নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কাজী সায়েমুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে কিউং হি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ট্রেড পলিসি বিষয়ে মাস্টার্স। জন্ম ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম শহরের দামপাড়ায়। তার পূর্বপুরুষ ছিলেন দক্ষিণাঞ্চলের বাউফলের ঐতিহ্যবাহী জমিদার কাজী পরিবার। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখিতে হাতে খড়ি। তবে ১৯৯৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত হন। তিনি যুগান্তর স্বজন সমাবেশের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহবায়ক। ২০০৪ সালে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। পরে ইংরেজী দৈনিক নিউ এজ এ সিনিয়র প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে ২৮ তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের একজন সদস্য হিসেবে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রেক্টর (সচিব) এর একান্ত সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনডিপিতে লিয়েনে চাকরি করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামে ন্যাশনাল কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। শিল্প সচিবের একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷বর্তমানে সরকারের উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলা ছাড়াও ইংরেজী, আরবী, উর্দ্দু ও হিন্দী ভাষা জানেন। ছোটবেলা থেকেই কমার্শিয়াল আর্টিস্ট হিসেবে পরিচিত ছিলেন। যেকোনো প্রয়োজনে ইমেইল করতে পারেন। [email protected]
আমি তখন গলাচিপা উপজেলায় এসিল্যান্ড। আমার এডিসি রেভিনিউ জনাব দেলোয়ার হোসেন মাতুব্বর স্যার আসলেন অফিস পরিদর্শনে। পরিশর্দন শেষে তিনি বললেন, আশপাশে কোন আবাসন থাকলে দেখে যাবো। আমি তখন নূতন যোগদান করেছি মাত্র। কানুনগো বললেন, খেয়াঘাটের পাশেই একটা আবাসন আছে। সেটা পরিদর্শন করা যায়। স্যার গিয়ে দেখলেন, বরাদ্দ গ্রহীতা বহু আগেই তার নামের ঘর বিক্রি করেছেন। প্রথমবার কিনেছেন গোয়ালখালীর একজন ইউপি মেম্বার। তার নামটা মনে নাই। তিনি আবার বিক্রি করে দেন। সর্বশেষ কিনেছেন হোটেল মালিক নজরুল। নজরুল আবার সেই ঘরের সামনে আরেকটা ঘর তুলে মাছের আড়ত তৈরি করেছেন। এডিসি স্যার আমাকে একদিনের মধ্যে আবাসনের মধ্যে মাছের আড়ত ভেঙ্গে দিয়ে রিপোর্ট দিতে বললেন।
আমি পরদিন নিজের টাকা খরচ করে লোকজন নিয়ে ঘরটা ভেঙ্গে দিলাম। পরবর্তীতে কী হয়েছিলো কাহিনীগুলো শুনুন।
১। সাংবাদিক: কয়েকদিন পর পটুয়াখালীর যুগান্তরের প্রতিবেদক নিউজ করলেন, গলাচিপায় আবাসনের ঘর ভাঙ্গলেন এসিল্যান্ড। রিপোর্টে আমার বক্তব্যও দেয়া আছে। আকাশ থেকে পড়লাম। আমার সাথে কথা বললো কখন? সম্ভবত স্বপ্নে। আমি ফোন দিয়ে জানতে চাইলাম, আপনি কীভাবে লিখলেন, আবাসনের ঘর ভাঙ্গছি। সরকারি ঘর আমি ভাঙ্গতে যাবো কেন? তিনি বললেন, আসলে গরীব মানুষ এসে হাতে পায়ে ধরেছে, সেজন্য নিউজটা করেছি। আমি বললাম, সে তো গলাচিপা ছেড়েছে দশ বছরের বেশি সময় আগে। সেটা না হয় মানা গেল, আমার সাথে কথা বললেন কখন! আর কোন জবাব পাইনি। এরপর বহু সাংবাদিক এসেছিলেন, ওই উপলক্ষে। কথাবার্তা বলার শেষে বেশিরভাগ খাস জমি চাইলেন।
