নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটি কালো প্রজাপতির পিছু পিছু আনমনে ছুটতে ছুটতে কতদূর চলে যাই। ঘাস আর বুনো ফুলের রেনুতে মাখামাখি হয়ে অকারণ হাসির তরঙ্গ জাগে দেহ জুড়ে। সময়ের ছায়া নামে লম্বা হয়ে। রঙের কাঁপন ধরিয়ে দেয় চারপাশে। প্রজাপতিটা লুকিয়ে পরে কোথায় পাতার আড়ালে। আর বিশাল আকাশ আরো বড় হয়ে উঠে চোখের সম্মুখে। লম্বা নিঃশ্বাসের সাথে ভরে উঠে বুক সতেজ বাতাসে, চনমনে দোলায় চাঙ্গা হয় দেহ। এবার ফিরতে হবে।
ঘুরে দাঁড়াতেই পশ্চিমের লাল আভা চোখে কাঁপন ধরায়। রক্তাভ লাল আকাশ বয়ে আনে তাজা লোহুর গন্ধ, পশ্চিম দিগন্ত থেকে। সমস্ত সুন্দর হয়ে উঠে অসুন্দর এক মূহুর্তে। ক্ষত বিক্ষত রক্তাক্ত যন্ত্রনা জড়িয়ে ধরে। ভাসিয়ে নিয়ে যায় দূরে মন। আর্তনাদ আর যন্ত্রনার চিৎকারে ক্ষত বিক্ষত হয় চেতনা।
যেখানে কখনও যাওয়া হয়নি। যে পথে কোন শিশুর আঙ্গুল ধরে হাঁটা হয়নি কখনও। যেখানে পা ফেলতেই থকথকে রক্তের ধারায় পা ডুবে যায়, অথচ সেখানে বেঁচে থাকার আকুলতায় মানুষ কাতরাচ্ছে সারাক্ষণ। মন উড়ে যায় প্রজাপতি হয়ে সেখানে। আর কেড়ে নেয় আমার সমস্ত নম্র পেলব ভালোলাগা। যন্ত্রনার কাটার আঘাতে করে ক্ষত বিক্ষত।
যন্ত্রনায় নীল হতে থাকি আর কুঁকড়ে উঠে মানবিক সত্তা লজ্জ্বায়। প্রচণ্ড হিংস্রতায় গুটি কয় লোভী মানুষের জিব টেনে ছিঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে করে। যেন তারা আর কখনও নিজেদের লোভের কথা বলতে না পারে। ছড়াতে না পারে অকারণ লোভের বিষ; আর কারো মনে। আর সেই নীল যন্ত্রনায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে হাবুডুবু খায়, ভয়ের স্রোতে সাঁতার কাটে হাজারও মানুষ।
আমি কোন কিছুই দেখতে চাইনা আর তাই চোখ ফিরিয়ে রাখি সব খবর থেকে। বন্ধ রাখি টেলিভিশন। রেডিওতে দিয়ে রাখি এফ এম যেখানে শুধুই গান শোনা যাবে। অথচ চোখের সামনে মারাত্মক সব খবর চলে আসবেই। ফেস বুক খুলতেই নজরে এলো। দশ বছরের মেয়েটিকে, মেরে ফেলতে বলেছে পরিবার। কারন মসজিদে, মোল্লা ধর্ষন করেছে মেয়েটিকে। মোল্লা, মসজিদে বসে কি আনন্দ চর্চা করল। তার বিচার কেউ করল না। বিচার হলো, বাচ্চা মেয়েটার। ঘটনাটি আফগানিস্থানের।
ইরাকে ঢিল ছুঁড়ে দুটি মেয়েকে মেরেছে উৎসাহী ধার্মিক মানুষ। মেয়ে দুটি ধর্ম মানেনি। অথচ এই ধার্মিকরা, র্নিদ্বিধায় অসংখ্য মেয়ের উপর অত্যাচার করে। কোন পুরুষকে কখনও ঢিল ছুঁড়ে মারা হয়না কেন?
কাকতালীও কিনা জানিনা। আমার বাড়ির উপর দিয় প্রতিঘণ্টায় কয়েকটা প্লেন উড়ে যায়। বড়বড় বোয়িং ছাড়াও প্রতিবেশীরা নিজেদের বিমান নিয়ে যখন তখন পাখি হয়ে উড়ে। খুব কাছের শহরে, প্লেন চালানো শিখায়। শিক্ষানবিস, উড়ে বিমান নিয়ে। একদিন মাঠের উপর দাঁড়িয়ে আছি, হঠাৎ খুব নীচু দিয়ে একটা ছোট পাখির মতন প্লেন একদম আমার মাথার উপর দিয়ে খুব ধীরে উড়তে দেখলাম। মনে হচ্ছিল, বুঝি কাছাকাছি মাঠের উপরই নেমে পরবে। প্লেনটায় কোন সমস্যা ছিল, নাকি আমাকে দেখছিল উপর থেকে কে জানে?
