নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছুদিন আগে জরুরী এবং সুন্দর একটা কাজে গিয়েছিলাম শহরের একদম পশ্চিম প্রান্তে। সকাল সকাল কাজটা শেষ হয়ে গেলো। খানিক সময় কাটালাম প্রিয় মানুষের সাথে। এক সাথে সকালের নাস্তা আর গল্পে কাটল সময় তারপর সে চলে গেলো কাজে আর আমি ফিরছিলাম পূর্ব দিকে। মাঝে শহরের ডাউনটাউন। ডাউনটাউনে ঘুরে বেড়াতে বিশেষ করে আরাম করে ধীরে সুস্থে দেখে শুনে হেঁটে বেড়াতে আমার খুব ভালোলাগে। কেমন এক ব্যস্ততা, জমজমাট, নানা রকম দৃশ্যপটের ছবি। মজার অনেক কিছুই আমার চোখটানে, মন টানে। তাই সময় পেলেই আমি ঘুরি জীবনের বৈচিত্র দেখার টানে। একবার এমনি কাজের ফাঁকে ঘুরতে গিয়ে এক টিভির ইন্টারভিউ এর সুযোগ পেয়ে গেলাম। হঠাৎ একজন কাছে এসে জানতে চাইল, তোমার সাথে খানিক কথা বলতে পারি? কেন? আমরা টিভিতে প্রচার করব, মাল্টি কালচার শহরের জন সাধারনের মতামত। আচ্ছা নিতে চাচ্ছ নাও। রাজী হয়ে গেলাম। সময়টা ছিল কোন উৎসবের সময়। কিছু প্রশ্ন করল। আমি আমার মতন বললাম। প্রচার হলো কিনা খবর জানি না। অনেকদিন পরে অন্য শহরে ঘুরতে গেলাম এক আত্মিয়র বাড়িতে। সেখানে আরেক আত্মিয় বললেন, আমাকে টিভিতে দেখেছেন। আমার কথা শুনে এবং দেখে, উনি খুব এক্সাইটেট হয়েছেন।বেশ মজা পেয়েছিলাম ব্যাপারটায়।
খুব ভালোলাগে ডাউন টাইনের জমজমাট পথে হাটতে। কত মজাদার ভিন্ন কিছুই না দেখা যায়। সেদিন তাই মাঝ পথে থেমে গেলাম, হাতে অবসর সময় থাকায়। ব্যস্ত পথে হাঁটছিলাম অনেক দূর পর্যন্ত। প্রায় তিন কিলোমিটার পথ চলে এলাম হেঁটে অনেকটা সময় ধরে। থেমে থেমে দেখে দেখে।কেউ গান করছে, কেউ ম্যাজিক দেখাচ্ছে। কেউ মূর্তিমান মাইম সেজে আছে। এদের সাথে আমার অনেক বার দেখা হয়েছে। পরিচিত হয়ে গেছে ওদের মুখ।
অসংখ্য পর্যটক অবাক হয়ে দেখছে। ছবি তুলছে। একটার পর একটা পর্যটনের ছাদ খোলা দোতলা বাস যাচ্ছে তাতে কিছু মানুষ শহর দেখছে পর্যটনের গাড়িতে ঘুরে। অনেকে হাঁটছে। অন্য শহরে যেমন ঘোড়ায় টানা গাড়ি আছে পর্যটকের জন্য এখানে তেমন নেই। তবে রিকশা আছে। আর আছে ব্যাস্ত মানুষের পদচারণা। সময় ফুরিয়ে যাবে বলে হাঁটছে দ্রুত। পথচারী পারাপারের জন্য গাড়ি গুলো রাস্তা পারাপার হতে পারছে না। এই দৃশ্য ঢাকার পথ মনে করিয়ে দেয়। তবে এখানে সিগন্যাল ছাড়া কোন ট্রাফিক পুলিশ নেই। রাস্তার দুপাশে সুদৃশ্য দালান। চকমকে বিজ্ঞপনের ঝলক।
এখানে যারা রাস্তায় সুরের জাল বিছিয়ে উপার্জন করেন তাদের দেখে মনে হয় শিল্পীরা এমন দরিদ্র কেন। কী অদ্ভুত বাজনার সুর মুর্ছনা পথচারী যেতে যেতে কিছু দিয়ে যায় ভালোবেসে, কেউ থেমে যায় মুগ্ধ হয়ে। আমার কাছে ওদের অনেক বাজনা, ভিডিও করা আছে। প্রতি ঋতুতে ভিন্ন রূপ।
ভিন্নরকম অনেক কিছুর সাথে যে বিষয়টা কাল আতংকিত করল আমাকে। প্রতিটি পথের কোনায় একজন করে ভিক্ষুক বসে আছে। ভয়ংকর মনে হলো এই শহরে। ভিক্ষুকের সংখ্যা বাড়ছে লক্ষ করছিলাম বেশ কয়েক বছর ধরে কিন্তু এমন প্রতিটি পথের মোড়ে একজন দুজন ভিক্ষুক,কেমন যেন সুন্দর বাস্তবতায় নির্মম ছবি, চোখের সামনে দাঁত কেলিয়ে দাঁড়াল যেন।
