নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মামুন ইসলাম

মামুন ইসলাম

মামুন ইসলাম

হ্যাপী নিউইয়ার

মামুন ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

রহনপুর অষ্টভুজী সমাধিসৌধ এর ইতিহাস

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৫:২৭


রহনপুর অষ্টভুজী সমাধিসৌধ হলো গৌড় আমলের অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন। এটি বাংলার মুসলিম স্থাপত্যের ইতিহাসে সর্বপ্রথম অষ্টভূজি ভবনের নিদর্শন। গোমস্তাপুর উপজেলার সদর দপ্তর রহনপুরের উত্তর প্রান্তের নওদা বুরুজের ঠিক দক্ষিণ পাশের ১ কিলোমিটার দূরে অপেক্ষাকৃত উঁচু ভুমির উপর এই অষ্টভূজ সমাধিসৌধ অবস্থিত। সমাধিসৌধের বাইরের দিক থেকে পরিমাপ ২৬.৫২ মিটার। ভবনটির প্রত্যেকটি বাহু ১.৩৭ মিটার পুরু এবং ৪.৩৪ মিটার দীর্ঘ। প্রত্নতাত্বিক অধিদপ্তর কর্তৃক সংরক্ষন এবং সংস্কারের পূর্বে গৌড়িয়া ইট দ্বারা নির্মিত এই ভবনটি বেশ জীর্ণ অবস্থায় ছিলো। অষ্টকোণাকারে নির্মিত এই ক্ষুদ্র সমাধিসৌধের উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব এবং পশ্চিমে রয়েছে ৪টি খিলানযুক্ত প্রবেশ পথ। সমাধিসৌধের একটি মাত্র গম্বুজ যা অষ্টদেওয়াল পিপা আকৃতির হয়ে উর্ধে উঠে গম্বুজের ভার বহন করছে।দরজার উভয় পাশের দেওয়ালে সুন্দর প্যানেলিং এর কারুকাজ রয়েছে। প্রত্যেক দরজার দুই পাশে শোভাবর্ধক সরু মিনার স্থাপিত। প্রতি দরজার উপরে ৯ টি করে খিলান আছে, দরজার নকশার মধ্যে মধ্যবর্তিটিতে শাপলা ফুল অঙ্কিত রয়েছে। এর অনুভুমিক প্যারাপেট বদ্ধ মেরলনের সারি দ্বারা অলংকৃত। সমাধিসৌধের অভ্যন্তরে গম্বুজ এবং নিম্নদেশে বিচিত্র নকশা ও ছোট ছোট কুলুংগি রয়েছে। ক্ষুদ্রাকৃতির কুলুংগিগুলো সম্ভবত বাতি রাখার জন্য ব্যবহার করা হত। গম্বুজের পার্শ্বদেশে পদ্মফুল এবং কেন্দ্র বিন্দুতে কলসচুড়া শোভিত রয়েছে।

প্রাচীন এই সমাধিসৌধটি স্থাপত্য শৈলীগত দিক থেকে সপ্তদশ শতাব্দীর দিকে মুঘল রীতিতে নির্মিত বলে অনুমিত হয়। তবে কি উদ্দেশ্যে ভবনটি নির্মিত হয়েছিলো তা পরিস্কারভাবে এখনো কোন তথ্য মিলেনি।এর চতুর্পার্শ্বে দরজা দেখে এটা কোন ওলির মাজার সদৃশ বলে মনে হয়। কারণ প্রাচীন ইমারতগুলির মধ্যে অধিকাংশ বিলুপ্তি ঘটেছে। শুধু পবিত্র স্থাপনা গুলি আজো টিকে আছে। ঐতিহাসিক আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া ইমারতটিকে একটি মাজার বলে উল্লেখ করেছেন। এটি সপ্তদশ বা অষ্টাদশ শতাব্দীর পরে নির্মিত হয়েছে বলেও তিনি মনে করেন। ডঃ আহমদ হাসান দানীও একই মত প্রকাশ করছেন।খুব সম্ভবত সবাধারটি ভেঙ্গে ফেলা হয়, এবং এর মাল মসলা অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে।সময়ের বিচারে এটি বাংলার মুসলিম স্থাপত্যের ইতিহাসে সর্বপ্রথম অষ্টভূজি ভবনের নিদর্শন। পরবর্তিকালে এই বৈশিষ্টের পুনরাবৃত্তি দেখা যায় রাজমহলের বেগমপুরের অষ্টভূজি সমাধী সৌধে যা এখন পর্যন্ত বাংলায় এই জাতীয় ভবনের সর্বশেষ উদাহরন হিসেবে গণ্য। এই জাতীয় ভবনের ধারনাটি সম্ভবতঃ তুঘলক, সৈয়দ এবং লোদী যুগে নির্মিত অষ্টভুজ সমাধী সৌধ থেকে এসেছে। মিহরাবের উপস্থিতি ভবনটিকে সমাধী সৌধ হিসেবেই বিবেচনার ইঙ্গিত প্রদান করে। সুতরাং এটি যে একটি প্রাচীন মাজার বা সমাধীসৌধ তা নির্দিধায় বলা যায়।

