নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাজিদ উল হক আবির

সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯) ৭।শহরনামা (উপন্যাস, মাওলা ব্রাদার্স, ২০২২), ৮। মুরাকামির শেহেরজাদ ও অন্যান্য গল্প (অনুবাদ, ২০২৩), ৯। নির্বাচিত দেবদূত(গল্পগ্রন্থ, ২০২৪), ১০। দেওয়ানেগির চল্লিশ কানুন/ফরটি রুলস অফ লাভ (অনুবাদ, ঐতিহ্য, ২০২৪)

সাজিদ উল হক আবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঙাল মস্তিস্কের বি উপনিবেশায়ন, নোকতা ৬ঃ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর মাঝে ইসলামোফোবিয়ার চর্চা

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪৭



১।
গত এক দশক ধরে ওয়েস্টার্ন সোসাইটিতে চর্চিত ইসলামোফোবিয়া নিয়ে বিস্তীর্ণ পরিসরে অ্যাকাডেমিক গবেষণা, এবং ইসলামোফোবিয়ার পক্ষে বিপক্ষে যুক্তিতর্ক হয়েছে। পাশ্চাত্যে ইসলামোফবিয়া থাকা স্বাভাবিক, কারণ সেখানে মুসলিমরা সংখ্যালঘু হলেও আত্মপরিচয়ের ব্যাপারে সচেতন। ওয়েস্টের মুসলিমদের চরিত্রের এ ব্যাপারটাই সেকুলার লিবারেল ডেমোক্রেটিক ওয়েস্টের জনগণের জন্য হজম করা মুশকিল। ফলে তাদের জন্যে দরকার হয়ে পড়ে হিজাব বা বুরখা বা নিকাব ব্যান করে দেয়া। দেশে ইসলামিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যান করা। মসজিদে ইমামদের উপর নজরদারি বাড়ানো, এবং জিরো টলারেন্সে তাদের ভিসা বাতিল করে নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়া।

এ পর্যায়ে একটা প্রশ্ন প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়ায়, পৃথিবীর যে সমস্ত দেশে মুসলিমরাই সংখ্যাগুরু, সে সমস্ত দেশে বা সমাজেও ইসলামোফোবিয়া কাজ করে কিনা। প্রশ্নটা কিছুটা অ্যাবজার্ড লাগতে পারে, কারণ, মুসলিম মেজোরিটি সোসাইটিতে ইসলামোফোবিয়া থাকবেই বা কেন, আর থাকলে তা কাজ করবেই বা কীভাবে, বা এমন একটা সোসাইটিতে ইসলামোফোবিয়ার প্রয়োজনই বা কি, - এ সমস্ত প্রশ্নও এসে একই সঙ্গে হানা দেয় আমাদের মস্তিষ্কে, এবং মুসলিম মেজোরিটি সোসাইটিতে ইসলামোফোবিয়ার চর্চা এই আইডিয়াটাকে অপ্রাসঙ্গিক করে তোলে।

এক্ষেত্রে আরও একটি প্রশ্ন তাহলে প্রসঙ্গক্রমে এসে পড়ে - ইসলামোফোবিয়ার চর্চা, প্রয়োগ ও বিস্তারকে আলোচনার একমাত্র লেন্স কি কেবল জনসংখ্যার মেজরিটি - মাইনোরিটির বাইনারি - ই? নাকি আরও কিছু কিছু লেন্স রয়েছে, যার অধীনে ইসলামোফোবিয়া মুসলিম মেজোরিটি সোসাইটিতেও প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে?

