ভোলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য সচিব ও সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম ভোলা শাখার সদস্য সচিব খায়রুল আলম বুলু বলেন, ১৯৬৯ সালে গণআন্দোলনের সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সরকারের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে পড়লে তিনিই তাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছিলেন। তার নেতৃত্বেই ’৬৯-এর গণআন্দোলন ভোলায় জোরদার হয়ে ওঠে। তিনি ’৬৫ ও ’৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
মোশারেফ হোসেন শাজাহান গত জোট সরকারের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে গোটা ভোলা মহকুমার (বর্তমানে জেলা) তিনিই ছিলেন প্রধান সংগঠক। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন তিনি। তাদের নিয়ে মহকুমায় কর্মরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ দেশীয় সদস্যদের সংঘবদ্ধ করে তিনিই ভোলায় মুক্তিবাহিনী গঠন করেন এবং নেতৃত্ব দেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নিজে লড়াই করেছেন। শিল্পপতি বাবার সন্তান হিসেবে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধার খরচ জুগিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রের ব্যবস্থাও তিনিই করেন। তিনি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। পরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। বিগত জোট সরকারের তিনি ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। শুধু এই একটি কারণেই তিনি নাকি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক থেকে যুদ্ধাপরাধী হয়ে গেছেন। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে মোশারেফ হোসেন শাজাহানকে এখন মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা, ধর্ষণ, মানুষের অর্থ-সম্পদ লুটপাট, আগুন দিয়ে মানুষের ঘরবাড়ি পোড়ানো ও সাধারণ মানুষকে জোর করে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয়ার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের একজন অন্যতম সংগঠক হয়েও এখন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় কোনো ধরনের আক্ষেপ নেই বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারেফ হোসেন শাজাহানের। তিনি বলেন, বিচিত্র এ দেশ। এখানে সবকিছুই সম্ভব। একজন মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগের রাজনীতির বিরোধী হলে তিনি কোনো প্রশ্ন ছাড়াই রাজাকার কিংবা যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হন। আবার একজন রাজাকার আওয়ামী লীগের রাজনীতি সমর্থন করলে তিনি মুহূর্তের মধ্যে শুধু মুক্তিযোদ্ধাই নন, আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যও হতে পারেন। তবে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মোশারেফ হোসেন শাজাহানকে যুদ্ধাপরাধীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন ভোলার সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সংগঠনের নেতা ও সর্বস্তরের মানুষ সরকারের ঘোষিত যুদ্ধাপরাধীদের তালিকায় তার নাম দেখে রীতিমতো হতবাক। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে তারা এর তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। ভোলার বিভিন্ন পেশার ২২টি সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশ থেকে এর প্রতিবাদ করে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দেয়া হয়।
ভোলা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক দোস্ত মাহমুদ বলেন, মোশারেফ হোসেন শাজাহান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ভোলা জেলার সংগঠক ছিলেন। জেলা মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ছিলেন শামসুদ্দিন আহমদ মিয়া আর সেক্রেটারি ছিলেন মোশারেফ হোসেন শাজাহান। মূলত শাহজাহানই ওই সময় আমাদের মতো তরুণদের মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছেন। গ্রামে গ্রামে ঘুরে তিনি মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রহ করতেন। প্রথম কয়েক মাস ধরে পাকিস্তান আর্মি ভোলায় আসতে পারেনি। পরে ভোলায় এসে প্রথমেই তার বাড়ি আক্রমণ করে। তিনি তখন তার অসুস্থ বাবা ও সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন গ্রামে পালিয়ে বেড়ান। তিনি যে গ্রামেই যেতেন সে গ্রামেই হামলা চালাত আর্মিরা। পুরো যুদ্ধের সময় তিনিই অর্থ, খাবার ও যুদ্ধের দিকনির্দেশনামূলক পরামর্শ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করেন। তার মতো একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা গোটা মুক্তিযুদ্ধেরই অবমাননা ছাড়া আর কিছু নয়। এটা বড়ই দুঃখজনক।
রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকায় তিনি এখন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। এটি সত্যিই বেদনাদায়ক।
মুক্তিযুদ্ধের সাবেক জেলা কমান্ডার সহিদুল হক চন্দন বলেন, যে মানুষটি অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন, সেই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন; তাকে আজ যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ মাথায় নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছুই হতে পারে না। সরকারের এ তালিকা প্রকাশে মুক্তিযোদ্ধারাই অপমানিত হয়েছেন। সরকারের এ উদ্যোগকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ভোলা সদর থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অহিদুর রহমান বলেন, যুদ্ধের সময় আমি মোশারেফ হোসেনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা নিয়ে তা আমাদের কমান্ডার সিদ্দিকুর রহমানের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। সেই টাকা দিয়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের খাবারসহ বিভিন্ন সামগ্রী কিনেছেন। মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন বলেন, মোশারেফ হোসেন শাজাহানের সংগ্রহ করা কাপড়ের জুতা ও বিশেষ পোশাক পরে আমরা ট্রেনিং নিতাম। তিনিই আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন। কিন্তু এখন দেখি তারই নাকি বিচার হবে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে। এর চেয়ে বড় অবাক করা বিষয় আর কিছুই হতে পারে না। ভোলার বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম, হাবিলদার (অব.) বশির আহমদ ও রবিউল বলেন, সরকারের এ উদ্যোগ মূলত দেশে একটি বিভেদ ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। বিএনপি নেতা ও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোশারেফ হোসেন শাজাহানের মতো মুক্তিযুদ্ধের সংগঠককে শুধু আওয়ামী লীগের রাজনীতির পরিবর্তে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার অপরাধেই যুদ্ধাপরাধী হতে হয়েছে। একইভাবে জামায়াতে ইসলামীসহ আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনীতিকদের একইভাবে সরকার যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে বিচার করতে যাচ্ছে।
আমাদের ভোলা প্রতিনিধি হুমায়ুন কবির জানান, মোশারেফ হোসেন শাজাহানকে যুদ্ধাপরাধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় ভোলাবাসী বিস্মিত। ২৫ মার্চের পর তিনিই ভোলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘবদ্ধ করেন। সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ভোলার সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। তারা বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকলে মুক্তিযোদ্ধা আর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সমালোচনা করলে যুদ্ধাপরাধী হয়ে যাবেন। এ ধরনের অবিচার হলে জনগণ এটা কোনো অবস্থায়ই মেনে নেবে না। হাজার হাজার মানুষের এ বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। এতে যুদ্ধাপরাধের নামে মুক্তিযোদ্ধা মোশারেফ হোসেন শাজাহানকেও বিচারের আওতায় আনার প্রতিবাদ করা হয়।ভোলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য সচিব ও সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম ভোলা শাখার সদস্য সচিব খায়রুল আলম বুলু বলেন, ১৯৬৯ সালে গণআন্দোলনের সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সরকারের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে পড়লে তিনিই তাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছিলেন। তার নেতৃত্বেই ’৬৯-এর গণআন্দোলন ভোলায় জোরদার হয়ে ওঠে। তিনি ’৬৫ ও ’৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
মোশারেফ হোসেন শাজাহান গত জোট সরকারের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে গোটা ভোলা মহকুমার (বর্তমানে জেলা) তিনিই ছিলেন প্রধান সংগঠক। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন তিনি। তাদের নিয়ে মহকুমায় কর্মরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ দেশীয় সদস্যদের সংঘবদ্ধ করে তিনিই ভোলায় মুক্তিবাহিনী গঠন করেন এবং নেতৃত্ব দেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নিজে লড়াই করেছেন। শিল্পপতি বাবার সন্তান হিসেবে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধার খরচ জুগিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রের ব্যবস্থাও তিনিই করেন। তিনি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। পরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। বিগত জোট সরকারের তিনি ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। শুধু এই একটি কারণেই তিনি নাকি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক থেকে যুদ্ধাপরাধী হয়ে গেছেন। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে মোশারেফ হোসেন শাজাহানকে এখন মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা, ধর্ষণ, মানুষের অর্থ-সম্পদ লুটপাট, আগুন দিয়ে মানুষের ঘরবাড়ি পোড়ানো ও সাধারণ মানুষকে জোর করে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয়ার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের একজন অন্যতম সংগঠক হয়েও এখন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় কোনো ধরনের আক্ষেপ নেই বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারেফ হোসেন শাজাহানের। তিনি বলেন, বিচিত্র এ দেশ। এখানে সবকিছুই সম্ভব। একজন মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগের রাজনীতির বিরোধী হলে তিনি কোনো প্রশ্ন ছাড়াই রাজাকার কিংবা যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হন। আবার একজন রাজাকার আওয়ামী লীগের রাজনীতি সমর্থন করলে তিনি মুহূর্তের মধ্যে শুধু মুক্তিযোদ্ধাই নন, আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যও হতে পারেন। তবে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মোশারেফ হোসেন শাজাহানকে যুদ্ধাপরাধীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন ভোলার সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সংগঠনের নেতা ও সর্বস্তরের মানুষ সরকারের ঘোষিত যুদ্ধাপরাধীদের তালিকায় তার নাম দেখে রীতিমতো হতবাক। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে তারা এর তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। ভোলার বিভিন্ন পেশার ২২টি সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশ থেকে এর প্রতিবাদ করে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দেয়া হয়।
ভোলা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক দোস্ত মাহমুদ বলেন, মোশারেফ হোসেন শাজাহান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ভোলা জেলার সংগঠক ছিলেন। জেলা মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ছিলেন শামসুদ্দিন আহমদ মিয়া আর সেক্রেটারি ছিলেন মোশারেফ হোসেন শাজাহান। মূলত শাহজাহানই ওই সময় আমাদের মতো তরুণদের মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছেন। গ্রামে গ্রামে ঘুরে তিনি মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রহ করতেন। প্রথম কয়েক মাস ধরে পাকিস্তান আর্মি ভোলায় আসতে পারেনি। পরে ভোলায় এসে প্রথমেই তার বাড়ি আক্রমণ করে। তিনি তখন তার অসুস্থ বাবা ও সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন গ্রামে পালিয়ে বেড়ান। তিনি যে গ্রামেই যেতেন সে গ্রামেই হামলা চালাত আর্মিরা। পুরো যুদ্ধের সময় তিনিই অর্থ, খাবার ও যুদ্ধের দিকনির্দেশনামূলক পরামর্শ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করেন। তার মতো একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা গোটা মুক্তিযুদ্ধেরই অবমাননা ছাড়া আর কিছু নয়। এটা বড়ই দুঃখজনক।
রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকায় তিনি এখন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। এটি সত্যিই বেদনাদায়ক।
মুক্তিযুদ্ধের সাবেক জেলা কমান্ডার সহিদুল হক চন্দন বলেন, যে মানুষটি অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন, সেই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন; তাকে আজ যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ মাথায় নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছুই হতে পারে না। সরকারের এ তালিকা প্রকাশে মুক্তিযোদ্ধারাই অপমানিত হয়েছেন। সরকারের এ উদ্যোগকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ভোলা সদর থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অহিদুর রহমান বলেন, যুদ্ধের সময় আমি মোশারেফ হোসেনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা নিয়ে তা আমাদের কমান্ডার সিদ্দিকুর রহমানের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। সেই টাকা দিয়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের খাবারসহ বিভিন্ন সামগ্রী কিনেছেন। মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন বলেন, মোশারেফ হোসেন শাজাহানের সংগ্রহ করা কাপড়ের জুতা ও বিশেষ পোশাক পরে আমরা ট্রেনিং নিতাম। তিনিই আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন। কিন্তু এখন দেখি তারই নাকি বিচার হবে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে। এর চেয়ে বড় অবাক করা বিষয় আর কিছুই হতে পারে না। ভোলার বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম, হাবিলদার (অব.) বশির আহমদ ও রবিউল বলেন, সরকারের এ উদ্যোগ মূলত দেশে একটি বিভেদ ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। বিএনপি নেতা ও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোশারেফ হোসেন শাজাহানের মতো মুক্তিযুদ্ধের সংগঠককে শুধু আওয়ামী লীগের রাজনীতির পরিবর্তে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার অপরাধেই যুদ্ধাপরাধী হতে হয়েছে। একইভাবে জামায়াতে ইসলামীসহ আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনীতিকদের একইভাবে সরকার যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে বিচার করতে যাচ্ছে।
আমাদের ভোলা প্রতিনিধি হুমায়ুন কবির জানান, মোশারেফ হোসেন শাজাহানকে যুদ্ধাপরাধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় ভোলাবাসী বিস্মিত। ২৫ মার্চের পর তিনিই ভোলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘবদ্ধ করেন। সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ভোলার সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। তারা বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকলে মুক্তিযোদ্ধা আর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সমালোচনা করলে যুদ্ধাপরাধী হয়ে যাবেন। এ ধরনের অবিচার হলে জনগণ এটা কোনো অবস্থায়ই মেনে নেবে না। হাজার হাজার মানুষের এ বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। এতে যুদ্ধাপরাধের নামে মুক্তিযোদ্ধা মোশারেফ হোসেন শাজাহানকেও বিচারের আওতায় আনার প্রতিবাদ করা হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০১০ বিকাল ৫:৩৮