নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তরুণ প্রজন্ম এক অবিচল সত্যের ডাক দিয়েছে। যে কথা ছিল মনে বরাবর,এক টুকরো ধিকি ধিকি আগুন হয়ে। অথচ প্রকাশ হচ্ছিল না সঠিক ভাবে। অনেক বার চেষ্টা হয়েছে কিন্তু ব্যর্থতায় মুসড়ে পড়েছে।
প্রয়োজন হয় একটি ডাক যথার্থ। সে ডাক এসেছে বাংলার মানুষ জেগেছে। কজন তরুণ সাহস করে নিজের প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে পড়েন। তাদের সাথে জোয়ারের মতন, বানের ঢেউয়ের মতন ফুঁসে উঠেছে গোটা বাংলাদেশের মানুষ। ধিকি ধিকি জ্বলা সে অঙ্গার ফূলিঙ্গ হয়ে জেগেছে।
১৪ই ফেব্রুয়ারি ভালেবাসা দিবসের দিনটা প্রিয় একজন মানুষের জন্মদিন পালনের মধ্য দিয়ে বেশ ভালো কাটল পরিবারের সাথে। মন জুড়ে ছিল প্রজন্ম চত্বরের কোটি কোটি মোমের আলো গোটা বাংলাদেশ ছাপিয়ে আমার ঘর আলো করা মোমের প্রদীপ্ত শিখা। সারাদিন কানে বাজছিল শাহবাগ স্কয়ার থেকে টেলিফোনের ইথার বেয়ে ভেসে আসা কণ্ঠ, কথন প্রিয় মানুষের।
সারাদিন স্বাধীন বাংলা বেতারের কথা, চরমপত্র, গান জড়িয়ে যাচ্ছিল শরীরের প্রতিটি রোমে রোমে। ফিরে চলে যাচ্ছি অনেক ছোটবেলায় যখন ১৯৭১ সনে এমন স্বাধীন বাংলা বেতার শুনতেন অভিভাবকরা আর সাথে আমার ভিতরে এক অদ্ভুত চেতনার জাগরণ হতো সেই বেতারের শব্দমালায়।
তখন স্বাধীন বাংলা বেতার শুনতে হতো অনেক সাবধানে চুপিচুপি। দেয়ালের ওপাশ থেকে কেউ যেনো শুনতে না পায়। ঘরের আলো গুলো যেন কেউ দেখতে না পায়। বুকের ভিতর এক প্রচণ্ড চাপ নিয়ে ছিল জীবন যাপন। কবে কখন এই ভয়াবহ জীবনের মুক্তি হবে জানাছিল না।
স্বাধীনতার পরে সাপ মেরে লেজে বিষ রেখে দেয়ার মতন রেখে দেয়া হয়েছে রাজাকারের গুষ্টি। ঝাঁক বেধে ছড়িয়ে পরেছে আজ বাংলাদেশের আনাচে কানাচে। ধর্মের দোহাই দিয়ে মানুষ মারছে। ধর্মের নামে মানুষ মারার এই অধিকার কই পাইল? ইসলাম ধর্ম কী বলে মানুষ মারতে? আল্লার নামে ইসলামের নামে মানুষ মারছিস তাইলে সবার সামনে মার লুকায়ে মারিস কেন ,কিসের ভয়ে?
