ধুর, কাম-কাজ আর কিছুই ভাল্লাগতেছেনা। কতক্ষণ আর একটানা কীবোর্ড গুতাগুতি করন যায়। তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে একটু প্যাঁচাল পারি। দোস্তগো কয়ডারে নেট এ না দেইখাই কল দিলাম- সব হালায় বিয়া কইরা বউ নিয়া ঘুমাইয়া গ্যাছে !!
আমার তো আর কেউ নাই ! নিদেন পক্ষে একটা গার্ল- ফেরেনড
তাই ভাবলাম, আপনাদের সাথে একটু আড্ডা দেই !
আসেন, আমারা গ্যাজাই !!
গ্যাজানি আপডেট- ১।
(গ্যাজান প্রিয় ব্লগারদের নিয়ে একটি রম্য গল্প লেখার ব্যর্থ প্রচেষ্টা)
পণ্ডিত মশাইয়ের তিন ঠ্যাংওয়ালা ছাগল
পণ্ডিত মশাই চলছেন তার পাঠশালার উদ্দেশ্যে, সাথে আছে সেই তিন ঠ্যাংওয়ালা ছাগল । বাংলা সাহিত্যে এক ইংরেজ ভদ্রলোক ছিলেন, তিনি বিখ্যাত তার তিন ঠ্যাঙওয়ালা কুকুরটির জন্য।
আমাদের পণ্ডিতমশাই সুপরিচিত তার ছাগলটির জন্য। চার ঠ্যাঙ ওয়ালা ছাগল কিভাবে তিন ঠ্যাঙ হল, সে এক বিরাট ইতিহাস। আপাত, সে ইতিহাস আমরা বাদ দেই। ছাগল নিয়ে বেশ চলছিল তার। কিন্তু এখন সিগ্ধান্ত নিয়েছেন, ছাগলটি বিক্রি করে দেবেন। পণ্ডিতমশায়ের ছাগল বলে কথা ! দাম যে তাই ভালোই পাওয়া যাবে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ ছিল না তার মনে। পণ্ডিতমশাইয়ের পাঠশালায় শিক্ষার্থী সবাই। এখানে ডাক্তার-কবিরাজ, রাজনীতিবিদ-অর্থনীতিবিদ, সুশীল সমাজ- সবাই আছে। কিন্তু পণ্ডিতমশাইয়ের দুঃখ, কেউ তার ছাগলটির জন্য উপযুক্ত মূল্য প্রস্তাব করেনি যেন তিনি বিক্রি করতে পারেন। এই সমাজের উপর হতাশ তিনি !
অবশ্য আজকের কথা ভিন্ন। একটি বাংলা ব্লগ(সামু) তার ছাগল বিক্রির সব দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে। সামুর ব্লগাররাই কিনবে পণ্ডিতমশায়ের তিন ঠ্যাংওয়ালা ছাগল! তাই পণ্ডিত মশায়ের পাঠশালায় আজকের ছাত্র সবাই সামুর ব্লগার! একে একে সবাই এসে পড়লে তিনি শুরু করবেন পাঠশালা।
খেয়া- ঘাট পাড় হয়ে যখন পাঠশালার পথে চলতেছিলেন পণ্ডিতমশাই, ব্লগার খেয়া ঘাট দৌরে এসে হাপাতে লাগল।
'হুনলাম, লুলা ছাগিডা নাকি বেইচ্যা দিবেন?'
'লুলা ছাগি' সব্দ ব্যাবহারে পণ্ডিতমশাইয়ের আপত্তি আছে, তাই একবার রেগেমেগে চাইলেন খেয়াঘাটের দিকে। ব্লগার খেয়াঘাট চুপসে গিয়ে পণ্ডিতমশাইয়ের পিছু নিল। পাঠশালার আরও কিছুটা পথ বাকি আছে। পথের দু পাশ গাছ গাছালিতে পূর্ণ । আম জাম কড়ই কাঁঠাল সহ আরও নাম না যানা কত প্রকার গাছ। এখন বর্ষাকাল চলছে,গাছ গুলোও হয়েছে তাই আরো সবুজ- আরও প্রানবন্ত। সামনেই একটা কদমফুল গাছ আছে, পণ্ডিতমশাই জানেন। রোজ এ পথে যাওয়ার সময় একবার থেমে দেখে যান গাছের ফুলগুলো। ফুলে পরিপূর্ণ কদমগাছটিই তো বর্ষার প্রতীক। রবিন্দ্রনাথের একটি কবিতা মনে পড়ে তার।
কবিতাটি মনে মনে আবৃতি করছেন পণ্ডিতমশাই, হঠাৎ তার চোখ আঁটকে গেল কদমগাছের মাথায়। একটি মেয়ে কদম ফুলের ডালগুলো ভেঙ্গে চলছে মনের সুখে। দামড়া মেয়ের এ কাণ্ড দেখে পণ্ডিতমইয়ের পিত্তি জ্বলে উঠল তেলে বেগুনে। মেয়েটিকে তিনি চিনতে পেরেছেন, এ জন্য কিছু বললেন না। 'পরে পাঠশালায় এলে এর বিচার করব' মনে মনে ভাবতে ভাবতে কদম গাছের পাশ কাটিয়ে চলে গেলেন পণ্ডিতমশায়।
পাঠশালায় পৌঁছে তিন ঠ্যাংওয়ালা ছাগল টেবিলের পায়ায় বেধে চেয়ার টেনে বসে পরলেন পণ্ডিতমশাই। ব্লগার খেয়াঘাট গিয়ে বসে পড়লো কোনায় একদম বিছনের এক বেঞ্চে। পণ্ডিতমশাই
ভেবে পেলেন না সামনের এতগুলো সিট খালি থাকতে কি জন্য সে পিছনে গিয়ে বসলো। নিশ্চয় কোন কুমতলব। ব্লগারের উদ্দেশে হাঁক ছাড়লেন, 'বাবা খেয়াঘাট, এখানে এসো।' ব্লগার খেয়াঘাট কাচু
মাচু মুখে এসে টেবিলের সামনে দাঁড়াল। 'এখন যাও, ঐখানে গিয়ে কান ধরে দাড়িয়ে থাক। তারপর যখন সবাই এসে সামনের বেঞ্চগুলোতে বসে পড়বে, তখন তুমি গিয়ে বোসো পিছনের বেঞ্চে। ততখন পর্যন্ত কান ধরেই দাড়িয়ে থাক'- বললেন পণ্ডিত মশাই
আদরের তিন ঠ্যাংওয়ালা ছাগল টিকে 'লুলা ছাগি' বলার অপরাধ তার মনেই ছিল, কান ধরে দাড়িয়ে থাকা খেয়াঘাট কে দেখে তৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলতে যাবেন পণ্ডিতমশাই, এমন সময় চোখ আঁটকে
গেল দরজায়। কেউ একজন একবার উঁকি দিয়ে পরক্ষণেই মাথা সরিয়ে নিল। পণ্ডিতমশাই হাঁক ছাড়লেন, ' ঐ কে রে ওখানে? ভিতরে আয়।' অনেক্ষন পার হয়ে গেল কিন্তু কারও সাড়া-সব্দ নেই দেখে পণ্ডিতমশাই এগিয়ে গেলেন দরজার দিকে। নাহ, সেখানে কেউ নেই। তবে দরজার পাশে পড়ে আছে একগুচ্ছ কদম ফুল !
ব্লগার এহসান সাবির ,আহমেদ নিশো , মেহেদী হাসান মানিক , কুচকননা , ভুদাই আমি , আদনান শাহ্িরয়ার, , নূর আদনান সবাই হৈ চৈ করতে করতে আসছিল পথে, কিন্তু দু কান ধরে দাড়িয়ে থাকা খেয়াঘাট কে দেখে থমকে দাঁড়াল। তারপর সুবোধ বালকের মত চুপ চাপ গিয়ে বসে পড়ল যার যার বেঞ্চে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:১৪