somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাইড এফেক্ট অব লাল গোলাপ (পার্ট-২)

০৫ ই মে, ২০১৬ রাত ১০:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


(১ম পর্বের পর)
বাসা থেকে বের হয়েই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম আজ তাকে গোলাপ দিব। পকেট থেকে মানিব্যাগটা বের করে একবার দেখে নিলাম। ২০০ টাকার মত আছে। হয়ে যাবে ফুল কেনা। খোঁজ করতেই বাসার আশেপাশেই একটা ফুলের দোকান পেয়ে গেলাম। দেখে দেখে পাঁচটা গোলাপ পছন্দ করলাম। বললাম সুন্দর করে বেঁধে দিতে। দোকানদার বলল,
-"মামা, খালি গোলাপ লইবেন? লগে কয়েকটা জিপ্সি বাইন্দা দেই? সুন্দর লাগব।"
-"জিপ্সি ওটা আবার কি? উহু! দরকার নেই।"
-"আরে মামা লইয়া যান। আপনার লিগা ফ্রিই দিতাছি।"
শালা! কি ভাবে কি আমাকে? কিপটামি স্বভাব আছে আমার সেটা আমিও মানি। তাই বলে কপালে তো বড় করে 'কিপটা' শব্দটি লেখা নেই, তাই না? তবে যাই হোক, ফ্রি যেহেতু দিতে চাচ্ছে নিয়ে নিই।
-"ওকে। দাও।"
সুন্দর করে গোলাপগুলো বেধে দিয়ে আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,
-"মামা লন। ১৫০ টাকা হইছে।"
-"উহ!!"
না চাইতেও শব্দটা বের হয়ে গেল মুখ থেকে। দাম শুনে আকাশ থেকে পড়ার অবস্থা আমার।
-"৫টা গোলাপ ১৫০ টাকা?"
-"জ্বি মামা। এমনিতে একেকটা ৪০ টাকা করে বেচি। আপনার লিগা ৩০ টাকাই রাখছি।"
কিছু বলার ভাষা খুঁজে পেলাম না। একটা গোলাপ ৩০ টাকা! ফুল দেয়ার চাইতে তো মোবাইলের স্ক্র্যাচ কার্ড দেয়াই ভাল।
তবে কি আর করা। কিনে ফেলেছি। টাকা তো দিতেই হবে। বিরক্তির সাথেই টাকাটা দিলাম।
ফুলের দোকান থেকে বের হয়ে আসতেই মনে পড়ল আজ তো ও আমায় একবারও ফোন দেয়নি। ফোনটা বের করে নিজেই কল করলাম। সেখানেও বিরক্তি। সুন্দর এক মেয়েলি গলায় কেউ একজন বলে চলেছেন, "আপনার সিমটি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রেশন না করে থাকলে......"
ধুর! সকাল থেকেই খালি একের পর এক ঝামেলা। মিষ্টি সুরের পনপন শব্দ শেষ হতেই ট্রিং ট্রিং রিং হবার শব্দ পেলাম। অনেক্ষণ রিং হল। কিন্তু ওপাশ থেকে কেউ ধরল না। আবার দিলাম। এবারেও ধরল না। বুঝাই যাচ্ছে সে কতটা রাগ করেছে। রাগ ভাঙানো দরকার।
আজিব! কি উলটা পালটা ভাবছি। রাগ ভাঙানোর জন্যই তো ফুল কিনলাম। কিন্তু এখন ফোন না ধরলে জানব কি করে সে কথায়? ফুলগুলোই বা দিব কি করে?
ওর ক্যাম্পাসে চলে যাব কি? মিরপুর থেকে ঢাকা ভার্সিটি। দুরত্ব কম নয়। কিন্তু কি আর করা? ফুলগুলো দিবই বা কিভাবে যদি তার সাথে দেখা না হয়।
কাল ক্ষেপণ না করে উঠে গেলাম একটা বাসে। জ্যাম ঠেলে ভার্সিটি ক্যাম্পাসে পৌছতে পৌছতে বেলা একটা। ওর এখন ক্লাস চলছে। শেষ হবে পৌনে দুইটার দিকে। হাতে এখনও প্রায় ৪৫ মিনিট সময় আছে। কি করব এখন? এই কাঠ ফাটা রোদে দাঁড়িয়ে থাকব কোথায়? তাও আবার হাতে গোলাপ নিয়ে। একটু এগিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে ঢুকলাম। ছায়া দেখে বসে পড়লাম এক জায়গায়। নাহ! মন্দ না জায়গাটা। হাল্কা বাতাসও আছে। ভালই কেটে যাবে সময়টা। হাতের গোলাপটা পাশে রেখে ফোনটা একটু ঘাটাঘাটি করতে লাগলাম। কিছুক্ষণ এভাবেই কাটল। হঠাত পাশে খসখস একটা আওয়াজ পেতেই ফিরে তাকালাম।
ওমা! একি! আমার গোলাপগুলো একটা কুকুর মুখে তুলে নিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছে। ঘটনা দ্রুততায় আমি হতবিহবল হয়ে পড়লাম। ঠিক কি করব বুঝতে পারছিলাম না। কুকুরের পেছনে দৌড়াব? নাহ। সেটা ঠিক হবে না। লোকে হাসবে। তাছাড়া কুকুরের মুখের গোলাপ হাতে তুলে নিবই বা কি করে।
ধুর শালা! দিনটাই কুফা আজকে। না জানি একটু পর ওর সাথে দেখা হলে কি হবে? এমনিতেই রেগে বোম হয়ে আছে। আবার যদি উলটা পালটা কিছু হয় তাহলে আমার ১ম প্রেমের এখানেই ইতি। এখন আল্লাহ আল্লাহ করা ছাড়া কোন উপায় নেই। তাই করতে লাগলাম।
সময় ১ বেজে ২৫ মিনিট। আরোও প্রায় ২০ মিনিটের অপেক্ষা।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১৬ রাত ১০:৫৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×