নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এটা আমার ক্যানভাস। এখানে আমি আমার মনের কোণে উঁকি দেয়া রঙ-বেরঙের কথাগুলোর আঁকিবুঁকি করি।
মানুষ নানা রহস্যে বেষ্টিত প্রাণি; যার আদল দেখে অন্তরমহলের অবস্থা আঁচ করা মুশকিল। শব্দটিকে মুশকিল না বলে, অসাধ্য বললেই এর প্রতি সুবিচার করা হবে। পৃথিবীতে মানুষের আদলগত যেমন ভিন্নতা আছে, ঠিক তেমনি প্রতিটি মানুষের ভেতরে বাস করা মানুষটির মধ্যেও রয়েছে নানা পার্থক্য। মানুষের মস্তিষ্ক যেনো এলমেল সূক্ষ্ম সুতোর বুনন। যার জট খোলা; জড়িয়ে-পেঁচিয়ে কুন্ডুলি পাকিয়ে যাওয়া সুতোর জট খোলার চেয়েও কঠিন।
পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে, যারা খুব মিশুক আর আমুদে। সারাক্ষণ হৈহুল্লোড় ও আনন্দে মেতে থাকে। এই মানুষগুলোর বন্ধুর সংখ্যা আকশের নক্ষত্ররাজির মতো। সেই মহলে বেশ দাপিয়েই বেড়ায় এরা। খুব সহজে মিশে গিয়ে, সবাইকে নিজের করে নেওয়ার অদ্ভুত ক্ষমতা থাকে এদের। বিজ্ঞানের ভাষায় এই স্বভাবের মানুষদের (এক্সট্রোভার্ট) বলে। পৃথিবীতে এই মানুষগুলোর একেবারেই উল্টো কিছু মানুষ আছে, যারা নিজের মতো একা থাকতে ভালোবাসে। কারো সাথে ঠিক মিশে উঠতে পারে না। সারাক্ষণ নিজের জগৎ নিয়েই ব্যস্ত থাকে। এদের বলা হয় (ইন্ট্রোভার্ট)।
এই দুই শ্রেণির মাঝামাঝি কিছু মানুষ আছে, যারা কখনো খুব মিশুক আবার কখনো গম্ভীর। এই মানুষগুলো একই সাথে হৈহুল্লোড় করে, আড্ডা দেয়, মজা করে আবার সবকিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে একা করেও রাখে। এদের বলা হয় এম্বিভার্ট। সমাজে চলতে গিয়ে এই মানুষগুলোকে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এদের চারপাশের মানুষজনও বুঝতে পারে না এদের।
কিছুক্ষণ আগে হৈহুল্লোড় করে বেড়ানো মানুষটি যদি আচানক সেখান থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে—চুপ করে যায় বা একা থাকতে চায়, তাহলে কেউ এই বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নেবে না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কেউ এটাও বুঝতে চায় না, এখানে এই মানুষগুলোর কোনো হাত নেই। খুব সহজে এরা সাবার সাথে মিশে গেলেও এই সমস্যার কারণে; এদের খুব বেশি বন্ধু থাকে না। গুটি কয়েক বন্ধু নিয়েই জীবনের অধ্যায় শেষ হয়।
‘এম্বিভার্টরা’ প্রচন্ড রকমের অভিমানি আর আবেগপ্রবণ হয়। এদের বাহিরের আচরণ দেখে ভেতরের অবস্থা আন্দাজ করা যায় না। ভেতরে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস বয়ে গেলেও বাইরে থেকে মনে হয়, ঝলমলে রোদ্দুরময় দিন। এরা খারাপ সময়েও ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা টেনে বলতে পারে, “ভালো আছি”। নিজের বিষাদ চাপা দিয়ে, অন্যের মনের চিকিৎসা দিতে ব্যতিব্যস্ত থাকে এরা। এই মানুষগুলো খুব চাপা স্বভাবের; দাঁত কামড়ে সব সহ্য করে। নিজ থেকে না বলা পর্যন্ত আপনি এদের ভেতরের খবর জানতে পারবেন না।এরা খুব একটা নিজের ভেতরের খবর বলে না। বলে না বললে ভুল হবে। আসলে বলার মতো কাউকে খুঁজেই পায় না। কারণ এদের বন্ধুর সংখ্যা খুব সীমিত।জীবনে চলার পথের বাঁকে বাঁকে কত মানুষের সাথে এদের পরিচয় হয় কিন্তু কেউ ঠিক ভেতর ঘরের মানুষ হয়ে উঠতে পারে না
এই মানুষগুলোর নিজেদের একান্ত জগৎ থাকে, যার চারপাশে অদৃশ্য এক পাঁচিল তুলে রাখে এরা। কেউ চাইলেই পাঁচিল টপকে সেই জগতে প্রবেশ করতে পারে না। ভালোবাসা আর বিশ্বাস হচ্ছে সেই জগতে প্রবেশের অনুমতিপত্র। যদি কেউ একবার প্রবেশ করার অনুমতি পায়, তাহলে অবাধে বিচরণ করতে পারে সেখানে। এরা মানুষকে বারবার বিশ্বাস করে, বারবার ঠকে। এদের ঠকানো খুব সহজ। একটু মায়া জড়িয়ে কথা বললেই পেছনের ঝুম বর্ষা ভুলে গিয়ে, পা বাড়ায় নতুন ভুলেরে দিকে।
এতোকিছুর পরেও এদের কোনো অভিযোগ-অনুযোগ নেই। এরা এদের মতোই থাকে। তবে, মাঝেমধ্যে এই মানুষগুলো খুব একাকীত্ব অনুভব করে। দু দন্ড কথা বলার জন্য অসহায় চোখ কাউকে খুঁজে বেড়ায়। খুব করে চায় অদৃশ্য পাঁচিল টপকে এদের জগতে কেউ ঢুকে পড়ুক, একটানে খুলে ফেলুক একাকীত্বের চাদর…
ছবিঃ গুগল
০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪১
শাওন আহমাদ বলেছেন: এগুলো জন্মগত বৈশিষ্ট ভাইয়া। তবে পরিবেশের কারণে কয়েক পার্সেন্ট এদিক-ওদিক হতে পারে কিন্তু খুব বেশি না।
২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১২:০৮
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: আমি কখোনো কখোনো অন্তর্মুখী কখোনো কখোনো বহির্মুখী।
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৫৯
শাওন আহমাদ বলেছেন: আপনি আমার দলের লোক।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: একজন মানুষ অন্তর্মুখী না বহির্মুখী হবেন চারপাশের পরিবেশ কি নির্ধারণ করে দেয় না? নাকি জন্মগত ভাবে এমন টা হয়ে থাকে?