বলছিলাম স্বাধীন বাংলা বেতার শোনার কথা কিছু গান হৃদয় উচাটন করে দিচ্ছিল।সাথে কিছু গান আর স্লোগান শুনে ভিতর থেকে ভয় জেগে উঠছিল।
"রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি বাংলাদেশের নাম, রক্ত দিব রক্ত দিব রক্তের প্রতিশোধ মোরা নেবই নেবো"। ভিতরটা হাহাকার করছিল, না কোন রক্ত আমরা দিব না। "সাথী দের খুনে রাঙা পথে পথে"..না আমরা আর সাথীর খুনে রাঙা পথে হাঁটব না।আমরা রাজাকার আর নব্য রাজাকরদের ধরব আর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিব।
আমাদের একটি ছেলেও যেন রক্তাক্ত না হয়, মারা না যায় এই আন্দোলনে। ভিতরে এমন বর্ষন হচ্ছিল, হচ্ছিল ক্ষরণ যদি অনলাইন খুলে দেখি কোন দুঃসংবাদ, কোন পরিচিত মুখের হারিয়ে যাওয়ার সংবাদ। এমন এক ক্ষিন স্রোত বয়ে যাচ্ছিল হৃদয়ে।
শ্লোগানে আমাদের বর্ণমালা দিয়ে ওদের নামকরণ নিয়ে আগেও লিখেছিলাম। নতুন কিছু শ্লোগান ধইরা ধইরা জবাই কর।"" আগুন জ্বলো" এমন শব্দগুলো হয়তো উন্মত্ততা দেয়, রক্ত গরম করে দেয় কিন্তু আমরা কি করব কি বলব, আগামী প্রজন্মর জন্য কি উদাহরণ রেখে যাবো তা কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে সর্তকতার সাথে।
তরুণ প্রজন্মর চেতনার অনুভবে আস্থাশীল হয়ে উঠি। ভরসায় নিশ্চিন্ত হয়ে উঠি। তেমনি এগিয়ে এসেছেন ষোল কোটি মানুষ সার দিয়ে দাঁড়িয়েছেন তাদের হাতে হাত রেখে। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও ছড়িয়ে পরেছে একই প্রত্যাশা।সংহতির সাথে একাত্মা হয়ে গেছে পৃথিবী জুড়ে বাঙালি আজ শাহবাগে।
একটি দাবী একটি প্রত্যশার আশায় রাস্তায় দাঁড়ান প্রজন্মের উপর আশার বিশাল দ্বায়িত্ব উঠে আসছে প্রতিদিন।
চাওয়ার দাবীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে দিন দিন।
আসলে সব কিছু ধূয়ে মুছে পরিচ্ছন্ন করে নিয়ে আসুক এই প্রজন্ম এই আকাংঙ্খা, মানুষের ভিতরের সতস্ফূর্ত ভাবে প্রকাশিত হয়ে পরছে প্রতিদিন।
হাজার জনতার ভিতর থেকে উঠে আসছে কিছু অপ্রাসঙ্গিক কথা,নানান রকম মত অনেক বেশী চাওয়া।
যাদের আমি দেখিনি। যাদের সাথে সরাসরি কোন যোগাযোগ নাই আমার তারা কেমন করে যেনো বুকের মধ্যিখানে বাসা বেঁধে আছে। উদ্বিগ্ন আর উৎকণ্ঠা জমে আছে তাদের জন্য।
সুন্দর রাতটা পার করে সকাল না হতেই আশংকার ভয়াবহ খবরটা কামড় দিল হৃদয়ে।
সমস্ত আশংকা ছাপিয়ে খবরটা পৌঁছে গেল মুহূর্তে পৃথিবী জুড়ে, নৃশংসতার কথা, জল্লাদ কসাই বেজন্মার কথা, তাদের কর্ম এবং ইচ্ছার খোলা তরবারী এখন সবার চোখের সামনে। আমরা তাদের প্রতিহত করব। নির্বংশ করব।এই বাংলার বুকে তোদের আর ঠাঁই হবে না কথা বলার।
নয় মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন হয়েছিল, নয় বছর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন চলে ছিল, চল্লিশ বছর পর জনতা আবার কলংক মুক্তির জন্য পথে অপেক্ষা করছে।
