নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছেলেটাকে দেখলাম অনেক কষ্ট পেয়ে একটা স্ট্যাটাস লিখেছে মায়ের মৃত্যুর এক বছর উপলক্ষে। কি র্বোড চোখের জলে ভেসেছে তার লেখাটা লিখতে গিয়ে। লেখাটা ছূঁয়ে গেলো হৃদয় সাথে দুঃখ হলো এবং কিছু প্রশ্ন জাগল মনে।
মহিলাকে আমি চিনতাম। খুব সাধারন চিরন্তন আবহমান বাংলার ধারক একজন মা, একজন বধু। একজন প্রেমিকা একজন সুগৃহিনী।
যার হৃদয় ভরা ভালোবাসা। সুন্দর একটি গৃহের জন্য সুন্দর একটি সংসারের জন্য। যেখানে সারাক্ষন অভাব হুটোপুটি করে সেখাসে সাজিয়ে রাখতে চায় সুখ মনের জোড়ে।
প্রেম করে বিয়ে হয় মহিলাটির বছর ত্রিশেক আগে। অভাবের সংসারে, স্বামীকে প্রায় সময় বাইরে থাকতে হয় চাকরির প্রয়োজনে। বিরান মাঠের মাঝে বেড়ার ঘরে একা দুটি শিশু সন্তানকে নিয়ে কাটিয়েছে রাতের পর রাত টিমটিম প্রদিপের আলোয়। বন্যায় ডুবে যাওয়া চারপাশে একা জেগে কাটিয়েছে শিশু সন্তানের পাশে রাত। কখন কি অঘটন ঘটে যায় সাপ, জোঁক ঢুকে যায় ঘরে।
মুখ ভর্তি হাসি ছিল, আনন্দ আর ফূর্তি ছিল সুখের সংসারে। জোড়া তালি দিয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরানো ঘরে কোন অভিযোগ ছিল না।
সুন্দর রান্না করত। সাজানো নিপাট উঠান. সবজীর বাগান। সন্তানের দেখভাল তাদের সুন্দর ভবিষ্যত্যের জন্য স্কুলে পাঠানো। আর স্বামী ঘরে এলে সুখের উপচানো হাসিতে জীবনটা চলছিল মন্দ না।
অপেক্ষা আর দারিদ্রতার সাথে পাল্লা দিয়ে সুখের দুধের বাটি যখন মুখের কাছে ঠিক তখনই কালো হুলো উল্টে দিল দুধের বাটি। দারিদ্র ক্লিষ্ট অভাবের শরীরে বাসা বাঁধল দূরারোগ্য ক্যনসার।
সন্তান যখন পড়ালেখা শেষ করে কাজ পেয়েছে। ভালো আয় করছে সে সময় বছর কয় বিছানার সাথে লেপটে থেকে পারি দিল অন্য লোকে।
ছেলেটির কষ্ট মন ছূঁয়ে গেলো সেই সাথে মনে হলো এমন ভালো মানুষদের ভাগ্য এত কষ্টের কেন হয়? কেন সুখ নামের পাখিটা তাদের কাছে ধরা দেয় না কখনও।
অথবা প্রকৃতির বিচারে এই হয়ত সঠিক সিদ্ধান্ত। হয়ত বা ছেলে আজ যেমন কষ্ট পাচ্ছে তার এই কষ্ট পাওয়াটা জটিল হয়ে যেত মা বেঁচে থাকলে বউয়ের সংসারে।
মার জন্য ছেলে যতটা করতে চায় অনেক সময় তা করতে পারে না বউএর কারণে। বিশেষ করে আমাদের দেশের মহিলা যারা চাকরী করে না গৃহবধু হয়ে সারাটা জীবন ব্যয় করে স্বামী, সন্তান,আত্মিয় পরিজনের দেখ ভালে। নিজেদের জীবন নিয়ে ভাবে না কখনও। ভাবেনা কি ভাবে চলবে শেষ জীবন। অথবা চাকরি বা নিজস্ব আয় থাকলেও পরিজনের ভালোবাসায় যার সবটাই তুলে দেয় প্রিয়জনের হাতে। আর শেষ বয়সে নিঃস্বতার সাথে অর্জন করে, ভালোবাসহীন জীবন।
কিছুদিন ধরে একটা ছবি ঘুরে ঘুরে চোখের সামনে চলে আসছে।
বৃদ্ধা মা যে কুঁজো হয়ে গেছে দেহ ভারে সে ছেলেকে অনুনয় করে বলছে। ”তোদের তো রান্না করার লোক লাগবে। আমি নাহয় রান্না করব তোদের জন্য। তুই তো আবার সব খাবার খেতে পারিস না তবু আমাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাস না বাবা।” ছবিটা কুঁজো বৃদ্ধা মা রান্না করছে।
ছেলে রান্নার লোক হিসাবে মা কে রেখেছে। এমন অনেক উদাহরণ ঘরে ঘরে। সভ্যতার মুখোশ এঁটে অনেকে ঘরে এক রকম, বাইরে আরেক রকম চেহারার, জীবন যাপন করে। এক সময় ভাবা হতো বিষয়টা শুধু অর্থনৈতিক দূরবস্থার সাথে জড়িত। কিন্ত তা নয় অনেক অর্থবানের ঘরেও অনাচারের এমন দৃশ্য দেখা যায়।
বিষয়টা মূল্যবোদের, শিক্ষার, বিবেকের, মনুষ্যত্বের।
