নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তিওয়ানাকু সভ্যতা ছিল প্রাক্ কলম্বীয় আমেরিকার এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সভ্যতা। দক্ষিণ আমেরিকার বলিভিয়ার পশ্চিমাংশে এর বিকাশ ঘটেছিল। ঐতিহাসিকদের মতে এরা ছিল ইনকাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পূর্বসূরী। তিতিকাকা হ্রদ তীরবর্তী এই সভ্যতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে বলিভিয়ার রাজধানী লা পাজ থেকে পশ্চিমে দেসাখুয়াদেহো যাওয়ার রাস্তায় লা পাজ থেকে ৭২ কিলোমিটার দূরে তিওয়ানাকু নামক স্থানে। আন্দিজ পর্বতের সুউচ্চ আলতিপ্লানো উচ্চভূমিতে অবস্থিত এই অঞ্চল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১২৬০০ ফুট বা ৪০০০ মিটার উঁচু। ১৫৪৯ খ্রিস্টাব্দে স্পেনীয় বিজেতা পেদ্রো সিয়েজা দে লেওন ইনকাদের শক্তিকেন্দ্র কুলিয়াসুয়ু খুঁজে বের করতে গিয়ে ঘটনাচক্রে তিওয়ানাকুতে এই সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করে ফেলেন।
মনে করা হয় এই শহরই ছিল এই সভ্যতার প্রশাসনিক প্রধান শহর।গবেষকদের মতে কম করে হলেও কমপক্ষে পাঁচশো বছর এই শহরকে কেন্দ্র করে এই সভ্যতার শাসনব্যবস্থা বজায় ছিল । ২০০০ সাল থেকে এই শহর ইউনেস্কো দ্বারা বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে জানা গেছে তিওয়ানাকু শহর সংলগ্ন অঞ্চলে সুপ্রাচীন সময় থেকেই মানুষের বসতি স্থাপিত হয়েছিল। প্রথম দিকে এটি ছিল একটি ছোট্ট কৃষিভিত্তিক গ্রাম। কিন্তু ৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ৩০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই অঞ্চল একটি উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় কেন্দ্রে পরিণত হয়। তারপর তাকে কেন্দ্র করেই একটি শক্তিশালী রাজ্যের বিস্তার ঘটে তিওয়ানাকু যার প্রশাসনিক কেন্দ্রে পরিণত হয়।
৬০০ হতে ৯০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই সভ্যতা বিকাশের চূড়ান্ত স্তরে পৌঁছয় বলে ধারণা করা হয়।সেসময় বর্তমান বলিভিয়ার পশ্চিম অংশ থেকে এই সভ্যতা পশ্চিমে দক্ষিণ পেরু, উত্তর চিলি, ও উত্তর-পশ্চিম আর্জেন্তিনাতেও ছড়িয়ে পড়ে।
মূলত কৃষিকে ভিত্তি করেই এই সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। চাষের জন্য এরা তিতিকাকা হ্রদ সংলগ্ন নীচু জমির মধ্যে কিছু অংশ উঁচু করে কৃষিজমি তৈরি করে। আর সেই উঁচু জমিগুলোর মাঝখানে কিছুটা জল বাঁধাই থেকে যায়। তার ফলে জমি যে জল পায় তাতে করে দেখা গেছে এই ধরণের জমি অতি উচ্চ ফলনশীলে পরিণত হয়। আবার সেই জলে একই সাথে মাছও চাষ করা যায়। আবার চারদিকের নীচু থেকে যাওয়া ডোবা নালা জমি যাতায়াতের জন্য জলপথ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
এই সভ্যতার স্থাপত্য শিল্পও সত্যিই চোখে পড়ারই মতো। তিওয়ানাকু শহরে নানা পর্যায়ে অসংখ্য নির্মাণকার্য চলেছিল। তাদের মধ্যে বেশ কটির ধ্বংসস্তূপ আমাদের সময় পর্যন্ত টিকে রয়েছে। তাদের মধ্যে প্রধান হল একটি পিরামিড আকাপানা, বারো ফুট উঁচু একটি সূর্যতোরণ, একটি তিনশো ফুট লম্বা বড় বড় দরজাসহ পাথরের পাঁচিল ঘেরা উঠোন কালাসাসায়া, প্রভৃতি।
একাদশ শতাব্দী নাগাদ এই সভ্যতার পতনের সূচনা ঘটে। দ্বাদশ শতাব্দীর প্রথম অর্ধেই তাদের শাসন ভেঙে পড়ে। তবে ধর্মীয় এবং প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে তাদের শহরগুলির ধ্বংসাবশেষ আজও ইনকা-পূর্ব আন্দীয় সভ্যতাগুলির উৎকর্ষের জাজ্জ্বল্যমান নিদর্শন হিসেবেই দাঁড়িয়ে রয়েছে।
২৭ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:৩৬
মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই ।
২| ২২ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৪০
ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: যতই ইতিহাস পড়ি ততয়ই পড়তে মনে চায় মামুন ভাই ।
২৭ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:৩৭
মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ মফিজ ভাই ।
৩| ২৩ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ২:৩৩
নতুন বিচারক বলেছেন: সুপ্রাচীন ইতিহাস পড়ে ভালোই লাগল ।
২৭ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:৩৮
মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ বিচারক ভাই ।
৪| ২৩ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:৪৪
ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: প্রাচীন ইতিহাস জেনে ভালো লাগলো মামুন ভাই ।
২৭ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:৩৮
মামুন ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:৩২
নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ভালো ইতিহাস জানাইলেন ভাই। ভালো লাগলো জানতে পেরে।