সর্বশেষ আলপিন/কার্টুন কাণ্ডে আরেকবার দেখা গেলো কী তুচ্ছ কারণে ধর্মান্ধরা ঘোঁট পাকাতে পারে। তারা এ দেশ ও সমাজকে ১৪০০ বছর পেছনে নিয়ে যেতে চায় যে কোনো প্রকারে।
কিন্তু এই ঘটনায়, বিশেষ করে প্রথম আলোর ভূমিকায়, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলো মুক্তচিন্তার ধারাটি।
ঘটনা এতোই তুচ্ছ যে প্রথম আলোর সবরকম যুক্তি ছিলো এই নন-ইস্যুর বিপক্ষে দাঁড়ানোর। অভিযুক্ত কার্টুন-গল্পটি যে একটি নির্মল শিশুতোষ পরিহাস তা একজন শিশুও বুঝবে। মোল্লারা বোঝে না তা নয়, কিন্তু তারা তো অজুহাতের সন্ধানেই আছে। স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়ে প্রথম আলো বলতে পারতো, তথাকথিত আহত ধর্মানুভূতির সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই, তা নেহাতই মোল্লা ও নির্বোধদের কষ্টকল্পিত।
উল্টে নতজানু হয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করে প্রথম আলো মুক্তচিন্তার পাঠকদের অপমান করার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের সামর্থ্যকেও অস্বীকার করেছে। পাঠকপ্রিয়তা এবং অন্যসব কানেকশন - যে কোনো বিচারেই প্রথম আলো এখন মোল্লাদের নাগালের বাইরে। যতোই বন্ধ করার দাবি করুক, প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে কিছু করার ক্ষমতা তাদের নেই বলেই মনে হয়।
আর প্রথম আলোর এই ভূমিকায় সৎ ও সাহসী লেখক-সাংবাদিকরা হয়তো একটি ভরসার জায়গা হারালেন। হোক আরিফ ফ্রীল্যান্সার, তার পাশে দাঁড়ানো কাগজটির নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। পরবর্তীতে তার সম্পর্কে সতর্ক হওয়া বা ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি ঘরের ভেতরেই রাখা উচিত ছিলো। সুমন্ত আসলামের চাকুরিচ্যুতি বিষয়েও একই কথা। যে প্রতিষ্ঠান তার নিজস্ব কর্মীদের পাশে না দাঁড়িয়ে তাদের বাঘের মুখে ছেড়ে দিয়ে আসে, তাদের বর্তমান বা ভবিষ্যত কর্মীদের (সামগ্রিকভাবে সব সংবাদপত্রকর্মীই এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যান) ভরসার জায়গা আর কোথায় থাকে?