নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!
আমার জীবনে তিনদিনের জন্য হকার হয়েছিলাম, ভর্তি পরীক্ষার সময় সস্তা পঞ্চাশ টাকার টি-শার্ট আর বিশ টাকার সেন্টু গেঞ্জি চল্লিশ টাকা করে বাঁশের ফ্রেম বানিয়ে ঝুলিয়ে বিক্রয় করেছিলাম সেই দিনগুলিতে
.
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের এক বড় ভাই একটি বিজ্ঞাপন দিল দৈনিক ১৫০ টাকা করে ভর্তি পরীক্ষায় পার্ট টাইম কর্মসংস্থান করতে ইচ্ছুক হলে ******* এই নাম্বারে যোগাযোগ করুন !
.
সমাজতত্ত্ব বিভাগের বন্ধু ফোন দিলো ভাইকে, ভাই পরে বেপারটা বুজিয়ে দিলো ৷ টাকা দরকার টাকা, যেভাবে আসুক না কেন ! চঃবিঃ'র বিভিন্ন স্পটে দুইজন করে নিয়োগ দিলো ৷
.
সেটি ছিলো আমার জীবনের প্রথম ভাইবা, ভাইভাতে একটি শব্দ, কে কি মনে করলো সেটা বিষয় না আমরা একটি সুযোগ পেয়েছি কাজে লাগাচ্ছি, চুরি তো করছি না, তোমরা পারবে? 'হাম ভাই আপনি বড় হয়ে পারলে আমরা পারবো না কেনো? '
.
আমার সাইকেলটি উনি ধার নিয়ে বললো এর মাধ্যমে দৈনিক বিশ টাকা বেশী দিবে আমাকে, যায় হোক শুরু হলো দুই বস্তা টি-শার্ট সেন্টু গেঞ্জি কাঁধে নিয়ে আমার স্পটে হকারের প্রস্তুতি নেওয়া
.
আমার সাথে সমাজ বিজ্ঞানে আরেকটা ফ্রেন্ড...!
.
চঃবিঃতে এ.এফ.রহমান হলের সামনে প্রথম খদ্দের টি-শার্ট চয়েজ করছে পছন্দ হয়নি বলে চলে গিয়ে আবার এসে জিঙ্গেস করলো, 'ভাই আপনাকে হকারের মত লাগছে না কেনু ! সো স্মার্ট ! '
.
দ্বিতীয় খদ্দের, 'চঃবিঃর ছাত্রদের কথা কি বলবো হকারগুলো সেইই ! '
.
তৃতীয় খদ্দের, 'ভাই এটা এটা নিবো, কিন্তু একটা কথা ছিল ! না থাক বলবো না ৷'
.
চতুর্থ খদ্দের পাশে এসিস্ট করা বন্ধুটির বান্ধবী.... "খাইছেরে শরীফ ভাই, হেব্বি বাথরুম ধরছে ! আপনি একটু থাকেন আমি একটু পর আসতেছি পরে পাশে গিয়ে দেয়ালে লুকালো ! "
.
এভাবে সকাল টু সন্ধ্যা চলছিল আমাদের সস্তা হকার জীবন...শত অভিজ্ঞতা ! মাঝে মাঝে নিজেই নিজে আপসোস করে বলতাম, কেনু যে ভাইভা দিতে গেলাম ! ধেত্তুরি ছাই !
.
বেপার কঠিন হয়ে দাড়ালো, নিউ মার্কেটের সামনে যেভাবে হকার উচ্ছেদ করে পক্টর ও আমাদের সেভাবে উচ্ছেদ করতো স্পটে গিয়ে গিয়ে, উচ্ছেদ কষ্টটা বড়ই বর্ণনাতীত !
>দোস্ত পক্টর আইতাছে, দ্রুত সব বস্তায় ভর !
>শালা ! তাড়াতাড়ি কর এবার ধরা খেলে নিশ্চিত ছাত্রত্ত্ব যাবে !
> এই দোস্ত তোদের কি অবস্থা? পক্টর এই মাত্র এফ রহমান ক্রস করে রব হলের দিকে যাচ্ছে, সাবধানে থাকিস !
> তোরা কই? দ্রুত পালা ! আজকে পক্টর স্যার সিরিয়াস ! পুলিশ নিয়ে আইছে !
.
পরে পক্টর স্যার বুজিয়ে বললো, তোমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সবাই তোমরা যদি হকারি করো বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানের কি হবে তোমরাই বলো ?
.
তো হকারি জীবনের শেষ দিন, সব ক্লোজ করে দিবো, বাঁশের ফ্রেমগুলো সব ভেঙ্গে গেছে ! ইয়া মুচিবত !
.
গেঞ্জি দুই চারটা কাঁধে ঝুলাইলাম, দুইটা হাতে আরো কিছু পাশে একটা ছোট গাছের ডাল ছিল তাতে....!
.
শেষ খদ্দেরটি এসে বললো, ভাই এটা এটা নিবো, আরেকটি কথা ভাই, আপনাকে দেখতে হকারের মত লাগছে না ! ইয়ে মানে আপনি কি ছাত্র ! 'হ্যাঁ আমি অর্থনীতিতে পরি ! ' ছেলেটি নির্বাক নয়নে তাকিয়ে থাকলো ! কোন দামাদামি করছে না ! তারপর বললো আরো তিনটা দেন ! মোট পাঁচটা নিলো যেতে যেতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে ! কি যেন বলতে চেয়ে বলতে পারলো না !
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২২
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: একদম সত্যি !
২| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:০০
সুমন কর বলেছেন: চরম অভিজ্ঞতা !!
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২২
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: সেইই অভিজ্ঞতা !
৩| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩৭
নতুন বলেছেন: জটিল অভিঙ্গতা... মাঝে মাঝে এমন জিনিসের দরকার আছে জীবনে... না হইলে জীবন পানশে।
১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:১১
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: একদম সুন্দর বলেছেন ! আসলেই দরকার আছে !
৪| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:৪৩
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: দারুণ অভিজ্ঞতা।
১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:১২
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: সেইইই একটা অভিজ্ঞতা ছিল !
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২১
মোঃ আবু সিয়াম বলেছেন: ঘটনা টি কী সত্তি??