নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কবি যখন বিদেশে =
দেশের এক বিশিষ্ট কবি এলেন আমেরিকার এক শহরে। উঠেছেন তাঁরই এক বন্ধুর বাসায়।
কবিকে সম্মান জানাতে এলাকাবাসী (দেশি অবশ্যই) তড়িঘড়ি একটা সম্বর্ধনা সভার আয়োজন করলেন। জরুরিভিত্তিতে ফুলের তোড়া, সুস্বাদু খাবার দাবার, ইত্যাদির ব্যবস্থা হলো স্থানীয় এক ভারতীয় রেস্তোরাঁয়। আয়োজকবৃন্দের নেতা ছাত্রাবস্থায় ছাত্রদল করতেন।
সভায় কবি আসবেন, কাব্যময় কথাবার্তা হবে, প্রবাসীদের সাথে খোলামেলা মত বিনিময় করবেন, অটোগ্রাফ দেবেন, নানাভাবে উৎসবময় পরিবেশ তৈরী করবেন এমনই ভাবনা সবার।
অবশেষে সবান্ধব কবি এলে উপস্থিত সকলের ধৈর্যের অবসান হলো। কবি আসন নিলেন। পুষ্পমাল্য এবং সম্মাননাপত্র দেয়া হলো তাঁকে। কবিকে অভ্যর্থনা জানিয়ে সুধীজন বক্তব্যও দিলেন। সন্ধ্যার শুরুটা বেশ ভালোই ছিল।
কবি কথা বলতে শুরু করলেন একসময়। এতো স্বল্প সময়ে সুন্দর একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে দেখে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েই মূল বক্তব্যে চলে গেলেন কবি। প্রথমেই তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালেন স্বাধীনতাবিরোধীদের হাত হতে দেশকে উদ্ধার করে আজকের এ ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপ দেবার জন্য।
দেশের উন্নয়নের বয়ান দিতে গিয়ে পদ্মাসেঁতু নির্মাণসহ আরো বেশকিছু প্রসঙ্গ নিয়ে এলেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ধন্যবাদও জানালেন মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীকে। দেশের মানুষকে ডিজিটাল আইডি উপহার দেবার প্রসঙ্গও টানলেন। এর মূল কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রীপুত্রের উল্লেখ করে তাঁকেও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করলেন। ...
এ ধারায় তাঁর বক্তব্য চলাকালেই প্রায় পঞ্চাশজনের জমায়েত অর্ধেকে নেমে এলো। এরই মাঝে আয়োজকবৃন্দের নেতাও কবিকে কানে কানে কি যেন বলে এলেন। কানালাপের পরপর কবি কিছু সাহিত্যালাপ শুরু করে আসর জমাতে চেষ্টা করলেও পাবলিকের সাড়া তেমন আর পাওয়া গেলো না। - -
পরদিন আয়োজক-প্রধান কবির বন্ধুকে ফোন দিয়ে বললেন, 'ভাই, আপনি কি জানতেন সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক বক্তব্যের পরিকল্পনা ছিল আপনার বন্ধুর?'
- না না, মোটেও না। আমি নিজেও ভাবিনি সে দেশের তথ্যমন্ত্রীর অনুকরণে বক্তব্য রাখবে সুদূর আমেরিকায় এসে।
- তাহলে কি ইচ্ছে করেই তিনি এ কাজটা করলেন?
- আমি জানিনা। যাক, আমাকে একটু তাঁর সাথে কথা বলতে দিন। পরে আপনাকে জানাচ্ছি। - -
কবির বন্ধু তাঁর সাথে বিষয়টা নিয়ে আলাপ করলেন। আলাপে কবি তাঁর বন্ধুকে বললেন: "বন্ধু, আমার কাছে খবর ছিল আমার বক্তব্য রেকর্ড করে তার চুলছেঁড়া বিশ্লেষণ করা হবে। তাই, আমি দায়িত্ব নিয়ে দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রবাসীদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।"
বন্ধু কবির বক্তব্য শুনে বললেন, "দোস্ত, দেশের উন্নয়নের গল্প বলে তুমি খারাপ কিছু করোনি। কিন্তু, সাধারণ মানুষ কি কবিসাহিত্যিকের আসরে উন্নয়নের গল্প শুনতে আসে?" ML Gani
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ ভোর ৪:৫২
এমএলজি বলেছেন: মেরুদন্ড সোজা করে লেখালেখি করলে কোন পুরস্কার কপালে জোটে না।
২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:০৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: ওনার বোধহয় মনের মধ্যে রাজ-কবি হবার ইচ্ছে আছে, কিন্তু তা না হয়ে উনি হয়ে আছেন একজন কবিরাজ!
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ ভোর ৪:৪৭
এমএলজি বলেছেন: জী, উনি বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই রাজকবি-লেখক-সাহিত্যিক বলে বিশেষ পরিচিতি পেয়েছেন।
৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৫২
এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: আপনারা কবিবরের পরিবর্তে কপিবর ধরে নিয়ে এসেছিলেন, ভালো করে খুঁজলে লেজটি ঠিকই দেখা যেত।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৪৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মেরুদণ্ডহীন কবি। এই কারণেই এদেশের বুদ্ধিজীবীদের এই অবস্থা।