একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার আব্দুল কাদের মোল্লা ওরফে কসাই কাদেরের মানবতা বিরোধী অপরাধ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হওয়ার পর ঘোষিত রায়ে গুরু পাপের লঘু দণ্ড হিসেবে দেয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় না মানার ঘোষণা দিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে আঃকাঃমো-সহ সব রাজাকারদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার দাবি জানিয়ে তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে ঢাকার শাহবাগে শুরু হওয়া প্রতিবাদ কর্মসূচী দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে। বুধবার থেকে অভূতপূর্ব প্রতিবাদ ও দাবী আদায়ের কর্মসূচী পালন হচ্ছে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে। প্রথমে শহীদ মিনার চত্বরে আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচীর কথা থাকলেও পরে সবাই একসঙ্গে প্রেসক্লাব চত্বরে সমবেত হয়েছি।
বিকাল সাড়ে পাঁচটায় শহীদ মিনার পাদদেশ থেকে আমরা ব্যানার-ফেস্টুন-মশাল নিয়ে মিছিল শুরু করি। মিছিল সিনেমা প্যালেস পার করে লালদীঘি হয়ে আন্দরকিল্লা দিয়ে চেরাগি পাহাড় হয়ে জামাল খানে অবস্থিত প্রেসক্লাব চত্বরে আগেই শুরু হওয়া সমাবেশের সঙ্গে মিলিত হয়। সন্ধ্যা নামতেই মশাল আর মোমবাতির আলোয় উদ্ভাসিত জামাল খান এলাকা হাজারো কণ্ঠের প্রতিবাদী শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। এই মুখরতা থামার না।
স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ তরুণ-তরুণী, সংস্কৃতিকর্মী, লেখক, ব্লগার, রাজনৈতিক কর্মী, শিক্ষক, কর্মজীবী, গৃহিণী, শিশু কোলে পিতা- কে নেই এখানে! এখানে কোন নির্দিষ্ট ব্যানার নেই, এটি কোন দলের কর্মসূচী না। এখানে সংহতি প্রকাশ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য-শিক্ষক থেকে শুরু করে বিজ্ঞানী-রাজনৈতিক নেতা এসেছেন। নানা মতের নানা মানুষ এক দাবিতে একসাথে। এটি সর্বস্তরের জনগণের সমাবেশ।
এখানকার প্রতিবাদের ভাষা, দাবি আদায়ের ভাষা ভাংচুর-মারামারি-দাঙ্গা-হাঙ্গামা না। আশে-পাশের সব দোকানপাট খোলা, পথচারীরা নিশ্চিন্তে হাঁটছে, পুলিশ অনতিদূরে রিল্যাক্স ভঙ্গিতে চেয়ারে বসে আছে। আমাদের প্রতিবাদের ভাষা মুহুর্মুহু জ্বালাময়ী শ্লোগান, আমাদের প্রতিবাদের অস্ত্র কবিতা আর গান, আমরা পিচঢালা রাস্তায় আমাদের দাবির কথা লিখেছি, আমরা এঁকেছি প্রতিবাদের ছবি, আমরা পথনাট্য করেছি, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র দেখাচ্ছি, আমরা দীর্ঘ মৌন মিছিল করেছি।
চবি, চুয়েট, চারুকলাসহ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আছেন, আবৃত্তি শিল্পী-সংগীতশিল্পীরা আছেন, ষাটোর্ধ প্রবীণরা এসেছেন, পথচারীরা আমাদের সঙ্গেই বসে গেছেন পথে, বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্নভাবে একসমতলে বসে প্রতিবাদ করছে, দাবির কথা জানাচ্ছে। বক্তৃতা হয়েছে, ঢোল বাজছে, হচ্ছে চিৎকার!
আমাদের দাবি একটাই, রাজাকারদের ফাঁসি চাই!! রাজাকারদের ফাঁসি চাই!! এটি কোন রাজনৈতিক শ্লোগান না। এটি জনমানুষের পুরনো দাবি যা নতুন করে চাঙ্গা হয়েছে আদায় করে ছাড়বে বলেই!
_______
বুধবার রাতে লেখা/ ছবিটিও রাতেই তোলা
প্রয়োজনীয় সংযুক্তি:
বিচারের বাণী ভয়ে কাঁপে??? রাষ্ট্রের মর্মান্তিক পরাজয়!!!
যারা আত্মসমর্পণকারী আওয়ামী লীগকে দায়ী মানতে নারাজ...
ইন্টারনেটে দেশপ্রেম অনেক দেখিয়েছেন। আসুন আজ একটু মাঠে নামি। যারা ইতোমধ্যে মাঠে, তাদেরকে সালাম!
রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রামের সংগ্রাম থেকে আমার তোলা ১৮টি ছবি
প্রিয় বন্ধু, ছড়িয়ে দিন এই আহ্বান!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩২