প্রথমেই সবাইকে চট্টগ্রাম পৌরসভার (পরবর্তীতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন) ১৫০ বছর পূর্তি (১৮৬৩-২০১৩) উপলক্ষে শুভেচ্ছা।
ইংরেজি ভাষা শেখার যেমন প্রয়োজনীয়তা আছে, তেমনি চট্টগ্রামে ব্যবসা-বাণিজ্য-পড়াশোনা বা বসবাস করতে হলে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা / চাটগাঁর ভাষা / চিটাইঙ্গা ভাষাও শেখার প্রয়োজনীয়তা আছে। আপনি চট্টগ্রামে না এলেও অন্য কোথাও চাটগাঁর লোকদের সাথে মিশতে গেলে এই ভাষার প্রয়োজন হতে পারে। তাছাড়া জাতীয় সংসদে সম্প্রতি একটি আঞ্চলিক শব্দ 'চুদুরবুদুর' নিয়ে লঙ্কা কাণ্ড তো দেখলেনই। অতএব বুঝতেই পারছেন দু-একটা বাড়তি আঞ্চলিক ভাষা জানা থাকলে খুব সুবিধা। এ ক্ষেত্রে চাটগাঁ ভাষার গুরুত্ব অপরিসীম।
আঞ্চলিক ভাষা শেখার প্রথম ধাপ হচ্ছে ভাষা বুঝতে শেখা। আপনি ঠিকভাবে বলতে না পারলেও বুঝতে পারলেই কাজ চালিয়ে নেয়া যায় অনেকটা।
আজ একটি শব্দ দিয়ে শুরু করি:
চাটগাঁর ভাষায় 'গন্ধ' বুঝাতে সঠিক শব্দটি আসলে 'বাঁশ'-ও না 'বাস'-ও না, উচ্চারণ অনুসারে এটি 'বাশ্'- যার অর্থ গন্ধ। যেমন: বাশ্ ধার্ (গন্ধ লাগছে)।
লক্ষণীয়, 'শ' ও 'স' উচ্চারণে কিন্তু তফাৎ আছে। চট্টগ্রামের ভাষায় 'স' ও 'শ'-য়ের মাঝে আরও উচ্চারণ আছে। স ও শ-য়ের নিচে রেফ দিলে দুটি উচ্চারণ পাবেন। উচ্চারণ যদিও লিখে বোঝানো মুশকিল, তবুও দেখুন: 'বস্সু' - এখানে বস-এর স-য়ের নিচে রেফ দিলে যে উচ্চারণের শব্দটি পাওয়া যাবে তার অর্থ দাঁড়াবে 'বাচ্চাদের জন্য মজাদার খাওয়ার'। আরেকটি দেখুন: বাশ্শা (বাদশাহ), এখানে শ-য়ের নিচে রেফ দিলে 'শ' ও 'স'-য়ের মাঝামাঝি উচ্চারণ 'ষ' পাবেন, শব্দটি এভাবেই চাটগাঁয় উচ্চারিত হয়।
তাছাড়া চট্টগ্রামে 'শ', 'স' ও 'ষ' এর ক্ষেত্রে অনেকে 'ছ' উচ্চারণ করেন।
আরও উল্লেখ্য, খোদ চট্টগ্রামেই আবার অঞ্চল ভেদে চাটগাঁ ভাষায় উচ্চারণে হাজারটা তফাৎ হয়ে থাকে। যা অন্য বিভাগের জন্য তো বটেই, চাটগাঁ ভাষাভাষীর মাঝেও বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে।
আজ এতোটুকুই। প্রথম দিনেই ডোজ বেশি হয়ে গেলে অসুবিধা।
ছবি: চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী চেরাগী পাহাড়
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ৮:২৮