১৩ তারিখ মহাসমাবেশ হয়নি প্রশাসনের ১৪৪ ধারার কারণে। হেফাজতে ইসলামের রক্তের বন্যা বইয়ে দেবার হুমকিতেও সমাবেশ করার ব্যাপারে অনড় থেকেছিল গণজাগরণ মঞ্চ, চট্টগ্রাম। কিন্তু হেফাজতে ইসলাম হরতাল ডাকাসহ সমাবেশ প্রতিহত করার হুমকি দিলে প্রশাসন যাবতীয় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করে।
মহাসমাবেশ না হলেও আমি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বর, জামালখানে গিয়েছিলাম গতকাল। ১৪৪ ধারার কারণে পুরো জামালখান এলাকা ছিল থমথমে। লোকের চলাচল ছিল খুব কম। বেশিরভাগ দোকানপাট ছিল বন্ধ। চারিদিকে ছিল পুলিশের ব্যাপক সমাগম। এর ভিতরেই আমি চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ভবনে ছিলাম, প্রশাসন কর্তৃক ঢাকার বন্ধুদের আগমন আটকে দেয়ার খবর জানা পর্যন্ত।
১৩ তারিখের সমাবেশ না হলেও ১৪ তারিখে প্রতিবাদ সমাবেশ করবে বলেছিল গণজাগরণ মঞ্চ, চট্টগ্রাম। গতকাল জামালখানের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আশঙ্কা হচ্ছিল আমার বীর চট্টলার ভাই ও বোনেরা যাবতীয় ভয়-ভীতি-শঙ্কা-বিভেদ-বিভ্রান্তি ছুঁড়ে ফেলে বুকে অদম্য সাহস নিয়ে, কণ্ঠে প্রতিবাদের ভাষা নিয়ে আজ আসবেন তো?
কিন্তু আজ জামালখানের পরিস্থিতি ছিল গতকালের তুলনায় সম্পূর্ণ ভিন্ন। সমস্ত জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ঠিকই বিকাল ৩টায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সময় যতোই গড়াচ্ছিল সমাবেশে জনসমাগম ক্রমেই বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে হাজারো ছাত্র-তরুণ-জনতার শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণ। নারী ও শিশুদের উপস্থিতিও ছিল উল্লেখযোগ্য। শ্লোগানের পাশাপাশি ছাত্র নেতাদের শাণিত বক্তব্যে উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে সমাবেশ। আসর ও মাগরিবের নামাজের জন্য দেয়া বিরতির সময়টুকু ছাড়া বাকি সময় জুড়ে সেই চিরচেনা উত্তাল রূপেই দেখা গেছে আমার জন্মভূমি প্রিয় চট্টগ্রামকে। সকল হুমকি-ধমকি-বিভ্রান্তি-অপ্রচারকে উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে আমাদের এই আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাবার দীপ্ত ঘোষণা দিয়ে সন্ধ্যা ৭টায় প্রতিবাদ সমাবেশ সফলভাবে শেষ করা হয়। অবশ্য আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির পরও আন্দোলনকারীরা দীর্ঘক্ষণ ছিলেন সমাবেশ চত্বরে।
বন্ধুরা, আগামীকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরের আন্দোলন সেই প্রথম দিনগুলোর মতো আবার চলবে। সবাইকে দলে দলে যোগদান করার আহ্বান জানাচ্ছি।
জয় বাংলা! জয় জনতা! জয় চট্টগ্রাম!