয়েছে মেয়েরা পড়ালেখায়।
এই মহিলার আগমন না ঘটলে পৃথিবীতে, কেমন হতো জীবন আমার। বাতাসের মাঝে বাস করে যেমন ভুলে যাই প্রতি নিয়ত কতটা বাতাস বুক ভরে টেনে নেই। বাতাস আমাকে বাঁচিয়ে রাখে। সুইচ টিপলেই আলো জ্বলে তাই, প্রদীপ জ্বালানোর দীর্ঘ পদ্ধতি ভুলেই গেছি আমরা। আমাদের এই সুন্দর জীবন যাপনের পিছনে একজন নারীর বিশাল অবদান একথা মনে রাখা জরুরী। সেই প্রচীনকালে তিনি কত মুক্তমনা, সুন্দর এবং আধুনিক চিন্তার ধারক ছিলেন। অথচ এখনও অনেক নারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ধাপটি শেষ করেও তেমন আধুনিক ভাবনা চিন্তার ধারক হতে পারেন না। আসলে শুধু পড়ালেখায় ডিগ্রি নিলেই শিক্ষিত হওয়া হয়না। মনের আগল খুলে সুন্দরের ধারক এবং বাহক হতে পারলেই শিক্ষা প্রসার পায়। প্রতিষ্ঠিত হয়।
ভাগ্যবতি রোকেয়া মেয়েদের ভাগ্য গড়ার ইঞ্জিন হয়ে চালু করে দিয়ে গেছেন শিক্ষার পথচলা। সাহসী বেগম রোকেয়ার পথ নির্দেশনায় মেয়েরা আজ স্বনির্ভর স্বক্ষেত্রে উজ্জ্বল। সব ধরনের পেশায় নিয়োজিত এবং সফল বাঙালি এবং মুসলিম নারীরা। সে পথ বেয়ে মেয়েরা আরো উন্নতি করুক। পিছনে না ফিরে এই আশা। এবং শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা শুভজন্ম দিন প্রিয় আলোকের বার্তাবাহক বেগম রোকেয়া।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৪
রোকসানা লেইস বলেছেন: ঠিক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা অসাধরন একটি কাজ ছিল বেগম রোকেয়ার।
২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৩৩
তানজির খান বলেছেন: ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট দেবার জন্য। বেগম রোকেয়া নারী মুক্তির অগ্রদূত।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৬
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও। উনি লেখাপড়া চালু করে না দিলে কোন কানাগলিতে বাস করতে হতো এখনও কে জানে।
৩| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৩৮
রাফসি ইসলাম বলেছেন: নারীর অতিরিক্ত জাগরণ ধ্বংসের পথে অগ্রসর হয়।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩২
রোকসানা লেইস বলেছেন: এখনই এমন চিন্তা!!! উন্মচিত হোক মনো জগৎ
৪| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৫১
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
সুন্দর পোস্ট আপা।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩৫
রোকসানা লেইস বলেছেন: : যিনি আমাদের সুন্দরের পথ দেখালেন তাকে স্মরণ না করাটাই নিজেকে বঞ্চিত করার সামিল।
অনেক শুভেচ্ছা কাণ্ডারি
৫| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫৭
শামছুল ইসলাম বলেছেন: চিন্তা নিয়ে আপনার বর্ণনাটা অন্যরকমঃ
//আর মাথার ভিতর এক সাথে কত চিন্তা যে খেলে, হাঁটে, গড়াগড়ি করে।//
অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও বাকীটুকু পড়ার লোভ সম্বরণ করতে পারলাম না।
গড়াগড়ি দিয়ে ঠিক পাঠককে নিয়ে গেলেন বেগম রোকেয়ায়ঃ
//হুট করে একটা সুন্দর পয়ার মনে হলো। তার থেকে পায়রাবন্দ, তার থেকে বেগম রোকেয়া।//
তারপর আপনার সাবলীল লেখনীর ভেলায় চড়ে আনন্দ পাঠ এক মহিয়সী নারীকে নিয়েঃ
//আজকের দিনে নয় ডিসেম্বর, রংপুরের পায়রাবন্ধে জন্ম নেয়া এক শিশুর, মহিয়সী হয়ে উঠা, উনার কাজ, উনার দূর্ভোগ, তাঁর আকাংখা চিন্তা চেতনার বিস্তৃতি কতটা প্রভাব ফেলেছে। যত ভাবি ততই আশ্চর্য হই, ততই শ্রদ্ধায় নত হই, ভালোবাসি বেগম রোকেয়াকে।//
সুন্দর উপসংহারে টানা পরিসমাপ্তি ভালো লেগেছেঃ
