১৯৪০ সালের ২৩ শে মার্চ মুসলিম লীগের লাহোর অধিবেশনে মুসলিম লীগ সভাপতি মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে তদানীন্তন বাংলার মূখ্যমন্ত্রী একে ফজলুল হক দ্ব্যর্থহীনভাষায় ঘোষণা করেন “আমি প্রথমে মুসলমান এবং পরে বাঙ্গালী এবং আপনাদের নেতা হিসেবে এই মুসলিম লীগের মঞ্চ হতে আমি মুসলমানদের জন্য আবাসভূমি স্থাপনের প্রস্তাব উথ্থাপন করার সুযোগ পেয়েছি ”
এ প্রস্তাবকে ভারতীয় সমস্যা সমাধানের জন্য মুসলিম লীগের প্রথম গঠনমূলক প্রস্তাব বলা যায় । যদিও এ পরবর্তীকালে এ প্রস্তাব বিকৃত করে পাকিস্তান প্রস্তাব হিসেবে রুপ দেয়া হয় ১৯৪৭ সালে যার পরিণতি পাকিস্তান ।৪০ কোটি জন অধ্যুষিত ভারতের গণতন্ত্রে নয় কোটি মুসলমুসলমানের জন্য রক্ষাকবচ লাভের সকল চেষ্টা ব্যর্থ হবার পর ১৯৪০ সালের ২৩শে মার্চ মুসলিম লীগের লাহোর অধিবেশনে ভারতের মুসলমানদের জন্য স্বতন্ত্র ও স্বাধীন আবাসভুমিপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লাহোর প্রস্তাব গৃহীত হয় ।
লাহোর প্রস্তাবের পটভূমি
উনবিংশ শতকে এই দাবির সুত্রপাত হয় ।১৮৩৫ এর ভারত শাসন আইনের অধীনে ১৯৩৭ সালে নির্বাচন পরবর্তীকালীন কংগ্রেস শাসিত প্রদেশগুলোতে মুসলমানদের প্রতি অবিচার মুসলিম নেতৃত্বকে বিচলিত করে তোলে ।এছাড়া যে সকল কারণ ও অবস্থার পরিপেক্ষিতে লাহোর প্রস্তাব গৃহীত হয় সেগুলো হলো :
১। স্যার সৈয়দ আহমেদের ভূমিকা
২। বিট্রিশ সরকারের ভূমিকা
৩।লক্ষ্মৌ চুক্তি ও জিন্নাহর চৌদ্দ দফা
৪।নেহেরূ রিপের্টের প্রতিক্রিয়া
৫। হিন্দু জাতীয়তদাবাদের প্রভাব
৬।গোল টেবিল বৈঠকের ব্যার্থতা
৭।মুসলিম চিন্তাবিদদের প্রাগসর চিন্তাধারা
৮। ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের কার্যকারিতা
৯।১৯৩৭ সালের নির্বাচন
১০।জিন্নাহর দ্বিজাতিত্ব
এছাড়া্ও ওয়ার্ধা শিক্ষা পরিকল্পনা,বিদ্যামন্দির শিক্ষাব্যাবস্থা ,বন্দে মাতরম সংগীত , শ্রীপদ্ম প্রতীক, এবং হিন্দুয়ানী পাঠ্যপুস্তক ।
লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য :
লাহোর প্রস্তাবে উথাপনের আগের দিন ফযলুল হককে শেরে বাংলা উপাধি দেয়া হয় ।লাহোর প্রস্তদাবের বৈশিষ্ট্য নিরম্নরূপ :
1. while approving and endorsing the action taken by the council and the working committee of all India Muslim league; as indicate in their resolutions dated the 27th august ; 17th & 18th September & 22nd October 1939,& the 3rd February 1940 on the constitutional issue ,this session of all India Muslim league emphatically reiterates that the scheme of federation embodied in the govt of india act ,1935 in totally unsuited and unworkable in the peculiar conditions of this country & all together unacceptable to muslim india
2. in further records its emphatic view that while the declaration dated the 18th October 1939 made by the viceroy on behalf of his majesty's government in reassuring in so far as it declares that the policy and plan .............
3. resolved that it is the considered view of this session of all india Muslim league that ""“ No constitutional plan would be workable or acceptable to the Muslims unless geographical contiguous units are demarcated into regions which should be so constituted with such territorial readjustments as may be necessary. That the areas in which the Muslims are numerically in majority as in the North-Western and Eastern zones of India should be grouped to constitute independent states in which the constituent units shall be autonomous and sovereign.” .................
দিল্লী ন্যশনাল আর্কাইভ ফাইল নং F163/40-R
লাহোর প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া :
কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া:
এ প্রস্তাবের সমালোচনা করে মহাত্মা গান্ধী বলেন : যদি আমরা শ্রী জিন্নাহর অভিমত গ্রহন করি তা হলো বাংলাদেশ ও পাঞ্জাবের মুসলমানরা দুটি পৃথক জাতি হয়ে পড়ে ।তিনি এত পাপ কাজ বলে মন্তব্য করেন । ......
ভারতের মুসলমানদের প্রতিক্রয়া :
জহওরলাল নেহেরূ একে অবান্তর বলে মন্তব্য করেন ।কংগ্রেস সভাপতি মাওলানা আজাদ এর তীব্র এবং ঘোরতর বিরোধী ছিলেন ।......
বাংলাদেশের মুসলমানদের প্রতিক্রয়া :
সোহরাওয়ার্দী মনে করেন ;এর ফলে প্রত্যেক প্রদেশ এর উপযোগী শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করবে ; সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হবে ।বাংলাদেশের মুসলমানদের এমন আশা আকাঙ্খা সত্বেও লাহোর প্রস্তাবের দ্বিজাতিত্ব তত্ব যুক্ত করায় এবং এক পাকিস্তান প্রস্তাব হিসেবে প্রতিষঠা করায় এর প্রস্তাবক ফজলুল হক এর সমর্থন করেননি ।......
ব্রিটিশ সরকারের প্রতিক্রিয়া :
২য় মহাযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ভারত সচিব মন্তব্য করেন : ইংল্যান্ডের কোন পার্লামেন্ট বা সরকার ভারতের মুসলমানদের ইচ্
ছার বিরূদ্ধে কোন শাসনতন্ত্র চাপিয়ে দেবেন বলে তিনি বিশ্বাস করেন না ।.......
চলবে ...>
তথ্যসূত্র আগামী পর্বে
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৪৭