২। অ্যাডভোকেট: তিনি পটুয়াখালীর। তিনি খবর পাঠালেন, আপনার নামে মামলা হবে। আমার অফিসে যে লোকটা এ বিষয়ে কথা বলতে ঢুকেছিল, ধরতে গেছিলাম, জোরেসোরে দৌড় দিয়ে পালালেন। তবে বিজ্ঞ অ্যাডভোকেটের কাছে আমার জানার ইচ্ছা, অনুমোদন ছাড়া সরকারি কর্মচারির বিরুদ্ধে বাই নেমে মামলা কীভেবে করলেন৷ মজার বিষয় হলো- উচ্ছেদের পর তার একটা উকিল নোটিশ পেয়েছিলাম সেখানে তার মক্কেল ঘরের মালিকানা কীভাবে পেয়েছেন সেটা উল্লেখ করেছেন৷ তিনিই আবার মামলা করেছেন মুল বরাদ্দ গ্রহীতার নামে৷ সেখানে হস্তান্তরের বিষয়টা বেমালুম চেপে গেছেন৷ তবে তিনি সফল৷ ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করে তা দুদকে পাঠাতে সক্ষম হয়েছিলেন৷
৩। বিজ্ঞ বিচারক: আমার নামে মামলা নিলেন, সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা নিলেন, ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনমুতি ছাড়াই। মামলা হয়েছে, দুর্নীতি দমন আইনে। অভিযোগে বলা হয়, সরকারি জমিতে ঘর তুলেছি বলে এসিল্যান্ড তার অফিসের কয়েকজনের মারফত পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেছেন। সেটা না দেয়ায় তিনি ঘর ভেঙ্গে দিয়ে দুর্নীতি করেছেন। ঘুষ নেয় নি। চেয়েছে মাত্র। এমন একটি সিলি অভিযোগ। বিজ্ঞ বিচারক, দুর্নীতি দমন কমিশনের পুটয়াখালীর অফিসকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়ে দিয়ে দিলেন। কোন ব্যক্তিও এদেশে দুর্নীতির মামলা করতে পারে। হাহাহা। আর বিচারক সেটা তদন্তে দেন৷ কোন ব্যক্তি দুর্নীতির মামলা কী করতে পারেন? করতে পারলে কোন আইনে- জানার খুব ইচ্ছা ছিল।
৪। রাজনীতিবিদ: কয়েকজন অফিসে আসলেন। বললেন, নজরুলের একজন আত্মীয় দুর্নীতি দমন কমিশনে চাকরি করেন। আপনার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সে যেভাবেই হোক আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়াবে। এর আগেও উপজেলা পরিষদের ভেতরে সে একটা ঘর তুলেছিলো। সেটা আরেকজন ইউএনও ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। এজন্য তার নামে মামলা করেছিল নজরুল। পরে তাকে আবাসনের পাশে খাসজমি দেয়ার পর সে মামলা তুলে নিয়েছিল। আপনিও তাকে ওই জমিটা ভোগ দখল করতে দেন। সে মামলা তুলে নেবে।
৫। দুর্নীতি দমন কমিশন: আমার সাবেক কলিগ নিউ এইজের সাংবাদিক আহমদ ফয়েজ একদিন ফোন করে জানালেন, আপনার নামে যে অভিযোগ করা হয়েছিল, সেটা দুদকের একটা সভায় খারিজ করে নথিজাত করা হয়েছে। আমার কাছে ওই সভার রেজুলেশন আছে। লাগলে বলবেন কপি দেবা। আমি ভাবলাম যাক বাঁচা গেল। কিছুদিন পরে শুনি খারিজ করা অভিযোগের তদন্ত করতে চিঠি এসেছে পটুয়াখালীতে। বাতিল বিষয়ের তদন্ত কীভাবে হয় আল্লাহ মালুম। আর মালুম দুদকে চাকরি করা নজরুলের সেই আত্মীয়।
৬। মসজিদের ইমাম: আমার বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত করবে। সেজন্য সাংবাদিকরা আবার তৎপর। একজন এবার ক্যামেরা নিয়ে গেলেন আবাসনে। আবাসনে একটা মসজিদ আছে। সেই মসজিদের ইমামকে আবাসনের লোকজনের পছন্দ নয়। তাকে রাখতে চায়না। আমি সদর তহশিলদারকে মসজিদের সভাপতি বানিয়ে বলে দিলাম, গুরুতর অভিযোগ না থাকলে গরীব ইমামকে যেন বের করে না দেয়া হয়। সেই ইমাম ক্যামেরা দেখে সাক্ষ্য দিলেন, এসি ল্যান্ড ঘুষ খেয়েছে।
