নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
না ফেরার দেশে চলে গেলেন প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক, গীতিকার, সুরকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর বাড্ডায় আফতাব নগরে নিজ বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।মৃত্যুর আগে প্রখ্যাত এই সঙ্গীত শিল্পীর শেষ কথাটি হয়েছে তার ব্যক্তিগত সহকারী রোজেনের সঙ্গে।রোজেনকে ডেকে বুলবুল বলেন, “তাড়াতাড়ি বাসায় আসো, আমার হার্টঅ্যাটাক হয়েছে।”এ কথা বলার ১০ ১৫ মিনিটের মধ্যেই পরপারে পাড়ি জমান বুলবুল।রোজেন গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।রোজেনের ভাষ্য- ভোর ৪টার দিকে স্যার ফোন করে বলেন, তাড়াতাড়ি বাসায় আসো, আমার হার্টঅ্যাটাক হয়েছে। তার ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে আমি স্যারের বাসায় যাই। কিন্তু গিয়ে তার কোনো পালস পাইনি।রোজেন আরো জানান পরে বুলবুলকে দ্রুত রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষানিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা তাকে সাড়ে ৫টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন। বাসায় যাওয়া হলেও বুলবুলের সঙ্গে তার কোনো কথা বলার সুযোগ হয়নি বলেই জানান রোজেন।
বরেণ্য গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক এবং মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সংগীত ও শিল্পাঙ্গন সহ সারা দেশে।তার অকালে চলে যাওয়া নিয়ে সঙ্গীত শিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ বলেছেন ওনার অনেক কিছু দেয়ার ক্ষমতা ছিল। তবে একটু আগেই তিনি চলে গেলেন।
দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন কিংবদন্তি এই সংগীত ব্যক্তিত্ব। গত বছরের মাঝামাঝি বুলবুলের হার্টে আটটি ব্লক ধরা পড়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া প্রথিতযশা এই শিল্পীর শারীরিক অবস্থার কথা জানতে পেরে তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।এরপর বুলবুলকে ভর্তি করা হয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে। সবাই ধারণা করেছিল তার ওপেন হার্ট সার্জারি করা হবে। কিন্তু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা বুলবুলের বাইপাস সার্জারি না করে রিং পরানোর সিদ্ধান্ত নেন।হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. অধ্যাপক আফজালুর রহমানের অধীনে বুলবুলকে ভর্তি করা হয়েছিল। ডা: আফজাল বুলবুলের হার্টে দুটি স্টেন্ট রিং স্থাপন করেন। রিং পরানো শেষে সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরেন বুলবুল।তারপর থেকে তিনি বাসাতেই বেশি সময় কাটাতেন। গানে আর তাকে খুব একটা দেখা যায়নি। তার জীবনযাপনেও বেশ পরিবর্তন আসে। পরিবার পরিজন এবং ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে আড্ডা আর গল্পেই সময় কাটতো তার।হার্টের অসুখই কাল হল বুলবুলের। রিং পড়ানোর পর জীবনযাপন বদলালেও বাঁচতে পাররেন না তিনি। মঙ্গলবার হার্ট অ্যাটাকেই মারা গেলেন তিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রখ্যাত গীতিকার, সুরকার এবং সংগীত পরিচালক, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মরদেহ আগামীকাল বুধবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হবে। সেখানে বেলা ১১টায় তাকে সর্বস্তরের জনতা শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন।তারপর শহীদ মিনারের শ্রদ্ধা জানানো শেষে বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে নেওয়া হবে মরদেহ। সেখানে অনুষ্ঠিত হবে তার প্রথম জানাজা। এরপর বরেণ্য এই শিল্পীর মরদেহ শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।
বুলবুলের লেখা ও সুর করা বহু জনপ্রিয় গানের শিল্পী রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন, অ্যান্ড্রু কিশোর, প্রয়াত খালিদ হাসান মিলু, কনকচাঁপা, সামিনা চৌধুরী ও মনির খান।‘সব ক’টা জানালা খুলে দাও না’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন’, ‘পড়ে না চোখের পলক’, ‘আমার গরুর গাড়িতে বৌ সাজিয়ে’, ‘আম্মাজান আম্মাজান’, ‘ঘুমিয়ে থাকো গো স্বজনী’, ‘চিঠি লিখেছে বউ আমার’, ‘জাগো বাংলাদেশ জাগো’, ‘ও মাঝি নাও ছাইড়া দে ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে’, ‘সুন্দর সুবর্ণ তারুণ্য লাবণ্য’, ‘সেই রেল লাইনের ধারে’, ‘মাগো আর তোমাকে ঘুম পাড়ানি মাসি হতে দেব না’— এ রকম অসংখ্য জনপ্রিয় বাংলা গানের সুর করেছেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।
একবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুরান জেলা কারাগার পরিদর্শন করে অশ্রুসিক্ত হয়েছিলেন দেশের প্রখ্যাত এই সঙ্গীত পরিচালক ও মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।তখন তিনি বলেছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন এই কারাগারে পাকিস্তানীদের হাতে বন্দী থাকতে হয়েছিল।
স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে একপর্যায় আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল জানান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ২ অক্টোবর আগরতলা থেকে খড়মপুর হয়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের আখাউড়ার তন্তর এলাকায় পাকিস্তানী সৈন্যদের অবস্থান লক্ষ্য করতে আসেন। একপর্যায়ে রাজাকার বাহিনীর মাধ্যমে পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে আটক হন তিনি। তারপর তাকে পাক সৈন্যরা প্রথমে পিয়ারা মিয়ার টর্চার সেলে এক দিন এবং পরে দানা মিয়ার টর্চার সেলে নিয়ে অকথ্য নির্যাতন করে। এরপর তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।
সেসময় জেলা কারাগারে তার সঙ্গে আরো প্রায় ৪৯ জন ছিলেন।সেসময় প্রতিদিনই মুক্তিযোদ্ধাদের কারাগারের ভেতর থেকে বের করে নিয়ে বিভিন্ন টর্চার সেলে অকথ্য নির্যাতন করা হত। রোজার মাসের ২৭ তারিখে পাকিস্তানী সৈন্যরা জেলা কারাগার থেকে একসঙ্গে ৪২ জনকে বের করে নিয়ে হত্যা করে। সেদিন ৪২ জনের কান্না এবং জিকিরে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে কারাগার। তাদের সঙ্গে কারাগারে থাকা অন্যদের কান্না ও জিকিরে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পরদিন আবারও এসে তাকেসহ কয়েকজনকে বের করে নিয়ে যাওয়ার সময় মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, মাহবুব, মানিক, খোকা জীবনের মায়া ত্যাগ করে সৈন্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করেন। এক সময় সৈন্যদের কাবু করে তারা কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন।অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের পাকিস্তানী সৈন্যরা ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় শহীদ নজরুল একটি সিগারেটের টুকরো, শহীদ বাতেন লুঙ্গি, শহীদ শিরু মিয়া গায়ের চাদর আমাকে দিয়ে যান, আমি যেন এ সব বাড়িতে পৌঁছে দিই।তিনি আরও বলেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগার এলাকা থেকে পালিয়ে নদীপথে নৌকার মাঝি সেজে নৌকা চালিয়ে ঢাকায় পৌঁছে আবারও সদরঘাটে পাকিস্তানীদের হাতে
ধরা পড়ে যেতে হয়েছিল।
সূত্র: ইন্টারনেট ।
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৫২
মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ রাফা ভাই।
২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:২৩
:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: তার অকাল মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকহাত। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
৩| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৪৮
সোহানী বলেছেন: মনটা হুহু করে উঠলো এমন একজনকে হারিয়ে। এমন র্নিহংকার গুনী মানুষ কোথায় পাবো...।
৪| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৪৬
রাজীব নুর বলেছেন: মৃত্যু নিয়ে খুহ বেশি আফসোস করা ঠিক না।
আমাদের সবাইকেই মরতে হবে।
৫| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:২৯
ফেনা বলেছেন: আমরা একজন গুনী মানুষকে হারালাম।
তার জন্য দোয়া রইল।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৫৬
রাফা বলেছেন: আমার খুব প্রিয় একজন মানুষ। বীর মুক্তিযোদ্ধা ,জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের একজন হয়েও ছিলেন নিরঅহংকারি প্রকৃত দেশপ্রেমিক।এক জনমে অনেক দিয়েছেন দেশকে।সফল সুরকার ,গীতিকার ও মিউজিক কম্পোজার ছিলেন তিনি।
এত মিষ্টি করে উপদেশ ও প্রসংশা করতে দেখিনি আমি কোন অনুষ্ঠানের বিচারক বা অতিথিকে।অসাধারণ একজন মানুষ আমার জানামতে।আল্লাহ্ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ভাইকে জান্নাত নসিব করুন।তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি রইলো গভীর সমবেদনা।
ধন্যবাদ,মা.ইসলাম.। একজন গুনি মানুষকে স্বরণ করে পোস্টের জন্য।