নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছেলে দেখে চৈতির বাবা মা খুব খুশি, কি ভদ্র আর কি সুন্দর দেখতে আর কত লম্বা! দেখলেই বোঝা যায় খুব উঁচু ঘরের ছেলে। বাবা মা এর মুখ থেকে এই কথা চৈতি অসংখ্য বার শুনেছে ছেলে এবং ছেলের পরিবার ওকে বাসায় এসে দেখে যাওয়ার পর, শুনে শুনে ওর মনেও স্রুক্ষ বিশ্বাস হয়েছে ওর বাবা মার কথার উপর।
ঘটকের মাধ্যমে ৬/৭ জন পাত্র দেখে চৈতির বিয়ের জন্য এই ছেলেকেই বাসায় চৈতির বর হিসেবে নির্বাচিত করলো সবাই।
ঘটকের ফোন এলো একদিন,
চৈতির সাথে দেখা করতে চায়। শুনে ওর বাবা মা পারেনা তখুনি ওকে ছেলের সাথে দেখা করতে পাঠিয়ে দেয়্।
অতঃপর পরদিন বিকেলে চৈতি দেখা করতে যায় ছেলের সাথে।
ভয় সঙ্কোচ কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করে এক রেস্তোরায় ছেলেটির মুখোমুখি বসে চৈতি।
-কেমন আছো চৈতি?
-জী ভালো,
-আব্বু আম্মু কেমন আছে?
-উনারা ভালো আছে??
-ভাইয়া ভাবী?
-জী তারাও ভালো আছে?
-তারা তো বিদেশে সেটেল তাই না ? আই মিন দেশে তো আর আসবেনা? অবশ্য আসবেই বা কেন কি আছে এই ছাইপাশ দেশে! আচ্ছা তোমাদের বাড়িটা কতখানি জমির উপর?
- আমি তো জমির হিসাব খুব একটা ভালো বুঝিনা! কেন?
-হবে বোধহয় বিঘা খানেক নাকি বল?
-হতে পারে।
-এত জায়গা খালি ফেলে রেখেছে, তোমার বাবা একটা বোকা, ৫ তোলা ২ ইউনিটের ২/১ টা বাড়ি করে ভাড়া দিলেও তো কত টাকা রোজগার হতো।
-বাবা এখুনি এসব ভাবছেন না,
-উনার তো ভাববার বয়স ও পার হয়ে গেছে, যা করার আমাকেই করতে হবে।
-আপনি কি করবেন? ওটা আমার বাবার বাড়ি, আপনার তো নয়, মন খারাপ হয়ে যায় ভেতরে ভেতরে চৈতির, এসব কি বলছে লোকটা!!
-আরে পাগলী বিয়ের পর তোমার বাবা আমারও তো বাবা, তোমার সব কিছু তখন আমার। আর শোন আমার কিন্তু তেমন টাকা পয়সা নাই, বিয়ের সময় গয়না দিতে পারবোনা, গোল্ডের তো প্রশ্নই আসেনা। আর তোমার বাবা থাকতে আমাকে কিনতে হবেই বা কেন তাই না!! হাহ হাহ হা!!
আচ্ছা শোনো আমাদের বিয়ের প্রোগ্রাম কই করবে? কমিউনিটি সেন্টারে না বাড়ির ছাদে?
-কই করলে ভালো হবে?
-অবশ্যই কমিউনিটি সেন্টারে, তোমার বাবাকে বলে দিও কিন্তু,
-বলে দিবো।
-আমি কিন্তু টাকা পয়সা খরচ করতে পারবোনা।
-ঠিকাছে।
-মাসে মাত্র ১৪ হাজার টাকা বেতন পাই, এই নিয়ে তোমায় নিয়ে চলবো কি করে! কি করা যায় বলতো??
-কি করা যায়?
-ভাবছি চাকরীটা ছেড়ে দেবো, শশুর মশাই তো আছেই, তোমার বড় ভাই ও আছে, সত্তর আশির মত দিলেই হবে। ভাবছি একটা বিজনেস শুরু করবো।
-সত্তর/আশি হাজার??
-আরে না পাগল! লাখ, সত্তর/আশি লাখ। একটা বিজনেস দাড় করাতে গেলে এটা হিসেবে কোন টাকাই না, তবু আমি এর ভেতর ম্যানেজ করার চেষ্টা করব।
এসময় চৈতির ওর দাদীর কথা ওর খুব মনে পড়তে থাকে, ছোটবেলায় চৈতির দাদী বলতো শোন চৈতি, মানুষকে প্রথম দেখায়ই বিশ্বাস করবিনা,
-কেন দাদী?
