নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ত্রেভি ফোয়ারা ইতালির রাজধানী রোমে অবস্থিত একটি ফোয়ারা। এটি রোম শহরের বৃহত্তম বারোক । আনুমানিক ১৬০০ সালের দিকে যে শৈল্পিক রেনেসাঁ শুরু হয়েছিল। ফোয়ারা এবং পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ফোয়ারাগুলোর একটি হিসেবে খ্যাত। স্থানীয় লোককাহিনী অনুযায়ী কথিত আছে যে কেউ এই ফোয়ারায় পয়সা ফেললে সে আবার কোন না কোনদিন রোমে ফিরে আসবে। ত্রেভি শব্দটি এসেছে ইতালীয় শব্দ ত্রে এবং ভিয়া র সংক্ষিপ্ত রূপ হিসেবে যার অর্থ তিন রাস্তা।
প্রাচীন রোমের একটি কৃত্রিম জলপ্রণালীর শেষ প্রান্তটি সাধারণের সামনে দর্শনীয়ভাবে তুলে ধরার জন্য সে প্রান্তে প্রথমে ত্রেভি ফোয়ারা তৈরি করা হয়েছিল। সেই প্রাচীন রোমান জলপ্রণালীর নাম ছিল ভির্গো, যার অর্থ কুমারী।
সম্রাট আউগুস্তুস ছিলেন রোমান সাম্রাজ্যের প্রথম সম্রাট। তার জন্মনাম ছিল গাইউস অক্তাভিউস। পরবর্তীতে তিনি নিজের নাম বদলে গাইউস ইউলিউস কায়েসার অক্তাভিয়ানুস রাখেন। সম্রাট হবার পূর্বে তিনি অক্তাভিয়ান নামেও পরিচিত ছিলেন। আউগুস্তুস একটি স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের প্রবর্তন করেন যা প্রিঙ্কিপাতে নামে পরিচিত ছিল। আউগুস্তুস ছিলেন এই রাষ্ট্রের প্রিঙ্কেপ্স বা প্রথম নাগরিক। এই নতুন শাসনব্যবস্থা বাইরের অবয়বে প্রজাতান্ত্রিক হলেও আউগুস্তুস এটিকে কাজে লাগিয়ে রোমান জনজীবনের প্রায় সমস্ত দিক নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হন এবং গ্রিক-রোমান বিশ্বে স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসেন। ইতিহাসের অন্যতম দক্ষ প্রশাসক আউগুস্তুস রোমান সাম্রাজ্যের ক্ষমতা রোমে কেন্দ্রীভূত করেন।আউগুস্তুস তথা অক্তাভিয়ান একটি ধনী পরিবারে জন্ম নেন ১৮ বছর বয়সে তার পিতামহের ভ্রাতা জুলিয়াস সিজারের (ইউলিউস কায়েসার) পালিত সন্তান ও উত্তরসূরী হিসেবে নামাঙ্কিত হন। সিজারের মৃত্যুর পর রোমে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব্ব সৃষ্টি হয় এবং মার্ক অ্যান্টনি এবং লেপিদুসের সাথে তিনি তৃতীয় শাসক হিসেবে ৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পুনর্গঠিত রোমান রাষ্ট্র শাসন করতে থাকেন। ৪২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সিজারের আততায়ী ব্রুটাস (ব্রুতুস) এবং কাসিউস-কে ফিলিপ্পিতে পরাজিত করার পর অক্তাভিয়ান ও মার্ক অ্যান্টনি রোমান সাম্রাজ্যকে দুই ভাগে ভাগ করে ফেলেন। অক্তাভিয়ান সাম্রাজ্যের পশ্চিম অংশ শাসনের অধিকার পান। তারপর অক্তাভিয়ান বিভিন্ন শত্রুর বিরুদ্ধে জয়লাভ করেন। ৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তিনি লেপিদুসকে এবং ৩১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তিনি অ্যান্টনি এবং মিশরের রাণী ক্লিওপেট্রাকে পরাজিত করেন এবং এই সাথে গ্রিক রোমান বিশ্বের একাধিপতিতে পরিনত হন। ৩১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত তিনি রোমান প্রজাতন্ত্রের একজন কনসাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তিনি আউগুস্তুস উপাধি গ্রহণ করেন এবং ২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে একনায়ক সম্রাটের মর্যাদা লাভ করেন। এরপর তিনি ধীরে ধীরে রোমান সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক কাঠামোর সংস্কার সাধন করেন এবং ইউরোপের অনেক নতুন অঞ্চল বিজয় করেন। মৃত্যুর পর তাকে দেবতার মর্যাদা দেওয়া হয় এবং তার পালিত পুত্র তিবেরিউস রোমান সম্রাট হন।
১৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে রোমান সম্রাট আউগুস্তুসের প্রিয় এক জেনারেলের কন্যার স্বামী মার্কুস ভিপসানিয়ুস আগ্রিপ্পা জলপ্রণালীটি তৈরি করেছিলেন যার দৈর্ঘ্য ছিল ২১ কিলোমিটার যার ১৯ কিলোমিটারই ছিল মাটির নিচে। পানথেওনের নিকটে আগ্রিপ্পার হাতেই নির্মিত তাপীয় স্নানঘরে পানি সরবরাহের জন্যই তিনি প্রণালীটি বানিয়েছিলেন। ত্রেভি নির্মাণের আগেই অবশ্য প্রণালীটির শেষ প্রান্তে একটি ফোয়ারা ছিল। সেক্সতুস ইউলিয়ুস ফ্রন্তিনুসের বই De aquaductibus Romae commentarius অনুসারে জলপ্রণালীর নাম রাখা হয়েছিল একজন কুমারী নারীর নামে রোমান সৈন্যরা তৃষ্ণার্ত এবং দুর্বল অবস্থায় যার দেখা পেয়েছিল। কুমারী মেয়েটি তাদেরকে কাছের একটি পানির উৎসে পথ দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। উৎসটি ছিল তিবুর্তিনা এবং কোল্লাতিনা রাস্তা দুটির মধ্যবর্তী স্থানে। দুটো রাস্তাই রোমে এসে শেষ হয়। এই উৎসটি এখনও ধারাজলের পানি সরবরাহ করে।৪র্থ শতাব্দীতে রোম শহরে ১৩৫২টি ফোয়ারা ছিল। ৫৩৭ সালে অস্ট্রোগথ রাজা ভিতিগিসের আক্রমণে ভির্গো জলনালীর কিছুটা ক্ষতি হয়। বর্বর বাহিনীর আত্রমণে এক সময় নালীটি পরিত্যক্ত হয়ে যায় এবং মধ্যযুগের আগে এর আর কোন সংস্কার করা হয়নি। ইউরোপীয় রেনেসাঁর প্রথম দিকেই পোপরা সবগুলো জলনালীর শেষ প্রান্ত পুনরায় সংস্কার করে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেন।
তথ্যসূত্রঃ
http://www.trevifountain.net/trevifountainhistory.htm
http://www.trevifountain.net/
১০ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:২৬
মামুন ইসলাম বলেছেন: সে আপনি যা বলেন
২| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:১১
মেহেদী রবিন বলেছেন: রোমানদের স্থাপত্য শিল্পের জুড়ি কই ?
১০ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৩
মামুন ইসলাম বলেছেন: হুম
৩| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৩:২৭
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
এইসব স্থাপত্যশিল্প রীতিমত মুগ্ধ করে। এসবের ইতিহাস জানতে সবসময়ই ভাল লাগে।
সম্রাট আউগুস্তুস - এর ইতিহাসটা সুন্দর ভাবে জানানোয় +
১০ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৫১
মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৪| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:৪৩
লেখা পাগলা বলেছেন: অনেক কিছু জানা হলো ।
১০ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৫২
মামুন ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:২৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
রোমানরা যখন এসব বিল্ডিং তৈরি করছিলো, আমাদের আদি পিতারা তেমন কিছু করতেন না, অলস ছিলেন।