নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"জেরুজালেম সিনড্রোম" হচ্ছে এমন এক মানষিক অবস্থা যখন ভিকটিম জেরুজালেম যাওয়ার ফলে তার মাঝে এক অদ্ভুত পরিবর্তন দেখা দেয় যেমন, সে নিজেকে বাইবেলের কোন এক চরিত্র মনে করে, কখনো সে নিজেকে যিশু মনে করে, কখনো আবার মনে করে সে নতুন এক নবী, তার অনুভূতি হয় যে স্রস্টা তার সাথে কথা বলছেন, হঠাৎ করে সে অতিধার্মিক হয়ে পরে,অনেক বিদেশি টুরিস্ট জেরুজালেম সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার পরে নিজের দেশে আর ফেরত না গিয়ে বাকি জীবন সেখানেই কাটিয়ে দেয়।
প্রতি বছর ইসরায়েলে প্রায় ৫০জন জেরুজালেম সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়, এমন অনেক উদাহরণ আছে যে ভিক্টিম সারা জীবন সাধারণ জীবন যাপন করেছে, ধর্মে কর্মে কোন আগ্রহী ছিলোনা কিন্তু জেরুজালেম বেড়াতে যাওয়ার পরে তার মাঝে অদ্ভুত এক পরিবর্তন ঘটে।
আমাদের দেশের পীর/সাধু/দরবেশ /যোগী বেশীরভাগই এই জেরুজালেম সিনড্রোম রোগের শিকার। এখন হয়তো বলবেন আমাদের দেশের এরা তো জেরুজালেম যায়না, তাহলে তারা কিভাবে এই রোগের শিকার?
তাহলে শুনুন, শুধু স্টকহোমেই যে স্টকহোম সিনড্রোম রোগ হয় তা কিন্তু না, এই রোগের উৎপত্তি বা আবিষ্কার হয়েছিলো স্টকহোমে তাই তার নাম স্টকহোম সিনড্রোম, একইভাবে শুধুমাত্র জেরুজালেমে গেলেই যে এই রোগ হয় এমন না, জেরুজালেম এখানে স্পিরিচুয়াল ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে, আমাদের দেশে সেটা হতে পারে কোন পীরের আসর, মাজার,বা লালনের আখড়া৷
কেট উইন্সলেট অভিনীত "হোলি স্মোক" সিনেমাটি দেখবেন যে সিনেমার নায়িকা ইন্ডিয়া এসে হিন্দু ধর্মীয় এক গুরুর সান্যিধ্য লাভের পরে সে নিজ দেশ ও পরিবার বিসর্জন দেয় এবং একসময় পরিবারকে অস্বীকার করে, তার পরিবার পরে তাকে এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞের হাতে হস্তান্তর করে। বলছিনা যে সিনেমার নায়িকার জেরুজালেম সিনড্রোম হয়েছিল, কিন্তু এই সিনেমা দেখলে এ সম্পর্কে কিছু আইডিয়া পাবেন।
জেরুজালেম সিনড্রোম ইউনিক কোন রোগ না, এটা একটা সাইকো জিওগ্রাফিকাল ডিসওর্ডার যা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রূপে দেখা যায়, যেমন ইতালিতে ফ্লোরেন্স সিনড্রম (ঐতিহাসিক চিত্রকলা দেখে নিজেকে এর অংশ মনে করা এবং হিস্টরিকাল কারেক্টারদের নিয়ে হ্যালুসিনেশন হওয়া) বা আমেরিকায় ওয়াইট হাউজ সিনড্রোম (নিজেকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ভাবা) ইত্যাদি৷ এটা যে শুধু ধর্মীয় ক্ষেত্রেই হবে এমন না, রাজনীতি, সংস্কৃতি নানা ক্ষেত্রে অপরিমিত আকর্ষণের ফলে এই রোগ হতে পারে।
আমাদের দেশে অনেক সাধু/পীর/যোগী/দরবেশ আছে যারা স্রস্টার সাথে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রাখে বলে দাবি করে,লালনের আখড়ায় দেখবে গাঞ্জায় টান দিয়ে বলে ওরা গুরুকে দেখতে পায়৷ মাজারে দেখবেন একই অবস্থা, গাঞ্জায় টান দিয়ে চোখে লাল নীল আলোর ঝলকানি দেখে আর বলে যে আমি আল্লাহকে দেখে ফেলেছি, মুরশিদ আমার কাছে ধরা দিছেন।
আমাদের দেশে এই ডিসওর্ডার নিয়ে তেমন গবেষণা না হওয়ায় আমরা এগুলো সম্পর্কে তেমন জানিনা। গবেষণা হলে দেখা যেতো যে আমরা এই রোগগুলির নাম দিতাম "মাজার সিনড্রোম" "গুরু সিনড্রোম" "দরবেশ সিনড্রোম" ইত্যাদি, অনেক এমন ব্যাক্তি আছেন যাদেরকে আমরা পীর বলে জেনে এসেছি(তাদের মধ্যে কেউ কেউ নামাজ পড়েনা রুজা রাখেনা কিন্তু দাবি করে আল্লাহর সাথে কথা বলে), তাদের মৃত্যুর পরে তাদের কবরকে মাজার বলে মেনে আসছি, তারা আসলে হয়তো এই মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এবং এখন তাদের মাজারে প্রতিনিয়ত আরো হাজারো রোগী তৈরী হচ্ছে।