৭। আবাসনের সভাপতি: আবাসনের সভাপতি আবুল কালামের নামে চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। প্রতিদিন আমার অফিসের সামনে এসে বসে থাকেন। আমাকে বলেন আপনি তো ডাকবাংলোতে থাকেন। আপনার পাশেই ম্যাজিস্ট্রেট থাকে। দয়া করে তাকে একটু বলে দেন। আমরা আবাসনে যারা থাকি আপনি তাদের ঘর দিয়েছেন। আমরা আপনার খাস লোক। পাশের একজন আবাসনের জমি দখল করতে আসছে, আমি তাকে বাঁধা দিয়েছি। এজন্য সে মামলা করেছে। আমি বললাম, দেখবো। পরে ম্যাজিস্ট্রেটকে আসল ঘটনা বলি। তিনি মেয়রকে বিষয়টি তদন্ত করার দায়িত্ব দেন। মেয়রকে বলে দেই, আবাসনের এরা সরকারের আশ্রিত লোক। এদের দেখবেন। উনি সেভাবে রিপোর্ট দিয়েছেন। মামলা খারিজ। একদিন আবাসনের সভাপতি বলেন, নজরুল এক হাজার টাকা দিয়েছে। বলছে, আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে। আমি বলি আপনার যা খুশী করেন। তিনি বলেন, জীবন গেলেও আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবোনা। পরে পটুয়াখালীর দুদক কার্যালয়ে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ঘটনা সত্য। এসি ল্যান্ড ঘুষ চেয়েছে।
৮। দুদক পটুয়াখালী জেলা কর্মকর্তা: আমি যতদিন ছিলাম, ততদিন দুদক পুটয়াখালীর কর্মকতা তদন্তের জন্য আমাকে ডাকেন নি। ঘটনাস্থলেও যাননি। ফাইল চাপা দিয়ে রেখেছেন। আমি বদলি হয়ে আসতেই তার ফাইল সচল হয়। ডাক পড়ে, আমার কানুনগোর। তিনি গিয়ে বলে আসেন, আপনি যার বিরুদ্ধে তদন্ত করেছেন, তিনি ঘুষ তো চাইবেন দূরের কথা, তার সময়ে অফিসের কেউ ঘুষ নিতে পারেনি। চ্যালেঞ্জ দিলাম। কর্মকর্তা তাকে বলেন, তার বিরুদ্ধে তো আবাসনের সভাপতিও বলে গেলেন। কানুনগো তাকে বলেন, আগে ঘটনাস্থলে যান। তারপর দেখে আসেন। উনি গলাচিপা এসে দেখলেন, আসলে ব্যাপারটা ভিন্ন। যাওয়ার আগে সবার সামনে বলে গেলেন, এরকম এসি ল্যান্ডের বিরুদ্ধে মামলা হবে এটা মানা যায়না। তিনি কানুনগোকে অফিসে ডাকলেন। কানুনগো অফিসে গেলেন। দুদকের কর্মকর্তা বললেন, মানলাম মিথ্যা মামলা। আমি মিথ্যা রিপোর্টই দেবো। তবে অফিসের খরচ চালাতে হয়। এসি ল্যান্ড না হয় না খেয়েছেন আপনারা তো গলাচিপায় ভালো টাকা কামাচ্ছেন। পরের তারিখে কানুনগো ওমর আলী দশ হাজার টাকা নিয়ে গেলেন। দুদকের কর্মকর্তা বলেন, সামনে ঈদ। এ কয়টা সামান্য টাকা দিয়ে কী হবে। তাছাড়া সার্ভেয়ারের নামও অভিযোগে আছে। উনি টাকা নিয়ে ফেরত আসলেন। আমি তখন ফরিদপুর ডিসি অফিসে। কানুনগোকে বললাম, প্লিজ একটু রেকর্ড করে আমাকে দেন। তিনি বললেন, স্যার, ঝামেলা যেভাবেই হোক মেটাতে হবে। এটা রেখে লাভ নেই।
পরে তিনি আবার গিয়ে বিশ হাজার টাকা দিয়ে দফারফা করেছেন। আমি আর খবর নেই নাই। মামলার কী হয়েছে জানিনা। হাসি পায়, আবার কষ্টও লাগে।