সেদিন মজা করে বলছিলাম, আচ্ছা যদি একটা প্লেন পরে যায় আমাদের বাড়ির উপর কি হবে? তার দুদিন পরই খবর দেখলাম। প্লেনের ভিতর রাখা কুমির বেড়িয়ে পরায়, ভয় পেয়ে সব যাত্রী ককপিটে ঢুকে পরে হুড়াহুড়ি, ভয়ে। সাথে কুমিরটাও যায়, বিশজন মানুষকে মারে কুমির পায়লটসহ। বিক্রি করার জন্য ব্যাগে লুকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল কুমিরটা একজন যাত্রী। প্লেনটা মাঠের মাঝে পরে, ছেড়া পাতার মতন উড়ে। একজনের লোভের জন্য কতজনার প্রাণনাশ!
এরমধ্যে বেশ কয়েকটি প্লেনের জরুরী অবতরনের খবরও শোনা যায়। কানাডার প্লেন গন্তব্যে না গিয়ে ফিরে আসে প্রায় গন্তব্যের কাছ থেকে ভয়ের আশংকা করে। চেকিং ছাড়া একজন প্লেনে উঠেছে সন্দেহ করে যদিও পরে প্রমাণিত হয় ভুল ছিল তথ্য। আর একটা কুকুর বার বার প্লেনে হাগু করে দেয়ার জন্যও জরুরী অবতরন করে একটা প্লেন। মালয়েসিয়ান প্লেন নিখোজ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই চলছে এমন কিছু অদ্ভুত ঘটনা আকাশযানের ইতিহাসে। হয়ত বা প্লেনের খবরগুলো কানে বা চোখে পরছে খুব বেশী। অবচেতন ভাবে মনের উদ্বিগ্নতায়।
এর মঝেই মালয়েসিয়ান প্লেনের ঘটনাটি ঘটে। ঘুম থেকে উঠেই শোনা গেল তিনশ মানুষের ভয়াবহ মৃত্যু খবর। ক’দিন আগেই তো লিখেছিলাম, পূবের এই অস্থিরতা ভালোলাগছে না। পশ্চিমে তো ক্রমাগত রক্তারক্তি চলছেই। অথচ পূবের রেষারেষির ফসল হলো সাধারন প্লেনের,আর্ন্তজাতিক যাত্রী। যারা নিজেদের গন্তব্যে যাচ্ছিল। অথচ কত দেশের মানুষ এক সাথে চলে গেলো এক গন্তব্যে। বৃষ্টির মতন ঝরল মানুষের শরীর মাঠের পর মাঠ জুড়ে। হলুদ সূর্যমুখির ক্ষেত হলো রক্তাক্ত। সবজীর ক্ষেত জুড়ে মানুষের লাশ। মহিলাটি ঘুমিয়ে ছিল নিজের বাড়িতে। খুব ভোরে ভয়ানক শব্দে জেগে উঠে দেখল। ঘরের চাল ফুটো হয়ে নেমে এসেছে এক মহিলা তার ঘরে, বিছানার পাশে তার দেহ শুয়ে আছে। প্লেনের একজন যাত্রী মৃত্যুর পর এভাবেই গিয়ে ঢুকেছিল একজনার ঘরে। বিশ্ব বাসীকে স্তব্ধ করে দেয়ার মতন খবর তৈরি করার পরও রেষারেষি কমল না।
গুলাগুলি চলছে, দুটি বিমান বিদ্ধস্ত করা হলো তারপরও, বাহদুরি দখলদারী চলছে। আলজেরিয়ান প্লেন ক্রাস,তাইওয়ানের প্লেন ক্রাস হঠাৎ এক সাথে টুপটাপ এভাবে প্লেন ঝরে পরা শুরু হলো কেন? আজ আবার একজন প্লেনে বসে বোমা বলায়, পানামা না গিয়ে প্লেন টরন্টো ফিরে গেলো, আমেরিকার দুইখানা মিলিটারি প্লেনের পাহারায়। আলী শাহীকে গ্রেফতার করা হল, প্লেনে হুমকি দেয়ার জন্য। হচ্ছেটা কি চারপাশে।
অনেক হয়েছে এবার থামো। আর কেউ যেন ভুল করে পরে যেও না। আমার বাড়ির উপর।
আর পশ্চিমের রক্তাক্ত আকাশ কবে থামবে সেখানের হাহাকার? সভ্য হলো না মানুষ তবে রয়ে গেল সেই বন্যই এখনও। এক টুকরো ভূমির জন্য অবিরাম মৃত্যু কত বছর ধরে চলছে? প্যালেস্টাইন নামক স্থানে জন্মেছে বলে কী তাদের এভাবে জীবন দিতে হবে? পবিত্র মাসের কথা মনে করেও কেউ সংযম করছে না। যেন মানুষের মৃত্যু না দেখলে তাদের ঘুম আসে না।
সাধারনরা হাউকাউ করছে আর মোড়লরা নাকে তেল দিয়ে ঘুমোচ্ছে। গুটিকয় মানুষের, ইচ্ছার খেলায় অস্থিরতায় ভূগছে অগনিত মানুষ। সভ্যত তবে কবে আসবে পৃথিবী জুড়ে?
২| ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:১৭
রোকসানা লেইস বলেছেন: সে রকমই মনে হচ্ছে। পিছন অন্ধকারের দিকে ছুটেছে যেন সভ্যতা।
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩১
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আমরা ভুলে গেছি আদৌ কখনো মানুষ ছিলাম কি না।