নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ শৃঙ্খলার সঙ্গে নিয়মিত শৃঙ্খলিত রুটিনকে অমান্য করেছি। ঘুম থেকে উঠেছি যথাসময়ে। ভোরের প্রার্থনা যথানিয়মে হয়েছে। দিনের প্রাত্যহিক সূচির প্রথম কাজটিও শেষ করেছি যথাযথভাবে। এরপর থেকে শুরু হয়েছে অনিয়ম।
এর আগে চলুন একটা নাটক দেখে আসি।
"যুবক-২ঃ মুনীর চৌধুরীকে যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার হল না কেন?
যুবক-৩ঃ জহির রায়হানকে হত্যার তদন্ত হলো না কেন?
যুবক-৪ঃ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা ঘুরে বেড়ায় কেন?
যুবক-১ঃ উত্তর কোথায়? "
নাটকের সংলাপগুলো একগেঁয়ে লাগছে? চলুন একটু সামনে এগিয়ে যাই।
"মাঃ ...কারা আমার ছেলেদের ধরে ধরে ফাঁসিতে ঝুলোচ্ছেরে দাসু?
দাসুঃ... ওদের পরিচয় জানার দরকার নেই, তুমি তাদের সঙ্গে পারবে না।...
মাঃ তাহলে আমার ছেলেরা যুদ্ধ করল কেন? তা হলে আমার স্বামী জীবন দিল কেন? তাহলে আমি ইজ্জত লুটিয়ে ঘরে ফিরলাম কেন?... "
(সাতঘাটের কানাকড়ি,১৯৯১; মমতাজউদদীন আহমদ)
দূর! এরকম কাহিনী আর কত শুনবো!
খারাপ লাগছে? না। আমি উপভোগ করেছি নাটকটি।
সাতটার পর আর রুমে থাকা হয় না আমার। আজ সে নিয়মটা আর মানা হয়নি। শৃঙ্খলার ব্যত্যয় ঘটেছে। যেহেতু রুমেই আছি, পুরোনো পত্রিকাগুলো সামনে নিয়ে শব্দ-ব্যবচ্ছেদ করছি। কয়েকটি কলামের শব্দসম্ভার ব্যাপক রোমাঞ্চ জাগিয়েছে মনে। কয়েকটি ফটোগ্রাফ শিহরিত করেছে। ব্যাপারখানা তখনো স্পষ্ট বুঝতে পারিনি যে, কেন আমার রুটিনটির শৃঙ্খলা আজ আগের মতো থাকেনি।
পাশের বেডে কেউ একজন নাটক দেখছে- তার শব্দ কানে আসছে-
"ঢাকাতে শুনছি ছাত্ররা খুব ক্ষেপে গিয়েছে আতিয়া। মিছিল করবে, হরতাল করবে। করবেই তো বাংলাভাষা যদি না থাকে তো কিসের দেশ, কিসের স্বাধীনতা। " (মমতাজউদদীন?)
তার উচ্চ ভলিউমে নাটক দেখায় আমার বিরক্তি আসে। তবুও কিছু বলতে পারি না। কারণ এটা সে প্রতিদিনই করে। আমিতো এসময় রুমে থাকি না।
বিরক্ত হয়ে ওয়াশ রুমে গিয়ে ঘুরে আসি কয়েকবার। কিছুপর আবার শুনতে পাওয়া যায় তার দেখা নাটকের সংলাপ-
" যুদ্ধকে নিয়ে তোমরা ভাগ্য গড়ে নাও, সাধের সিংহাসন মজবুত কর, পৃথিবীর রঙকে মলিন কর, আমি তো প্রতিবাদ করিনি - আমি তো সূর্যের আলোতে মুখ দেখাতে চাইনি - কিন্তু আমার সন্তানকে নিয়ে তোমরা বাণিজ্য করতে চাও কেন? আমার সন্তানের পরিচয়কে তোমরা অপবিত্র কর কেন?... আমাকে নিয়ে তোমাদের এত উল্লাস কেন?... আমার মাথার আগুন নিভাইতে পারবা? "
এত আওয়াজের কারণে টেবিলে বসলেও পড়ায় মন দিতে পারছি না। পত্রিকাগুলো সরিয়ে রেখে কানে হেডফোন গুঁজে আমিও নাটক পড়া শুরু করেছি - " বাঙলা আজ নরকের ধূমায়িত অগ্নির মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছে। যারা বাংলাকে এ দশায় পরিণত করেছে, ... তারা কি রেহাই পাবে? Nemesis, প্রতিহিংসার দেবী, একবার ফিরে চাইবে না? " আগামীক্লাসে উপল তালুকদার স্যার হয়তো এ পড়াটারই ব্যাখ্যা জানতে চাইবেন। তখন আমি উত্তর দিতে না পারলে হয়তো বেয়াদবের মতো উল্টো জিজ্ঞেস করবো " I paid the penalty with my life and saved my generations" কে বলবে স্যার?
২| ০৩ রা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর সময় গুলো ইঁদুরেরা চিবিয়ে খাচ্ছে।
৩| ০৩ রা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:২৮
রাকু হাসান বলেছেন: শুভকামনা আপনার জন্য রাসেল রুশো
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৪
চোরাবালি- বলেছেন: কোন কমেন্টই নাই। শুধু পড়লাম