পুনশ্চ: আমি মনে করতাম আমার বিপদ হলে সাদা কাপড়েও রঙ উঠে। আমি অনেক পজেটিভ মানুষ। কোন কিছু কেয়ার করিনা। তারপরেও কথা থেকে যায়। এমন একটা মিথ্যা বিষয়ে এতগুলো শ্রেণি পেশার মানুষ কীভাবে এক হলো! ভাবতেও পারিনা। কতটা নিচে, কতটা অধপতনে গেলে একটা সমাজের এমন হতে পারে! এ নিয়ে আসলে গবেষণা দরকার। এটা বাংলাদেশেই সম্ভব। পৃথিবীর তাবৎ বিস্ময় এখানে। তবে আশার কথা হলো- কিছুদিন পরে পত্রিকায় সংবাদে নজর আটকে যায়। খবরের শিরোণাম ছিল- পটুয়াখালীর দুদকের কর্মকর্তা বরখাস্ত।
দক্ষিণ কোরিয়া
৪/১০/২০১৯
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৫
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: মানুষগুলো চরিত্র হারিয়ে ফেলছে। আমাদের সামাজিক মুলধনের বড় অভাব।
২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৪
নীল আকাশ বলেছেন: আমি বহু আগেই এই দেশে অবাক হওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। এই জীবনে যত কিছু দেখেছি লিখতে গেলে মহাকাব্য হয়ে যাবে।
লেখাটা পড়ে খারাপ লাগলো। এই দেশে ভালো মানুষরাই সব সময় বিপদে পড়ে।
ধন্যবাদ।
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৬
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: সহজে কোন ভালো কাজ করা যায়না। মানুষের নীতি নৈতিকতা কমে গেছে।
৩| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:০০
প্যারাসিটামল খবিশ বলেছেন: এই দুস্টলোক গুলো নিয়োগ পায় কিভাবে?
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৭
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: সবখানেই পচন লেগেছে আর কী!
৪| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৪৬
রাজীব নুর বলেছেন: দক্ষিন কোরিয়া গিয়ে ভালোই করেছেন।
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৮
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: ফিরতে তো হবে। এখানে তো পড়তে এসেছি। তবে সাংবাদিকতা ছেড়ে সরকারি চাকরিতে একটা কিছু করবো বলে ভাবছিলাম। সবচেয়ে বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ ফেস করতে হলো আর কী।
৫| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:০৬
মাহের ইসলাম বলেছেন: শুনে মন খারাপ করা ছাড়া কিছু করতে পারছি বলেই আরো মনে খারাপ হচ্ছে।
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ মিথ্যে আর অন্যায়ের শিকার হচ্ছে। আমার দৃষ্টিতে ব্যক্তির মানবিক গুণাবলীর অভাবই এর কারণ।
বছর পাঁচেক আগে, পল্টনের এক আইনজীবির চেম্বারে গিয়েছিলাম। তিনি কথা প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে, সমাজের তথাকথিত অনেক প্রভাবশালী লোকের চোখের দিকে তাকিয়ে মনে হয়েছে, এদের চোখে মৃত্যুভয় নেই।
কথাটা আমার খুব মনে ধরেছে। আসলেই আমাদের কারো কারো মৃত্যুভয় নেই। নাহলে, যা করছি - কিভাবে করতে পারছি ?
শুভ কামনা রইল।
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২০
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: কয়েক বছরের ভূমি অফিসের কাজ করে এত বাজে অভিজ্ঞতা হলো। মাঝে মা হতাশ লাগে। সৎ মানুষের খুব অভাব ভূমি অফসিগুলোতে। যারা আছে তারাও কাজ করতে পারেনা। কী একটা অবস্থা!
৬| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৪
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দু:খ জনক বাস্তবতা!!
