নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ভীষণ সমৃদ্ধ এবং বহুস্তরীয়। আমাদের সমাজের প্রতিটি অংশে রয়েছে ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ধর্মের এক মেলবন্ধন। কুন্ডু বাড়ির মেলা, যা ৩০০ বছরের বেশি সময় ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে, এটি ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু সম্প্রতি এই মেলা আয়োজনের বিরুদ্ধে এক বিপজ্জনক ঘোষণা এসেছে, যা আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। মসজিদ থেকে বলা হয়েছে যে, মেলা আমাদের জন্য শিরক, এবং তাই এটি আয়োজন করা যাবে না। এই বক্তব্যকে আমি অত্যন্ত দুঃখজনক ও অশনি সংকেত মনে করি।
কুন্ডু বাড়ির মেলা শুধুমাত্র একটি বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান নয়, বরং এটি আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ এই মেলায় সমবেত হন, নিজেদের সংস্কৃতি, আচার-অনুষ্ঠান, এবং ঐতিহ্যকে উদযাপন করতে। মেলার মাধ্যমে আমরা নিজেদের অতীতকে স্মরণ করি, আমাদের পূর্বপুরুষদের কৃষ্টি-কালচারকে ধরে রাখার চেষ্টা করি। এই মেলা বিভিন্ন ধরনের শিল্প, সঙ্গীত, নৃত্য, এবং খাবারের প্রদর্শনী করে। এটি একটি সামাজিক সমাবেশ যেখানে মানুষ তাদের আনন্দ ভাগাভাগি করে এবং নতুন সম্পর্ক গড়ে তোলে।
মেলার বিরুদ্ধে ধর্মীয় মন্তব্যগুলোর প্রভাব আমাদের সমাজে বিভক্তি তৈরি করতে পারে। বাংলাদেশ একটি বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক দেশ, যেখানে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকেরা বসবাস করে। আমাদের ঐতিহ্যগত অনুষ্ঠানগুলোতে এই বিভিন্ন ধর্মের লোকেরা একসাথে অংশগ্রহণ করে। এই ধরনের বিভাজনমূলক বক্তব্য আমাদের ঐক্যের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের উচিত এসব ঐতিহ্যকে গ্রহণ করা এবং সম্মানের সাথে উপভোগ করা।
কুন্ডু বাড়ির মেলার ইতিহাসও আমাদের শিকড়ের সন্ধান দেয়। এটি একটি ঐতিহাসিক স্থান, যেখানে নানা ধর্ম ও সংস্কৃতির মানুষ একত্রিত হয়ে নিজেদের ঐতিহ্যকে সমর্থন দেয়। এই মেলা ছিল আমাদের পূর্বপুরুষদের উৎসব, যেখানে তারা আনন্দ করতেন, গান গাইতেন এবং নিজেদের ইতিহাসকে উদযাপন করতেন। আজ যদি আমরা এই মেলা বন্ধ করে দিই, তাহলে আমরা আমাদের ইতিহাসকে অস্বীকার করছি। আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় ধীরে ধীরে মুছে যাবে।
ধর্মের আসল উদ্দেশ্য হলো মানুষকে ভালোবাসা, সহানুভূতি এবং একতা শেখানো। ধর্মের নামে যদি আমরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দিই, তাহলে আমরা ধর্মের আসল উদ্দেশ্য থেকে সরে যাচ্ছি। ইসলাম ধর্মে উৎসব, আনন্দ এবং সমাজের সাথে সম্পর্ক গড়ার গুরুত্ব রয়েছে। ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে একে অপরের আনন্দে শরিক হওয়া, এবং কুন্ডু বাড়ির মেলা সেই একই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই বছরের পর বছর ধরে উদযাপিত হয়ে আসছে।
সংস্কৃতি এবং ধর্মের মধ্যে যে সম্পর্ক রয়েছে, তা বুঝতে পারা অত্যন্ত জরুরি। সংস্কৃতি ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমরা যদি সংস্কৃতিকে অস্বীকার করি, তাহলে আমরা আমাদের ধর্মকেও খর্ব করছি। আমাদের সকলকে মিলিতভাবে এই বিষয়টি বুঝতে হবে এবং তা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কুন্ডু বাড়ির মেলা শুধু একটি সাংস্কৃতিক উৎসব নয়, বরং এটি আমাদের পরিচয় এবং ঐতিহ্যের প্রতীক।
আমাদের সমাজের এই পরিস্থিতিতে আমাদের নিজেদের প্রশ্ন করতে হবে, আমরা কি সত্যিই আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা করতে চাই? কুন্ডু বাড়ির মেলা আমাদের ইতিহাসের একটি অংশ, এবং এর আয়োজন নিষিদ্ধ করা আমাদের সমাজের জন্য একটি সাংস্কৃতিক সংকটের সূচনা করবে। তাই, আমরা সকলের প্রতি আহ্বান জানাই, কুন্ডু বাড়ির মেলা রক্ষায় একতাবদ্ধ হোন। আমাদের ঐতিহ্যকে রক্ষা করা, আমাদের সংস্কৃতিকে জাগরত রাখা, এবং ধর্মের নামে বিভক্তি না ঘটিয়ে নিজেদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা আমাদেরই নৈতিক দায়িত্ব।
২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ ভোর ৬:৫৯
আমিই সাইফুল বলেছেন: চোখ থাকিতে যদি অন্ধ হয় প্রশাসন কি করা যাবে!