-কারন মানুষের অনেক রুপ। একবার দেখে তুই আসল চেহারা চিনতে পারবিনা, একটা মানুষকে যত বেশি দেখবি ততই তার আসল চেহারা ধীরে ধীরে ভেতর থেকে বের হতে থাকবে।
আসলে মানুষ অনেক রকম হয়, অনেক সময় অনেক মানুষের ভেতর তুই পশুপাখি জীবজন্তুর ছায়া দেখতে পাবি। এদের চেহারা মানুষের মত হলেও এদের ভেতর থাকে জন্তু জানোয়ার আর পশুপাখির আত্মা।
চৈতি অবাক হয়ে দাদীর মুখের দিকে চেয়ে থাকে, সে সময় মনে হয়েছিলো দাদী বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা বলছে। কিন্তু এই লোকটির কথা শুনতে শুনতে ওর দাদীর কথা সত্যি মনে হতে থাকে।
লোকটা নাঁকা। নাকে বাজিয়ে বাজিয়ে কথা বলে,
এত খাচ্ছে এত খাচ্ছে তবু খাওয়া ফুরায় না, চৈতির মনে হচ্ছে ও একটা হাঁসের সামনে বসে আছে, রাজহাঁস না, পেঁচী হাঁস।
চৈতি বিল পরিশোধ করে উঠে দাঁড়ায়, বেতন ১৪ হাজার টাকায় নিশ্চয় বিল দেয়ার মত বাড়তি টাকা নেই এই পেঁচী হাঁস লোকটার, পেঁচী হাঁস বিল দেয়ার ব্যাপারটা দেখলই না যেন।
- কিছু মনে করবেন না আমাকে যেতে হবে, শরিলটা একদম ভাললাগছে না।
-সেঁ কিঁ চৈঁতি, কি হঁয়েছে? চঁল আঁমি তোঁমায় এঁগিয়ে দেঁই, প্যাঁক! প্যাঁক!! বিঁয়ের পঁর আঁমরা কিঁন্তু হাঁনিমুনে যাঁব কেঁমন! প্যাঁক! প্যাঁক!! প্যাঁক!!। কঁই যাব! দেঁশের ভেঁতর নাঁ, দেঁশের বাঁইরে, সুঁইডেন যাঁব শ্বঁশুরমশাই আঁর বঁড়ভাঁইয়ের টাঁকাপয়সা ভাঁলোই আঁছে কিঁ বঁল! প্যাঁক! প্যাঁক!!প্যাঁক!!
আঁমি!বঁললে! অঁবশ্যই ব্যঁবস্থা কঁরবেন! প্যাঁক!! প্যাঁক!! প্যাঁক!!
প্যাঁক!! প্যাঁক!!!
প্যাঁক!!!প্যাঁক!প্যাঁক!!
ব্যস তারপর থেকে এই একটি শব্দই একটানা লোকটির মুখ থেকে উচ্চারিত হতে থাকল অনবরত। যতক্ষন পর্যন্ত না চৈতি লোকটির দৃষ্টির আড়ালে চলে এলো।
৩০ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১:১৬
সামিয়া বলেছেন: হাহা হুম ভালো আছি, আপনার হাঁস কবিতা পড়ে দেখব অবশ্যই।
২| ৩০ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:১৮
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: প্যাঁক!! প্যাঁক!!!
প্যাঁক!!!প্যাঁক!প্যাঁক!!
হা হা হা
ভালো লিখেছেন।
৩০ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১:১৭
সামিয়া বলেছেন: হা হা হা থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ
৩| ৩০ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:৫০
অতৃপ্তচোখ বলেছেন: দেখতে গেলেন পাত্র, দেখে এলেন হাঁস তা'ও আবার পেচি জাত। হাঃহাঃহাঃ যারা পরের টাকায় পোদ্দারি দেখাতে চায় তাদের হাঁস হওয়ারও যোগ্যতা নেই। তারা ঝড়া ফুল, যে ফুলে ঘর সাজাতে চাইলেও সাজনো যায় না, শুকিয়ে ঘর নোংরা করে তুলে।
ভালো বুঝিয়েছেন। ধন্যবাদ
৩০ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১:১৯
সামিয়া বলেছেন: ঠিক কথা, এদের হাঁস হওয়ারও যোগ্যতা নেই। thanks brother
৪| ৩০ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৫
সিগনেচার নসিব বলেছেন: চৈতি কিন্তু ঠিক ছেলেটিকে চিনতে পেরেছিল।
এবং সে আবিস্কার ও করেছিল সামনে দিনে কি ঘটতে চলেছে।
দারুন প্রকাশ । ধন্যবাদ !!!
৩০ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৮
সামিয়া বলেছেন: Thank you so much.. I am inspired to read your comment.
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:১৫
বিজন রয় বলেছেন: হা হা হা .......... হাঁস।
শিরোণাম দেখে এলাম। হাঁস নিয়ে আমার একটি কবিতা পোস্ট দেওয়া আছে।
ভাল আছেন তো!!!