নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পাশ্চাত্য তথা ইহুদী খ্রীষ্টান সভ্যতার মানুষ যখন বিজ্ঞান প্রযুক্তির চিন্তা চেতনা এবং প্রায়োগিক ক্ষেত্রে ভূপৃষ্ঠের সীমানা ছাড়িয়ে মহাবিশ্ব নিয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠলেন তখনই আমাদের এই মানব সভ্যতার চিন্তা চেতনা এবং বিজ্ঞান প্রযুক্তি ভাবনার গতি ক্রমাগত সংকীর্ণ করে আনা হচ্ছে। বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তার প্রসার বিজ্ঞান প্রযুক্তির প্রায়োগিক জ্ঞানের গুরুত্ব ও আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে আলোচনা সভা এবং বিজ্ঞান চেতনা পরিষদের সেমিনার, বিজ্ঞান মেলা, ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি যাদুঘরের প্রদর্শনী গাড়ির ভ্রমণ করানো হয় দেশব্যাপী।
ডিসকভারী এনিম্যাল প্ল্যানেট, ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেলে প্রতিনিয়ত দেখানো হচ্ছে বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিস্কার বা সৃষ্টি।
বিজ্ঞান চেতনা এবং প্রযুক্তিতে আগ্রহ উদ্দীপনা জাগ্রত করার লক্ষ্যে বক্তারা প্রতিনিয়ত সভা সেমিনারে যে সমস্ত প্রতিবন্ধকতার কারণ হিসেবে সবসময় যে ৪টি বিষয় সব থেকে বেশি উল্লেখ করে থাকেন তা হলঃ
১। ধর্মীয় চিন্তা ।
২। মেধাহীনতা ।
৩। পশ্চাদপদতা ।
৪। অশিক্ষা আর কুসংস্কারাচ্ছন্নতা।
তাদের বক্তব্যে বলা হয় ধর্মপরায়ণ মানুষ কখনো বিজ্ঞানমুখী হতে পারে না। প্রাচ্যের মানুষদের কোনো মেধা নেই, প্রাচ্যরা অসভ্য, বর্বর ইত্যাদি। তর্কের খাতিরে যদিও আমরা ধরে নেই এই বয়ানের বাস্তবতা এমনই তবুও একটি বিষয় লক্ষনীয় তা হল তাদের কথাগুলো প্রমাণিত হয় না যে আমরা বুঝতে পারি না, ভাবতে পারি না, চিন্তা বা গবেষণা করতে পারি না। বাস্তব জ্ঞান বিবর্জিত তথাকথিত কিছু আধুনিক বুদ্ধিজীবী বলে থাকেন পাশ্চাত্যের চিন্তা মানেই সর্বজনীন চিন্তা ও ঔপনিবেশিক এবং সাম্রাজ্যবাদী চিন্তার বাইরে কোনো চিন্তা বা সভ্যতার নিজস্বতা নেই। তাই প্রাচ্যের মানুষ সত্যিই অধম। আসলে তথাকথিত এই আধুনিক বুদ্ধিজীবীদের এই সমস্ত ধারণা উপনিবেশিক চিন্তা চেতনার ফসল এটা তারা আদতেই বোঝেন না।
চিন্তা, দর্শন, বিজ্ঞান তৈরী হয় স্থান, কাল তথা তার সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি, আবহাওয়া এবং সভ্যতার ভিত্তিতে। স্থান, কাল পাত্র ভেদে চিন্তার ধরনও আলাদা আলাদা হয়। মেধা অর্জনের ব্যাপার। মেধা অর্জন করতে হয় জীবন থেকে ও সমাজ থেকে এবং পারিপার্শ্বিকতা থেকে। পারিপার্শ্বিকতা মানুষকে শেখাতে সাহায্য করে। পাশ্চাত্য জনপদের মানুষরা পারিপার্শ্বিক বাস্তবতার কারণে শৈশব থেকেই জীবনমুখী চিন্তা করতে অভ্যস্ত। তাদের জীবনের বাস্তবতা, পরিবেশ এবং আলো, মাটি, বাতাস ও আবহাওয়া, সভ্যতা, কৃষ্টি তাদের ভাবতে শেখায়। শিখতে বাধ্য করে। তার কারন হল পাশ্চাত্য জনপদের পরিবেশ আদি থেকেই মানববান্ধব নয়। জীবন জীবিকার জন্য দৈনন্দিন জীবনের রসদের জন্য অনেক চড়ায় উৎরাই পেরোতে হয়। বেশ কাঠখড় পুড়িয়েই পরিবেশকে মানবজীবন বান্ধব করতে হয়। আর এটা আদৌ মেধার ব্যাপার না। মেধার প্রভাবেও না। তাই সে কারণেই পাশ্চাত্যরা কতটা মেধাবী তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে যায়।