//আমাদের এই সুন্দর জীবন যাপনের পিছনে একজন নারীর বিশাল অবদান একথা মনে রাখা জরুরী। সেই প্রচীনকালে তিনি কত মুক্তমনা, সুন্দর এবং আধুনিক চিন্তার ধারক ছিলেন। অথচ এখনও অনেক নারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ধাপটি শেষ করেও তেমন আধুনিক ভাবনা চিন্তার ধারক হতে পারেন না। আসলে শুধু পড়ালেখায় ডিগ্রি নিলেই শিক্ষিত হওয়া হয়না। মনের আগল খুলে সুন্দরের ধারক এবং বাহক হতে পারলেই শিক্ষা প্রসার পায়। প্রতিষ্ঠিত হয়।//
বিজয়ের শুভেচ্ছা।
ভাল থাকুন। সবসময়।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩৮
রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর উপলব্ধি সুন্দর মন্তব্য।
হৃদয় দিয়ে অনুভূতি প্রকাশের চেষ্টা তাও মনে হয় কিছুই হলো না।
ভালো থেকো অনেক শুভেচ্ছা শামছুল ইসলাম
৬| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০২
জুন বলেছেন: মহিয়সী নারী বেগম রোকেয়ার প্রতি আমার আজন্ম শ্রদ্ধা ।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪০
রোকসানা লেইস বলেছেন: প্রতিটি বাঙালি নারীর আজন্ম শ্রদ্ধা থাকা জরুরী তার প্রতি।
শুভেচ্ছা জুন
৭| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২৬
হাসান মাহবুব বলেছেন: বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ এই নারীর প্রতি শ্রদ্ধা।
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৪৭
রোকসানা লেইস বলেছেন: আলোর দিশা দেয়া এই নারী সম্পর্কে অনেক বেশী জানা প্রয়োজন ।
শুভেচ্ছা হাসান মাহবুব
৮| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৪
মোহাম্মদ রাহীম উদ্দিন বলেছেন: "Education is the most powerful weapon which you can use to change the world."
-- Nelson Mandela.
বেগম রোকেয়াও সে বিশ্বাসের অনুসারি ছিলেন।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১৩
রোকসানা লেইস বলেছেন: নেলসন মেন্ডেলার অনেক আগে রোকেয়া সে কথা বুঝতে পেরেছিলেন।
কিছুদিন আগেই মৃত্যুদিবস ছিল মাদিবার
শুভেচ্ছা
৯| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:১৫
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: বেগম রোকেয়ার প্রতি শ্রদ্ধা।
ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার পোস্টের জন্য।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১৩
রোকসানা লেইস বলেছেন: শুভেচ্ছা তোমাকে ফেরদৌসা রুহী
১০| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩১
চন্দ্রপ্রেমিক বলেছেন: শিক্ষা মানুষকে এগিয়ে নেয় তীব্র গতিতে। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার বিশবাস ছিল এটি। মহিয়সী সেই নারীর প্রতি শ্রদ্ধা।
পোস্টটি এক অসাধারণ ভঙ্গিমায় রচিত। শিল্পের শিল্পগুনে গুনানবিত। অবশেষে শুভকামনা।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩১
রোকসানা লেইস বলেছেন: নারী শিক্ষার সাথে জাতির উন্নতি জড়িত। শুভেচ্ছা চন্দ্রপ্রেমিক।
১১| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৩
তুষার কাব্য বলেছেন: বেগম রোকেয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি ।
সুন্দর পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ আপু ।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩২
রোকসানা লেইস বলেছেন: শুভেচ্ছা তুষার কাব্য
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:২৩
নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: আরেকজন আছেন নবাব ফয়জুন্নেসা । যদিও ওনার কথা আমাদের দেশে খুব একটা বলা হয়না !