সাম্প্রতিক গবেষণায় আশংকাজনকভাবে উঠে এসেছে যে, এন্টি মুসলিম সেন্টিমেন্ট এবং রেসিজম - মুসলিম মেজোরিটি দেশগুলোতেও গভীরভাবে প্রোথিত হয়ে আছে দীর্ঘ দীর্ঘ কাল যাবত। শুধু যে কনসেপ্ট আকারে মানুষের মনে ইসলামোফোবিয়া সক্রিয় আছে তাই নয়, মুসলিম মেজরিটি দেশগুলোর পাবলিক পলিসি, ষ্টেট ইডিওলজি, এলিট সোসাইটির সঙ্গে জনসাধারণ সম্পর্ক, এবং মিডিয়ার অরিয়েন্টেশনের পেছনেও যে ইসলামোফোবিয়া, বা এন্টি মুসলিম রেসিজম সক্রিয় আছে, বা থাকতে পারে - সাম্প্রতিক কিছু গবেষণার আগে এ ছিল আমাদের ধারণার বাইরে। কাজেই ইসলামোফোবিয়ার চরিত্র কেবল সংখ্যালঘু - সংখ্যাগুরু (পাশ্চাত্যে যেমন) বাইনারিতে ফেলে দেখাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। ইসলামোফোবিয়ার আঁতুড়ঘর হিসেবে ক্ষমতাসীন - ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠীর বাইনারিকেও চিহ্নিত করতে হবে। সহজভাষায় যদি বলি, মুসলিম সংখ্যাগুরু দেশের ক্ষমতাসীন এলিট জনগোষ্ঠী, বা সামরিক জান্তা সক্রিয়ভাবে ইসলামোফোবিয়ার চর্চা করতে পারে, আদারিং করতে পারে - নিজের ধর্মীয় পরিচয়কে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে রেখে ক্ষমতায় থাকা এলিট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াই চালিয়ে যাওয়া ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠীকে ডিহিউম্যানাইজ, এবং ডিমোরালাইজ করতে। মুসলিম সংখ্যাগুরু দেশ বা জাতির বিশ্ববীক্ষা যদি ইউরোসেন্ট্রিক (পাশ্চাত্য অভিমুখী) হয়, তাহলে সে সমস্ত জাতিগোষ্ঠীর মধ্যেও ইসলামোফোবিয়া এপিস্টেমিক রেসিজমের টুল হিসেবে সক্রিয় থাকে। সেক্ষেত্রে মুখোমুখি দাঁড়ায় ওয়েস্টার্নাইজ মুসলিম এলিটদের সঙ্গে কনজারভেটিভ মুসলিম ম্যাস / জনসাধারণের জীবনাদর্শ।

কাজেই, এটা বলা যায় যে মুসলিম পৃথিবীতে, এবং পাশ্চাত্যে - উভয়ক্ষেত্রে ইসলামোফোবিয়া একই ইডিওলজিক্যাল, এবং এপিস্টেমোলজিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে উদ্ভূত। কারণ, ইসলামোফোবিয়া সংক্রান্ত আলোচনা, তর্কবিতর্ক (ডিসকোর্সেস অ্যান্ড ডিবেট) - উভয় সমাজব্যবস্থাতেই প্রায় একই প্যাটার্নে এগোয়। তবে পাশ্চাত্যে, এবং মুসলিম মেজরিটি সোসাইটিতে ইসলামোফবিয়ার চর্চা ও প্রয়োগে ভিন্নতা দেখা দেয় উক্ত দেশ ও জাতিসমূহের ঐতিহাসিক, সামাজিক, ডেমোগ্রাফিক (জন্ম - মৃত্যু - জনসঙ্খ্যা ইত্যাদি), এবং রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতের ভিন্নতার উপর ভিত্তি করে। সর্বোপরি, সমসাময়িক মুসলিম সোসাইটি, এবং মুসলিম মেজোরিটি নেশন ষ্টেটগুলো কীভাবে ফাংশান করছে - সেটা বোঝা সম্ভব হবে না, যদি না সেসমস্ত সোসাইটিতে সরাসরি, বা অন্তর্নিহিত উপায়ে ইসলামোফোবিয়া কীভাবে সক্রিয় আছে - সেটা বোঝার চেষ্টা না করা হয়। অন্যভাবে বললে, ইসলামোফোবিয়ার লেন্সকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করে একবিংশ শতাব্দীর মুসলিম মেজরিটি সোসাইটির কার্যক্রম ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলে সে ব্যাখ্যা কখনোই স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে না। এবং এই বিশ্লেষণের জন্যে যে টাইমফ্রেম আমাদের বাছাই করা লাগবে, তা হতে হবে ইউরোপিয়ান ঔপনিবেশিক শক্তির অধীনে গোলামী করার সময়কাল থেকে শুরু করে, আজকের দিন পর্যন্ত।