জ্বালো জ্বালো শুনে রক্ত গরম হয় কিন্ত এর ক্ষতি অনেক যা নিজেদের উপরই আসে। সম্পদ জ্বালিয়ে, পুড়িয়ে। আন্দোলনের চেয়ে অহিংস প্রতিবাদ চলুক। রাস্তার উপর থাকা এও এক যুদ্ধ সময়ের অভিজ্ঞতা। তবে ফুল, মোম ছেড়ে আরো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া মনে হচ্ছে সময়ের দাবী এখন।
সঠিক নির্দেশনা, হালধরার দায়িত্ব এখন মূল আন্দোলনকারীর হাতে। দেশবাসী অনেক আশায় সর্বাত্মক সহায়তা দেয়ার জন্য প্রস্তুত। সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল যেন না হয়। দেশবাসীর হৃদয়ের চাওয়াকে মূল্য দেয়ার পূর্ণ করার সুযোগ এখন প্রজন্ম তোমাদেরই হাতে।
খুব সহজে অনেকেই আস্থা হারিয়ে ফেলেন দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়েন।গুজব আর বিভ্রান্তির মায়া জালে ধরা পরেন।
আন্দোলন সফল করার জন্য প্রয়োজন ধৈর্য এবং একাত্মতা, কিছু সময়ের অপেক্ষা। অসম্ভব ধৈর্য সহকারে অপেক্ষা করতে হবে। পেরুতে হবে কঠিন সময়।
হেরে যাবার আগে বেঁচে যাওয়ার শেষ চেষ্টা করে যাবে ওরা। হামলা করে শেষ করতে চাইবে বুদ্ধিজীবি। সদা সতর্ক থাকতে হবে সবাইর যেন ওদের সব চেষ্টাই ব্যার্থ করা যায়। অনেক সময় পেয়েছে ওরা এখন যত দ্রুত বিনাশ করা যায়, থামিয়ে দেয়া যায় অপচেষ্টা সে ব্যবস্থা প্রয়োজন।
ইতমধ্যে বিষবাষ্প ছড়িয়ে দেয়ার কাজটা সচারু রূপে সম্পন্ন করে ফেলেছে। শুধু কেড়ে নেয় নাই আমাদের যোদ্ধা। মীরজাফরী তরিকায় দ্বিধা দ্ব্ন্দের দ্যোলক ঝুলিয়ে দিয়েছে অনেকের মনে।
এমন আরো অনেক কিছুই ওরা করবে। ভাঙ্গন ধরাবে। তার জন্য প্রস্তুত থাকুন। আমাদের সুস্থ স্বাভাবিক চিন্তায় যা আমরা কল্পনাও করতে পারিনা। রাজাকার তার চেয়েও নিষ্ঠুর। ওদের পরিকল্পনা অনেক বিস্তৃত। ওরা বিয়াল্লিশ বছর ধরে প্রস্তুতি নিয়েছে। দেশ বিদেশে ওদের অনেক সুষ্ঠ পরিকল্পিত যুদ্ধঘাটি প্রস্তুত আছে। দেশের মানুষ তার বিরুদ্ধে লড়ছে, সাহস, মনোবল সত্য- ন্যায় নিয়ে।
যদি দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে রাজাকারের শাসনে নিজেকে না দেখতে চান। নিজেকে ভালো অবস্থানে দেখতে চান দেশের ভালো চান তবে রাজাকারের অভিসন্ধীগুলো বোঝার চেষ্টা করুন। হাবিজাবী অনেক কিছু নিয়ে ভাবার চেয়ে, প্রতিদিন নিজের মতন একটা উপসংহার খোঁজার চেয়ে, মূল লক্ষে অটল থাকুন।
রক্ত ঝরার কথা শুনতে চাই নাই। তবু রক্ত ঝরা শুরু হয়েছে আরও ঝরবে কিন্তু বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে।
শিমুলের রঙ কৃষ্ণচূড়ার রঙ পেরিয়ে গোলাপ বাগানে অজস্র ফুল ফোটানোর প্রতিজ্ঞায় দৃঢ়বদ্ধ অটুট থাকুন। জয় আমাদের হবেই।
২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৩১
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ banglar_hasan
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:৩৪
বাংলার হাসান বলেছেন: চমৎকার গোছানো কথার মালা।