এই ঘটনার সাথে আরো একটি বিষয় জড়িত যা আমাকে প্রচণ্ড ভাবে আহত করেছে। প্রেমিকা যার হাত ধরে প্রেম করে, বউ করে ঘরে নিয়ে আসল স্বামী। যার ত্যাগের মহিমায় সুন্দর জীবন যাপন করল অনেক বছর। যে স্ত্রীটি সুখের আশায় থেকে, তিল তিল করে ত্যাগ করে গেল তার জীবন। রোগে ভোগে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরল। সেই প্রিয়তমা স্ত্রীর মৃত্যুর কয়েক মাসের মধ্যে স্বামী প্রবর, ছেলের বয়সি একটি মেয়েকে বিয়ে করে ফেলল। প্রেমিকা বা স্ত্রীর কোন স্মৃতিই তার বিয়ে করতে বাধার কারণ হলো না।
একটি বউ ছাড়া তার সংসার চলে না। সে একা কি ভাবে জীবন যাপন করবে? অতি উৎসাহি হয়ে মহিলারাই তাকে বিয়ে করতে উৎসাহ যুগিয়েছে। মহিলারাই মহিলাদের চরম শত্রু এই বিষয়টা ভীষণ ভাবে উপলব্ধি করলাম, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে। একটি মহিলার সাজানো সংসারে অন্য একটি বাচ্চা মেয়েকে এনে তুলে দিতে তাদের একটুও বাঁধল না।
পঞ্চাশ উর্ধো লোকটা বছর দশ বারো বয়সের বাচ্চা রেখে হুট করে মরে গেলে। এই দ্বিতীয় বউটির জীবন কেমন হবে? কার ছায়ায় সে জীবন যাপন করবে তখন? যার বয়স হয়ত তখন ত্রিশ বা পঁয়ত্রিশ হবে। ভরপুর যৌবনের একজন বিধবা নারী। যে কেবল স্বামীর সেবায় দিনাতিপাত করছে।
খুব জানতে ইচ্ছে করে। সন্তানরা পিতার বিয়ে মেনে নিল। ঠিক উল্টো ভাবে যদি তাদের বাবা মারা যেতো তবে কি তারা মায়ের বিয়েতে রাজী হতো?
সমাজে মনে হয় কিছু নিয়ম পাল্টানোর সময় এসেছে।
২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:৫৮
রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক অনেক শুভেচ্ছা গিয়াস লিটন।
মানুষের জীবনটা বড় অদ্ভুত। আমাদের দেশে অসংখ্য সাধারন নারী ভালোবাসায় জীবন কাটিয়ে যায়। তাদের কিছুই পাওয় হয়না সে সারা জীবন। অথচ তাদের কথা ভাবাই হয়না এ সংসারে।
২| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৫২
হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগলো। শুভকামনা।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:১১
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান মাহবুব
সমস্য কিন্ত প্রকট। পরিবার এবং সমাজ, রাষ্ট্র সবারই মনোযোগ দেয়া দরকার বিষয়টির দিকে।
৩| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৪
মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: হুমম...
২৫ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:১১
রোকসানা লেইস বলেছেন: বিশাল একটা হু মমম
ধন্যবাদ
৪| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৯
তুষার কাব্য বলেছেন: শুভকামনা ।
২৬ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ২:২৬
রোকসানা লেইস বলেছেন: শুভকামনা আপনার জন্যও
৫| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:১৭
সুমন কর বলেছেন: লেখার শেষে কঠিন একটি প্রশ্ন রেখে গেছেন !!
ভালো লাগা রইলো।
২৮ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৩:১২
রোকসানা লেইস বলেছেন: যদি কিছু ভাবনা আসে আর কারো মনে। কিছু সমাধান পাওয়া যায়।
শুভকামনা সুমন কর
৬| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৪৯
প্রামানিক বলেছেন: এক কথায় অসাধারণ !
২৯ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:৩৪
রোকসানা লেইস বলেছেন: শুভ কামনা প্রামানিক
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:১৪
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সুন্দর সুচনা , আবেগিয় বিস্তৃতি , সমাজ পরিবর্তনের ইংগিত ময় পরিসমাপ্তি ।
এক কথায় অসাধারণ !
অনেক দিন পর পুরনো সুহৃদকে দেখে ভাল লাগছে , শুভ কামনা জানবেন ।