২।
আলোচনার এ পর্যায়ে ইসলামোফোবিয়ার সংজ্ঞায়ন জরুরী।

যেকোনো ধরণের এন্টি - মুসলিম রেসিজমকেই আমরা মোটাদাগে ইসলামোফোবিয়া বলে অভিহিত করতে পারি। সহজ ভাষায় বললে, শুধুমাত্র নিজের মুসলিম আইডেন্টিটি, ইডিওলজি, এবং মুসলিম সাইন - সিম্বলস শরীরে ধারণ করবার জন্যে যদি কেউ ব্যক্তিগত, সামাজিক, বা রাষ্ট্রিক পরিসরে রেসিজমের শিকার হয়, তবে সেটা ইসলামোফোবিয়া। যদি কোন জনগোষ্ঠী ক্ষমতা দখল করতে চায়, দখলকৃত ক্ষমতা পোক্ত করতে চায়, পোক্তকৃত ক্ষমতার বিস্তৃতি আরও ছড়াতে চায় - দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীকে পশ্চাৎপদ, মধ্যযুগীয় বর্বর বলে আখ্যা দিয়ে, তাদের / তাদের জীবনাদর্শকে দমন পীড়নের মাধ্যমে, এবং মুসলিম জনগোষ্ঠীকে তাদের সামাজিক ও মানবিক অধিকার ও মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করে, তবে সেটা ইসলামোফোবিয়া। যদি মুসলিম হবার কারণে কোন সমাজে আদারিং , বা 'আমরা - ওরা' করে জাজমেন্টের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী তৈরি বা ব্যবহার করা হয়, তবে সেটাও ইসলামোফোবিয়া।


ইসলামোফোবিয়ার কিছু চরিত্র সনাক্ত করা যাক, তাঁর সংজ্ঞায়নের পর।

প্রথমত, ইসলামোফোবিয়ার প্রাথমিক টার্গেট হচ্ছে নেতিবাচক অর্থে একটা স্ট্যাটিক বা অপরিবর্তনশীল মুসলিম আইডেন্টিটি তৈরি করা।
উদাহরণস্বরূপ - মুসলমান পুরুষ মাত্রই চার বিয়ে করতে চায়। মুসলমান পুরুষ মাত্রই যৌনলোলুপ, তাদের ধর্মকর্ম আসলে বেহেশতে গিয়ে ৭২ টা হুর আর অগণিত গেলমান লাভের আশায় পালন করা। মুসলমান পুরুষ মাত্রই নারী অধিকার বিরোধী। মুসলমান নারী মাত্রই দুর্বল। তাদের কোন এজেন্সি নাই। মুসলমান মাত্রই অশিক্ষিত, মধ্যযুগীয় বর্বর। ইত্যাদি। মুসলমানদের এই পরিচয় প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত কখনো বদলায় নাই, ভবিষ্যতেও বদলাবে না।


দ্বিতীয়ত, একটা স্ট্যাটিক নেগেটিভ মুসলিম আইদেন্টিটি তৈরি করবার পর, পৃথিবীর সমস্ত অঞ্চলের সমস্ত মুসলিমদের সেই একই নেতিবাচক আইডেন্টিটির স্কেলে ফেলে জেনারালাইজড করা। ভিন্ন ভিন্ন ভু রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মুসলিমদের আইডেন্টিটি বোঝার চেষ্টা না করা।

তৃতীয়ত, এই 'নারীলোলুপ অশিক্ষিত বর্বর' মুসলিম সমাজকে সরাসরি রাষ্ট্রক্ষমতার বিরুদ্ধে উপস্থাপন করবার চেষ্টা ক্রমাগতভাবে চালিয়ে যাওয়া। ইসলামোফোবিয়া এ ক্ষেত্রে একটা পলিটিকাল ফ্রেমওয়ার্ক হিসেবে কাজ করে। কারণ ইসলামোফোবিয়া মুসলিম জনগোষ্ঠীকে বরাবর ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধবাদী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। একই সঙ্গে কোন রাষ্ট্রের মুসলিম মেজোরিটি জনগোষ্ঠী যদি তাঁর সমাজের এপিস্টেমোলজিক্যাল ওয়েস্টার্ন হেজিমনির তল্পিবাহক এলিট জনগোষ্ঠীর ব্যাপারে ক্রিটিকাল দৃষ্টিভঙ্গী বজায় রাখে, ইসলামোফোবিয়া, রেসিয়াল গভর্নমেন্টালিটির ফর্ম হিসেবে সেই ক্রিটিকাল মুসলিম জনগোষ্ঠীকেও সমাজ ও রাষ্ট্রের শত্রু হিসেবে উপস্থাপন করে। তাদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দমন পীড়নে সচেষ্ট হয়।

