নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!
২৪ শে মার্চ রুবি'র বিয়ে হয়েছিল কারণ রুবেল নামে একটি ছেলের সাথে তার প্রেম ছিল, নামগুলো ওদের নিজেদের দেওয়া এর পিছনের কারণ রবী ঠাকুর তার স্ত্রী ভবতারিনী দেবীর নাম পাল্টিয়ে রেখেছিলেন মৃণালিনী, শেষের কবিতায় অমিত টার্ন করলো অমিট রয়, নায়িকার নাম চেঞ্জ হয়ে বন্যা এমনকি নজরুলের অর্ধাঙ্গী প্রমিলা'র নামও চেঞ্জ হয়েছিল তবে কেন রাবেয়ার নয় ! সাহিত্যপ্রেমী রুবেল ও রাবেয়া খাতুনের নাম চেঞ্জ করে রেখেছিলেন রুবি যদিও রুবেলের নাম রুবেল ই থাকলো ! তবে বেপারী নামটা চেঞ্জ হলো ৷ রুবেল বেপারী থেকে রুবেল চৌধুরী যাই হোক কিঞ্চিত চেঞ্জ !
>
রুবেল যুদ্ধে যাবে বলে সংকল্প করেছে ৷ তাই বিয়েটা দ্রুত করে যেতে হচ্ছে ৷ স্বাধীনতার ডাক এসেছে ৷ কোন রকমে হুজুর ডেকে বিয়ে পড়িয়ে দেওয়া হলো ৷ রুবির মুখ দিয়ে কবুল বের হচ্ছে না কিন্তু চোখ দিয়ে ঠিকি অশ্রু গড়িয়ে হাত বেয়ে আঙ্গুলি স্পর্শ করে আংটির এক কোণ ভিজিয়ে দিচ্ছে ! রুবেলের ও নিজেকে অনেক ছোট মনে হচ্ছে ! ভালবাসার টানে মেয়েটি তার জীবনে এলো আর সে কি না যুদ্ধে চলে যাবে !
>
আনুষ্ঠানিকতা শেষে সারা রাত চৌকির এক পাশে বসে সে ভাবতে লাগলো ! কি করা উচিত তার ? একদিকে দেশ ! অন্যদিকে রুবি ! বাসর রাতটি যেন হয়ে গেলো জীবনের সবচেয়ে কঠিন রাত ! বুকের ভিতর হাহাকার করে উঠলো ৷ না যুদ্ধে সে যাবে না ! রুবিকে ছেড়ে কোথাও যাবে না রুবেল !
>
পরদিন সকালে উঠে রেডিও টিউন করে শুনতে পেলো ২৫ শে মার্চ পাক হানাদার বাহিনী দেশের অনেক জায়গায় আক্রমণ করেছে ঐ দিকে বাজতেছিল বজ্রকন্ঠের ভাষণ, "এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম........!" রক্ত টগবগ করে উঠলো রুবেলের ! কাউকে কিছু না বলেই ঐ মুহূর্তে দেশ মা কে বাঁচাতে সোজা হাঁটা ধরল ৷ পিছু ফিরে তাকাচ্ছে না কারণ তাকাতে গেলেই দুঃখ পাবে ৷ এই বাঁধন চিহ্ন করে যুদ্ধে যেতে পরবে না ! হৃদয়ে রুবি'র ভাবনা কপালে দেশ মাতা নিয়ে ক্যাম্পের দিকে এক কদম করে করে এগুচ্ছে , ভোরের কনকনে শীতে ও ঘামছে শরীল ! নিজেকে স্বার্থপর মনে হচ্ছে খুব !
>
একমাস পার হয়ে গেল ৷ যুদ্ধ চলছে ৷ বন্ধুকের বেয়ানট মুচতে মুচতে রুবির কথা ভাবছে ৷ অশ্রু বেয়ানটা ছুঁয়ে ট্রিগার পিচ্ছিল করে দিচ্ছিল ৷ বন্দুক কাধে নিয়ে তারপর সব সুখানুভূতি বাক্স বন্দি করে অপারেশনে গেল ৷ আজ অপারেশন সফল হয়েছে ! রুবিকে চিঠি লিখল প্রায় দুই মাস পরে কোন উত্তর আসছে না ৷ বুকে চিনচিন করে উঠলো কোন অঘটন ঘটল না তো আবার ! ভৌগলিক অব কাঠামোগত কারণে কোন খোঁজ নিতে পারছে না !
>
এভাবে যুদ্ধ চলছে সাথে অবসরে চিঠি ও কোন চিঠির উত্তর নেই ! খোঁজ খবর নেওয়ার চেষ্টা করেও বারবার ব্যর্থ হচ্ছে ৷ রুবির আশা ছেড়ে দিয়েছে রুবেল ৷ চোখের সামনে কত বাবা মা ভাই বোনের লাশ , ইজ্জত বাঁচাতে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ছে কেউ কেউ ! কেউবা আবার ডোবা নর্দমার পানিতে হানাদার বাহিনীর ভয়ে রাতে লুকিয়ে থাকে ! দেখতে দেখতে মন যেন পাথর হয়ে গেছে তার ! নয় মাস কিভাবে চলে গেল তা ই ভাবছে !
>
যুদ্ধ শেষে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত শরীলে দেশ মাতাকে মুক্ত করে নিজ গ্রামে ফিরে এসেছে, মনে অজানা ভয় কেমন আছে রুবি বাবা মা ! এইমাত্র ঘরে ডুকলো সে ! চৌকাঠে উষ্কু খুষ্কু হয়ে রুবি বসা ! এই রুবি ! এই রুবি ! আমি ফিরে এসেছি ! দেশ স্বাধীন করে তাকিয়ে দেখো ! কোন কথা বলছে না রুবি ! চোখ পাথর করে তাকিয়ে আছে সামনের দিকে , অল্প কিছু পরে হু হু করে কেঁদে উঠল রুবি ! সে আর রুবি নেই ! একজন ধর্ষিতা নারী ! তার পেঠে নয় মাসের সন্তান !
>
বজ্রকন্ঠে হুংকার দিয়ে উঠল রুবেল ! কে বলেছে তুমি ধর্ষিতা ! কার এতো বড় সাহস ! কোন সে হারামজাদা ! নাম বলো এখনি তাকে শুট করে দিবো ধরে ! তুমি বীরঙ্গনা ! তুমি ও যুদ্ধ করেছো ৷ দেশের জন্য নিজেকে বলিয়ে দিয়েছো ! সোনা বউ আমার ৷ আর যে আসছে সে একাত্তরের সন্তান ৷ দেশ মাতাকে মুক্ত করবো বলে তোমাকে বলে যেতে পারি নি ! একবার চেয়ে দেখো, তোমার স্বামী মুক্তিযুদ্ধ করে এসেছে ! সে একজন মুক্তিযোদ্ধা ৷ রুবেল রুবি নামের মত আমাদেরও মিল হয়েছে, রুবেল বীর, রুবি বীরাঙ্গনা ৷
২| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০৬
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: কৃতজ্ঞতা
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৬
প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