নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!
২২ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে মা সন্তানকে কোলে করে আমার জানালা'র পাশে এসে বলছে, বাবা কিছু খয়রাত দাও, আমি ঘুম ঘুম চোখে বললাম, প্লিজ মাফ করেন, ঘুমাচ্ছি!! ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে যখন প্যাগোডার রোড দিয়ে যাচ্ছিলাম, সেই মহিলার সাথে দেখা হলো, স্বভাব সুলভ প্রশ্ন করে বসলাম, দু ঘন্টা আগে ও দেখছি, সন্তান কোলে, এখনো তাই? আপনার কষ্ট হয় না!! ফোকলা হাসি দিয়ে বলে, না বাবা, ছেলেটা কোল ছাড়া থাকতে চাই না!
কিছুদিন আগে পড়ছিলাম, সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় যে কষ্ট তা নাকি কোমরের হাড়গুলো যদি কোন দৈত্য এসে ভেঙ্গে দেয় তার চেয়েও নাকি কয়েকগুন বেশী, আমি বাবা, কমার্সের মানুষ, এতকিছু বুজি না, এটা বুজি, এমন ব্যথা সহ্য করার পরও নাকি সন্তানের মুখ দেখে কোন মা না হেসে থাকতে পারে না!! আবেগে কাইন্দালাইছি/হাইসালাইছি টাইপের আজব কারবার! কেমনে পারে? উওরটা আপনার মায়ের কাছে ৷ গল্প লিখে তো আর ব্যথা বুজাতে পারবো না তাই আমার পড়া একটি গল্প তুলে ধরলাম,
একদিন ছেলেটি তার মা'র কাছে গিয়ে একটা বিল
জমা দিল...
মা ছেলের দেয়া চিরকুটটা পড়লেন...
ছেলে লিখেছেঃ
১. গাছে পানি দেয়াঃ ১০ টাকা
২. দোকান থেকে এটা-ওটা কিনে দেয়াঃ ১৫টাকা
৩. ছোট ভাইকে কোলে রাখাঃ ৪০টাকা
৪. ডাস্টবিনে ময়লা ফেলাঃ ২০টাকা
৫. পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করাঃ ৫০টাকা
৬. মশারী টানানোঃ ৫ টাকা
... মোটঃ ১৪০ টাকা!!
মা বিলটা পড়ে মুচকি হাসলেন...
তারপর তার আট বছরের ছেলের মুখের দিকে
খানিকক্ষণ
তাকিয়ে রইলেন...
তার চোখে পানি চলে আসছে...
তিনি এক টুকরো কাগজ নিয়ে লিখতে লাগলেন....
১. তোমাকে ১০মাস পেটে ধারনঃ বিনা পয়সায়
২. তোমাকে দুগ্ধপান করানোঃ বিনা পয়সায়
৩. তোমার জন্য রাতের পর রাত জেগে থাকাঃ বিনা
পয়সায়
৪. তোমার অসুখ-বিসুখে তোমার জন্য দোয়াকরা,
সেবা করা,
ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যাওয়া,তোমার জন্য চোখের
পানি ফেলাঃ বিনা পয়সায়
৫. তোমাকে গোসল করানোঃ বিনা পয়সায়
৬. তোমাকে গল্প,গান,ছড়া শোনানোঃ বিনা পয়সায়
৭. তোমার জন্য খেলনা, কাপড় চোপড় কেনাঃবিনা
পয়সায়
৮. তোমার কাথা ধোওয়া, শুকানো, বদলে দেওয়াঃ
বিনা পয়সায়
৯. তোমাকে লেখাপড়া শেখানোঃ বিনা পয়সায়
১০. এবং তোমাকে আমার নিজের থেকেও বেশি
ভালোবাসাঃ সম্পূর্ন
বিনা পয়সায় …
অতঃপর সন্তান তার মার হাত থেকে বিল টা নিয়ে
নিচে ছোট্ট
করে লিখে দিল=এ বিল জীবন দিয়েও পরিশোধ
করাসম্ভব নয়।
আমি নিজ চোখে এক বন্ধুকে দেখেছি তার কোন ইনকাম নেই, সে নিজ খরচে এদিক ওদিক ঋণ করে ঢাকা থেকে মায়ের অপারেশন করিয়ে এনেছে, যে ছেলে আমার মনে হয় না এর আগে ঢাকায় গিয়েছে কিনা! আমার চোখে তা খুব সাধারণ একটি ছেলের যুদ্ধ জয়ের ইতিহাস, এ কারণে তাকে আমি মন থেকে শ্রদ্ধা করি,
কিছুদিন আগে এক 'মা' আমার দরজার সামনে ভোরে এসে হাউমাউ করে কাদতেছে, দরজা খোলার পর জানলাম, তার ছেলেকে পুলিশে ধরে নিয়ে গেছে, সবাই মিলে বুজালাম, তবুও মায়ের মন কোন রকমেই বিশ্বাস করে না, খুব ভালো লাগলো ছেলেটা যখন ছাড়া পেয়েছিল,পুলিশ ভাইদের প্রতি অনুরোধ, মায়ের ছেলেদের অনর্থক মায়ের কোল থেকে দূরে সরিয়ে রাখবেন না,
এই কয়েক দিন আগে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি এক্সিডেন্ট হয়, এক মা শুনছে তার ছেলেও নাকি এক্সিডেন্ট করছে, আগে কখনো দেখি নি ওনাকে, খবর নিয়ে জানলাম তার তার ছেলে সুস্থ আছে, আবার জিঙ্গেস করল, বাবা! তুমি কি ঠিক বলছ!! ছল ছল চোখ নিয়ে বোরকা পড়া ধার্মিক মহিলা লজ্জা পেয়ে বারবার জিঙ্গেস করছে একই কথা, এটা খেয়াল রাখছে, আমি বিরক্ত হচ্ছি কিনা, আর একটু বুজিয়ে বললাম, টেনশনের কিছু নেই, শুনে তার আনন্দিত মুখ দেখে কেন জানি মাদার তেরেসা মুখমন্ডল ভেসে আসল!! আমরা মানুষরা সব এক মায়ের সন্তান, আদম-হাওয়ার সন্তান ৷
০২ রা এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:২২
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইজান ৷
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:৫৮
মুহাম্মদ তৌহিদ বলেছেন: কথা সত্যি।