৩।
পূর্বের আলোচনা আবারো সারসংক্ষেপ করে সামনে এগোনো যাক।

এন্টি মুসলিম রেসিজম কেবলমাত্র সংখ্যালঘু - সংখ্যাগুরু বাইনারিতে দেখলে হবে না, ক্ষমতাসীন - ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠীর বাইনারিও এই সিস্টেমিক রেসিজমকে বোঝা ও লোকেট করবার জন্যে জরুরী। ওয়েস্টার্নাইজড সেকুলার মুসলিম এলিট আর মুসলিম কনজারভেটিভ জনসাধারণের সম্পর্কের পাওয়ার ডায়নামিকস বুঝলে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর মধ্যেও কেন প্রবলভাবে নিজের ধর্মীয় আইডেনটিটির প্রতি ঘৃণা কাজ করে সম্ভব - সেটা বোঝা যাবে।

যা হোক, যেকোনো সমাজব্যবস্থায় ইসলামোফোবিয়ার জন্ম ও বিস্তৃতিকে বুঝতে হবে ওয়ার্ল্ড সিস্টেম থিয়োরি, এপিস্টেমিক রেসিজম, এবং সেকুলারিজমের লেন্স দিয়ে। মুসলিম সমাজের ওয়েস্টার্নাইজড এলিটদের নিজেদের ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আইডেন্টিটিকে ঘৃণার চোখে দেখার বা বিচার করার দৃষ্টিভঙ্গী, এবং একটা এলিয়েন, ওয়েস্টার্নাইজড ওয়ার্ল্ডভিউর সাহায্য নিয়ে নিজেদের আইডেন্টিটি পুনঃনির্মাণ করার চেষ্টা করা - এ প্রক্রিয়াসমূহকে সেলফ অরিয়েন্টালাইজেশন, এবং সেলফ ওয়েস্টার্নাইজেশন আমব্রেলা টার্মের অধীনে আলোচনা করা যায়। প্রক্রিয়া যাই হোক, দিনের শেষে এই এলিট মুসলিম সোসাইটির জনগোষ্ঠী নিজেদের মুসলিম পরিচয়কে ঘৃণা করাই আরম্ভ করে, এবং যে কেউ তাকে তাঁর মুসলিম পরিচয়ের কথা, বা তাঁর প্রতি দায়বদ্ধতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, সে তাকে বা তাদেরও নিজের শত্রু হিসেবে গণ্য করতে আরম্ভ করে। এটাকে শুধু কলোনিয়ালিজমের আফটারম্যাথ হিসেবে দেখলে হবে না, একই সঙ্গে বর্তমান সমাজ বাস্তবতায় দানবীয় শক্তিধারী, সর্বগ্রাসী মডার্ন সেকুলার ওয়েস্টের সঙ্গে যে সাংঘর্ষিক, দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক বাকি পৃথিবীর, তাঁর আলোকেও বিচার করা লাগবে। এই ওয়েস্টার্ন সেকুলার আইডেন্টিটি তাঁর বিপরীতে দাঁড়ানো যেকোনো সমাজব্যবস্থা ও বিশ্ববীক্ষাকেই পশ্চাৎপদ, অনাধুনিক, অবৈজ্ঞানিক হিসেবে ক্যারেক্টার অ্যাসাসিনেট করবার চেষ্টা করে। ইসলামিক সোসাইটি এবং সিভিলাইজেশনও তাঁর একই মনোভাবের শিকার।

কখনো কখনো ইসলামোফোবিয়ার প্রবক্তারা স্যামুয়েল হান্টিংটনের ক্ল্যাশ অফ সিভিলাইজেশন থেকে 'ইসলামোফ্যাসিজম' টার্মটা ধার করে ইসলামিক আইডেন্টিটি এবং রীতিনীতিকে আঁকড়ে থাকা মুসলিম জনগোষ্ঠীর উপর কাউন্টার ফ্যাসিস্ট অ্যাক্ট পরিচালনা করে এবং সেক্ষেত্রে তারা তাদের ন্যারেটিভ তৈরি করে ইউরোপিয়ান জুডিও ক্রিশ্চিয়ান ইডিওলজির উপর বেইজ করে।

৪।
যে কোন সিস্টেমিক রেসিজম ভায়লেন্স এবং তাঁর বিপরীতমুখী রেসিজমকে ত্বরান্বিত করে, এটা বোঝার এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ তুরস্ক।