আগে কখনও দু'চারজন পথের পাশে একটা গ্লাস রেখে বসে থাকত চুপচাপ তারা কখনও মুখ খুলে কিছু চাইত না। আর ছিল পথের মানুষ। যারা পথে থাকতে ভালোবাসে। সমাজ কে অবজ্ঞা করে। তাদের জীবনটাও এক ধরেনের মজার মনে হয় আমার কাছে। প্রচণ্ড শীতে রাস্তার সোয়ারেজের ঢাকনার উপর শুয়ে থাকে। তাপ পায় উষ্ণ বাষ্প থেকে। এখানে সোয়ারেজেও হিটিং চালাতে হয় শীতকালে নয়ত বরফ হয়ে সব পাইপ ফেটে যাবে অথবা বরফে আটকে যাবে চলমান ধারা। প্রচণ্ড শীতে, এমন পথের মানুষদের শেলটার দেয়ার জন্য তুলে নিয়ে আসে কিছু সংস্থা। তবে তারা একটু শরীর গরম হলে বা আবহাওয়া গরম হলে পথে চলে যায় ভালোবেসে। ওরা খোলা আকাশ বেশী পছন্দ করে ।
আগে কখনো দুচারজন ড্রাগ আসক্ত খুচরো চাইত। হঠাৎ করে কাছে এসে। কিন্তু এখন যাদের দেখলাম তারা জীবনের প্রয়োজনে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে পথে বসেছে বোঝা যায়। সমাজে অর্থনৈতিক ভাবে তারা স্থান করতে পারছে না। অনেক রকম সার্পোট থেকে কোন সহযোগীতা পাচ্ছে না। অনেক রকম মানুষ জীবনের প্রয়োজনে রাস্থায় ভিক্ষাবৃত্তিকে বেছে নিয়েছে মনে হলো। এর বিশ্লেষন করতে গেলে সামাজিক, রাজনৈতিক অনেক পরিবর্তনের বিষয় আলোচনা করতে হয়। প্রায় সব মানুষের একটা সুন্দর জীবন যাপন ছিল যে দেশে, সেখানে অনেকের জীবন এখন দারিদ্র সীমার নীচে। এক ভুতুড়ে কালো হাত যেন গ্রাস করে নিচ্ছে সুখ চারপাশের। অনেকগুলো পরিবর্তন হয়ে গেছে গত কয়েক বছরে তার ফল যেন রাস্তায় আবর্জনার স্তুপের মতন উপচে উঠছে দিনে দিনে। যার অনেকটাই বাইরে থেকে বোঝা যায় না। কিছু মানুষের জীবন যাপন হয়ে উঠছে আকাশ চুম্বী আর কিছু মানুষ পথে বসছে।
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:১১
রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ তুষার কাব্য
২| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: কিছু মানুষের জীবন যাপন হয়ে উঠছে আকাশ চুম্ববী আর কিছু মানুষ পথে বসছে।
সুন্দর উপলব্দি ।
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:১৯
রোকসানা লেইস বলেছেন: আমি অনেক লেখায় লিখেছি, মানুষের জীবনটা তার নিজের। কিন্তু অধিকাংশ সময় মানুষ ভয়ানক কষ্টে থাকে। কারণটা নিজের নয় পৃথিবী ব্যাপী কিছু মানুষের অকারণ মূল্যবোধের মূল্য দিচ্ছে অসংখ্য মানুষ।
শুভকামনা
৩| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:১৯
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: সুন্দর প্রকাশ ।
ভালো থাকবেন অনেক
২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:৪৫
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ অপূর্ণ
তুমিও অনেক ভালো থেকো
৪| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:৫৩
দীপংকর চন্দ বলেছেন: ভালো লাগা রইলো।
শুভকামনা অনিঃশেষ।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:১১
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ....অনেক অনেক শুভকামনা
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪২
তুষার কাব্য বলেছেন: ভালো লাগলো...