নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বয়ী ইন্দ্রিয়ানুভূতির ওপর বিশ্বাস না করলে কোন জ্ঞানই আয়ত্ত করা যায় না । ইন্দ্রিয় হয়তো অনেক ভুল করায় , কিন্তু বারংবার চর্চা দ্বারা তাকে সংশোধন করে উৎকর্ষ লাভ করা সম্ভব।
মানব কায়া অচিন্ত্য আত্মার যন্ত্রস্বরু...
জালাল উদ্দীন রুমি (রহ.) এর জন্ম ৬০৪ হিজরী সনের, ৬ই রবিউল আউয়াল ৩০ শে সেপ্টেম্বর ১২০৭ সালে আফগানিস্থানের বলখ নগরীতে। তাঁর পিতার নাম সুলতান বাহা উদ্দিন ওয়ালাদ। তিনি সুলতানুল ওলামা বা আলেম সম্রাট নামে পরিচিত ছিলেন।মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি (রহ.) এর প্রাথমিক শিক্ষা দীক্ষার দায়িত্ব ন্যস্ত হয়, তৎকালীন সময়ের প্রখ্যাত বুযুর্গ্য, সৈয়দ বুরহান উদ্দিন (রহ.) এর নিকট। এছাড়া তিনি সেই সময়ের বিখ্যাত কামেল দরবেশ খাজা ফরিদ উদ্দিন আক্তারের নিকট গমন করেন। খাজা ফরিদ উদ্দিনআক্তার, বালক রুমীর দিকে দৃষ্টিপাত করে বলেছিলেন, আপনার সন্তানের প্রতি লক্ষ্য রাখবেন। অদূর ভবিষ্যতে সে প্রেমদগ্ধ হৃদয়ে, প্রেমের বহ্নি শিখা প্রজ্বলিত করবে।খাজা সাহেব বালক রূমীকে স্বরচিত একখানা কিতাব ‘গাওহার নামা’ উপহার দিয়েছিলেন। উক্ত কিতাব খানা পাঠ করে, রুমি কাব্য জগতে প্রবেশে অনুপ্রেরনা লাভ করেন।পরবর্তী সময়ে রূমী জ্ঞান-বিজ্ঞান অর্জনের জন্য সিরিয়ার অন্তগর্ত দামেশ্ক শহরে আগমন করেন এবং জাহেরী ও বাতেনী বিদ্যা চর্চা ও আধ্যাত্মিক সাধনা শুরু করেন।৬৩৫ হিজরী সনে, রুমি পুনরায় কাউনিয়া শহরে ফিরে আসেন এবং এখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করার সিদ্ধান্ত নেন। এই সময়ে কাউনিয়া আগমন করেন খ্যাতিমান দরবেশ শামসে তাবরীযি। ঘটনা চক্রে শামসে তাবরীযির সাথে মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি র সাক্ষাত হয়। সুখ্যত প্রাচ্যবিদ ই.জি.ব্রাউন তাঁর সুপ্রসিদ্ধ “লিটারারী হিস্ট্রী অফ পারশিয়া” গ্রন্থে শামসে তাবরীযি ও জালাল উদ্দিন রুমি র সাক্ষাৎকার নিয়ে মনোজ্ঞ কাহিনী লিপিবদ্ধ করে গেছেন। কথিত আছে সাক্ষাৎকালে মাওলানাজালাল উদ্দিন রুমি র হাতে ছিল এক সুবিখ্যাত দর্শন পুস্তক। শামসে তাবরীযি হস্তস্পর্শে পুস্তক পরিনত হয় পবিত্র কোরআনে। এভাবে শামসের তাবরীযির আধ্যাত্মিক প্রভাবে জালাল উদ্দিন রুমি র মধ্যে দেখা দেয় বিরাট এক পরিবর্তন। পুথিগত বিদ্যাচর্চা ও জাগতিক জ্ঞান অনুশীলন পরিত্যাগ করে জালাল উদ্দিন রুমি পরিনত হন শামসে তাবরিযির একনিষ্ঠ ভক্ত অনুরক্ত মুরিদ। আজ আন্তজার্তিক বুদ্ধি বৃত্তির জগৎ যে জালালা উদ্দিন রুমি কে পেয়েছে, সে জালাল উদ্দিন রুমি মূলত শামসেতাবরীযির অবদান।মাওলানা রুমি “দিওয়ান-ই- শামসের তাবরীযি রচনা করে স্বীয় আধ্যাত্মিক পীর ও মুর্শিদের প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতার পরিচয় রেখে গেছেন।