তুরস্কের ইস্তাম্বুলের ইবন হালদুন ইউনিভার্সিটির পলিটিকাল সায়েন্স অ্যান্ড থিওরিজের গবেষক আলি আসলান 'আধুনিক' তুরস্কের গড়নে ইসলামোফোবিয়াকে একটি প্রধানতম অনুঘটক হিসেবে চিহ্নিত করেন (২০১৯)। কামাল আতাতুর্কের সেকুলার টার্কিতে ইসলাম, এবং ইসলামিক আইডেন্টিটিকে নবনির্মিত তুরস্ক নেশন ষ্টেটের চরমতম শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। গবেষক আসলানের মতে, ইসলামোফোবিয়াকে ব্যবহার করে প্রথমে অটোম্যান এম্পায়ার উৎখাত করে সেকুলার টার্কিশ রিপাবলিক তৈরি করা হয়, এবং পরবর্তীতে পুরো তুরস্কের জনগণকে বাধ্য করা হয় সেই সেকুলার ন্যাশনালিস্ট রিয়্যালিটি গিলতে। এই গেলানোর কাজটি করতে গিয়ে তুরস্কে জন্ম নেয় এক অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী সরকারের, যাদের সঙ্গে জনসাধারণের তেমন কোন যোগাযোগ ছিল না। ফলশ্রুতিতে, কিছুটা সময় লাগলেও, এক পর্যায়ে এসে দেশের অভ্যন্তরে সমস্ত গণতান্ত্রিক মানসিকতার ধারকবাহক জনগোষ্ঠী ধীরে ধীরে এই ফ্যাসিস্ট সেকুলার ডিক্টেটরিয়াল আতাতুর্ক রেজিমের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে দাঁড়ায়। সেই ডেমোক্রেটিক ব্লকের সর্ববৃহৎ অংশ ছিল ১৯৪০ সালের পর থেকে তুরস্কে নিষ্ক্রিয় করে রাখা রিলেজিয়াস - কনজারভেটিভ ম্যাস পপুলেশন। তারই ফলশ্রুতিতে ২০০০ সালের পরে কামালিস্ট ব্যুরোক্রেটিক পন্থায় ধ্বস নামে, এবং তারা তুরস্কের রাজনীতি থেকে ঝাড়ে বংশে উধাও হয়ে যায়। সেকুলারিজমের নামেও যদি অগণতান্ত্রিক মনোভাবের চর্চা করা হয়, এবং দেশের সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় - সামাজিক পরিচয়ের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ছড়ানো হয়, তবে তাঁর ফলাফল কি হতে পারে, সে ব্যাপারে শিক্ষা নেয়ার জন্যে, আলি আসলানের মতে, তুরস্ক এক বৈশ্বিক হটস্পট।

বারকেলে ইউনিভার্সিটির গবেষক মে কসবা ২০১১ সালের ইজিপ্ট রেভলিউশনের ব্যাপারে লেখেন - মুরসি গভর্নমেন্ট ছিল মডার্ন ইজিপ্টের ইতিহাসের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার (২০১৯)। তাদের উৎখাত করে সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন প্রধান জেনারেল সি সি ক্ষমতায় এসে বসবার পরই - ওয়েস্টার্ন ন্যারেটিভ ফলো করে মুরসি গভর্নমেন্টকে পত্রপত্রিকায়, এবং টিভি চ্যানেলগুলিতে ডেমোনাইজ - ডিহিউম্যানাইজ করে উপস্থাপন করা শুরু করে। মে কসবা আরও উল্লেখ করেন, মুরসি এবং তাঁর ফলোয়ারদের পলিটিকালি সাইডলাইনড এবং এলিয়েনেটেড করবার জন্যে জার্মান বা ফ্রেঞ্চ রাইট উইং পলিটিশিয়ানদের মতোই ইসলামোফবিক বক্তব্য রাখা হয়, এবং সর্বোপরি মুরসির সরকারকে উৎখাত করতে গিয়ে সামরিক সি সি সরকার আলটিমেটলি মিশরে ইসলামোফোবিয়ার চর্চাই এখন পর্যন্ত করে যাচ্ছে। হাভার্ড ইউনিভার্সিটির গবেষক ডায়ানা আবদেল কাদের তাঁর পৃথক গবেশনায় উল্লেখ করেন, কলোনিয়াল ব্রিটিশ এম্পায়ারের চাপিয়ে দেয়া এই সেকুলার - মুসলিম সম্পর্কের টানাপোড়েনেই ১৯২৮ সালে মুসলিম ব্রাদারহুডের জন্ম হয়(২০১৯)। কলোনিয়াল, বা এম্পিরিয়ালিস্টিক এই ইসলামোফোবিক এজেন্ডাগুলি যদি এখনো কোন মুসলিম মেজোরিটি কমিউনিটির এলিট বা মিলিটারি ক্লাস নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে ব্যবহার করে, তবে তাঁর বিপরীতে রিলেজিয়াস এক্সট্রিমিজম দানা বাঁধতে থাকবে ধীরে ধীরে। আর এই অবস্থা এড়ানোর জন্যে যেকোনো ধরণের ফোবিয়া, বা পরিচয়সন্ত্রাস এবং সে সূত্রে জন্ম নেয়া সিস্টেমিক রেসিজমকে গোড়াতেই থামিয়ে দেয়া হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

