নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বয়ী ইন্দ্রিয়ানুভূতির ওপর বিশ্বাস না করলে কোন জ্ঞানই আয়ত্ত করা যায় না । ইন্দ্রিয় হয়তো অনেক ভুল করায় , কিন্তু বারংবার চর্চা দ্বারা তাকে সংশোধন করে উৎকর্ষ লাভ করা সম্ভব।
৫২ জন শ্রমিককে হত্যা করা হলো। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো প্রতিক্রিয়া নাই। কারণ ওরা শ্রমিক, ওরা তো আর মানুষ না।
চারতলায় তুলে সিঁড়ির গেট বন্ধ করে জেনোসাইড চললো। অবশ্য এই জেনোসাইড বাজারে তেমন দাম পাবে না। কারণ শ্রমিকের প্রাণের মূল্য ৫০ হাজার টাকা।
অথচ আজ যদি পরীমণি বা জয়া আহসান একটা ব্লাউজ ছাড়া ছবি দিতো, তাহলেই আমরা হৈহৈরৈরৈ করে উঠতাম।
কথা সত্য। আমাদের কাছে ৫২ জন শ্রমিকের প্রাণের চেয়ে নায়িকার ব্লাউজ বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
ছাত্রসমাজের কথা তুলে লাভ নাই। এই ছাত্রসমাজ বিসিএস দেওয়ার জন্য MP3 পড়তে জানে, প্রতিবাদ করতে জানে না। এদের কাছে শ্রমিকের জীবন গুরুত্বপূর্ণ না। তবে সংখ্যাটা গুরুত্বপূর্ণ। ৫২ জন। প্রিলিতে আসলে কাজে লাগবে।
এই দেশে এখন প্রতিবাদটাও হয় সিলেক্টিভ প্রতিবাদ। আপনি যদি এলিট ইউনিভার্সিটির না হন, আপনি যদি এলিট সমাজের না হন, আপনার জন্য কোনো কুত্তাও রাস্তায় নামবে না। কারণ আপনার জীবনের দাম ৫০ হাজার টাকা মাত্র।
তাইতো ইউএস বাংলার এলিটরা মরলে যখন শোকের মাতম চলে, আমার শ্রমিক ভাইদের জেনোসাইড তখন বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়েই থাকে। ওটা মার্কেট পায় না। কেন পাবে? শ্রমিকরা তো আর এলিট সমাজের অংশ না, তাই না?
তাইতো রানা প্লাজায় শ্রমিক মরে, তাজরীন ফ্যাশনে মরে, বাঁশখালিতে মরে, নারায়নগঞ্জেও মরে। মাথাপ্রতি ৫০ হাজার করে দিলেই কাহিনী খালাস। ভবিষ্যতেও মরবে। বাজারে তেলের দাম বাড়বে, শ্রমিকের প্রাণের দাম কিন্তু বাড়বে না।
অথচ চাইলে অনেক কিছুই করা যেত। চাইলে এক দিনের ভেতরেই পণ্য বয়কট করে একটা মাফিয়া কোম্পানিকে পথের ফকির বানানো যাইতো। চাইলে শহরে শহরে বিক্ষোভের ঢেউ তোলা যেত। চাইলেই "নিরাপদ কাজের পরিবেশ চাই" হ্যাশট্যাগে হ্যাশট্যাগে ফেসবুক ছেয়ে ফেলা যেত।
কিন্তু আমরা তো চাইই না। আমরা একটু আহা আহা করতে চাই। একটু চুচু শব্দ করে আবার ইউরোতে ডুব দিতে চাই, কোপার ফাইনাল নিয়ে আলাপ করতে চাই। পরীমণি বা মিথিলার কাপড় নিয়ে আলাপ করতে চাই।
তারপর ক্লান্ত হয়ে ঐ মহান গ্রুপের ম্যাঙ্গো জুসে গলা ভেজাতে চাই, সুখের সাগরে ভেসে যেতে চাই। শ্রমিক মরছে মরুক, আমার জুসের সাপ্লাইটা ঠিকভাবে চললেই তো হলো, নাকি?
আমরা খুব ভালো করেই জানি, ঐ মিষ্টি জুসে ৫২ শ্রমিকের নোনতা রক্ত লেগে আছে। জেনেও আমরা ঐ জুস পান করি। ড্রাকুলার কাছে মানুষের রক্ত পান করা অস্বাভাবিক কিছু তো না!!
মাফিয়া মালিকের শাস্তির সাথে সাথে এই ড্রাকুলা আমাদের বিচারের দাবিটাও আমি রেখে গেলাম, আদালত!!