অপরপক্ষে প্রাচ্যের জনপদ বহু আগে থেকেই জীবনবান্ধব। প্রকৃতির সাথে তার সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। জীবন এবং জীবিকার জন্য প্রাত্যহিক জীবনের রসদের জন্য প্রাচ্যের মানুষদের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়নি। প্রকৃতির অপার দান থেকে কিছু পাওয়ার জন্য পাশ্চাত্যের মতো প্রাচ্যদের কখনো কুটকৌশলের মতো কঠিন পথের আশ্রয় নিতে হয়নি। যাযাবর জীবনের বিলুপ্তি ঘটিয়ে যখন কৃষি সভ্যতার পত্তন হয় তখন থেকেই শুরু হয় অবসর আর সৃষ্টির প্রতি অপার কল্পনা এবং বিস্ময়।
বাস্তবতার নিরিখে প্রাচ্যের মানুষের চিন্তা ভাবনা কখনোই অবৈজ্ঞানিক ছিল না। ইউরোপ বা পশ্চিমার মতো অন্ধ ধর্মাসক্তিও ছিল না। জীবন এবং সময়ের প্রয়োজনে যতটুকু যেভাবে জানা দরকার ততটুকুই জেনেছে, ভেবেছে, অতীত ইতিহাস এটাই সাক্ষ্য দেয়। যাহোক বিজ্ঞান ভাবনার ক্ষেত্রে ধর্ম বা ঈশ্বর অন্তরায় ছিল না। কারণ, তখন বিজ্ঞান এবং ধর্মদর্শনকে এরিষ্টটলের সামগ্রিক চিন্তার মোড়কে ভাবা হত। ১৫শতকের পূর্বে প্রাচ্য তথা সেমিটিক ও ভারতীয় জনপদের ধর্মবেত্তাগণ, দার্শনিকগণ ধর্ম ও ঈশ্বরকেন্দ্রিক চিন্তা ভাবনাকে বিজ্ঞান যুক্তি এবং বাস্তবের মুখোমুখি করতে কসুর করেননি। বিপরীতমুখী এই দুই ধারা নিয়ে তারা সর্বদা বাস করেছেন তারা প্রশ্ন তুলেছেন ঈশ্বর কে? প্রকৃতি কী? মানুষ কে? মানুষ ও প্রকৃতির সম্পর্ক কী? তার ধর্ম ও কর্ম কী?
কোরআন, বাইবেল, বেদ, ধর্মদর্শন ও বিজ্ঞান কী ? এ সব প্রশ্নোত্তরের পথ ধরে তারা চিন্তার বিকাশ ঘটিয়েছেন ও জীবনদর্শন এবং বিজ্ঞানের বিকাশ ঘটিয়েছেন। জীবনকে সামনে নেয়ার পথে অনেক সমস্যার সমাধান পেয়েছেন। এরিষ্টটলকে বলা হয় Father of science, ও ইবনে সীনাকে বলা হয় আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক এবং কবি হয়েও ওমর খৈয়াম ছিলেন একজন প্রতিথযশা বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানী আইনষ্টাইন বলেন Science is lame without religion and religion is blind without science.
কিন্তু বর্তমান কালের কর্পোরেট ধর্মবেত্তা এবং ধর্মীয় দার্শনিকগণ ধর্ম, ঈশ্বর, আল্লাহ, কোরআন, বেদকে বাস্তব বা ইহজগতের মুখোমুখি করতে ভয় পান। বিজ্ঞান ভাবনার বয়ানে ঈশ্বর ভাবনা করতে হলে প্রথমে কোরআনের বা সর্ব ধর্মগ্রন্থের বয়ানে আল্লাহ কে স্রষ্টার অস্তিত্ব প্রমাণিত হওয়া সম্ভব কিনা এবং ধর্মের সামাজিক, রাজনৈতিক বা ইহজাগতিক কোনো ভূমিকা ছিল কিনা ইত্যাদি প্রশ্নের একটা পর্যালোচনা হওয়া দরকার। যেটা বর্তমানে প্রাচ্যের চিন্তকগণ এড়িয়ে যান এড়িয়ে যান ভয় এবং অজ্ঞানতার কারণে। মানুষ মহাবিশ্ব অনুসন্ধান করে বেড়াচ্ছে। সৃষ্টির উৎস সন্ধানে মানুষের প্রাণান্ত চেষ্টার বিরাম নেই যদিও আগে থেকেই তবে এ ভাবনাগুলো দিনে দিনে আরও মাত্রাহীণ যেমন বেড়ে চলছে,তেমন বেড়িয়ে আসছে নিত্যনতুন বিশ্ব তথ্য । কোথায় কবে মানুষের এই অনুসন্ধানমূলক কর্মযজ্ঞের যবনিকা ঘটবে বা কখনো ঘটবে কিনা তার আভাস এবং ইঙ্গিত কোনটাই দেয়া সম্ভব নয়।
যাই হোক অধুনা হয়ত ধর্মবেত্তাগণের ভয় ধর্ম যদি যুক্তির কাছে পরাস্ত হয় ? সে কারণেই বুঝি ধর্মবেত্তাগণ এই আতংকের মধ্যে অবস্থান করে ফতোয়া আওড়ায় ধর্ম এবং আল্লাহ নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না সবাইকে একদিন মৃত্যুর কোলে আশ্রয় নিতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। এই ধরনের ধর্মীয় বার্তাবাহকেরা মূলত, কোরআন, হাদীস এবং প্রাক ইসলামিক যুগের ধর্মবেত্তাগন, দার্শনিক ও বিজ্ঞান চিন্তাবিদগণের জীবনাচরন, কর্ম, প্রায়োগিক জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা সম্পর্কে খুবই অজ্ঞ ও উদাসীন। ধর্ম চিন্তার ঐতিহাসিক ভূমিকা সম্পর্কে তারা সম্পূর্ণ উদাসীন। আবার দেখা যায় অনেক আছেন যারা কোরআন হাদীস পড়েন শুধু বেহেস্তের লোভে আর দোজখের ভয়ে। জ্ঞান অর্জনের জন্য নয় আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্যে তো নয়ই।
