রাত ১২ টার সময় ঘুমাইতে গেছি। মাত্র কাধ ঘুরাইছি আর অমনি দেখি ফ্যান বন্ধ হইয়া গেলো। অগত্যা কি আর করা শুয়ে এদিক ওদিক করছি আর অপেক্ষা করছি কখন যে একঘন্টা পার হবে!
এটি এখন আর কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় আমরা প্রতিদিনই এ অবস্থার স্বীকার হচ্ছি। দিনে কতবার ইলেকট্রিসিটি যায় না বলে বরং কতবার আসে সেটা বলা মুশকিল। যথারীতি খবর অমুক জায়গায় অত মেগাওয়াটের প্ল্যান্ট বন্ধ হয়ে গেছে, গ্যাসের চাপ কম, উৎপাদনের চেয়ে চাহিদা বেশী ইত্যাদি।
এর মধ্যে আছে আবার স্বজনপ্রীতি! বড়লোকদের এলাকা যেমন গুলশান, বনানী এলাকায় ইলেকট্রিসিটি যায় কম আর অন্যান্য এলাকায় যায় একটু বেশী (কথাটা আমার এক পরিচিত বিদ্যুৎ অফিসের লোকের কাছে শোনা)।
আর আমার এক দুলাভাই যিনি একটি পাওয়ার প্ল্যান্টে চাকরি করেন উনার কাছে শুনেছি গ্যাসের অভাবে নাকি উনাদের প্ল্যান্টে অর্ধেক বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। দেশ যেখানে গ্যাসের উপর ভাসছে সেখানে গ্যাসের অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাচ্ছে।
এও কি সম্ভব?
দেশে যে গ্যাস উৎপাদন হয় তার ব্যবহৃত জায়গা হলো কলকারখানা, বিদ্যুৎ উৎপাদন, বাসাবাড়ীতে রান্নাবান্না ইত্যাদি। ইদানিংকালে আরেক জায়গায় বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে তা হলো সিএনজি স্টেশন। এই সস্তা গ্যাসের সুবাদে প্রায় সারা ঢাকা শহর এখন সিএনজিময়। মোড়ে মোড়ে সিএনজি স্টেশন। প্রাইভেট কার দাম ১ লাখ টাকাই হোক আর ১ কোটি টাকা সবই চলে সিএনজি দিয়ে। সাথে আছে বাস, ট্রাক, মাইক্রো, সিএনজি অটোরিক্সা। রাস্তায় এত লোক, এত গাড়ী। ফলাফল যানজট। দীর্ঘ সময় রাস্তায় আটকে থাকা আর গ্যাস পুড়তে থাকা। সারাদিন ২০০ টাকার গ্যাস নিলেই তো চলে যেখানে অকটেন নিলে খরচ পড়ে ১৫০০-২০০০ টাকা। তো ফুর্তি শুরু!!!
আমার মনে হয় আমরা যদি পারতাম তাহলে রিক্সা, মোটরসাইকেল এবং সাইকেলও সিএনজি দিয়ে চালানোর চেষ্টা করতাম! হায় রে সস্তা গ্যাস!
এখন তো মাঝে মাঝে রান্না করার জন্যও গ্যাস পাওয়া যায় না।
আমরা কি তাহলে দেশের মূল্যবান সম্পদ গ্যাস এভাবে অতিব্যবহার/অপব্যবহার করতে থাকবো নাকি একটি সঠিক নীতিমালার মাধ্যমে গ্যাসের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করবো? এ প্রশ্ন রইল আপনাদের কাছে,সরকারের যারা নীতি-নির্ধারক আছেন তাদের কাছেও।
(বি দ্র: সরকার জ্বালানী ঘাটতি মোকাবেলার জন্য কাতার থেকে এলএনজি আমদানি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে)
ট্যাগ: একটি বুদ্ধিজীবিক পোষ্ট!