৫।

বিশ্ববিক্ষা শিক্ষাদানের নামে নিজেদের প্রাক্তন ঔপনিবেশিক ভুরাজনৈতিক ডোমেইনে এখনো সক্রিয় সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তিসমূহ। মুসলিম সংখ্যালঘু দেশগুলিতে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে মুসলিমরা তেমন প্রাসঙ্গিক নয়। কিন্তু যে সমস্ত মুসলিমপ্রধান দেশগুলি তাদের এককালের ঔপনিবেশিক ক্লায়েন্ট ছিল, তাদের উপর নিজেদের হেজিমনিক প্রভাব বজায় রাখার সহজ এক উপায় হচ্ছে, তাদের ধর্মীয় - সামাজিক - সংস্ক্রিতিক আত্মপরিচয়কে ডেমোনাইজড, ডিহিউমেনাইজড রূপে উপস্থাপন, এবং পাশ্চাত্যের সেকুলার মতাদর্শকে কোনরকমের প্রশ্ন - প্রাসঙ্গিকিকরন ছাড়াই মানবতার মুক্তির বারোটা (বার্তা) হিসেবে রিপ্রেজেন্টেশন, এবং গিলিয়ে খাওয়ানো। এটা সেই একই মিশনারি জিল, যা নিয়ে ষোড়শ শতকে ইউরোপিয়ানরা সারা পৃথিবীতে আলো জ্বালানোর নাম করে জাহাজে চেপে বেরিয়েছিল একদিন। তাদের ঔপনিবেশিক আমলের লুটপাট, রক্তক্ষরণের ফসল আজকে তাদের ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, জ্ঞানবিজ্ঞানে প্রভুত উন্নতি। কাজেই পাশ্চাত্যের কাছ থেকে আজ না নিয়ে আমাদের উপায় নেই, কিন্তু তারা সেধে আমাদের যা কিছু দিতে আসে, তা অর্থ সাহায্য হোক, বা ইডিওলজি - আমাদের সতর্ক চোখেই তা বিবেচনা করতে হবে।

(পুরো প্রবন্ধটি আমার নিজের মতো করে সাজানো। তবে তথ্যগুলো সব Islamophobia In Muslim Majority Societies by Enes bayrajkli, and Farid Hafez (eds.), Routledge Advances in Sociology বইটি থেকে গৃহীত।)



(ছবিসুত্রঃ view this link )

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৫৩

*কালজয়ী* বলেছেন: তথ্যসমৃদ্ধ আলোচনা।

পশ্চিমাদের জ্ঞানের জগতে প্রাচ্য, ধর্ম ও নন-ইউরোপিয়ানেদের বিরুদ্ধে বর্নবাদী অংশের মোকাবেলা পশ্চিমা বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই করেছেন। এর মধ্যে আছেন ব্রিটিশ সমাজবিজ্ঞানী আন্থনি গিডেন্স, ফরাসী সমাজবিজ্ঞানী ইমাইল ডুর্খেইম ও দার্শনিক মিশেল ফুকো, সমাজবিজ্ঞানী বার্কার,জার্মান বিজ্ঞানী ও দার্শনিক Gottfried Wilhelm Leibniz, জার্মান দার্শনিক Christian Wolff, ফরাসী অর্থনিতিবিদ ও ডাক্তার François Quesnay, অধ্যাপক Edward W Said, মার্কিন দার্শনিক Bryan W Van Norden, মার্কিন অধ্যাপক James Maffie ও Kyle Powys Whyte,

সিঙ্গাপুরের দার্শনিক Bryan W Van Norden, ভারতীয় দার্শনিক Surendra Nath Dasgupta, এশিয়ান দার্শনিক Jonardon Ganeri, কোরিয়ান অধ্যাপক Mark Siderits,

ঘানার দার্শনিক Kwame Gyekye ও Kwasi Wiredu।

উপর্যুক্ত গবেষকেরা কমবেশি পশ্চিমা বর্ণবাদের সমালোচনা করেছেন। পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা করতে গিয়ে তাত্ত্বিক ও গবেষকেরা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের উত্থানের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। এরা হলেন, John A. Hobson and Thorstein Veblen, Joseph Schumpeter and Norman Angell.