১৯৭৮ সালে প্রত্নতত্ব বিভাগ সম্ভবত এই অষ্টভুজি ইমারেতের আঙ্গিনা সুরকী ঢালাই করেছিলেন। এই ভবনের চারপাশে প্রায় ২ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অজস্র মৃৎপাত্র, প্রাচীন ইট এবং পাথরের ভগ্নাংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান আবাদী জমির প্রয়োজনের তাগিদে এই স্থানটি হয়ে গেছে ফসলী জমি। এখনও জমি খরন করতে গেলে প্রাচীন ইট পাথর এর ভগ্নাংশ বের হয়ে পড়ে। আর এই থেকেই বোঝা যায় এখানে দূর অতীতে সারিবদ্ধ সুসজ্জিত প্রচুর ইমারতের অস্তিত্ব ছিলো।
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট ।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৫:৪১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: এই ঐতিহাসিক মুসলিম স্থাপত্য কির্তীটি সম্পর্কে বিষদ দানের জন্য রইল অশেষ ধন্যবাদ ।
শুভেচ্ছা রইল ্

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৫:৪৭

মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার মন্তব্য এবং নিয়মিত সবসময় পাশে থাকায় আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞ জানিবেন,ডঃ এম এ আলী ভাই।

২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৫:৪৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


গোমস্তাপুর উপজেলা কোন জেলায়? সপ্তদশ শতকে সেই এলাকা কি কারণে বিখ্যাত ছিল? কোন বড় নদীর তীরে?

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৫:৫৪

মামুন ইসলাম বলেছেন: রহনপুর প্রাচীন পুন্ড্রবর্ধণ রাজ্যের জনপদে অবস্থিত এবং বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত বিখ্যাত বাণিজ্য কেন্দ্র। কোন কোন ইতিহাস অনুসন্ধানী রহনপুরে প্রাক মুসলিম যুগের উন্নত নগরীর অবস্থানের উল্লেখ করেছেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পূর্বে এটি তৎকালীন বৃহত্তর মালদহ জেলার অর্ন্তভূক্ত ছিল।পুনর্ভবা- মহানন্দা নদীর তীরে অবস্থিত......
চমৎকার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে চাঁদগাজী ভাই।

৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৬:২৬

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:৩৮

মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ।

৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৭:১৮

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: এমন ইতিহাস ঐতিহ্য আর প্রাচিন স্থাপনা আমাকে চুম্বকের মতো টানে, রহনপুরে গিয়েছি, তবে এটি দেখা হয়নি।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:৪২

মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই ।
তবে তারাতারি দেখে নিয়েন।

৫| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:২২

এম এ কাশেম বলেছেন: পড়ে পুরানা ইতিহাস ঐতিহ্য জানলাম।

শুভ কামনা।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:৪২

মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই।

৬| ২১ শে অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৯:৪৩

নাহিদ০৯ বলেছেন: ২০১৫-১৬ সাল। তখন আমি উইকিপিডিয়া নিয়ে পাগলের মতো ব্যস্ত। এখান ওখান থেকে ঘুরে ঘুরে ছবি আর তথ্য সংগ্রহ করে যুক্ত করতাম নতুন নতুন উইকিপিডিয়া পাতা।

আমার বাড়ি থেকে মাত্র ৬-৭ কিমি দুরের এই পরিত্যক্ত প্রায় গম্বুজ টা ভ্রমণ করে বাসায় এসে লিখেছিলাম রহনপুর গম্বুজ নিয়ে। এটা পরবর্তীতে ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেছি, নিবন্ধে অনেক ছবি যুক্ত করেছি।

পাতাটা দেখলেই ভালো লাগে। আজকে হঠাৎ ই আপনার এই পুরাতন পোস্ট টা চোখে পড়ে নতুন করে সেই সব দিনের স্মৃতি মনে পড়ে গেলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.