২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ ভোর ৬:৪৬
সোনাগাজী বলেছেন:
৩০০ বছরের মেলা, ১৪০০ বছর আগের কারবালা, ৭০ বছরের জব্বারের বলিখেলা, এগুলো আধুনিক সংস্কৃতির জন্য বিশাল ফ্যাক্টর নয়।
২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ ভোর ৬:৫৮
আমিই সাইফুল বলেছেন: তাহলে বিশাল ফ্যাক্টর গুলোর একটা লিস্ট বানিয়ে দিন। সেগুলো বাদে বাকি সব বন্ধ হয়ে যাক।
৩| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:০৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কী কারণে এই মেলার বিরুদ্ধে বলা হচ্ছে? আপনার পোস্টে সেটা পরিষ্কার না। একটু ব্যাখ্যা করে বললে ভালো হয়।
২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:৪৩
আমিই সাইফুল বলেছেন: কোন কারণ নাই। স্থানীয় সূত্রে যতটা জেনেছি মসজিদ থেকে কিছু লোক সিদ্ধান্ত দিয়েছে এটা শিরক তাই এটা আর পালন করা হবেনা।
৪| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:৫০
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমার ধারণা কোন শিরক নিশ্চয়ই আছে। তা না হলে দেশে তো আরও হাজারও মেলা হচ্ছে সেটার বিরুদ্ধে কোন মসজিদ থেকে তো বলা হচ্ছে না। আপনি পুরোপুরি না জেনেই লিখেছেন। আপনার উচিত ছিল পুরোটা জেনে লেখা। পুরো ব্যাখ্যা না থাকার কারণে লেখাটা একতরফা হয়ে গেছে।
২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:৫৪
আমিই সাইফুল বলেছেন: অতিরঞ্জিত কিছু হলে এত বছর ধরে চলতোনা। এটা প্রতিমা ভাঙার মতই হুজুগে কারো নেতৃত্বেই হচ্ছে হয়ত। তাও অপারগতা স্বীকার করছি। এর চেয়ে বেশি জানাসম্ভব হয়নি।
৫| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:৫০
আহরণ বলেছেন: কুন্ডু বাড়ির মেলাহবে না। কারণ বাংলাদেশ আল কোরানের আলোয় আলোকিত। আর এখানেই ইউরোপ, আমেরিকা, জাপানের সাথে বাংলাদেশের পার্থক্য। @ ভাইয়া?
৬| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:১৯
কামাল১৮ বলেছেন: এটা আরবের সংস্কৃতির সাথে যায় না।
৭| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৩০
কামাল১৮ বলেছেন: এই মেলা কোথায় হতো।বিক্রমপুরে এক কুন্ড ছিলো।তারা ৪৭ এ ভারত চলে গেছে।চট্রগ্রামে আছে আরেক কুন্ড তাদের আছে ঔষধালয়।
৮| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫
মেঠোপথ২৩ বলেছেন: মসজিদের লোকদের মেলা বন্ধ করার কোন অধিকারই নাই। প্রসাষনকে জানানো হয়েছে? মেইন্সট্রীম মিডিয়ার কোথাও এই খবর দেখি নাই অবস্য।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ ভোর ৫:২১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: মেলা তে ব্যবসা বাণিজ্য কেমন হয়? মেলা কি করে শিরক হয়? মেলায় সব মজার জিনিস পাওয়া যায়। দরকার হলে আতর, টুপি, পাঞ্জাবির কাপড়ের স্টল বসিয়ে তারাও ব্যবসা করবে! প্রশাসন কে জানান।