তো ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষ যখন এই ধরনের রোগী পায় তখন তাদেরকে চিকিৎসা দেয়। বেশীরভাগই ঔষধ ছাড়া শুধুমাত্র কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সুস্থ হয়ে যায়, অনেককে তার পরিবারের কাছে পাঠালেও সুস্থ হয়ে যায়, কারো ক্ষেত্রে মেডিসিনের দরকার হয়৷
আমদের দেশের এইসকল পীর/যোগীদেরও এভাবে চিকিৎসা দেওয়া উচিত। তাদের কতজন আসল পীর আর কতজন ভন্ড তা একটু গবেষণা করলেই বেড়িয়ে আসবে।
২৩ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:২৪
প্রফেসর সাহেব বলেছেন: হ্যা,এই নিয়ে বেশি গবেষণা না হওয়ায় আমরা এসম্পর্কে তেমন জানিনা ।
২| ২৩ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:১৮
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভন্ডদের বাঁশ দেওয়া দরকার
২৩ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:২৫
প্রফেসর সাহেব বলেছেন: হ্যা৷
৩| ২৩ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:২৮
ইকবাল সরদার বলেছেন: অনেক পাগল কে ডাক্তার জিজ্ঞেস করেন '' আপনার ভিতর থেকে কেউ কি আপনার সাথে কথা বলে?"
৪| ২৩ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৪১
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: জানলাম । দারুণ লাগলো বিষয়টি!
২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৬:৪২
প্রফেসর সাহেব বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
৫| ২৩ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৫৬
নতুন বলেছেন: অনেকেই গায়েবী আওয়াজ শোনে, স্বপ্নে দেখে,
কয়েকদিন আগেই ব্লগে একজন লিখেছেন খিজির আ: তাকে স্বপ্নে কি জানে বলেছেন।
২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৬:৪৩
প্রফেসর সাহেব বলেছেন: এদের প্রায় সবাই ই মানষিক ভাবে সুস্থ নয়।
৬| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৫০
মা.হাসান বলেছেন: মাইরের উপর ওষুধ নাই।
ভন্ডদের মাইরের অষুধ দরকার।
যারা সত্যিই মানসিক অসুস্থ তাদের কাউন্সিলিং দরকার, অনেক সময় দীর্ঘস্থায়ী চিকিৎসা দরকার হয়।
২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৬:৪৫
প্রফেসর সাহেব বলেছেন: আমাদের দেশে এ নিয়ে তেমন গবেষণা না হওয়ায় এদেরকে আমরা জেনারালাইজ করে পাগল বলে ছেড়ে দিয়েছি, এদের চিকিৎসা হওয়া উচিত।
৭| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৭:১৩
সুপারডুপার বলেছেন: আমি জেরুজালেম গিয়েছি কিন্তু জেরুজালেম সিনড্রোম ধরলো না যে ! আমাকে একজন চ্যালেঞ্জ দিয়েছে যে মক্কা - মদিনা গেলে নিশ্চিত মক্কা -মদিনা সিনড্রোম ধরবে। দেখি একবার মক্কা -মদিনা যাইমু, মক্কা-মদিনা সিনড্রোম দেইখ্যা আইমু !
২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৫৯
প্রফেসর সাহেব বলেছেন: বলা হয়েছে যে প্রতি বছর ৫০ জন আক্রান্ত হয়৷কিন্তু জেরুজালেম লক্ষ লক্ষ মানুষ যায়, সবাই যে আক্রান্ত হবে এমন তো না৷
৮| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৫:৫৫
Anirudhy২৭Kabya বলেছেন: ভন্ডামীগুলো প্রায়শই সীমা ছাড়িয়ে যায়,ব্যাবস্থা নেয়া দরকার।ধারণা ছিলো তবে পরিভাষাটা জানলাম নতুন করে।
ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: তাহলে আমার মধ্যে জেরুজালেম সিনড্রোম ব্যাপক ভাবেই আছে।