এবার দেখা যাক ঈশ্বর ভাবনায় কোরআনের বক্তব্য। তুমি বল আল্লাহ একক এবং অদ্বিতীয়। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নহেন। তিনি কাউকে জন্ম দেননি ও তাকে কেউ জন্ম দেননি। আমাদের সমাজের কিছু কিছু মৌলভী আছেন যারা এক এবং এককের পার্থক্য জানেন না। তাই তাদের কাছে আল্লাহ সম্পর্কিত ধারণা স্থূল। যাই হোক এ নিয়ে তর্কে না যেয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাই এই মোদ্দা কথাগুলো একটু ব্যাখ্যা করে বলতে গেলে যা দাঁড়ায় তা হল তিনি আল্লাহ নিরাকার অধরা অছোঁয়া নিরঞ্জন। অর্থাৎ তিনি আকারহীন যা কখনো ধরা ছোঁয়া যায় না কোনো রঙেই তাকে রাঙানো যায় না। হাজার হাজার হাজার কোটি আলোকবর্ষ আর মহাবিশ্বের লক্ষ কোটি মাইল পরিভ্রমণ করেও অস্তিত্বমান ঈশ্বর বা আল্লাহর পাওয়া যাবে না আর তা সম্ভবও না। আল কোরআনের এই বক্তব্যের সাথে অন্যান্য ধর্মগ্রন্থও সহমত পোষণ করে আর তার অর্থ আবার এমন নয় যে আল্লাহ বা ঈশ্বর নামক কোনো ধারণার অস্তিত্ব নেই।
২১ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৫৮
মামুন ইসলাম বলেছেন: হুম ধন্যবাদ ।
২| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৩৬
বিবেক ও সত্য বলেছেন: স্রষ্টার অস্তিত্ব:একটি নিরপেক্ষ বিশ্লেষন (আস্তিক-নাস্তিক উভয়ের প্রশ্নের সঠিক সমাধান)
২১ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৫৯
মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার একটা কাজ করেছেন ভাই লিংঙ্কু দিয়া । ধন্যবাদ ।
৩| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৪৮
ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: বুঝে দেখতে হবে ।
২১ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:০৮
মামুন ইসলাম বলেছেন: ইতিহাস লেখকক হয়ে দেখুন বুঝতে পারেন কি না, পারলে সেটা হবে আরেক ইতিহাস ।চমৎকার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৪| ২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:১১
মহা সমন্বয় বলেছেন: আমিও তাই মনে করি, বিজ্ঞান চর্চার অন্যতম বাঁধা হচ্ছে-
১। ধর্মীয় চিন্তা ।
২। মেধাহীনতা ।
৩। পশ্চাদপদতা ।
৪। অশিক্ষা আর কুসংস্কারাচ্ছন্নতা।
৫| ২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:২৪
শেয়াল বলেছেন: গড নিয়ে আপনার ভাবনা ভাল লাগলো ।
৬| ২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৪৩
নতুন বলেছেন: জানার কোন শেষ নাই, জানার চেস্টা বৃথা তাই...
ধম` সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিয়েছে... সবই সৃস্টিকতার ইচ্ছায় সৃস্টি...
মহাবিশ্বকে এতো বড় বানিয়েছে যে এটা কখনো মানুষ পাড়ি দিতে পারবে না।
তাই ধামিকরা এই সব বিষয় নিয়ে চিন্তা করবে না। বরং সৃস্টিকতার দেওয়া বইয়ে যা লেখা আছে সেটাই বিশ্বাস করে বসে থাকবে। এবং যারা গবেষনা করতে চাইবে তাদের সময় নস্ট করতে নিষেধ করবে এবং সৃস্টিকতার প্রাথনা করতে বলবে।
আর ধম`গ্রন্হে বলাই আছে... মানুষ সৃৃস্টিকরার উদ্দশে হলো তারা সৃস্টিকতার` প্রথনা করবে।
৭| ২১ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:১৬
নাইম রাজ বলেছেন: পড়লাম লেখাটি ভালো লাগল ।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:২৫
প্রণব দেবনাথ বলেছেন: ধর্ম নয় মূর্খতাই বিজ্ঞানের পথে বাধা. আমি বিশ্বাস করি বিজ্ঞান বাস্তব তৈরী করে ধর্ম মনন.