চেয়ারে বসে মশার কামড়ানি খাই আর টুং টাং করে টাইপ করি।সন্ধ্যা নামলো মাত্র।রুম আঁধার করে বসে আছি।মনটা খারাপ ছিল।কিছুক্ষণ হা করে হাত পা ছেড়ে বিছানায় শুয়ে ছিলাম।কি মনে হইলো তড়াক করে লাফ দিয়ে লিখতে বসলাম।টু বি অর নট টুবি র মত মাথায় শুধু একটাই চিন্তা।কালকে ঢাকা যাবো কি যাবোনা।যাবো কি যাবোনা।শালার কোন দিনই এক ধাক্কায় এক ডিসিশন নিতে পারলাম না।যেতে ইচ্ছে হয় ম্যালা কারণেই।থার্ড ইয়ারের বুড়া হয়া গেলাম কিন্তু ঢাকায় একটা পয়লা বৈশাখও পালন করতে পারলাম না।আমার মত বেকুব এর সংখ্যা এক থেকে দশ গোণার আগেই শেষ হয়ে যাবে।দেখি শেষ পর্যন্ত এইবার মানুষ হতে পারি কীনা।এই বৈশাখটা নিয়ে অবশ্য অনেক প্ল্যান ছিল।অনেক... খুব বেশি পাঞ্জাবি পড়িনা।শুকনা বলে পাঞ্জাবী পড়লে দূর থেকে মনে হয় হ্যাংগারে পাঞ্ঝাবি ঝুলানো।তবু আজ পড়তে চেয়েছিলাম।তিথি বলেছিল যেন পড়ে আসি।আমিও না করিনি।হ্যাংগারে ঝুলানো পাঞ্জাবী হই সমস্যা নেই... ও ওভাবেই দেখতে চেয়েছিল।আমি না করি কিভাবে??... ধূর... আবারো পুরানা ফ্ল্যাশ ব্যাক।ভাল্লাগেনা বালের জীবন।life sucks...
আরিফ অনেক আগেই বলে রেখেছে যেন যাই।আমারও তেমন আপত্তি নেই।কিন্তু গরমের ঠ্যালায় দ্বিতীয়বার ভাবছি।আর ফেরার টাইমেও নিশ্চিত ক্যাচাল হবে।এর আগের বার শুভ্রদের হয়েছিল।সেটাও সমস্যা হতোনা।যদি পরশু ক্লাস অফ বা দেরিতে শুরু হতো।ঢাকা ভার্সিটিতে তাহলে নাক ডেকে ঘুমানো যেত।এখনো যায়।একটা দিন ক্লাস মিস দিলে কি আর হয়।কত ক্লাস তো ঘুমাইতে ঘুমাইতে বাং মারলাম।এইটাও না হয় ওরকমই একটা কিছু আগডুম বাগডুম ধরে নিলাম।দেখা যাক... ইচ্ছা থাকলে নাকি উপায় হয়... একটু প্র্যাক্টিক্যালি এর সত্যতা যাচাই করে দেখি।এফিসিয়েন্সি কতদূর।
এর মধ্যেও আবার ক্যাচাল আছে।হঠাৎ বর্ষার শখ হইসে সে টি এস সি যাবে।পয়লা বৈশাখে আগে কোন দিন টিএসসি দেখেনাই।যদি যায় তবে উত্তরা থেকে আমাকেই পিক করতে হবে।ওর নাকি সি এন জি তে একা একা যেতে ভয় লাগে! হায়রে কত্ত ভয় পায়রে...
একটূ আগে তনয়াকে ফোন দিলাম।সাতদিন পরে ফোন দিসি দেখে কিছুক্ষণ ঝাড়লো।ও নিজেও যে দেয়নাই এই কয়দিন সেইটা যেন কিছুই না।অবশ্য এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুটা কথা বলার সময়ে আমার মনে হয়নাই।তনয়া ফোন রাখলো আর তখন আমার মনে হলো।নইলে এত সহজে রিট্রিট করি নাকি।কবে যে মাথায় আমার বুদ্ধিসুদ্ধি গজাবে...
আজকে বিকালের ল্যাবে হেভী মজাক হইলো।কালকে ল্যাব রিপোর্ট করিনি।রেফ্রিজারেশন ল্যাব রিপোর্ট চারা পাতার বেশি করলে মার্কস মাইনাস হয়।আহ!!... এই আশায় ভাবলাম ল্যাব এর আগে যে এক পিরিয়ড গ্যাপ আছে ঐ টাইমে হুটহাট করে ফেলবো।কিন্তু আজকে রিপোর্ট দেখে আমার হার্টফেল করার দশা।এক্কেরে বারো পাতার রিপোর্ট।অবশ্য বেকুব শুধু আমি না,আমার বাকি দুই রুমমেটও হইসে।জামাতের সাথে বাঁশ খেতে আমার কখনোই খারাপ লাগেনা।কাজেই হাসিমুখে ওটা খাবার জন্য প্রস্তুত হয়েই পড়ার টেবিলে বসলাম।শেষ পর্যন্ত একেবারে আড়াইটা ছুঁই ছুঁই করে আমার লেখা শেষ হল।আমার খুশি দেখে কে।এভারেস্ট জয় করলেও আমি এত খুশি হতাম না।কারণ ঐটা জয় না করতে পারলেও ক্ষতি নেই।কিন্তু ইকবাল স্যারের রিপোর্ট মিস করা মানে হার্টের এফিসিয়েন্সি এক ধাক্কায় অর্ধেক করে ফেলা।এমন কড়ামেজাজি টিচার আমি দ্বিতীয়টা দেখিনি।(আর দেখার ইচ্ছাও নাই,একটাতেই যে অবস্থা।)শেষ করে কোনমতে শার্ট টা পড়েই দে দৌড়... পুরা ইটস মাই লাইফ টাইপ... লাইফ নিয়ে টানাটানি।আধা মিনিট লেট করলেও ঢুকতে দেবেনা ল্যাবে।হাপাতে হাপাতে ল্যাবের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দেখি স্যার পশ্চাতদেশটা আমার দিকে প্রদর্শন করে সুন্দর করে অন্যদের প্র্যাকটিক্যাল বুঝাচ্ছে।দেখে আমার নিঃশব্দ বত্রিশ দাঁতের হাসি।যাক ঢুকতে কোন সমস্যা নাই আর।আজকে কার মুখ দেখে উঠসিলাম মনে করার চেষ্টা করি।কিন্তু হঠাৎ স্বপ্নিলের সাথে চোখাচোখি হতেই ফ্লাডলাইট দুম করে নিভে গেল।স্বপ্নিল ওর রিপোর্টটা সাথে করে নিয়ে আসতে বলেছিল।আমি সযত্নে সেটা পাঁচতলার উপরে ভুল করে ফেলে রেখে এসেছি।এইবার উপায় কি...আবারো ভাবার চেষ্টা করলাম... আজকে কার মুখ দেখে ঘুম থেকে উঠসিলাম...ভাবাভাবি বেশিক্ষণ করতে পারলাম না।আবারো দৌড়... ইটস মাই লাইফ পার্ট টু...
তাও ভালো সেকেন্ড টাইমও স্যার এত বেশি নিবিষ্ট ছিল যে আমি কখন আসলাম আর কখন গেলাম টের পাননি।আরো কিছু কাহিনি হইসে।বেশ লেখার মতই।কিন্তু আর ভাল্লাগতেসেনা।মাথা থেকে কথাটা দূর হচ্ছেনা...টু বি অর নট টু বি... যাবো কি যাবোনা...
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:৪৯