নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হঠাৎ করে আমি একবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে গিয়েছিলাম নিশা চৌধুরী নামে আমার ক্লাশমেটের প্রক্সি দিয়ে!
.
আমি অর্থনীতি পড়লেও আমার কিছু ক্লাশমেটের সাথে আমার কখনো আড্ডা তো দূরে থাক কথাও হয়নি মেয়েটি ছিলো তেমনি একজন!
.
সবসময় নেকাপ করে থাকতো! খুব ভদ্র এবং সুন্দর মেয়ে ছিলো! তাকে দেখলে আমার জেন্টেল এবং ভালো মেয়ে মনে হতো! আমার মতো অনেকের ই মনে হতো!
.
আমার বিবিএ পড়া এক বন্ধুর ক্রাশ ছিলো! সে রোজ তাকে দেখার জন্য স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকতো! বেপারটি ছিলো এমন! তার মুখে প্রশংসা শুনে আমারও মেয়েটির প্রতি একটু হলেও ভালো লাগা ছিলো!
.
আমার এক বন্ধুকে মনে হয় একবার ফোন করে বলেছিলাম ঐ মেয়েটাকে ভালো লাগে আমার মামার জন্য পাত্রী হিসেবে দেখবো এমন....!
.
আর এক বান্ধবীকে বলেছিলাম সে ক্লাশে আসে না কেনো! এর বাহিরে তার সাথে আমার কোন স্মৃতি নেই! ক্লাশে দেখা হতো জাস্ট এটাই!
.
প্রিয় তসলিম স্যার তখন আমাদের দুটি ক্লাশ নিতো! কে কে উপস্থিত আছে তার জন্য একটি প্রেজেন্ট শিট দেওয়া হতো! আমি সামনের বেঞ্চে বসতাম! প্রেজেন্ট শিট্ সামনে থেকে শুরু করে পুরো ক্লাশ ঘুরে আবার সামনে আসতো আর তখনি আমি প্রিয় বন্ধুদের অনুপস্থিতির জায়গায় সাইন করে দিতাম!
.
এভাবে চলছিলো! আমার এক প্রিয় বন্ধু বশিরের সাইন কোন রকমেই নকল করতে পারতাম না প্রেজেন্ট শিটে পূর্বে উল্লেখ থাকা সাইন দেখে! পবলেম হলো আজকের সাইন আজকে না দিতে পারলে আগামীকাল স্যার প্রেজেন্ট শিট বিতরণ করার আগে সেই ঘরে ক্রস চিহ্ন দিয়ে দিতো!
.
আমার বন্ধুর সাইন নকল না করতে পারলেও সে ছিলো আরেক ট্যালেন্ট পাবলিক! আমার দেখা অদ্ভুত টেলেন্টেড একটা ছেলে! চবি চকরিয়া পেকুয়া সমিতির সাবেক প্রেসিডেন্ট ছিলো! সে কলমের মারপ্যাঁচ দিয়ে এমন এক সাইন উদ্ভাবন করলো তাতে স্যারের দেওয়া পূর্বের ক্রস চিহ্ন নিমিষেই বিলীন হয়ে যেতো! প্রেজেন্ট স্যার! :p
.
চোরের দশ দিন তো স্যারের একদিন! হঠাৎ একদিন স্যারা সাইন আর উপস্থিতি গণনা করা শুরু করলো! জিরো জিরো সেভেন নিশা চৌধুরী আছেন? শালার ক্লাশে এই নামে কেউ নেই! পিন পতন নিস্তব্দতা! আবারো স্যার হুংকার দিয়ে বললো, তার আইডিতে কে সাইন করেছে? কেউ কোন জবাব দিচ্ছে না!
.
স্যার এবার বললো, স্বীকার করো তোমাদের মধ্যে কে প্রক্সি দিয়েছো! নাইলে আমার নামও তসলিম! যার আইডিতে প্রক্সি দিয়েছো তার ভর্তি বাতিল করা হবে মর্মে স্যার হুশিয়ারি বাণী দিলেন!
.
সময় দিলেন পাঁচ মিনিট! বিবেক দংশন করা শুরু করেছে! খাল কেটে কুমির এনেছি! আজ আমার কারণে একটি মেয়ের ভর্তি বাতিল হয়ে যাবে অথচ সে জানেও না কেউ একজন তার অনুপস্থিতিকে উপস্থিত বানিয়ে দিয়ে তার ভালো করতে গিয়ে আরো খারাপ করেছে!
.
তারপর হঠাৎ দাঁড়িয়ে স্যারকে বললাম, স্যার প্রক্সিটা আমি দিয়েছি কিন্তু সে আমাকে বলেও নি দিতে তবুও দিয়েছি!
.