ভিত্তি যখন দুবৃত্তায়নে তখন উপরে ডালপালা ছেটে তা ক্ষনিক কমানো যায়, দূর করা যায় না।
জীবন বোধ যখন ভোগবাদী তখন মানুষের অন্তরে আল্লাহ ভীতি থাকেনা । স্বেচ্ছাচারী স্বৈরাচারী হয়ে পড়ে!
দুবৃত্তায়নের অবসান হোক।
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৪
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: দেশের তৃণমূল পর্যায়ে পুরো ভূমি ব্যবস্থাপনা দুবৃত্তদের হাতে পড়েছে। কিসের মুসলমান আর কিসের আল্লাহ ভীতি। নামাজে যাওয়ার আগে বলে, তারাতারি যা দেওয়ার দেন। নামাজে যাবো। এটা তো গেলা ভিতরের অংশ। বাইরের অংশ আরো জটিল। তারা যেভাবেই হোক টাকা দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে চায়।
৭| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৬
পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: অাপনার পোস্টিং যে বান্দরবানে পড়েনি এই ঢের!
ঘটনাটা কতসালের আর এ বিষয়ে(মামলা) আপনার এডিসি স্যারের মন্তব্য কী ছিল?
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৬
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: না। সিনিয়রদের সহযোগিতা পেয়েছি। তবে এত কিছু যে হয়েছে তারা জানেন না।
২০১৪ সালের দিকে হবে।
৮| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৮
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আমি এখন আর অবাক হই না। এসব দেখে দেখে আমার অবাক হবার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেছে।
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৭
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: দেশে ভালো মানুষের সংখ্যাটা বেশি। তবে সিস্টেমের কারণে তারা অসহায়। অথবা মানুষ স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়।
৯| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১১
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এ দেশ নিয়ে দিন দিন আশা কমে যাচ্ছে। বেশীর ভাগ লোকই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে অসৎ/লোভী হয়ে গিয়েছেন...
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৭
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: কিছু প্রভাবশালী মানুষ অসৎ। বাকীরা তাদের প্রভাব বলয়ে ঘুরপাক খায়।
১০| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২১
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: এসি ল্যান্ড হয়ে দেশের মানুষের নীতি নৈতিকতার যে অবস্থা দেখলাম,এমন কোন বাড়ি নেই যেখানে জমি ঠেলে না৷ দখল করেনা৷ মন কষাকষি নেই৷ এটা দেশ নাকি নরক! বুঝতে কষ্ট হয়৷ এত সুন্দর একটা দেশরে নরক বানিয়ে মানুষ তাতে বাস করে৷ গোবরে পোকারে যত পরিস্কার জায়গায় রাখা হোক তা অপরিস্কার করে সেখানে বাস করবে৷
১১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:০১
আহমেদ জী এস বলেছেন: সায়েমুজজ্জামান ,
"বুঝতে কষ্ট হয়৷ এত সুন্দর একটা দেশরে নরক বানিয়ে মানুষ তাতে বাস করে৷"
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি......
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩০
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: দেশের তো দোষ নেই। অনেক দেশের তুলনায় মানুষকেও আমার খারাপ মনে হয়নি। তবে অপরাধ করে পার পাওয়া যায়- এ রকম একটা ধারণা সবার মনে গেঁথে গেছে। ধরা যে পড়েনা, দুই একটার যে বিচার হয়না; তাও না। এক্সেমপোলারি কিছু হয়না। কেউ কেউ ছাড়া পায়। এটাই এই দেশের বড় বৈশিষ্ট্য হয়ে দাড়িয়েছে।
১২| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৩:০২
সুপারডুপার বলেছেন: পলাশীর যুদ্ধের পর, যারা ক্লাইভের সহযোগী ছিলেন, তাদের জন্যে ক্লাইভ পার্টি দিতে চাইলেন কোলকাতায়। এদিকে কোলকাতায় কোন বড় গীর্জা ছিল না সেকালে। নবকৃষ্ণ ক্লাইভের সেই সংকট জানতে পেরে, উনাকে জানালেন, দূর্গাপূজার মাধ্যমে ক্লাইভ একদিন না চারদিনের পার্টি দিতে পারবেন। ক্লাইভ, বললেন, বাবু আমরা খ্রিস্টান, তোমাদের জাত যাইবে! বাবু নবকৃষ্ণ বলেছিলেন, টাকা দিয়ে বাঙালীকে ম্যানেজ করা এমন কি কঠিন ব্যাপার! বাঙালীর সব প্যানপ্যানানি ধাপানিসা টাকা দিয়ে ম্যানেজ করা যায়। এ জাতি মেরুদন্ডহীন!
