নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশে বর্তমানে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার মধ্যে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর ইস্যু হলো বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং জনগণের বাকস্বাধীনতা। সাম্প্রতিক সময়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং প্রবীণ আইনজীবী জেড আই খান পান্নার বিরুদ্ধে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা স্পষ্টভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং বিচারহীনতার পরিস্থিতির ইঙ্গিত বহন করে। এই ঘটনা দেশের আইনব্যবস্থার সংকট এবং মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হিসেবে উঠে আসছে।
জেড আই খান পান্না একজন খ্যাতনামা আইনজীবী এবং দেশের একজন সম্মানিত মুক্তিযোদ্ধা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়, যখন সারা দেশে দমন-পীড়ন ও নিপীড়নের চিত্র দেখা যাচ্ছিল, তখন পান্না সাহসিকতার সাথে আদালতে ছুটে গিয়ে রিট করেছিলেন। তার এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য ছিলো আন্দোলনকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং তাদের মুক্তির দাবি করা। কিন্তু বর্তমান সরকারের সমালোচনা করার কারণে, তার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা দেশের আইন ও শাসন ব্যবস্থার নৈতিকতার প্রতি বড় আঘাত।
পান্না একদিকে যেমন ছাত্র আন্দোলনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করেছেন, অন্যদিকে তিনি আওয়ামী লীগের সরকার এবং ক্ষমতাসীনদের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলিষ্ঠভাবে আওয়ামী লীগের নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন। এটি তার নৈতিক দায়িত্বের অংশ ছিল, যেখানে তিনি দেশের বর্তমান অবস্থার বিরুদ্ধে নিজের মতামত প্রকাশ করেছেন। এটি গণতান্ত্রিক অধিকার, যেখানে একজন নাগরিক স্বাধীনভাবে সরকারের সমালোচনা করতে পারেন।
পান্না সবসময় স্বাধীনতার চেতনা এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি আস্থা রেখেছেন। তার বক্তব্যে তিনি বর্তমান সরকারের কাজের ন্যায্য সমালোচনা করেছেন, যা দেশের জনগণের পক্ষেই ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে যারা সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন, তাদেরকে দমন করার জন্য এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে। এটি দেশের বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ফ্যাসিবাদ বলতে সাধারণত এমন একটি শাসনব্যবস্থাকে বোঝায়, যেখানে জনগণের অধিকার এবং স্বাধীন মতপ্রকাশের সুযোগকে দমন করা হয় এবং রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হয়। জেড আই খান পান্নার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার ঘটনা এটি স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলছে। বর্তমান শাসনব্যবস্থা যেভাবে বিরোধীদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে এবং বাকস্বাধীনতার সুযোগকে হরণ করছে, তা ফ্যাসিবাদের প্রতীক হিসেবে দেখা যেতে পারে।
যারা ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দাবী করেন, তারা নিজেরাই যখন বিরোধীদের দমন করছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছেন, তখন সেটি একটি দ্বৈত নীতির প্রতিফলন হয়ে দাঁড়ায়। ফ্যাসিবাদের ভূত যখন নিজের ঘাড়ে চেপে বসে, তখন তার বিরুদ্ধে লড়াই করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে যায়।
গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ হলো বিচার বিভাগের স্বাধীনতা। কিন্তু যখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করা হয় এবং সরকারের সমালোচকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়, তখন বিচার ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা কমে যায়। একটি গণতান্ত্রিক দেশে প্রত্যেক নাগরিকেরই স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার রয়েছে। কিন্তু সেই অধিকারকে যখন দমন করা হয়, তখন সেটি স্বাধীনতার চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়ায়।
জেড আই খান পান্না শুধু একজন প্রবীণ আইনজীবী নন, তিনি একজন সংগ্রামী নেতা, যিনি সবসময় দেশের স্বার্থে কাজ করেছেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা এবং তাকে হত্যাকারী আখ্যা দেয়া একটি ভয়ঙ্কর উদাহরণ, যা দেশের আইনব্যবস্থার সংকটকে সামনে নিয়ে আসে। এটি একটি দুঃখজনক বাস্তবতা যে, যারা একসময় সরকারের পক্ষের অবস্থান নিয়েছিলেন এবং জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করেছেন, তারা এখন সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন।
জেড আই খান পান্নার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা শুধু একটি ব্যক্তির ওপর আঘাত নয়, এটি দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং স্বাধীন বিচার বিভাগের ওপর আঘাত।
দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি স্বাধীন ও ন্যায়নিষ্ঠ বিচারব্যবস্থা অত্যন্ত প্রয়োজন। তাই দেশের সকল নাগরিকের দায়িত্ব হলো যে কোনো ধরনের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এবং সঠিক বিচার নিশ্চিত করা। জেড আই খান পান্নার মতো সাহসী কণ্ঠস্বরকে দমন করার প্রচেষ্টা একটি অশুভ সংকেত বহন করে। এটি শুধু বিচার বিভাগের জন্য নয়, দেশের ভবিষ্যতের জন্যও ক্ষতিকর।
জেড আই খান পান্নার বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলা দেশের বিচার বিভাগের সংকট এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার একটি দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি শুধু একটি নির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা নয়, এটি দেশের আইনি ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ওপর আঘাত। জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সুরক্ষিত রাখার জন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। বর্তমান সময়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে, প্রথমেই নিজের ঘাড় থেকে সেই ফ্যাসিবাদের ভূতকে নামাতে হবে। শুধু তখনই একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৩:০১
আমিই সাইফুল বলেছেন: সর্বদা সত্যের পক্ষে।
২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১২:৪৯
কামাল১৮ বলেছেন: হাজার হাজার মিথ্যা মামলার মাঝে একটা মিথ্যা মামলায় কি আর এমন আসে যায়।
২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৩:০২
আমিই সাইফুল বলেছেন: তাও ঠিক!
৩| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:৪৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: উনি কখনও বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা করেছেন?
উনি আইনজীবী। মিথ্যা মামলাকে ওনার ভয় পাওয়ার কথা না। উনি নিজেই নিশ্চয়ই মিথ্যা মামলার আসামীদের আইনি সাহায্য দিয়ে থাকেন।
২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:৫০
আমিই সাইফুল বলেছেন: ভাই আপনার কমেন্ট কোনটা সার্কাস্টিক আর কোনটা আসলেই আপনার মন্তব্য সেটা বুঝে উঠতেই খানিক সময় লাগছে।
৪| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:০৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি তো মন্তব্যের সঠিক উত্তর না দিয়ে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন। আমার কোন কথা সারকাসটিক মনে হয়েছে এবং কেন মনে হয়েছে?
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:০২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এসব ভুয়া মামলা দিয়ে মানুষের কন্ঠ রোধ করা যাবে না। অন্যায় হলে প্রতিবাদ করতে হবে।