কথিত আছে, মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমির উপরে মুর্শিদ শামসে তাবরীযির এহন প্রভাব প্রতিপত্তি লক্ষ্য করে মাওলানা রুমির অনুসারী ও অনুরাগীরা ভীষন ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন। মাওলানা রুমিকে সামনে রেখে জাগতিক প্রভাব প্রতিপত্তি বিস্তারের যে স্বপ্ন তারা এতোদিন দেখে আসছিলেন, শামসে তাবরীযির আগমনে তা ধুলিসাৎ হয়ে যায়। শোনা যায় মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমির নিজ পুত্র ও এই দলে ছিলেন। একদা এরাই জালাল উদ্দিন রুমির অনুপস্থিতির সুযোগে শামসের তাবরীযিকে হত্যা করেন। রুহানী রাহবরের এই মর্মান্তুদ মৃত্যুতে জালাল উদ্দিন রুমি এতোদূর শোকাভিভূত হয়ে পড়েন যে, জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণ হয়ে উঠেন। এই সময়ে মুর্শিদের আধ্যাত্মিক প্রভাব তাঁকে ভাবোন্মত্ততার এক নতুন পর্যায়ে উন্নীত করে।জালাল উদ্দিন রুমি শোক সন্তপ্ত হৃদয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে এক ঐশী শক্তি সম্পন্ন কাব্যিক নির্ঝর। ভাবোন্মত্ততার এই ধারায় রচিত হয় তার জগৎ বিখ্যত মসনবী শরীফ।মসনবী শরীফকে বলা হয় ফার্সী ভাষার কোরআন।মসনবীয়ে হস্ত কোরআঁদরজবানে পাহলবীমসনবীয়ে মওলুবীয়ে মানবী।মাওলানা রুমি নিজেও বলে গেছেন, পবিত্র কোরআনে মজ্জা বা মূল সারবস্তু এখানে তুলে ধরা হয়েছে।কামড়া-কামরি করা যাদের স্বভাব তাদের জন্য রইল হাড় হাড্ডি।রুমির ভাষায়বসন্ত বিহারে বিশ্বের সকল গোপনীয়তা প্রকাশ পায়।আমার বসন্ত যখন আসবেতখন আমার যাবতীয় আধ্যাত্মিক রহস্য প্রস্ফুটিত হবে।অনত্র লিখেছেনতুমি যদি সন্ধান করো তবে আমাদেরকে আনন্দ দিয়ে সন্ধান করো কারন আমরা আনন্দের ভূবনে বাস করি।শুধু যাঁদের ভালোবাসা নির্মল আনন্দময় তাঁদের ছাড়াহতশার ময়দানে পরিভ্রমন করো না।কারণ আশা আছে,্ এই আশা সত্য,এই আশা বিদ্যমান অনুসন্ধানের দিকে পা বাড়িয়ো না।শুনে রাখ সূর্যেরা বিদ্যমান।শামসে তাবরীযির সহিত রুমীর হৃদয় অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। শামসে তাবরীযি রুমির অন্তরে ইশকে এলাহির আগুন এমনভাবে প্রজ্জ্বলিত দিয়েছিলেন যে, রুমী এশকে এলাহির প্রেম গাথা সামা কাওযালী গান শ্রবণ না করলে আদৌ স্বস্তি পেতেন না। তাই তিনি গজল ও কাওয়ালীর মজলিসে নিয়মিত উপস্থিত থাকতেন।শাসমে তাবরীযির প্রতি প্রেমের শরাব পান করে এক সময়ে মাওলানা রুমী উপলদ্ধি করলেন যে, তিনিই খোদ শাসমে তাবরীযিতে পরিনত হয়েছেন। শামসেতাবরীযিকে অন্বেষণ করতে গিয়ে প্রকৃত পক্ষে তিনি নিজেকেই অন্বেষণ করেছেন। শাসমে তাবরীযি পূর্ণ আধ্যাত্মিক জ্যোতি তাঁর নিজের অন্তরেই পূর্ণ বিকশিত হয়েছে।রুমি স্থায়ী পীর শামসে তাবরীযির অন্তধার্নে যে নিদারুন ব্যথা তার অন্তরে অনুভব করেছিলেন তা কাব্য আকারে রচনা করেন “কুল্লিয়াতে শামসে তবরীয” কিতাবে ।উক্ত কাব্য গ্রন্থে ৫০ হাজার শ্লোক দ্বিপদী কবিতা রয়েছে।উক্ত কথা মালায় বিশেষভাবে শামসে তবরীযির প্রশংসা ও নিজ শোকাহত হৃদয়ের ব্যথা বেদনাই প্রকাশ পায়।রুমির সুযোগ্য শিষ্য ও বন্ধু শেখ হুসামুদ্দীন চালপী অনুপ্রেরনায় “মসনবী শরীফ” রচনা করেন।