কেন এটা বাংলাদেশেই সম্ভব, এটাই হয়তো রুট।
কারণ বুঝতে পারার পরে থেকেই বাংলাদেশে আপনার মত ভুক্তভোগী অনেকের কাছে থেকে এই ধরণের চিত্র-র কথা প্রায় কানে আসে।
রাজীব নুর সাহেব বলেছেন: দক্ষিন কোরিয়া গিয়ে ভালোই করেছেন।
ভালো থাকবেন।
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৭
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: জাপানে কী মৃত্যুদন্ড দিতে হয়? দিতে হয়না। আবার সৌদী আরবে একজন মানুষের শিরোচ্ছেদ করা হয়, প্রতি বছর করতে হয়। কারণ কী। কারণ একটাই। জাপানে ছোট একটা অপরাধ যেই করুক তার ছাড় নেই। আর সৌদীতে উল্টা। রাজবংশের লোকজন যা খুশী করতে পারে। রাজনৈতিক কারণেও শিরোচ্ছেদ করা হয়। এ কারণে শিরোচ্ছেদ করেও কোন কাজ হয়না। বছর বছর তা বাড়তে থাকে।
দেশে সবার জন্য আইনের প্রয়োগ সমান করা হোক। যদি কারো মনে বিশ্বাস জন্মে অপরাধ করে পার পাওয়া যাবেনা, কেউ অপরাধ করবেনা।
সাংবাদিকতা ছেড়ে সরকারি চাকরিতে এসেছিলাম। সৎসাহস ছিল। তবে এত বিপদের সম্মুখীন হয়েছি- যা চিন্তাও করা যায়না। হম কোরিয়া সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে এসেছি। আবার ফিরে গিয়ে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে।
আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে।
আপনিও ভালো থাকবেন।
১৩| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১০:১৪
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
হায়রে বাংলাদেশ নির্দোষের উপরে দোষ চাপাতে এবাই তৎপর ও একজোট। তাইতো স্বাধীনতার এত বছর পরও উন্নতী নেই দেশের।
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৯
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: দেশের মানুষ বিরাট হুজুগে। বাতাস যেদিকে যায়, সেদিকে তাদের গন্তব্য।
আমাদের দেশের সমান অর্থনীতির কোরিয়া এখন কোথায়! আমরা দুই বেলা ভাত খেতে পেরেই আত্মতুষ্ট। অথচ আমাদের দেশের সম্ভাবনা ছিল অনেক বেশি।
১৪| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: এই দেশ পুরোপুরি নষ্টদের দখলে চলে গেছে।
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৪০
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: তবে নষ্ট লোকের সংখ্যা বেশি নয়- বলেই মনে হয়েছে। তবে তারা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে। এটাই বড় সমস্যা।
১৫| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৮:২৮
পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: সিনিয়রেরা আপনার পক্ষে থাকলে সমস্যা তেমন হবে না।
পোস্ট ভালো লেগেছে। কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে এমন আরো পোস্ট আশা করছি।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:১৩
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ। তবে কোর্টে মামলা হলে কারো কিছু করার থাকেনা।
১৬| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:৩৯
রায়হান চৌঃ বলেছেন: মনুষ গুলো চরিত্র হারায়নি বরং বলতে হয় মানুষ গুলোকে জন্ম দেয়ার সময় চরিত্র দেয়া হয় নি
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৮
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: নাহ রে ভাই। পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে মানুষ এমন হয়ে গেছে। অপরাধ করে প্রশ্রয় পায়। এভাবে পারে পেতে পেতে এরাই এক সময় বড় অপরাধি হয়। এখানে ছোটখাটো অপরাধের সামাজিক স্বীকৃতি আছে বলে মনে হয়।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:৪২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: এই তো আমাদের দেশের চিত্র।