স্যার ক্লাশের পরে তার সাথে দেখা করতে বললেন!!! ভাবলাম 'আজ থেকে তোমার ভর্তি বাতিল' ফর্মে সাইন করতে
.
ক্লাশের সবাই এহেন নতুন মজনুর সন্ধান পেয়ে অবাক বনে গেছে!
.
বেপারটা এক কান দুই কান হয়ে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে গেলো! আহা! কি লজ্জা মরি! মরি!
.
ক্লাশ শেষে স্যারের কাছে গেলাম! স্যার একটু বেশী আদর করতেন আমাকে তাই হয়তো রুমে ডেকে বললেন, তোমার সাহসের তারিফ করতে হয়! ওকে যাও এখন!
.
পরের দিন ক্লাশে স্যার এলেন! এসেই নিশা চৌধুরীকে দাঁড় করিয়ে বললেন, তুমি কি জানো কেউ তোমার অবর্তমানে তোমার প্রক্সি দিয়ে দেয়? সে বললো, না! স্যার এরপর আমাকে দাঁড়াতে বলে তাকে আমাকে দেখিয়ে দিলেন!
.
তারপর স্যার আমার কাছে এসে বললেন, তোমার খাতাটা দাও! সেগুলো উল্টে পাল্টে খুঁজছিলেন কোথাও মেয়েটির নাম লেখা আছে কি না!
.
কিন্তু না সেখানে একটা কবিতা টাইপ লেখা খুঁজে পেলেন! আমার বদঅভ্যেস আমার সামনে যখন যা থাকে তাতে আমি কিছু না কিছু লিখি,
.
সেই খাতার শূন্যস্থানে আমি কি যেনো লিখে রেখেছিলাম! স্যার সেটি পড়ে মারহাবা! মারহাবা! কবি সাহেব বলে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আবার বললো, জীবনের রিস্ক নিয়ে কেউ তোমার প্রক্সি দেয়! তাকে চিনে রাখো এমন কিছু!
.
তারপর থেকে মেয়েটি আমার সামনে আসলে আমি পিছন দিয়ে পালাতাম! ডানে আসলে বামে পালাতাম! একই ক্লাশে পড়া সত্ত্বেও এটি আমার কোন এক অজানা লজ্জায় একটি মেয়ে থেকে পালিয়ে থাকার গল্প!
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:০১
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: আর কখনো কথা হয়নি
২| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:১৬
কাউয়ার জাত বলেছেন: ব্লগে বেশ কিছু ব্লগার আছে যাদের সব লেখাই ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। তাদের লেখার সাথে আপনার লেখা তুলনা করলে যেটা বুঝতে পারি মান নয় মাল্টিবাজিই হচ্ছে তাদের সফলতার গোপন সূত্র।
চাঁদগাজি ব্যতীত একজন সেলিব্রেটি ব্লগারও বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেনা যে আলোচিত হতে অপকৌশলের আশ্রয় নেয়না।
আপনাকে সাধুবাদ। আপনার মধ্যে স্বভাবগত লেখনিপ্রতিভা রয়েছে। শুকরিয়া আদায় করুন। এবং সামনে এগিয়ে যান।
বিদ্র: পামে ফুলিবেন না। আমি থাকতে আপনার কোন ভরসাই নেই।
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:০১
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: আমি মনের ভাব প্রকাশ করতে এসেছি লেখক হতে তো না!
৩| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৮:২৩
মলাসইলমুইনা বলেছেন: মজা লাগলো আপনার লেখাটা | নিশা চৌধুরী নাম আমাদের ক্লাসে কেউ ছিল না তাই ঐ ধরণের কিছু নিয়ে আশা নিরাশার কিছু আমার ইউনিভার্সিটি জীবনে কখনো ঘটেনি | কিন্তু আপনার সাথে একটা জায়গায় আমার একটা মিল আছে আপনার লেখায় দেখলাম | ইউনিভার্সিটিতে আমার প্রত্যেকটা সাবজেক্টের খাতার প্রথম পাতায়ও ছোট কোনো কবিতা বা কবিতার ছোট প্যারাগ্রাফ লেখা থাকতো | মাঝে মাঝে আমার খাতা হাতছাড়া হয়ে যেত | বন্ধুরা কবিতা পড়ার জন্য খাতা একজনের পর আরেকজন জাট বদল করতো | মাঝে মাঝেই এমন হতো স্যার ক্লাসে লেকচার দেওয়া শুরু করেছেন কিন্তু আমার খাতা আমার কাছে নেই | কিছু করতেও পারছি না ! কি যে ছিল সব পেয়েছির ঢাবির দিনগুলো আমার !
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৬
আটলান্টিক বলেছেন: পরে নিশা চৌধুরী এই ব্যাপার নিয়ে আপনাকে কিছু বলেছিল?