নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভালবাসি বই পড়তে আর পছন্দ করি টুকটাক লিখতে, ভালো লাগে বুদ্ধিমানদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। দেশটাকে ভালোবাসি। সৎ-পরিশ্রমীদের শ্রদ্ধা করি। । আমার ব্লগ নিয়ে অনেক আগ্রহ আছে। কিন্তু কিছু জানি না। তাই জানতে চাই
জীবনে কিছু পাও আর না পাও, কিছু কর আর না কর,
কিছু হও আর না হও, কিছু থাক আর না থাক,
দুনিয়া এবং আখিরাতে বাচঁতে চাইলে মায়ের মনে কষ্টতো দুরে থাক, কোন কটু কথা বলা তো দুরে থাক, বলা বা করার চিন্তাও মনে আইনো না কেই।
দুনিয়াতে যে কোন খারাপ কাজের বা পাপের শাস্তি হোতেও পারে আবার নাও হতে পারে, যেমন এক লোক নামাজ না পরতে পারে, রোজা না রাখতে পারে ইত্যাদি… ইত্যাদি… but মায়ের মনে কষ্ট দেয়ার বিচার পরকালে তো হবেই মিস নাই but এই দুনিয়াতে হবেই হবেই,,, ইহা ১০০% সত্য।
যদিও মা-বাবা কোন সময় সন্তানের জন্য বদ-দোয়া বা অবিশাপ দেয় না। but মা-বাবার মনে কষ্ট দেয়াতে তারা যে নি:শ্বাস ছারে তাতেই পোলাপানের খবর হইয়া যায়।
দোয়া করলে তো আল্লাহ্ তালার আরশে গিয়ে বিনা বাধায় কবুল হবে তাতে কোন সন্ধেহ নাই।
আমরা আমাদের আশে পাশে এমন হাজারো অবাদ্ধ্য সন্তানের শাস্তির কথা জানি।
##পবিত্র কোরআনের অন্ততঃ পনের জায়গায় পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্যের কথা বলা হয়েছে।
সুরা লোকমানের ১৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, "আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার জোর নির্দেশ দিয়েছি কেননা তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। আমি আরো নির্দেশ দিয়েছি আমার প্রতি ও তোমার পিতামাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমারই কাছে ফিরে আসতে হবে।
অন্যদিকে সূরা বনি ইসরাইলের ২৩ ও ২৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করো না এবং পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার করো। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ' শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিওনা। তাদের সাথে শিষ্টাচারপূর্ণভাবে কথা বলো।'
অন্যদিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মায়ের মর্যাদা দিতে গিয়ে বলেছেন, জান্নাত মায়ের পদতলে। পিতার মর্যাদা সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পিতার সন্তুষ্টির ওপর আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং পিতার অসন্তুষ্টির ওপর আল্লাহর অসন্তুষ্টি নির্ভর করে। পিতামাতার সাথে অসৎ আচরণের পরিণাম সম্পর্কে তিনি বলেছেন, সবচেয়ে বড় কবিরা গুনাহ কী তা কি আমি তোমাদের জানাব ? তা হচ্ছে- আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা ও পিতা-মাতার সঙ্গে অসদাচরণ।
এ প্রসঙ্গে আমিরুল মোমেনীন হযরত আলী (আঃ) বলেছেন, পিতামাতাকে অসম্মান করা বড় ধরণের পাপ।
** রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন তাঁর সাহাবীদের সাথে আলাপ করছিলেন। এমন সময় এক বৃদ্ধা সেখানে এসে উপস্থিত হলেন। নবীজি বৃদ্ধাকে দেখে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন এবং তাঁর গায়ের চাদরটি মাটিয়ে বিছিয়ে তাকে বসতে দিলেন। তারপর অত্যন্ত দরদ দিয়ে বৃদ্ধার সাথে কথাবার্তা বললেন। বৃদ্ধা চলে গেলে সাহাবীরা বিষ্মিত হয়ে নবীজিকে জিজ্ঞেস করলেন,‘ কে এই মহিলা যার জন্য আপনার এতো দরদ, এতো আন্তরিকতা?' নবীজি উত্তরে বললেন, তিনি আমার দুধমাতা হালিমা। তিনি আরো জানালেন যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পরেই মায়ের স্থান এবং মায়ের পায়ের নিচেই সন্তানের বেহেশত।'
** সন্তান-মায়ের নাড়িকাটা ধন। রক্তের বাঁধন, অতি আপনজন। এই পৃথিবীতে মায়ের চেয়ে বড় আপনজন আর কেউ নেই। মা-সন্তানকে গর্ভে ধারণ করেন। দশমাস দশদিন পেটে রাখেন। গর্ভে থাকাকালীন অবস্থায় সন্তান মায়ের দেহ থেকে নাভি দিয়ে খাদ্য গ্রহণ করে। মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ট হবার সময় প্রসবকালীন কি যন্ত্রণা মাকে সহ্য করতে হয় তা ভূক্তভোগী ছাড়া অন্য কেউ বুঝতে পারবেনা। জন্মের পর সন্তানের লালন পালনের দায়িত্ব মাকেই পালন করতে হয়। তখন মায়ের দুধই হয় শিশুদের প্রধান খাদ্য। পবিত্র কুরআনে দুই বছর পর্যন্ত শিশুদের দুগ্ধদানের জন্য আল্লাহ সকল মাকে নির্দেশ দিয়েছেন। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠজীব মানুষ জন্মের পর বড়ই অসহায় থাকে। এক অসহায়ত্বের মেয়াদ হবে বেশ কয়েক বছর। এহেন অসহায় অবস্থায় প্রধান সাহায্যকারী থাকে মা। মা-অতি আদর যত্নে শিশুকে লালন-পালন করেন। সব সময় তার পরিচর্যা করেন। অসুখ-বিসুখে বিনিদ্র রজনী যাপন করে সেবা শুশ্রুষা করেন। কণকণে শীতের রাতে পর্ণকুটিরে কুপি জালিয়ে অসুস্থ শিশুকে পাহাড়া দেন। মমতার চাদর দিয়ে রৌদ্রের প্রখর উত্তাপ থেকে রক্ষা করেন।
**আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন,
‘রাবি্বর হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানি ছাগিরা।’
অর্থাৎ হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের মা-বাবাকে রহমত করুন। যেমনি শৈশবে তাঁরা আমাদের লালন-পালন করেছিলেন।’
(সুরা বনিইসরাইল, আয়াত ২৩-২৪)।
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,-‘
তোমরা আমার (আল্লাহর) শোকর করো এবং সঙ্গে সঙ্গে মা-বাবারও।’(সুরা লোকমান, আয়াত-১৪)
‘আর উপাসনা করো আল্লাহর, তাঁর সঙ্গে অপর কাউকে শরিক করো না । মা-বাবার সঙ্গে সৎ ও সদয় ব্যবহার করো।’ (সুরা নিসা, আয়াত ৩৬)।
সৃষ্টিজগতের মধ্যে সর্বাধিক অনুগ্রহকারী ও রহমদিল করে সৃষ্টি করা হয়েছে মাকে। সে জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসুল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পর মায়ের হক বা অধিকার বেশি। তা আমরা জানতে পারি আল্লাহর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিস থেকে।
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
‘এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আমি সর্বাগ্রে কার সঙ্গে সদাচরণ করব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন, তোমার মায়ের সঙ্গে, লোকটি আবার বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার ‘মা। লোকটি পুনরায় জিজ্ঞেস করল, তারপর কে? উত্তরে তিনি বললেন, তোমার মা। লোকটি আবার জিজ্ঞেস করল, অতঃপর কে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমার বাবা।’ (বোখারি-মুসলিম)।
উলি্লখিত হাদিসে তিনবার মায়ের কথা বলে চতুর্থবার বাবার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাহলে প্রতীয়মান হয় যে সন্তানের কাছে বাবার চেয়ে মায়ের গুরুত্ব তিন গুণ বেশি। একমাত্র ইসলামই মায়ের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে।
অপর এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করল, সন্তানের ওপর মা-বাবার হক কি? নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তাঁরা উভয়েই তোমার জান্নাত অথবা জাহান্নাম।’
(ইবনে মাজাহ)।অর্থাৎ তাঁদের আনুগত্য ও সেবাযত্ন জান্নাতে নিয়ে যায় এবং তাঁদের সঙ্গে বেয়াদবি ও তাঁদের অসন্তুষ্টি জাহান্নামে পৌছে দেয়। (তিরমিজি)।
আসমা (রা.) প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করলেন, আমার মা মুশরিক ও বেদীন। তিনি আমার কাছে দেখা করতে আসেন। তাঁকে আদর-আপ্যায়ন করা যাবে কি? প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, অবশ্যই তাঁকে আদর-আপ্যায়ন করবে।’ (বোখারি )
#আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে মা-বাবর খেদমত করার তৌফিক দান করুক। আমরা আমাদের জান্নাত আর জাহান্নাম নিজেরা যেন ঠিক বরে নিতে পারি। আমিন….
©somewhere in net ltd.