মনবসী শরীফের প্রথম পঙতিটি ছিলবিশনু আয়নায় চুঁ হেকায়েত মীকুনাদঅয্ জুদায়ীহা শেকায়েত মীকুনাদঅর্থাৎ- বাশির কাছে শোন সে কি কাহিনী বর্ননা করিতেছে। সে বিরহ যন্ত্রনার অভিযোগ করিতেছে। মাওলানা রুমি রচিত সবচেয়ে বিখ্যাত গ্রন্থ “মসনবী”। ফার্সি সাহিত্য সম্পদ ছয় খন্ডে বিভক্ত মসনবীতে প্রায় ২৬ হাজার ছন্দবদ্ধ দ্বিপদী কবিতা আছে।রুমীর কবিতায় ভাব-ভাষা ও আবেদন সরাসরি পাঠককে এমনভাবে আকর্ষণ করে যা তার নিকট মনে হয় অপ্রতিরোধ্যঃ-মোহাম্মদ (সা বোরাকে আরোহন করলেন।এগিয়ে চললেন রাত্রিরআসমানে পথ কেটে কেটেদিন সেতো র্কম ব্যস্ততার, আর রাত্রি হল প্রেমের।না, কখনো সন্মোহিত হতে দিওনা নিজেকে;অনেকে রয়েছে, যারা রাত্রিতে ঘুমায় বিভোর।কিন্তু প্রেমিকেরা নয়তারা অন্ধকারে, সিঁড়িতে বসে আল্লাহর সাথে আলাপনে মগ্ন।আর তিনি (আল্লাহ) বলেছিলেন দাউদকেঃযারা বিভোর ঘুমে কাটায়, সারারাত,সকল রাত আর দাবী জানায় সম্পর্ক রয়েছে, আমার সাথেতারা মিথ্যুক।মাওলানা রুনী ১২৭৩ সালের ১৬ই ডিসেম্বর মোতাবেক ৬৭২ হিজরির ৫ জমাদিউস সানি ৬৮ বছর বয়সে ইস্তেকাল করেন। পাঁচ ধর্মের অনুসারী এক বিরাট জনতা কবর পর্যন্ত তার শবযাত্রায় অংশ গ্রহন করে। তার ইন্তেকালের রাতটিকে শাবে আরুস বা মিলনের রাত বলে আখ্যায়িত করা হয়।মাওলানা রুমী ভক্ত দরবেশরা, ওই দিনটিকে ওরস উৎসব পালন করে থাকে। তুরস্কে অবস্থিত মাওলানা রুমীর মাজার টিকে বলা হয় মাওলানার মাকবারা।- রুমির রাজত্ব#মসনবী#শরীফ
শুভ জন্মদিন হে সুফি সম্রাট ।
২| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আধ্যাত্মিক সুফিবাদের সম্রাট মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি (রঃ) এর
জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।
৩| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১৮
সনেট কবি বলেছেন: তাঁর জন্য শ্রদ্ধা। তাঁর মসনবী পড়েছি। খুব ভাল লাগতো।
৪| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০০
আরোগ্য বলেছেন: উনার জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।
৫| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০৩
ফারিহা হোসেন প্রভা বলেছেন: সম্মনিয় ব্যক্তিদের জীবনী পড়তে অনেক ভালো লাগে। তিনি সকলেরই ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন।
৬| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি বলছেন যে, রুমীর হাতে ছিল একটি বই( দর্শনের উপর), দরবেশ শামস তাবরীযি বইটাকে স্পর্শ করার পর, বইটি কোরানে পরিণত হয়।
আমার মনে হয়, এক বিখ্যাত মানুষ, রুমীকে আপনি আপনার ছোট মগজ দ্বারা অপমান করছেন!
৭| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৫
পদ্মপুকুর বলেছেন: অর্ধেক পড়ে আর পড়তে পারলাম না। একটু প্যারা ট্যারা করে দেন।
৮| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: একজন রুমি কেবলই একজন রুমি
উনার জন্মদিনের স্মরণ পোষ্টে কৃতজ্ঞতা। পাঠের কন্টক ভুলে যেতে চাই প্রেমের শরাবে
উনার রুহানী ফয়েজ ও বরকতের প্রত্যাশী।
অন্তহীন শ্রদ্ধা ও বিনম্র অভিবাদন পবিত্র আত্মার প্রতি।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: এই লোকের ভক্ত আমি।
অসাধারন একজন মানুষ।