শুভকামনা+

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:২৯

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার বিস্তারিত মন্তব্যে। আপনার জন্যেও শুভকামনা।

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৫৭

নেফারতিতি❣️ বলেছেন: সুন্দর লিখা।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:২১

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ। শুভকামনা।

৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:০৯

এ আর ১৫ বলেছেন: বিশ্বব্যাপি ইসলামফোবিয়া সৃষ্ঠি হওয়ার পিছনে অনেক যুক্তি সংগত কারন আছে , এমন কি মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে মৌলবাদি পিলিটিক্যাল ইসলাম ফোবিয়া কাজ করে । চরম পন্থি ইসলাম শুধু অমুসলিমকে আঘাত করে না , ভিন্ন মতালম্বি মুসলমানরা এর ভিকটিম , তাই ইসলামফোবিয়া গোটা বিশ্বে জাগ্রত ।
রেডিক্যাল মুসলমানদের ভিতরে একটা কাল্পনিক ফোবিয়া বিরাজ করছে বা তারা সৃষ্ঠি করেছে যার কোন বাস্তব অস্তিত নেই । সেই ফোবিয়ার নাম ইহুদী নাসা ফোবিয়া এবং যত অপকর্ম ঘটে সেটা নাকি ইহুদী নাসা ষড়যন্ত্র ।
ইসলামি ফোবিয়া একটা বাস্তবিক বিষয় এবং এর পিছনে মৌলবাদি পলিটিক্যাল ইসলাম নিয়োজিত কিন্তু ইহুদী নাসা ষড়যন্ত্রটা তো একটা কাল্পনিক প্রচার ।
কারন ইহুদী এবং নাসাদের ৯০% হয় সেকুলার , নয় নাস্তিক , নয় ধর্মহীন --- সুতরাং এরা প্রপার বা অর্থডক্স ইহুদী নাসা নহে এবং এরা বাইবেল তোরাকে একটা মিথ অথবা গাজাখোরি কাহিণী মনে করে । তারমানে এই ৯০% ইহুদী নাসা তথা কথিত ইহুদী নাসা যড়যন্ত্রকারি নহে এবং এই গ্রুপটাই সকল ক্ষমতা রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে ।
বাকি ১০% এর মধ্যে ৮ % শুধু ধর্মের রিচুয়াল অনুসরন করে , তার মানে প্রকৃত ইহুদী নাসা মাত্র ২% । এই ২ %কে বাকি ৯৮% ইহুদী নাসার বংশধররা পাত্তাই দেয় না , তাদের কোন রাজনৈতিক সামাজিক প্রভাব নেই । তারমানে তাদের কাউর যেমন উপকার করার ক্ষমতা নেই , ঠিক তেমনি কাউর কোন ক্ষতি করার ক্ষমতা নেই ।

এই নিরবিষ ২% ইহুদী নাসা কি করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, সেটা বোধগম্য নহে ।
তবে মৌলবাদি মুসলমানরা ইহুদী নাসার ষড়যন্ত্র তথা ফোবিয়া নামক মিথ সৃষ্ঠি করে ড্রামা করে চলেছে ।
এবার ইহুদী নাসা ফোবিয়া নিয়ে একটা প্রবন্ধ লিখে ফেলুন। ধন্যবাদ

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:২১

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ছোটভাই, রেডিকেল মুসলিম কি জিনিস?

৪| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৩৫

নগরবালক বলেছেন: লিখাটা আরোও মনযোগ দিয়ে পড়তে হবে, মোবাইলে ভালভবে পড়তে পারছি না।
তবে অল্প একটু পড়ে আমি বাবুনগরী রাস্ট্রপতি আর মামুনুল প্রধানমন্ত্রী এমন একটা দেশের কল্পনা করে ভয়ে শিউরে উঠছি। আমি কি ইসলামফোবিয়ায় আক্রান্ত?

