নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফুটপাতের কোনায় একটা ছোটখাটো জটলা। এক মহিলার মৃদু আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। ঘটনা জানতে জটলার নিকটে গিয়ে পৌঁছল জামিল। ঘটনা এই, মহিলার কাছে লোকটা ১০০ টাকায় ব্যাগ বিক্রি করেছিলো। ভাংতি না থাকায় মহিলা ৫০০ টাকার নোট দিয়েছিলো। লোকটা টাকা ফেরত না দিয়েই হাঁটা ধরেছে। লোকজন ঐ লোকটাকে ধরে এনে ৪০০ টাকা ফেরত দিয়েছে মহিলাকে। লোকসমাগম কমে গেছে। লোকটা এখন কাঁদছে; চোখে থেকে অঝোরে পানি পড়ছে।
সিটি কর্পোরেশন থেকে ঘোষণা এসেছে ফুটপাতে আর ভ্রাম্যমান দোকান বসানো যাবে না। সবুর আলী, রমজান মিয়া, সুরুজ বেপারী, মন্টুর মতো ফেরীওয়ালারা বেকায়দায় পড়েছে এতে। সারাদিনে যা রোজগার হতো সব এই ফুটপাতে বসে বিক্রি করে হতো। পুলিশ নির্দিষ্ট সময় পর পর এসে দোকান উঠিয়ে নিয়ে যায়; কখনো হয়তো সাবধান করে দিয়ে যায়। এভাবে তাদের খুব একটা আয় হয় না। সংসার চলার মতো রোজগার হয় না। তবু তারা অন্য কোথাও দোকান নিয়ে ব্যবসা করতে পারে না, তারা পুঁজিহীন, কিস্তির টাকায় ব্যবসা করে। সপ্তাহে সপ্তাহে টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করে। সবুর আলী আজ খুব সকালেই বেরিয়েছে, গত সপ্তাহের কিস্তির টাকা জমা দিতে পারেনি, আজ তাই দু'কিস্তি এক সাথে দিতে হবে। শ্যামবর্ণের স্বাস্থ্যবান মাজারি গঠনের লোক সবুর আলী। বয়স চল্লিশের কোটায়। নামাজী লোক, ধর্মকর্ম যথাসাধ্য মেনে চলে। একমাত্র বউ আর পাঁচটা সন্তান আছে; তিন মেয়ে, দুই ছেলে। পাটের , নাইলনের ও প্লাস্টিকের হাতব্যাগ বিক্রি করে সে। আগে একটা চায়ের দোকান চালাতো নিউমার্কেটের দক্ষিণ দিকের রাস্তার পাশে, পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশন সেটা তুলে দিয়েছে। তাই হাতে করে ব্যাগ বিক্রি করে। পুলিশের তাড়া কম থাকলে বসে পড়ে ২ নং গেটের পাশে ফুটপাতে। যেসব ক্রেতা নানা সাইজের হাতব্যাগের প্রয়োজনবোধ করে তারা এসব কিনে নিয়ে যায়। দরদাম মুখে মুখে চলে ; কখনো কখনো দেড়শ টাকার ব্যাগের দামও সবুর মিয়া আটশো টাকা হাকিয়ে বসে ; যারা দরদামে অদক্ষ কিংবা টাকাকড়ি আছে তারা আর যাচাই না করে নিয়ে নেয় ঐ দামেই; আবার অনেকে ১০০ টাকা দিতেও বিশ মিনিট পার করে দেয় দাম কমাতে গিয়ে। নানা কাহিনী বলে বলে ক্রেতাদের আবেগ জাগাতে হয় তার। সে শিখেও নিয়েছে কিছু কৌশল; প্রয়োজনীয় শব্দ। মাগরিব আজান হয়ে গেছে, এখনো কিস্তির টাকা দেয়ার মতো রোজগার হয়নি; আগের অনেক ধারের টাকা রয়ে গেছে ,সুরুজ বেপারী টাকার জন্য কয়েকদিন তাগাদা দিয়েছে; সেটাও দেয়া দরকার; ঘরে খোরাকি নাই; আজ রাতে ঘরে ফেরার সময় চাল, ডাল, বাজার নিয়ে যাওয়ার কথা, নইলে কালও থেকে খাওয়া বন্ধ থাকবে। নিউমার্কেটের ভিতরে-বাইরে হাঁক দিয়ে দিয়ে গলা শুকিয়ে এসেছে; পায়ে ব্যথা ধরে গেছে ক্লান্তিতে। এখন একটু জিরিয়ে নিবে ফুটপাতে। ব্যাগগুলো সাজিয়ে দিয়েছে বস্তার ওপর। ক্রেতা এলে বিক্রিও হবে। মিনিট দশেক আগেও একটা ব্যাগের দাম হাঁকিয়ে চলে গেলো এক ক্রেতা, দামে পুষেনি বলে দেয়নি সে।
এবার সে ১০০ টাকাতেই ব্যাগটা বিক্রি করে দিয়েছে। সারা সন্ধ্যায় এটা তার প্রথম বিক্রি। আরো অনেকগুলো বেঁচতে হবে।
২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:১৪
রসায়ন বলেছেন: যত যাই বলুন না কেন , ফুটপাথে কোন অবস্থায়ই হকার সাপোর্ট করি না।
৩| ০১ লা মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৩৮
রাজীব নুর বলেছেন: আহারে ---
৪| ০১ লা মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:১০
বারিধারা ২ বলেছেন: দেশে বেকারের সংখ্যা ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে। প্রান্তিক লেভেলে চাকরির ব্যবস্থা করতে পারলে লোকজন শহরে এসে ভিড় জমাবেনা - বরং গ্রামকেই সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেবে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৪২
সুমন কর বলেছেন: ওদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা করে দেয়া যেতে পারে, যাতে পথচারীদের অসুবিধা না হয়।