নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!
আমি সাধারণত স্কুলে কখনো টিফিন নিতাম না এক্কেবারে বাসায় এসে ভাত খেতাম! টিফিন ছুটি হলে আমরা ভবঘুরের মতো ঘুরতাম! কেউ খেলতো! মাঝে মাঝে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই নম্বর গেইটে গিয়ে সিঙ্গারা চমুচা চলতো,
.
গল্পটা শুধু আমার না আমার সব বন্ধুদের যাদের বাবারা দুই চার হাজার টাকা দামের জব করতো সবারি একই দশা!
.
বোর্ড পরীক্ষায় আমার জীবনে এক কিংবা দুইবার আমার বাবা পরীক্ষার হলে গিয়ে দিয়ে এসেছি জীবনের বাকী সব পরীক্ষায় আমি একাই গিয়েছি!
.
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলে থাকাকালীন আমার বাবা আমাকে বলেছিলো ক্লাশ এইটে বৃত্তি পরীক্ষায় টিকলে একটি সাইকেল কিনে দিবে!
.
সেই সাইকেল আর কিনে দেওয়া কখনো হয়নি পরে আমি নিজে টিউশনি করে রাজার হালে সাইক্লিং করতাম!
.
আমার অবস্থা আমার অনেক বন্ধুদের চেয়ে ভালো ছিলো কারণ আমরা দুই ভাই শরীফ এবং সুমন! ছোট সংসার!
.
বাবা যা ইনকাম করতেন তা গিয়ে সংসার টান টান উত্তেজনায় চলে যেতো! বাড়তি কিছু থাকতো না ফলস্বরূপ আমার পকেট খরচ আমি ম্যানেজ করতাম!
.
স্কুলের স্টাডি ট্যুরে কক্সবাজারে যাওয়ার ফি তিনশ টাকা আব্বু থেকে খুঁজবো কি না তা আমাকে তিনশো বার চিন্তা করতে হয়েছে কারণ আম্মু একটু চা বেশী পছন্দ করতো বলে বাজেটের দুটা ডিপ্লোমা দুধের প্যাকেট শেষ! ইনিয়ে বিনিয়ে আরেকটি বাজেট পাশ করানোর জন্য দুপুরে বাবার প্লেটে মাছ এক খন্ড বেশী বরাদ্দ করেছে!
.
আমার দাদী ফুফুরা সন্দ্বীপ থাকতো আর দাদা কুয়েত থাকতো, নাতী হিসেবে দাদাকে চিঠি লিখতাম মেরুন কালারের চার্জিং টর্চ লাইট পাঠাতে!
.
আমি যে ঘরে থাকতাম সেখানে সিলিং ফ্যান লাগানো যায় না কারণ মাথার উপরের টিন আমার মাথা ছুঁই ছুঁই! টেবিল ফ্যান ই ভরসা! ঝামেলা হলো টেবিল ফ্যান নষ্ট হয়ে যায় বলে আমি আরেকটি কিনবো কিনবো বলে তিন বছর কাটিয়ে দিয়েছি!
.
আমার লজিং টিচার ছিলো কিছু তারা আমি যে রুমে থাকি সে রুমে থাকতো আর খাওয়া থাকার বিনিময়ে পড়াতো এর বাহিরে আমি কখনো প্রাইভেট পড়িনি প্রয়োজন হলে অংক মুখস্ত করেছি অনেকবার,
.
জীবনের সব সিন্ধান্ত আমাদের একা নিতে হয়! আমি যখন অর্থনীতিতে ভর্তি হয় আমার বাবা উল্টো প্রশ্ন করেছিলো, এটা কেমন সাবজেক্ট একটু খোঁজ নিয়ে দেখে আমাকে জানাইস্!
.
তবুও জীবন বিন্দাস ছিলো! ফাইভ স্টার সিগারেট দুই বন্ধু মিলে দেদারচ্ছে টানতাম!
.
এক সিঙ্গারা তিন বন্ধু মিলে ভাগ করে খেতাম! ঈদে চার জন মিলে দোকান দিয়ে তিন চার মাইল দূর হাটহাজারী থেকে জিনিস কিনে এনে তা পুরো রমজানে বিক্রী করে ঈদের দিন বিকেলে টাকা ভাগ করতাম! এখনো স্পষ্ট মনে আছে একশ বায়ান্ন টাকা করে লাভ হয়েছিলো! বিল গেটস্ মনে হতো নিজেকে,
.
আমরা বন্ধুদের কিছু দিতে না পারলেও পরীক্ষার সময় টিউশনিটি দান করতাম এই শর্তে সুন্দরী ছাত্রীটির দিকে নজর দিবি না!
.
এক সময় আমি টিউশনি করে আমার বাবার চেয়ে বেশী ইনকাম করতাম! এলাকার মাষ্টার সাব্! তখন আমি দামী মোবাইল কিনে আব্বুকে তাক্ লাগিয়ে দিয়েছিলাম!
.
বন্ধু বান্ধব আড্ডা..... টাকা কোন বেপার না!
.
বক্স শার্ট জিন্স প্যান্ট কেডস্ থাকে গার্নিয়ার ব্রান্ডের প্রসাধানী থেকে শুরু করে কুল্ বডি স্প্রে......!
.
স্কুলের পর থেকে খুব প্রয়োজন না হলে কখনো আর বাবা থেকে টাকা নেওয়া হতো না,
.
আমার বাবার সারা জীবনের স্বপ্ন ছিলো মুদীর দোকানে বিশ হাজার টাকা দেনা শোধ করে টেনশন্ ফ্রি হয়ে গিয়ে নিজেকে সুখে আছি ভেবে জীবন কাটানো!
.
সময়গুলো পাল্টে গেছে! যায়! স্মৃতি হয়ে রয়ে থাকে নিম্ম মধ্যবিত্তের গল্পগুলো....! যে গল্পগুলো অবস্থা পরিবর্তন হলে লজ্জায় কখনো বলা হয় না! অথচ্ গল্পগুলো গর্বের....বুক ফুলিয়ে বলার মতো!
২| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৪৭
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: গল্পটি আসলেই গর্বের।
৩| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:১৭
বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: জীবনের গল্প
হতে পারে অল্প
ধন্যবাদ।
৪| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:৫৮
মাআইপা বলেছেন: খুব ভাল লাগলো পড়ে
ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩৬
বিজন রয় বলেছেন: সেদিন আর নেই কিংবা
এখন দিন আগের মতো নেই।
.............. একই কথা।