নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৫০-১৯৮০ সালের তুলনায়, ১৮৮০-২০১২ পর্যন্ত বিশ্বের জল-স্থল ভাগের গড় উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কালো লেখটি বার্ষিক গড় তাপমাত্রা এবং লাল লেখটি ৫ বছরের গড় তাপমাত্রা নির্দেশ করছে। সবুজ দাগটি অনিশ্চয়তার অনুমান নির্দেশ করছে ভূমন্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধি বা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হলো জলবায়ু পরিবর্তনের একটি বিশেষ ঘটনা। সাধারণত সময় বা কারণ বা নিরপেক্ষ হলেও বৈশ্বিক উষ্ণায়ণ বলতে মূলত ইদানীংকার উষ্ণতা বৃদ্ধিকেই নির্দেশ করা হয় এবং এটি মানুষের কার্যক্রমের প্রভাবে ঘটেছে। UNFCCC বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে মানুষের কারণে সৃষ্ট আর জলবায়ুর বিভিন্নতাকে অন্য কারণে সৃষ্ট জলবায়ুর পরিবর্তন বোঝাতে ব্যবহার করে। কিছু কিছু সংগঠন মানুষের কারণে পরিবর্তনসমূহকে মনুষ্যসৃষ্ট anthropogenic জলবায়ুর পরিবর্তন বলে।
মানচিত্রটি ১৯৫১-১৯৮০এর তুলনায় ২০০০-২০০৯ পর্যন্ত ১০ বছরে তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি নির্দেশ করছে। সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে উত্তর এবং দক্ষিণ গোলার্ধে।
যন্ত্রকৃত তাপমাত্রার দলিল অনুযায়ী ১৮৬০সাল ও ১৯০০ সালের তুলনায় ভূভাগ এবং সমুদ্র উভয় ক্ষেত্রেই বিশ্বের তাপমাত্রা ০.৭৫°সে. ১.৪° ফা. বৃদ্ধি পেয়েছে। শহুরে তাপদ্বীপের অতিরিক্ত গরমকে তেমন তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হয়নি। ১৯৭৯ সাল থেকে ভূ-ভাগের তাপমাত্রা মহাসাগরের তাপমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ দ্রুততায় বৃদ্ধি পেয়েছে দশকে ০.১৩°সে. এর স্থলে ০.২৫°সে। কৃত্রিম উপগ্রহকৃত তাপমাত্রা পরিমাপ হতে দেখা যায় যে নিম্ন ট্রপোমণ্ডলের তাপমাত্রা ১৯৭৯ সাল থেকে প্রতি দশকে ০.১২°সে.-০.২২°সে. সীমার মধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৮৫০ সালের এক বা দুই হাজার বছর আগে থেকে তাপমাত্রা অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল ছিল তাছাড়া সম্ভবত মধ্যযুগীয উষ্ণ পর্ব কিংবা ক্ষুদ্র বরফযুগের মত কিছু আঞ্চলিক তারতম্য ঘটেছিল। নাসার গডার্ড ইনস্টিটিউট ফর স্পেস স্টাডিজের Goddard Institute for Space Studies করা অনুমিত হিসাব অনুযায়ী ১৮০০ শতকের শেষের দিক থেকে নির্ভরযোগ্য তাপমাত্রা মাপক যন্ত্রের ব্যাপক বিস্তার লাভের পর ২০০৫ সাল ছিল সবচেয়ে উষ্ণ বছর, যা ইতিপূর্বে লিপিবদ্ধ উষ্ণতম ১৯৯৮ সাল থেকে এক ডিগ্রীর কয়েক শতাংশ বেশি উষ্ণ। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা World Meteorological Organization এবং যুক্তরাজ্য জলবায়ু গবেষণা ইউনিট Climate Research Unit, একটি অনুমিত হিসাব থেকে ২০০৫ সালকে ১৯৯৮ সালের পরে দ্বিতীয় উষ্ণতম বছর হিসেবে বিবৃত করে।শেষ ৫০ বছরে সবচেয়ে বিস্তারিত উপাত্ত আছে আর এই সাম্প্রতিক সময়েই জলবায়ু পরিবর্তনের ধরণটা attribution of recent climate change সবচেয়ে স্পষ্ট। এটা মনে রাখুন যে মনুষ্যসৃষ্ট অন্যান্য দূষনকারী বস্তুর নিঃসরণ-বিশেষত সালফেট কণা একটি শৈত্যয়ন ক্রিয়া ঘটায় এটা বিশেষকরে দ্বাদশ শতকের মালভুমি/শৈত্যয়নের জন্য দায়ী যদিও এটা প্রকৃতির স্বাভাবিক জলবায়ু চক্রের কারণেও হতে পারে।বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের বৃদ্ধি মহাসাগরগুলোতে CO2 দ্রবীভবনের হার বাড়ায়। দ্রবীভূত কার্বন ডাই অক্সাইড পানির সাথে বিক্রিয়া করে কার্বনিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে এবং ফলে মহাসাগরের অম্লায়ন ঘটে। যেহেতু জৈব ব্যবস্থাগুলি biosystems ক্ষুদ্র পরিসরে সীমাবদ্ধ পি এইচ pHএ কাজ করে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে যে অস্থায়ী কিংবা স্থায়ী নেতিবাচক এবং ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে তার যাবতীয় চুলচেরা বিশ্লেষণকে বোঝাচ্ছে। UNFCCC বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে মানুষের কারণে সৃষ্ট আর জলবায়ুর বিভিন্নতাকে অন্য কারণে সৃষ্ট জলবায়ুর পরিবর্তন বোঝাতে ব্যবহার করে। কিছু কিছু সংগঠন মানুষের কারণে সৃষ্ট পরিবর্তনসমূহকে মনুষ্যসৃষ্ট anthropogenic জলবায়ুর পরিবর্তন বলে। তবে একথা অনস্বীকার্য যে বিশ্বব্যাপি জলবায়ুর পরিবর্তন শুধুমাত্র প্রাকৃতিক কারণেই নয় তার মধ্যে মানবসৃষ্ট কারণও সামিল। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশের বিপর্যয়ের এই ঘটনাকে বাংলাদেশ সরকারের বাংলাদেশ বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় কর্তৃক নব্বইয়ের দশকে প্রণীত ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট এ্যাকশন প্ল্যান NEMAP এ দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কোনো দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সত্যিই পড়ছে কিনা তা চারটি মানদন্ডে বিবেচনা করা হয়,
১। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ
২। কোথায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেশি হচ্ছে
৩। সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা কোথায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে
৪। ক্ষতিগ্রস্থ দেশটি ক্ষতি মোকাবিলায় বা অভিযোজনের জন্য এরই মধ্যে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে।
বাংলাদেশে একাধারে সমুদ্রস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি লবণাক্ততা সমস্যা হিমালয়ের বরফ গলার কারণে নদীর দিক পরিবর্তন বন্যা ইত্যাদি সবগুলো দিক দিয়েই ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং হচ্ছে। তাছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রাও অনেক অনেক বেশি। মালদ্বীপ, টুভ্যালু, টোবাগো -এদের সবার ক্ষেত্রেই এই সবগুলো মানদন্ডই কার্যকর নয়। তাছাড়া মালদ্বীপের মোট জনসংখ্যা বাংলাদেশের অনেক জেলার জনসংখ্যার চেয়েও কম। তাই এই চারটি মানদন্ডেই বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকায় শীর্ষে।আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জার্মান ওয়াচ-এর ২০১০ সালে প্রকাশিত গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স CRI অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ক্ষতির বিচারে শীর্ষ ১০টি ক্ষতিগ্রস্থ দেশের মধ্যে প্রথমেই অবস্থান করছে বাংলাদেশ। এই সমীক্ষা চালানো হয় ১৯৯০ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ১৯৩টি দেশের উপর। উক্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রকাশিত ২০০৭সাল এবং ২০০৮ সালের প্রতিবেদনেও বাংলাদেশ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সমুদ্রস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে ক্ষতিগ্রস্থতার বিচারে বিশ্বব্যাপী গবেষকগণ বাংলাদেশকে পোস্টার চাইল্ড Poster Child হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশ যা ২৬° ৩৮' উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২০° ৩৪' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮° ০১' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ থেকে ৯২° ৪১' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। এই দেশটির পশ্চিম উত্তর আর পূর্ব সীমান্ত জুড়ে রয়েছে ভারত। পশ্চিমে রয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ আসাম মেঘালয় রাজ্য। পূবে আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম। তবে পূর্বদিকে ভারত ছাড়াও মিয়ানমারের সাথে সীমান্ত রয়েছে। দক্ষিণে রয়েছে বঙ্গোপসাগর। ভূতাত্ত্বিকভাবে দেশটি থেকে উত্তর দিকে রয়েছে সুউচ্চ হিমালয় পার্বত্যাঞ্চল, যেখান থেকে বরফগলা পানির প্রবাহে সৃষ্ট বড় বড় নদী বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে প্রবহমান এবং নদীগুলো গিয়ে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে পড়ছে। বর্ষাকালে নদীবাহিত পানির প্রবাহ বেড়ে গেলে নদী উপচে পানি লোকালয়ে পৌঁছে যায় এবং দেশটি এভাবে প্রায় প্রতি বছরই বন্যায় আক্রান্ত হয়।বাংলাদেশের প্রায় মাঝখান দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা অতিক্রম করেছে এবং এর আবহাওয়াতে নিরক্ষীয় প্রভাব লক্ষ করা যায়। বছরে বৃষ্টিপাতের মাত্রা ১৫০০-২৫০০মিলিমিটার, পূর্ব সীমান্তে এই মাত্রা ৩৭৫০ মিলিমিটার। স্বাভাবিক অবস্থায় গড় তাপমাত্রা ২৫° সেলসিয়াস। আবহমান কাল থেকে বাংলাদেশের ছয়টি ঋতুর বৈশিষ্ট্য আলাদা আলাদাভাবে উপলব্ধ হয়। গ্রীষ্ম-বর্ষা-শরৎ-হেমন্ত-শীত-বসন্ত -এই ছয় ঋতুর কারণে দেশটিকে ষড়ঋতুর দেশও বলা হয়ে থাকে। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত হালকা শীত অনুভূত হয়। মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত গ্রীষ্মকাল চলে। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এদেশে মৌসুমী বায়ু সক্রীয় থাকে তাই জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চলে বর্ষা মৌসুম। এসময় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে এখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় যা অনেক সময়ই বন্যায় ভাসিয়ে দেয়। তাছাড়াও মৌসুমী বায়ুপ্রবাহের আগমুহূর্তে কিংবা বিদায়ের পরপরই স্থলভাগে ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো, কিংবা সাগরে নিম্নচাপ, জল-ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি হয়, যার আঘাতে বাংলাদেশ প্রায় নিয়মিতই আক্রান্ত হয়। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাবে বাংলাদেশের এই স্বাভাবিক চিত্রটি এখন অনেকখানি বদলে গেছে। তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্রস্তর -সর্বদিক দিয়ে সংঘটিত এসকল পরিবর্তন বাংলাদেশে, জলবায়ুগত স্থূল পরিবর্তন সৃষ্টি করেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনে নেতিবাচক প্রভাব
বৃষ্টিপাত হ্রাসঃ
ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের ১৯৫১ সাল থেকে ২০০৪ সালের সংগৃহীত উপাত্তের ভিত্তিতে নয়াদিল্লির ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির সেন্টার ফর অ্যাটমোসফেরিক সায়েন্সেস বিভাগের উদ্যোগে বৃষ্টিপাতের ব্যাপ্তি, বর্ষা মৌসুমের ব্যাপ্তি ও বৃষ্টির পরিমাপ ইত্যাদি উপাত্ত যাচাই করে দেখা গেছে যে ভারতীয় উপমহাদেশে বৃষ্টিপাত কমছে। দেখা গেছে চারদিনের বেশি সময় ধরে কমপক্ষে ২.৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের ঘটনা কমে গেছে। যদিও স্বল্প সময়ের জন্য বৃষ্টিপাত বেড়েছে। কিন্তু এতে মৌসুমী বৃষ্টিপাতের চক্র দূর্বল হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতি এজন্য আশঙ্কাজনক যে এই উপমহাদেশের কৃষিকাজ দীর্ঘমেয়াদি বৃষ্টির উপযোগী। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে ধানের ফুল আসার সময় থেকে বীজ বের হওয়ার মাঝখানের সময়টুকুতে প্রয়োজনের তুলনায় বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় টি-আমন জাতের ধানের উৎপাদন কমে আসছে। এমনকি ভরা বর্ষায় জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় অনাবৃষ্টিতে আমন ধানের বিশাল খেত রোদে পুড়ছে । যেখানে আমন ধান রোপনের অন্তত ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত পানি ধরে রাখা নিশ্চিত করতে হয়, নাহলে কুশি বাড়ে না; সেখানে পানির অভাবে জমিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যমতে ২০১০ সালে বিগত ১৫ বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে এমনকি এই পরিমাণ শ্রেফ ২০০৯ সালের তুলনায়ই ৯,০০০ মিলিমিটার কম।
লবণাক্ততা বৃদ্ধি
বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় নদ-নদীর পানিপ্রবাহ শুকনো মৌসুমে স্বাভাবিক মাত্রায় থাকে না। ফলে নদীর পানির বিপুল চাপের কারণে সমুদ্রের লোনাপানি যতটুকু এলাকাজুড়ে আটকে থাকার কথা ততটুকু থাকে না। পানির প্রবাহ কম থাকার কারণে সমুদ্রের লোনাপানি স্থলভাগের কাছাকাছি চলে আসে। ফলে লবণাক্ততা বেড়ে যায় বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের বিপুল এলাকায়। দক্ষিণ পশ্চিম যশোরে এমনটা দেখা যায় সেখানে শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গার পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় লবণাক্ততা বৃদ্ধি পায়। সুস্পষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে বলা যায় যায় দেশের দাকোপসহ দক্ষিণাঞ্চলে সমুদ্র ভূভাগের অনেক ভিতর পর্যন্ত লোনাপানি ইতোমধ্যেই ঢুকে পড়েছে। এই সমস্যা উপকূলীয় অঞ্চল থেকে যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর এবং কুমিল্লা পর্যন্ত উত্তর দিকে বিস্তৃত হয়েছে এবং আরো উত্তরে বিস্তৃত হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।১৯৯০ সালে দেশে লবণাক্ত ভূমির পরিমাণ ছিল ৮,৩০,০০০ হেক্টর, আর ২০০১ সালে এসে তা হয়েছে ৩০,৫০,০০০ হেক্টর। কম বৃষ্টিপাতের কারণে উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততার সমস্যা দিনে দিনে আরো প্রকট হয়ে উঠবে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
বরিশাল এবং পটুয়াখালীতে লবণাক্ততার পরিমাণ ২ পিপিটি থেকে বেড়ে ৭ পিপিটি হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম শহর সন্নিকটের হালদা নদীর পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে ৮ পিপিটি হয়ে গেছে ।
সাতক্ষীরা-খুলনার সুন্দরবন
বাংলাদেশের ভূ-প্রাকৃতিক গঠনই এমন যে কোথাও কোথাও ভূভাগ যথেষ্ট ঢালু। খুলনার সুন্দরবনের অবস্থান এমন একটা জায়গায় যা ত্রিভূজাকৃতির বঙ্গোপসাগরের শীর্ষবিন্দুতে গাঙ্গেয় মোহনায় অবস্থিত। এই গাঙ্গেয় মোহনার মহীঢাল খুব মসৃণভাবে সমুদ্রে নেমে গেছে। তার ফলে আন্দামান সাগরে উৎপন্ন জলঘুর্ণিঝড়গুলোর উত্তরমুখী যাত্রায় মহীঢালের অগভীরতার কারণে জলোচ্ছাস অত্যন্ত উঁচু হয়ে আসে। সাগরের জোয়ারও অপেক্ষাকৃত উঁচু হয়। তাই সাগরের লোনাপানি ঢুকে পড়ে উপকূলভাগে লবণাক্ত করে তোলে ভূ-অভ্যন্তরের পানিও।সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যেই সুন্দরবনের সুন্দরী গাছে ব্যাপক মাত্রায় আগামরা রোগ দেখা দিয়েছে।
তথ্যসূত্রঃ http://data.giss.nasa.gov/gistemp/
http://unfccc.int/cop9/se/present/jenkins.pdf
সূত্রঃ
©somewhere in net ltd.