নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!
যাদের গল্প কেউ লিখে না ওদের গল্প লিখার জন্য আমি জন্মেছি বলে আমার মনে হয় সেই গল্পগুলোর জন্য আমাকে তাদের সাথে মিশতে হয়
.
ষোল শহর দুই নম্বর থেকে অক্সিজেন রুটের অনেক টেম্পু ডাইভার হেলপারের সাথে আমার পরিচয় আছে তাদের কেউ বন্ধুও বটে
.
সকাল পাঁচটায় উঠে রহিম গাড়ি নেওয়ার জন্য মালিকের কাছে এসে হাজির ৷ সকাল ছয়টায় সে গাড়ি নেয় ৷ ঐ রুটে গাড়ি চালাতে ভাড়া গুণতে হয় বারশো টাকা
.
এরপর তেল খরচ থেকে শুরু করে হেল্পারের নাস্তা খরচ সব উঠিয়ে ওখান থেকে তাকে লাভ বের করতে হয়
.
আমি জানি তারা কিভাবে জ্যামের মধ্যে বারশো টাকা ভাড়া উঠাতে না পেরে বাসা থেকে টানা এনে দেয়
.
কিভাবে তারা ক্ষেপ মেরে একদিনে দুই হাজার টাকাও কামিয়ে ঘরে ফিরে
.
যদিও তাদের অনেকে ঘরে ফিরে না
.
সকাল ছয়টা থেকে শুরু করে রাত এগারোটা পর্যন্ত ঐ একটি রোডে নন স্টপ আপ ডাউন করে তারা !
.
রোদ, ধূলাবালি, জ্যাম, গালাগালি, ট্রাপিক, লাইন ম্যানের ধমক তাদের জীবনের অন্যরকম গল্প
.
তারা আবার ভাড়া থেকে ভাড়া নেয় মানে একশ টাকা আয় করলে বিশ টাকা তার আশি টাকা যে গাড়িটি বারশো টাকা ভাড়া নিয়েছে তার ! সেখানে এক টাকার জন্য যুদ্ধ হতেই পারে
.
এক ট্রিপ সাধারণত বায়জিদ থেকে ষোলশহর একবার আপ ডাউন কে বুজায় তো এক ট্রিপে এক পাশে ছয়জন অন্যপাশে ছয়জন করে বারো জন যাত্রী নিয়ে যায় জনপ্রতি ভাড়া ছয় টাকা সামনে একজনসহ এভারেজ ইনকাম একশ চল্লিশ টাকা সময় লাগে দেড় ঘন্টার মতো তাহলে ভাবুন গাড়ি ভাড়া জোগাড় করতে তাদের প্রায় আট দশ ঘন্টা গাড়ি চালাতো হয় !
.
ট্রাফিক পুলিশের ভাগ তো আছেই আবার লাইন খরচ ! সমিতি খরচ !
.
ঐ দিন এক ড্রাইভার বললো কেউ যদি ত্রিশ দিন ঐ রোডে এভাবে গাড়ি চালায় সে আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না সুতরাং তারা একদিন রেস্টে গাড়ি চালায়
.
ধরুণ এভারেজ পাঁচশ টাকা নেট ইনকাম সে মাসে বিশ দিন গাড়ি চালালো তার ইনকাম দশ হাজার টাকা ! এই টাকার প্রতি টাকায় টাকায় ছুঁয়ে পড়ছে ঘাম !
.
এই গল্পের সাথে ভিন্নমত পোষণ করলে আপনি ওদের সাথে মিশে দেখতে পারেন আর একদিন সকাল ছয়টা থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত ঐ গাড়িগুলো চালিয়েও দেখতে পারেন !
.
জীবন এখানে এমন ! ওরা সেই মানুষগুলো যারা এসব পেশায় না আসলে চুরি ডাকাতি চামারি করে দিন কাটাতে হতো ! জীবন যেখানে সংকটাপন্ন তাকে নিয়ম দেখাতে আসবেন না ৷ তাদের ও ইচ্ছে করে প্যান্ট শার্ট ইন করে চকচকে জুতো পালিস করে কাজ করতে !
.
বস্তির জীবন থেকে কেউ দুই থেকে দশ হাজার টাকা প্রাইভেট খরচ আর স্কুল ফি দিয়ে জজ ব্যারিষ্টার ইঞ্জিনিয়ার ডাক্তার আমলা ব্যাংকার কর্পোরেট অফিসার হয় না ! ওখানে বাংলা সিনেমার কাহিনী চলে না !
.
অশ্লীল গালির মধ্য দিয়ে তাদের জীবনের খুব দুঃখ যাতনাগুলো ফুটে উঠে.. !
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:০৪
দ্যা ফয়েজ ভাই বলেছেন: ভালো লাগলো,