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:১০

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আপনি ইসলামোফোবিক দুটো কারণে। প্রথমত, আপনি বাংলাদেশের ইসলামকে, এবং মুসলিমদের পুরো এজেন্সি তুলে দিচ্ছেন বাবুনগরী আর মামুনুল হকের হাতে, টিটকারি মারতে গিয়ে। এটা সিলেক্টিভ স্যাম্পলিং, যেটা একটা অপরাধ। দ্বিতীয়ত, হেফাজতে ইসলামের নানা ইস্যুতে মাঠে লাফালাফি থাকলেও, তাদের নেতাদের ফর্মাল বক্তব্য হচ্ছে - তারা দলগতভাবে কোন রাজনৈতিক উচ্চাশা রাখে না। মানে তারা নির্বাচন করবে না কখনো। অথচ আপনি তাদের তুলে এনে বাংলাদেশের সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়া করিয়ে দিচ্ছেন, রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে। এটা উপরে ইসলামোফোবিক মানুষদের তৃতীয় বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে যায়। তাছাড়াও, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিজে হজ - ওমরা হজ করা মানুষ। তাঁর দল থেকে মনোনয়ন পাওয়া মুজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর মতো ইসলামিস্ট দাঁড়ি - টুপিওয়ালা পীরও আছেন। কাজেই আওয়ামীলীগ তো বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু মুসলিমদের রিপ্রেজেন্টকারী রাজনৈতিক শক্তি - ই।

লেখাটা আর কষ্ট করে না পড়লেও চলে। ব্রেইনকে এতো চাপ দিয়ে লাভ কী? ইউরোপে আছেন, ঐখানকার কন্ডিশন নিয়ে চিন্তাভাবনা করেন।

৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৪

আশাবাদী অধম বলেছেন: পড়লাম। পোস্টের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। বাংলাদেশের কথাই ধরুন। একটি মুসলিম মেজরিটি দেশ হওয়া সত্ত্বেও এদেশের ম্যাস মিডিয়া প্রায় সম্পূর্ণটাই ইসলামফোবিক। তবে এক্ষেত্রে তারা সব সময় সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে। সবধরনের ইসলামপন্থা, সিম্বল, ও রিচুয়ালকে সব সময়ে স্বাধীনতার চেতনার বিরুদ্ধে দাড় করিয়ে দিতে পারা। অথবা ধর্মীয় আদর্শের সবাইকে বিশেষ একটি ট্যাগ লাগিয়ে দিতে পারা যুগ যুগ ধরে তাদের জন্য বিশাল এক আশীর্বাদ হয়ে আছে।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:২৩

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আপনাকেও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই। মিডিয়া চলে মিডিয়া মুঘলদের ঢালা পয়সার উপর ভিত্তি করে। কিন্তু এখনো সোশ্যাল মিডিয়ায়, বা অ্যাকাডেমিক ফিল্ডে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে চলতে থাকা রেসিজম, ক্যারিকেচার নিয়ে গঠনমূলক আলাপ করা যায়। স্বাধীনতার চেতনার বিরুদ্ধে ইসলামকে দাঁড় করিয়ে দেয়ার পেছনে বাংলাদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ভুল আছে। আপনার মন্তব্যের জবাব দেয়ার আগে বীরশ্রেষ্ঠ, বীরউত্তম, বীরবিক্রম, বীর প্রতীকদের অফিশিয়াল তালিকা দেখলাম। চারজন বাদে বাকি সবাই মুসলিম। পাকিস্তানী হানাদারদের হাত থেকে দেশ স্বাধীন করতে এদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীও অকাতরে প্রাণ দিয়েছে। কেন তবে ইসলাম, বা মুসলিমকে স্বাধীনতার মূল চেতনার বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দেয়া? এই প্রোপ্যাগান্ডা যারা পরিচালনা করে, তারা দেশের শত্রু, তারা স্বাধীনতার শত্রু, তারা বাংলাদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীরো শত্রু, তাদের পরিচয় যাই হোক না কেন।

৬| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৮:২২

ঢাবিয়ান বলেছেন: প্রকৃত ধার্মিক হবার চাইতে বকধার্মিক হলে যেমন অনেক ফায়দা তেমনি ইসলামোফোবিয়ার চর্চা করলেও অনেক ফায়দা। তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের দেশে বকধার্মিক এবং ইসলামোফোবিকের সংখ্যাই এখন বেশি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.